নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একজন মানুষ ।

দুর্গম পথের যাত্রী

দুর্গম পথের যাত্রী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ব্যালফোর ঘোষণার জন্য ব্রিটেনের ক্ষমা চাওয়া উচিত

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১:৪৪

ফিলিস্তিনের আদি অধিবাসী মুসলিমদের উচ্ছেদ করে সেখানে ইহুদিবাদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সমর্থনে ব্রিটেনের তৎকালীন সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এ সিদ্ধান্তের কথা সে সময়ের ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আর্থার জেমস ব্যালফোর একটি চিঠিতে ইহুদিবাদী আন্দোলনের নেতা ওয়াল্টার রথচাইল্ডকে জানান। ১৯১৭ সালের ২ নভেম্বর লেখা এ চিঠিকে ব্যালফোর ডিকলারেশন বা ব্যালফোর ঘোষণা বলা হয়। আগামী ২ নভেম্বর এই ঘোষণার ১০০ বছর পূর্ণ হবে। এ উপলক্ষে প্রফেসর কামাল হাওয়াশ মিডলইস্ট মনিটরে ব্রিটেন শুড অ্যাপোলোজাইজ ফর দ্য ব্যালফোর ডিকলারেশন, নট সেলিব্রেট ইট অর্থাৎ উদযাপন নয়, ব্যালফোর ঘোষণার জন্য ব্রিটেনের ক্ষমা চাওয়া উচিত শিরোনামে একটি প্রবন্ধ লিখেছেন। ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত প্রফেসর কামাল ব্রিটেনের বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন। এ ছাড়া তিনি মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক একজন সমালোচক এবং প্যালেস্টাইন সলিডারিটি ক্যাম্পেইন ও ব্রিটিশ প্যালেস্টাইন পলিসি কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান।]

তৎকালীন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আর্থার ব্যালফোর ইহুদিবাদীদের প্রতি ব্রিটেন এবং আয়ারল্যান্ডের সমর্থনের কথা উল্লেখ করে ওয়াল্টার রথচাইল্ডকে ১৯১৭ সালের ২ নভেম্বর একটি চিঠি লিখেছিলেন। এ চিঠির গুরুত্বপূর্ণ অংশটি হলোÑ ‘ফিলিস্তিনে ইহুদিদের জন্য একটি জাতীয় রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সরকার একমত পোষণ করেছে। ইহুদিদের এ লক্ষ্যে উপনীত করতে ব্রিটেন সবধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে। এটা সুস্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছে, এ ক্ষেত্রে ফিলিস্তিনের বর্তমান জনগোষ্ঠীর (মুসলমানদের) ধর্মীয় ও নাগরিক অধিকার অথবা অন্যান্য দেশে ইহুদিদের বিভিন্ন অধিকার ও রাজনৈতিক অবস্থানের ক্ষেত্রে পাওয়া সুযোগ-সুবিধার বিষয়ে যে আশঙ্কা করা হচ্ছে, তার কিছুই ঘটবে না।’ এ বক্তব্যের মাধ্যমে ব্রিটেনের ঔপনিবেশিক ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের একটি প্রাথমিক উদাহরণ পাওয়া যায়। ফিলিস্তিনের আদি অধিবাসীদের মতামতের তোয়াক্কা না করেই সেখানে ইহুদিবাদী ভূখণ্ড চাপিয়ে দিতে জায়নবাদীদের কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ব্রিটেন।
২০১৭ সালে ব্যালফোর অঙ্গীকারের শতবর্ষ পূর্ণ হতে চলেছে। জোরালো গুঞ্জন উঠেছে, বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে ব্যালফোর ঘোষণা উদযাপনের পরিকল্পনা নিচ্ছে ব্রিটিশ সরকার। ব্রিটেনে নিযুক্ত ইসরাইলি রাষ্ট্রদূত মার্ক রিজেব দাবি করেছেন, এ নিয়ে ব্রিটিশ সরকারের ‘সর্বোচ্চ পর্যায়ে গুরুত্বের সাথে’ আলোচনা হয়েছে। ব্রিটিশ সরকার ও জনগণকে সাথে নিয়ে এটা উদযাপন করা হবে বলে তারা আশা করছেন। ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখপাত্র এ বিষয়ে ব্রিটিশ সরকারের সাথে কথা বলেছেন। এ উপলক্ষে উভয় দেশের ঊর্ধ্বতন নেতারা একত্র হবেন। সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ইহুদি নেতাদের বলেছেন, যথাযথভাবে একসাথে আমরা দিনটিকে উদযাপন করতে যাচ্ছি। তবে কিভাবে ও কোথায় দিনটি স্মরণ করা হবে এ ব্যাপারে ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশদের সাথে কোনো পরামর্শ করেননি ক্যামেরন।
ফিলিস্তিন-ইসরাইল ইস্যুতে ব্রিটেনের দ্বিমুখী আচরণ প্রকাশ পেয়েছে। একটি মরুভূমিতে ইসরাইলকে চাপিয়ে দেয়া হয়েছেÑ বিষয়টি এমন নয়; বরং ফিলিস্তিনি জনগণের আদি আবাসস্থলে একটি ইহুদিবাদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ফলে ফিলিস্তিনিদের সাথে আলোচনা না করেই ব্রিটেনের ব্যালফোর ঘোষণার শতবর্ষ উদযাপন পরিকল্পনা কিভাবে যৌক্তিক হতে পারে?
ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ এবং ফিলিস্তিনের নেতাদের মতে, ব্যালফোর ঘোষণা উদযাপন পরিকল্পনা ব্রিটেনের চরম আগ্রাসী উদ্যোগ। ইহুদিবাদীদের জন্য এ ঘোষণা সবুজ সঙ্কেত। এ ঘোষণার মাধ্যমে ‘ফিলিস্তিনকে ভূমিশূন্য জনগণের জন্য জনশূন্য ভূমি’ অভিহিত করে একটি সর্বৈব মিথ্যাকে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে। ফিলিস্তিনে ইহুদিদের অবৈধ বসতি স্থাপন ব্যালফোর ঘোষণা এবং তৎকালীন জাতিপুঞ্জের ম্যানডেটের ফল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং ওই সময়ের গণহত্যার পর ইহুদিবাদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বন্দোবস্ত চূড়ান্ত হয়।
ব্রিটেনের তৎপরতায় ইহুদিবাদীরা ফিলিস্তিনের জনগণকে তাদের নিজ ভূমি থেকে তাড়িয়ে ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য নারকীয় হত্যাকাণ্ড চালায়। এর পর থেকে অবৈধভাবে জন্ম নেয়া এ রাষ্ট্রে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ইহুদিরা বসতি স্থাপনের লক্ষ্যে আগ্রাসন চালিয়ে আসছে। এর মধ্যে ব্রিটেন কিভাবে ব্যালফোর ঘোষণা উদযাপন করবে? এটাকে উদযাপন না বলে শুধু ‘স্মরণে’র কথাও যদি বলা হয়, এরপর এ আয়োজন ফিলিস্তিনিদের কাছে অন্যায় বলেই গণ্য হবে। কেননা, এ ঘোষণার কারণেই আজো ইহুদিবাদী ইসরাইলি বাহিনীর নির্যাতন ও উচ্ছেদের শিকার হচ্ছেন ফিলিস্তিনের জনগণ। ব্যালফোর ঘোষণাপত্রটি একটু নিরপেক্ষভাবে পড়লে দেখা যাবে, ইসরাইল প্রতিষ্ঠায় ‘সহায়তার’ যে শর্ত ব্রিটেনের পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছিল, তা তারা পূর্ণ করেছে।
১৯৪৮ সালে অবৈধভাবে চেপে বসার পর থেকে আজ পর্যন্ত ইহুদিরা ফিলিস্তিনের আদি জনগণ অর্থাৎ মুসলিমদের নাগরিক ও ধর্মীয় অধিকার অব্যাহতভাবে হরণ, নির্যাতন ও নিগ্রহ করে চলেছে। ব্রিটেন কখনো ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, ২০১৭ সালে পূর্ব জেরুসালেম, গাজা এবং অন্যান্য আরব ভূমি দখলেরও ৫০ বছর পূর্ণ হবে। ফলে যেকোনো মানুষ ব্যালফোর উদযাপন সঠিক নয় বলে মনে করে। ব্রিটেন এটা উদযাপনের পরিবর্তে দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চাইতে পারে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১:৫৯

চাঁদগাজী বলেছেন:



বৃটেন ভারত দখল করে ২০০ বছর শাসন করার জন্য আমার কাছে মাফ চেয়েছে; শুনলাম রাণী আপনার কাছে প্যালেস্টাইনের ব্যাপারে মাফ চাওয়ার জন্য আপনাকে খুঁজছে, আমেরিকা দখলের জন্য রাণী মাফ চেয়েছে ট্রাম্পের কাছে!!

২| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ভোর ৪:৩৭

রাসেল সরকার বলেছেন: ব্রিটিশ সাম্রারাজ্যবাদের সেবাদাস, স্বৈরতন্ত্রের ধারক, সত্য ও মানবতার শত্রু, নাপাক ও জারজ, দ্বীনের কেন্দ্রস্থল, কেবলাভূমি, বিশ্ব মুসলিমের প্রাণ কেন্দ্র তথা পবিত্র "আল আরব" এর নাম পরিবর্তনকারী এবং ১৯৩২ সালের ২৩শে সেপ্টেম্বর নিজ গোত্রের নামানুসারে সৌদি আরব নামকরণ কারী, এক কথায় সৌদি গোষ্ঠীর কারণেই আরব ভূখন্ডে মুসলমানদের আজন্ম শত্রু "ইহুদিবাদী ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয় ।
১৯১৭ সালের দোসরা নভেম্বর ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্যালফোর ফিলিস্তিনে ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন। ওই ঘোষণা ব্যালফোর ঘোষণা নামে ইতিহাসে খ্যাত। এ ঘোষণা দেয়ার আগে ব্রিটিশরা সৌদি রাজা আবদুল আজিজের কাছ থেকে লিখিত সম্মতি পত্র আদায় করেছিল। ওই চিঠিতে লেখা ছিল:
“আমি বাদশাহ আবদুল আজিজ ইবনে আবদুর
রহমান--ফয়সলের বংশধর ও সৌদের বংশধর-- হাজার বার স্বীকার করছি ও জেনেশুনে বলছি যে, মহান ব্রিটিশ সরকারের প্রতিনিধি স্যার কুকাস-এর
সামনে স্বীকারোক্তি করছি এই মর্মে যে, গরিব ইহুদিদেরকে বা অন্য কাউকে ব্রিটিশ সরকার যদি ‘ফিলিস্তিন’ দান করে দেন তাহলে এতে আমার কোনো ধরনের আপত্তি নেই। বস্তুত: আমি কিয়ামত পর্যন্ত ব্রিটিশ সরকারের অভিমতের বাইরে যাব না।” (নাসিরুস সাইদ প্রণীত ‘আলে সৌদের ইতিহাস’ )
একবার (১৯৪৫ সালে) বাদশাহ আবদুল আজিজ সৌদ ইহুদিবাদী ইসরাইল গঠনের বিরুদ্ধে পত্র-পত্রিকায় বিবৃতি দিয়ে বসে। সঙ্গে সঙ্গে ব্রিটিশ সরকার ও ইহুদিবাদীদের পক্ষে দু’জন প্রতিনিধি এসে বাদশাহ আবদুল আজিজের সঙ্গে দেখা করে এবং বাদশাহকে তার সম্পাদিত সম্মতি- পত্রটির কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। তখন বাদশাহ তাদের বলেছিল:
“ আমি ইহুদিদের স্বার্থে কার্যত যা করে যাব তার ওপর বিশ্বাস রাখবেন। কি বলছি তার দিকে লক্ষ্য করবেন না। কারণ, এ ধরনের কথা না বললে আমি (ক্ষমতায়) টিকে থাকতে পারব না।” বাদশাহর এই কথা শুনে ব্রিটিশ সরকারের ও ইহুদিবাদীদের প্রতিনিধি খুশি হয়ে ফিরে যায়। (নাসিরুস সাইদ লিখিত ‘আলে সৌদের ইতিহাস’,
পৃ-৯৫৩) ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.