নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তানজীনা

আমি একজন বাংলাদেশী মুসলিম। জাপানে গবেষনায় আছি। জাপানে আমার চাকরী গবেষনা সবই জাপানী উন্নত প্রযুক্তি উন্নয়নশীল দেশের সাধারণ মানুষের কাছে সুলভে কিভাবে পৌঁছে দেয়া যায় তাই নিয়ে। এ কাজ করতে করতে দেখেছি আমার দেশের অনেক অনেক ক্ষেত্রে অনেক কাজ বাকী রয়ে গেছে এবং আমার দেশের এই গরীব মানুষগুলির ট্যাক্সের পয়সায় আমি পড়াশোনা করে এ পর্যায়ে এসেছি। তাই, আমি জানি এই দেশের প্রতি, এই মানুষগুলির প্রতি “আমার অনেক ঋণ আছে”। তারই একটা ধাপ এই ব্লগে লেখা।

তানজীনা › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছেলেটা ঝাপ দেবে দুই নরকের জীবনে।

১৫ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১০:৩৭

আমার বড় ছেলেকে তাদের বাবা গতকাল বাড়ি ফিরে বলল , ‘ জানিস , দেশে ১৬ বছরের এক ছেলে drunk drive করে ৪ জনকে আহত করেছে, এদের মধ্যে একটা বাচ্চা স্পট ডেড!”
আমার ছেলের প্রশ্ন,’ ছেলেটা কি অমুসলিম ? নাকি বিদেশী?”
আমার বর প্রথমে এই প্রশ্ন আশা করেনি, তাই জিগেস করলো এই প্রশ্ন কেন?
ছেলে জবাব দিল, ‘ কারণ তুমি বললে Drunk, কাজেই সেতো মুসলমান হতে পারেনা! আর দ্বিতীয়ত ১৬ বছরে আমাদের দেশের ড্রাইভিং লাইসেন্স দেয়না- তাই সে কি আমাদের দেশের ড্রাইভিং রুল জানেনা না নাকি এমন নিয়ম নেই এ জাতীয় কোন দেশ থেকে বেড়াতে এসেছে? ”

আমরা খুব দ্বিধায় পড়ে গেলাম এর উত্তর কি দেব। কারণ, আমরা সচেতনভাবেই্ দেশের কোন খারাপ ভাবমূর্তি তাদের সামনে তুলে ধরতে চাইনা। প্রবাসে থেকে মাতৃভূমি সম্পর্কে তাদের কোন নেতিবাচক ধারণা না হোক, তারা যেন বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে বরাবর গর্ববোধ করে।
দেশের কোন ঘটনা আলোচনায় তাদেরকে কারো কোন কৃতী অর্জনের কথা বলি, অদম্য পরিশ্রমে জয়ী হওয়া কারো গল্প বলি, আর নেতিবাচক দিকগুলি এভাবে আলোচনা করি যে ‘এই এই দিকে অনেক কাজ করার আছে - তুমি এই বিষয়ে পড়ালেখা করে এই বিষয় নিয়ে কাজ করতে পারো’ এভাবে।

আমার বাচ্চারাও অবশ্যই ফেরেশতা নয়, আর দশটা বাবা মার অন্য দশটা বাচ্চার মতোই – ভুল সে করবেই।
যেমন করেছে ফারিজ আহমেদ ছেলেটা। আমাদেরো সন্তান পালনে অনেক দিকেই ত্রুটি থাকবেই, যেদিকে অন্য অনেক বাবা-মা অনন্য!
কিন্তু, সমস্যা তখুনি হয় যখন রোগ নির্ণয়ের পর রোগ সারাতে ডাক্তারের কাছে না গিয়ে লজ্জা- শঙ্কায় ধামাচাপা দেয়া হয়। ছোট্ট টিউমার দুরারোগ্য ক্যান্সার হয়ে যায়।

আমার ছেলের প্রশ্ন ছিল - ১৬ বছরের ছেলে গাড়ীর চাবী পেল কিভাবে? গাড়ী বের করলো কিভাবে বাড়ি থেকে? মুসলমান হলে মদ খেলো কিভাবে? মদের টাকা পেল কোথায়? ট্রাফিক পুলিশ কি করলো ?
ছেলেটা তো নিজেও মারা যেতে পারতো মধ্যপ অবস্থায় ভিডিও, ছবি শেয়ার করতে করতে ড্রাইভ করে!

~ “ প্রশ্নগুলো সহজ , আর উত্তরও তো জানা!”

আজ এই ছেলের খুনসহ অন্যান্য অপরাধ ধামাচাপা দিতে তার বাবা , প্রাক্তন সাংসদ এইচ এম ইকবালের ভাই ছোট্ট বিষবৃক্ষে আলো – পানি বাতাস দিয়ে বিরাট অপরাধী বৃক্ষ লালন করছেন, রাতারাতি ছেলেকে মালয়শিয়ায় তার স্কুলে পাঠিয়ে দিচ্ছেন যেখানে অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন করার কারণেই সম্প্রতি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল ।

সবাই ক্ষোভে ফেটে পরবে যে ছেলেটা পাড় পেয়ে গেল! কিন্তু আজীবন মাত্র ১৬ বছরে খুনে রাঙা হাত তাকে তাড়িয়ে বেড়াবে। ছাত্রনেতা অভির কথা কি কারো মনে আছে? বহু মামলার আসামী – শেষমেশ মডেল তিন্নিকে হত্যা মামলায় আত্মগোপনে। এরা আত্মগোপনেই বেঁচে থেকে প্রবাসে পশুর জীবন যাপন করে।

সে পালিয়ে আন্দামানেও গিয়ে লুকাক- অতীত তাঁর পিছু ছাড়বেনা। যেখানেই যাবে- পিছু নেবে মানুষের ফিস ফাঁস , কানা ঘুষা , ‘ আরে এই ছেলে না ...।“ মনুষ্য বিবর্জিত অভিশপ্ত জীবন।

অথচ, যতটুকু জানি আমাদের দেশে গাড়ীচাপা দিয়ে মানুষ হত্যার সাজা খুবই গৌণ। এছাড়া আইনের হাতে তুলে দিলে এই ছেলের শাস্তি হবে নিয়ম অনুযায়ী কিশোর সংশোধনের আওতায়। কিন্তু আশা করা যায় ছেলেটা শুধরে যাবে, তার বাবা- মাও সন্তান পালনে তাঁদের ভুলগুলি ধরতে পারবেন। আজকে তাঁদের নিজের ছেলেই তাঁরা হারাতে পারতেন, হারান নাই - প্রতিপালকের অনেক দয়া।

পালিয়ে পাড় পেয়ে গেলে আদতেই ছেলেটা দুই নরকের জীবনে ঝাপ দেবে- একটি পরপারে, অন্যটি এই জীবনে তার পরিবারের গড়ে দেয়া সুরক্ষিত নরকে।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১২:২৮

প্রামানিক বলেছেন: মদ্যপ অবস্থায় যে ক্ষতিটা করল সেটা পুষিয়ে দিবে কি ভাবে?

১৬ ই অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৯:২৩

তানজীনা বলেছেন: অবশ্যই পরিবারকে ক্ষতিপুরণ দিতেই হবে পুলিস আর আইন প্রণেতাদের টাকা না খাইয়ে। আর জানের ব্দ্ল ব্লাড মানি দিয়েও কি হয়? সালমান খান - এত্ত বড় সটার - তাও কি পাড় পেয়েছে ব্লাড মানি দিয়েও? আজ ১২/১৩ বছর ধরে মামলার কলঙ্ক -যাতনা বয়ে বেড়াতেই হচ্ছে।

২| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৮:১৬

শার্লক_ বলেছেন: যদি ছেলের পরিবার প্রভাবশালী না হতো তাহলে ঠিকই পুলিশ ধরে নিয়ে যেত।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.