নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তানজীনা

আমি একজন বাংলাদেশী মুসলিম। জাপানে গবেষনায় আছি। জাপানে আমার চাকরী গবেষনা সবই জাপানী উন্নত প্রযুক্তি উন্নয়নশীল দেশের সাধারণ মানুষের কাছে সুলভে কিভাবে পৌঁছে দেয়া যায় তাই নিয়ে। এ কাজ করতে করতে দেখেছি আমার দেশের অনেক অনেক ক্ষেত্রে অনেক কাজ বাকী রয়ে গেছে এবং আমার দেশের এই গরীব মানুষগুলির ট্যাক্সের পয়সায় আমি পড়াশোনা করে এ পর্যায়ে এসেছি। তাই, আমি জানি এই দেশের প্রতি, এই মানুষগুলির প্রতি “আমার অনেক ঋণ আছে”। তারই একটা ধাপ এই ব্লগে লেখা।

তানজীনা › বিস্তারিত পোস্টঃ

বয়সের রং

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:২৩

ক্লাস বিরতির সময় আমার এক ছাত্রী লাল নীল হয়ে হাসি হাসি মুখ করে নীচুকণ্ঠে জিগেস করলো ,
- সেন্সেই (টীচার) তুমি কি কোরিয়ান ম্যুভি "ডেইজী" দেখেছ?
- নাহ- খুব ভাল ছবি? কি নিয়ে?

২২/২৩ বছরের মাস্টার্সের নতুন ক্লাসের সেই বালিকা "ডেইজী" নামক ত্রিভুজ প্রেমের ছবির কাহিনী বলতে গিয়ে "আবেগে কেঁদে ফেলেছি" অবস্থায় জাপানীজ- ইংরেজীর খিচুড়ীতে যা বলতে চাইল তাতে আমি শিক্ষক না হলে বলেই ফেলতাম " আম্মা, মাফ চাই, দোয়া চাই! "
তার ব্যাখ্যা যে হিব্রু ভাষার মত ব্যাখ্যাতীত হচ্ছে তা বুঝতে পেরেও তার ছাড়াছাড়ি নাই!
কাঁপতে কাঁপতে বালিকা শুধু বলতে পারলো, " টীচার তুমি অবশ্যই এটা দেখো! এত্ত-----সুন্দর --যে----এ -এ ( দম শেষ হওয়া পর্যন্ত চলবে)" ।

যাক বাড়ি ফিরে ট্রেইলর দেখলাম, উইকিপিডিয়ায় স্টোরি লাইন পড়লাম যা আমি ম্যুভি দেখবো কিনা এই সিদ্ধান্ত নিতে সবসময় করি ।
বহুল ব্যাবহৃত ত্রিভুজ প্রেম; একজনকে অন্যজন ভেবে ভুল করা --এরপর ক্লাইমেক্স , মেলোড্রামা, কান্নাকাটি ---সেই জিনিস! নতুন মোড়কে , নতুন আঙ্গিকে !
আহহারে বালিকা---
একেই বলে বয়সের রঙিন চশমা ! সব স্বপ্নের মত লাগে!
ভালই মনে আছে স্কুলে পড়তে এই একই টাইপের ত্রিভুজ প্রেম কাহিনী নিয়ে হিন্দী "সাজন" দেখেছিলাম ( সঞ্জয় দত্ত, মাধুরী দীক্ষিত, সালমান খান; 'দেখা হেয় পেহলি বার-- সাজন কি আঁখোমে পেয়ার--' ) ।
ছবিতে এতীম, খোড়া , কবি সঞ্জয় দত্তের ট্র্যাজেডী কিং অভিনয় দেখে কাঁদতে কাঁদতে আমার কি অবস্থা!!!
আমার চোখের পানিতেই তৎকালীন "বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড" উন্নত হয়ে গেছিল।
মনে হয়ছিল খোড়া একটা ছেলেকে না বিয়ে করতে পারলে এই জীবন আর রাখবো কেন?
এখন ভাবলেও মজা লাগে। :-B

এসবই বয়সের রং। সব বয়সের একটা ভিন্ন রং থাকে, ভিন্ন মন থাকে। আমার ভাগ্য ভাল আমি আমার কোনো বেলার মনস্তাত্ত্বিক অবস্থা ভুলে যাইনি- সেই শিশুবেলার কথাও , যখন "জাহান্নাম" মানে ভাবতাম জাহাজ নামে এমন একটা জায়গা।
তাই কাঁচা বয়সের এসব রংধনু দেখলে কখনোই পিত্তি জ্বলেনা, বরঞ্চ নিজের সেইসব দিন ভেবে নস্টালজিক হই, গজলগায়ক পঙ্কজ উদাসের মতো উদাস হয়ে যাই।
আবার মনটা আজীবনই সেকেলে, তাই "মান্ধাতার আমল/ খ্যাতের যুগ" কোন কালকেই মনে হয়না। ১৯৫০ সনের ম্যুভি চোখ বের করে দেখি।
এবং, প্রবলভাবে বিশ্বাস করি "কলিযুগ" " স্বর্ণযুগ" বলে কোন সুনির্দিষ্ট কাল নেই। আজ যা নষ্ট ভ্রষ্ট মনে হচ্ছে, ২ যুগ পর তাই স্বর্ণযুগ মনে হবে।
বিশ্বাস করুন, ইতিহাস পড়ুন- সেই আদিকাল থেকেই যুগ যুগ ধরে তাই হয়ে এসেছে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:০৯

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: বাহ, চমৎকার লেখা| আপনার ব্যাখ্যা পড়ে মজা পেয়েছি|
রঙিন চশমা চোখেই এখনও সব দেখছি! ইটস কুল

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৯:৪৩

তানজীনা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। অনুপ্রাণিত হলাম। জন্ম- জনম রঙিন চশমা ধরে রাখতে পারলে তো আসলেই “ইটস কুল!”

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.