নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিঃসঙ্গ অভিযাত্রিক

Never lose hope...., Never Stop Expedition....

নিঃসঙ্গ অভিযাত্রিক

ঘুরে বেড়ানো আমার একটা ভয়ংকর মাত্রার নেশা। আর আমার এই নেশার যোগানদাতা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সব দুঃসাহসিক অভিযাত্রিকেরা। ম্যান ভার্সেস ওয়াইল্ডের বিয়ার গ্রাইলস তাদের লিডার। এই মানুষটার জন্যই আমার মাথাটা খারাপ হয়ে গেছে। ঘোরার নেশা আমাকে গ্রাস করে বসেছে। একা পথচলা আমার খুব পছন্দ। একা চলায় কষ্ট আছে সত্য, কিন্তু তা আনন্দের কাছে চাপা পড়ে যায়।The one who follows the crowd will usually get no further than the crowd. The one who walks alone is likely to find himself in places no one has ever been.

নিঃসঙ্গ অভিযাত্রিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইস্ট বেঙ্গলের গর্বঃ চিলমারী যুদ্ধ

২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ২:০৮



১৫ই আগস্ট ১৯৭১‌‌ আর্টিলারীসহ এক ব্যাটালিয়ন পাক হানাদার ও তিন শতাধিক রাজাকার চিলমারীতে বীর ইস্ট বেঙ্গলের মুখোমুখী হয়।



ইস্ট বেঙ্গলে ছিল কম্বাইন্ড ফোর্স। এখানে ছিলেন সি-ও মেজর জামিল (থার্ড বেঙ্গল), সি-ও মেজর জিয়াউদ্দীন (ফার্স্ট বেঙ্গল) ও সি-ও মেজর আমিনুল হক (৮ম বেঙ্গল), আর ছিল মুক্তিবাহিনীর দুটি কলাম। মূল কমান্ডে ছিলেন ‘জেড’ ফোর্সের অধিনায়ক মেজর জিয়াউর রহমান।



১৫ই ও ১৬ই আগস্ট হানাদার পাকবাহিনী নেক-টু-নেক ফাইট করেছে তাদের মোস্ট লেটেস্ট ও মোস্ট সফিস্টিকেটেড আর্মস নিয়ে। কখনো বা মনে হয়েছে পাক হানাদাররা ইস্ট বেঙ্গলের ডিফেন্সে ফাটল ধরাতে সমর্থ হবে। কিন্তু না, বাংলার বীর ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট দাঁতে দাঁত কামড়ে পজিশন আগলে রেখে দু’দিন ধরে তাদের আক্রমণ রেসিস্ট করে গেছে। দুদিন ধরে মুক্তিযোদ্ধারা জঙ্গল ও বনের ফাঁক দিয়ে সংগ্রহ করে হানাদার বাহিনীর ডিফেন্সের ফাঁক-ফোকর। ১৭ই আগস্ট চিলমারীর পূর্বদিক দিয়ে এগিয়ে গেল ৮ম ইস্ট বেঙ্গল। নাশ হয়ে গেল দু’টি হানাদার পজিশন। নিহত হলো ৪ জন পাক হানাদার। জায়গা বদল করে এগুচ্ছে ফার্স্ট বেঙ্গল, থার্ড বেঙ্গল। রক্তক্ষয়ী চিলমারীর বুকে অসীম বীরবিক্রমে তিনদিন তিনরাত ধরে লড়ে যাচ্ছে বীরের বাহিনী ইস্ট বেঙ্গল শত্রুর লেটেস্ট আর্টিলারী ও সফিস্টিকেটেড আর্মস-এর সামনে ক’টা এস-এল-আর আর থ্রি-নট-থ্রি নিয়ে। অকুতোভয় বীর যোদ্ধারা হানাদারদের ইঞ্চি ইঞ্চি করে পিছু হটাচ্ছে চিলমারীর বুক থেকে, আর গ্রামের কৃষক-জনতা সবাই তাদের পেছনে ভলান্টিয়ারের কাজ করছে। জনগণের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় উদ্দীপ্ত ইস্ট বেঙ্গলের জোয়ানরা পাক বাহিনীর মরণ আঘাত উপেক্ষা করে প্রতি প্রহরে সামনে এগিয়েছে, নিখুঁত নিশানায় হানাদার বাঙ্কারে গুলি ছুঁড়েছে।



এলো ১৯শে আগস্ট। সারাদিনের পর সন্ধ্যায় হঠাৎ যেন দুলে উঠলো হানাদার পজিশন, বাঙ্কার। ইস্ট বেঙ্গল ও মুক্তিবাহিনী আক্রমণ শানিয়ে তুললো। বীরদর্পে অসীম দুঃসাহসে সন্ধ্যার আঁধার নামার সাথে সাথে থার্ড বেঙ্গল মেজর জামিলের সাথে আরো কয়েক গজ এগিয়ে সামনের একটা হানাদার বাঙ্কার দখল করে নিলো। বাঙ্কারেই হত্যা করলো ৪ জন হানাদারকে।



রাতের আঁধারে যুদ্ধ আরো রক্তক্ষয়ী ও হিংস্র হয়ে উঠলো। পাকিস্তানী স্ট্রং আর্টিলারীর কভারিং থাকা সত্ত্বেও চিলমারীর বুক থেকে পালাতে চায় ১ ব্যাটালিয়ন হানাদার। ‘জেড’ ফোর্সের অধিনায়ক জিয়ার অর্ডারঃ ‘ওদেরকে রিট্রিট করতে দেয়া হবে না। চিলমারীর বুকে ওদের কবর হবে।’ মুক্তিযোদ্ধারা সন্তর্পনে ক্ষিপ্ত গতিতে গিয়ে পজিশন নেয় হানাদারদের পেছনে। ভোর রাতে জোর কদমে ইস্ট বেঙ্গল ঢুকে পড়ে পাকিস্তানী বাঙ্কারে, পজিশনে, ডিফেন্স লাইনে।



ইস্ট বেঙ্গলের নির্ভীক যোদ্ধাদের নিশ্চিত আঘাতে ভেঙ্গে পড়তে লাগলো ওদের বাঙ্কার, গুঁড়ো গুঁড়ো হয়ে গেল পাকিস্তানী ডিফেন্স। প্রাণভয়ে চিলমারী ডিফেন্স ছেড়ে পালাচ্ছে ৭০০ পাক হানাদার ডেড-বডি ও আহতদের নিয়ে ৭/৮ মাইল দূরে, চিলমারী রেলওয়ের দিকে। পালাবার পথে প্রাণ দিচ্ছে ওৎ পেতে থাকা মুক্তিযোদ্ধাদের গুলির ঘায়ে।



২০শে আগস্ট মুক্ত হয়ে গেল চিলমারী। রক্তক্ষয়ী পাঁচদিন পাঁচরাত যুদ্ধের পর শত প্রাণশক্তিতে ভরপুর ইস্ট বেঙ্গলের বীর জোয়ানরা এগিয়ে চললো পলাতক পাক হানাদারদের পরবর্তী ডিফেন্স লাইন চিলমারী রেলওয়েতে আঘাত হানার জন্য। পশ্চাতে পড়ে থাকলো রক্তস্নাত চিলমারী। আনন্দে উদ্বেলিত জনগণ চিলমারীর রণক্ষেত্রে এসে দেখতে পেলো বাঙ্কারে বাঙ্কারে পড়ে আছে শতাধিক হানাদার ও রাজাকারের লাশ। পাক হানাদারদের ডিফেন্স লাইন রক্তে ভেসে যাচ্ছে। পাকিস্তানীদের ২টি লঞ্চ ধরা হয় ও ২টি স্পীডবোট ধ্বংস হয়। ধ্বংস হয় কয়েকটি সাঁজোয়া গাড়ী। ইস্ট বেঙ্গলের ৩ জন সামান্য আহত হয়।



-----

দৈনিক ‘ইত্তেফাক’ ১৯৮২ বিজয় দিবস সংখ্যায় প্রকাশিত মুসা সাদিক রচিত প্রতিবেদন থেকে সংকলিত।



-----

তথ্যসূত্রঃ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দশম খণ্ড (পৃষ্ঠা ৭২৮-২৯)



-----

১৯৭১: একটি সত্য গল্প 1971: A True Story -একটি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আপোষহীন পেইজ



-----

রণাঙ্গনের দিনগুলিঃ অপারেশন জাতিসংঘ গ্যারেজ

রণাঙ্গনের দিনগুলিঃ আমেরিকান এক্সপ্রেস ব্যাংক

রণাঙ্গনের দিনগুলিঃ নলুয়া ও তেলিয়াপাড়ায় এ্যামবুশরণাঙ্গনের দিনগুলিঃ মনতলার যুদ্ধ (১৫- ২১ জুন ’৭১)

রণাঙ্গনের দিনগুলিঃ তেলিয়াপাড়ায় গেরিলা আক্রমণ

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০৩

অস্পিসাস প্রেইস বলেছেন:
Never Stop Expedition।
৭১ এর আরও কিছু জেনে ভালো লাগলো।
আপনাকে শুভেচ্ছা।

২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৮

নিঃসঙ্গ অভিযাত্রিক বলেছেন: আপনার ভালো লেগেছে জেনে আমার ভালো লাগলো। :)

২| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:৫১

আমিনুর রহমান বলেছেন:



যারা আমাদের এই দেশ কে মুক্ত করে আমাদের উপহার দিয়েছে তাদের
আমার অন্তরের অন্তস্থল থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য রইল আমার বিনম্র শ্রদ্ধা।


মুক্তিযুদ্ধের কথা জানানোর জন্য আপনার প্রতি রইল কৃতজ্ঞতা।

২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:৩০

নিঃসঙ্গ অভিযাত্রিক বলেছেন: আর আপনার প্রতি রইলো একরাশ ধন্যবাদ।

৩| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ ভোর ৬:১৫

ইমানুয়েল নিমো বলেছেন: ++++++++++++++++++++++++++++++++++++

২৪ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১:০৬

নিঃসঙ্গ অভিযাত্রিক বলেছেন: All pluses are dedicated to our valiant East Bengal Regiment's warriors.........

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.