নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিঃসঙ্গ অভিযাত্রিক

Never lose hope...., Never Stop Expedition....

নিঃসঙ্গ অভিযাত্রিক

ঘুরে বেড়ানো আমার একটা ভয়ংকর মাত্রার নেশা। আর আমার এই নেশার যোগানদাতা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সব দুঃসাহসিক অভিযাত্রিকেরা। ম্যান ভার্সেস ওয়াইল্ডের বিয়ার গ্রাইলস তাদের লিডার। এই মানুষটার জন্যই আমার মাথাটা খারাপ হয়ে গেছে। ঘোরার নেশা আমাকে গ্রাস করে বসেছে। একা পথচলা আমার খুব পছন্দ। একা চলায় কষ্ট আছে সত্য, কিন্তু তা আনন্দের কাছে চাপা পড়ে যায়।The one who follows the crowd will usually get no further than the crowd. The one who walks alone is likely to find himself in places no one has ever been.

নিঃসঙ্গ অভিযাত্রিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

ল্যান্ডফোনের সেই দিনগুলোর প্রেম :!> :#> :!> :#> :!> :#> একটি টেলিফিল্মের আলোকে কিছু কথা

৩১ শে অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১০



সময়টা সেই নব্বইয়ের দশকের যখন প্রেমিক প্রেমিকারা মা-বাবার চোখ রাঙানি কিংবা বড় ভাইয়ার কড়া বারণকে উপেক্ষা করে ল্যান্ড ফোনে প্রেম করতো। তখন না ছিল মোবাইল ফোন, না ছিল ফেসবুক। কপোত কপোতীগণ তখন ‘সাত সমুদ্র তেরো নদীর’ বাধা ডিঙিয়ে একে অপরের সাথে যোগাযোগ করতো। তাদের সেই কষ্টার্জিত আলাপনে ছিল একরাশ ভালোবাসা, হৃদয় নিংড়ানো আবেগ আর আগামী দিনগুলোর জন্য বোনা স্বপ্নের সমাহার। তখনের একটুখানি খুনসুটি ছিল প্রেমিক প্রেমিকাদের নিত্যনৈমিত্তিক প্রেমের অনস্বীকার্য অংশ। এই সেই নব্বইয়ের দশকের কঠিন প্রেম যাকে এখনের নিত্য বদল প্রেমের ঠুনকো সম্পর্কের মাঝে খুঁজে মেলা ভার। এখন সকালের পরিচয়ে দুপুরে প্রেম, আর দুপুরে প্রেমের মোহভঙ্গে বিকালেই ব্রেকআপ, তারপর সন্ধ্যায় নতুন কারো সন্ধানে হন্যে হওয়া আর রাতেই আরেকজনকে পেয়ে যাওয়া, শেষতক আবার সেই চক্র অর্থাৎ সকালের পরিচয়ে দুপুরে......



এখন সবার মুঠোতে মিনিমাম একটা করে মুঠোফোন। ১৮ হওয়ার আগে বালক-বালিকাদের থাকে ফেসবুক একাউন্ট। কারো কারো আবার ফলস আইডি দিয়ে একাধিক একাউন্ট। এখনকার জমানার ছেলেমেয়েদের (আমিও অবশ্য এই এখনকার জমানারই) পরীক্ষায় পাশ করা লাগুক আর না লাগুক প্রেম করা চাইই চাই। শতে ৯০ জন পাওয়া যাবে যারা কিনা ক্লাস নাইনে উঠতে না উঠতে প্রেম করতে শশকের ন্যায় ব্যতিব্যস্ত হয়ে ওঠে। অবশ্য এখানে অসফল হবার চান্স খুবই কম, যেমন কম সেই সাফল্যকে সাফল্যের সাথে ধরে রাখার ক্ষমতা। আমি নব্বইয়ের সেই দশকের প্রেম দেখিনি। আর দেখবো কেবা করে! আমি যে তখন গেদা বাচ্চা না হলেও অ্যাট লিস্ট হাদা বাচ্চা তো ছিলাম। আর তাই আমার দেখা হয়ে ওঠেনি সেই নব্বই জমানার কারো প্রেমপর্ব, শোনা হয়ে ওঠেনি সেই কালের কারো প্রেমকাহানি। তবে হ্যাঁ, দুধের স্বাদ ঠিকই ঘোলে মিটেছে কিছুক্ষণ আগে। এবার কোরবানির ঈদের একটা টেলিফিল্ম দেখলাম। যার মূল উপজীব্য সেই নব্বই জমানার দুরু দুরু বুকে করা ভীরু ভীরু প্রেমের গল্প। টেলিফিল্মের নাম... একটু পরেই না হয় বলি?



একে তো থাকি হলে, তার উপর ঈদে যাইনি বাড়ি; তাই দেখা হয়ে ওঠেনি এবারের কোন ঈদ অনুষ্ঠান। অবশ্য গত কয়েক বছর ধরে ঈদে নাটক, টেলিফিল্ম বা ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান দেখা বাদ দিয়ে দিয়েছি। দেখতে বসলে একসময় আমি নিজেই কনফিউজড হয়ে যাই যে কে কার সৌজন্যে পরিবেশিত হচ্ছে। নাটক-টেলিফিল্ম অ্যাডের সৌজন্যে নাকি অ্যাড নাটক-টেলিফিল্মে র সৌজন্যে? দশ মিনিট নাটক দেখিয়ে পনেরো মিনিটের বিজ্ঞাপন যন্ত্রণা আপনাদের কারো সহ্য হলে সেটা আলহামদুলিল্লাহ্‌ কিন্তু আমার ক্ষেত্রে সেটা ইন্নানিল্লাহ...... আর তাই এখন নাটক-টেলিফিল্ম ‘ লাইভ দেখা’ (অর্থাৎ টিভিদর্শন) আমার জন্য ‘সুদূর’ অতীতের একটা কিছু। যদি শুনি কোন নাটক বা টেলিফিল্ম ভালো লেগেছে সিংহভাগ আমজনতার (বেশীরভাগ সময়ে এই আমজনতা আমার হলের পোলাপানরাই থাকে) তখন সেটা ইন্টারনেট থেকে ডাইনলোড করে নিই। এতে অবশ্য লাভ অনেক। প্রথমত, বিজ্ঞাপনের অমানুষিক নির্যাতন থেকে বাঁচা যায়। দ্বিতীয়ত, দেখতে সময় লাগে কম আর কোন দৃশ্য ভালো লাগলে পিছিয়ে নিয়ে বার বার দেখা যায়। এগুলোর কোনটাই দূরদর্শন দর্শন করে পাওয়া যায় না। তবে একটা সমস্যাও আছে। কাঙ্ক্ষিত নাটক বা টেলিফিল্ম টি ইন্টারনেটে পেতে (অবৈধ পন্থায় :P :P) একটু ধৈর্য ধরতে হয়। এটাকেও সমস্যা না ভেবে আমার মতো ধৈর্যচর্চার একটা উপায় হিসেবে দেখলেই হয়ে যায়। আর সেকারণেই ‘সেই কবে মরে ভূত হয়ে যাওয়া ঈদের আমেজ’ ছাড়াই দেখলাম আশফাক নিপুনের ঈদের টেলিফিল্ম ল্যান্ড ফোনের দিনগুলোতে প্রেম





গল্পটা নব্বইয়ের দশকের ঢাকার পাশাপাশি দুইটা বাড়ির দুই প্রতিবেশী আই মিন কপোত-কপোতীর ‘দুর্গম গিরি কান্তার মরু...’ টাইপের প্রেম করা নিয়ে। একটি বাড়ির বড় ছেলে কামাল (তাহসান) প্রেম করে পুষ্প (মিথিলা) মানে পাশের বাড়ির বড় মেয়ের সাথে। বহু কিছু করার চেষ্টা করলেও আজ পর্যন্ত প্রেম করা ছাড়া কাজের কাজ আর কিছুই করতে পারেনি এই কামাল। তিন বছর আগে বিএ পাস করে বসে থাকা কামালের বিপরীতে আছে হোম ইকোনমিক্সের রানিং স্টুডেন্ট পুষ্প। তাদের প্রেম চলে ফোনে, কোডনেম দিয়ে চিঠিতে এবং অতি কদাচিৎ অতি সতর্কতার সাথে সরাসরি। তাদের এই প্রেমের পথে বাধা হয়ে থাকে পুষ্পের হাস্যকর এবং বিরক্তিকর মটু মামা।



নানাবিধ বাধাবিপত্তি পেরিয়ে আর নিত্যনতুন কলাকৌশল আবিষ্কার ও তার প্রয়োগের মাধ্যমে চলতে থাকে তাদের ভীরু ভীরু প্রেম। আশেপাশের চরিত্রের মজাদার উপস্থিতি আর টেলিফিল্মে র নব্বই ঘরানার সেট নির্মাণ (যথাসম্ভব) যথার্থই প্রশংসার ন্যায্য দাবীদার। তবে একটা জায়গায় একটু খটকা লাগলো। আপনারা যারা দেখেছেন বা এখন আমার এই ব্লগ পড়ে (বা না পড়ে অন্য কোনভাবে ইমপ্রেসড হয়ে) দেখবেন তারা একটা বিষয় একটু খেয়াল কইরেন তো? টেলিফিল্মে র একটা জায়গায় কামালের কাছে পুস্প ফোন করে; কিন্তু কামাল সেই ফোন রিসিভ করতে পারে না। কারণ তার বাবা ফোন যে রুমে থাকে সেটা তালা মেরে রেখে গেছেন। খটকাটা ঐ তালাতেই। ‘কিকো’ ব্র্যান্ডের এতো আধুনিক তালা কি সেই সময় ছিল? আমার অল্প বুদ্ধির মোটা মাথায় তো বলে- ছিল না। তারচেয়ে বরং ঐ যে কিছুটা হ্যান্ডকাফের মতো কিছু ঐতিহাসিক তালা ছিল না, ঐগুলো একটু আঁতিপাঁতি করে খুঁজে ইউজ করলে ভালো হতো। ফ্ললেস হতো।



টেলিফিল্মে এলিটার কণ্ঠে একটা সুন্দর গান ছিল। আমার সেই রকম ভালো লেগেছে। তার সাথে মাঝে মাঝে “মন শুধু মন ছুঁয়েছে” গানটার ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক চমৎকার আবহ তৈরি করেছে। আর হঠাৎ করে (টেলিফিল্মে র মধ্যে) ম্যাকগাইভারের সেই চিরায়ত টিউনটা শুনে অনেক নস্টালজিক হয়ে পড়েছিলাম। /:)/:)/:) আসলে মিস করা সেই নব্বইয়ের দশক আর ফেলে আসা সেই দুই হাজার দশক (মানে, যুতসই কোন নাম খুঁজে না পেয়ে দু’হাজার সালের সময়কার কথাকে এভাবে বলছি) এখনের আধুনিক, স্পিডি, ফ্যাশনেবল (আর কি কি যেন বলে... যাই হোক) দশকের চাইতে হাজার গুণে ভালো ছিল, মধুময় ছিল। এখন মানুষের মধ্যে আত্মার মেলবন্ধন কমে গেছে। বেশীরভাগ মানুষ খোঁজে দেহের মিলনবন্ধন; তাতে আত্মার সম্মতি থাকুক বা নাই থাকুক। আধুনিকতার নামে আমরা হয়ে যাচ্ছি কেমন যেন খাপছাড়া, চেনা পৃথিবীতে পাশাপাশি বাস করা অচেনা গ্রহের মানুষ। এখন কয়জন প্রেমিক বা প্রেমিকা আছে তার ‘প্রিয়’ মানুষটার জন্য চিঠি লিখে অন্তরের অন্তস্তলের কথা প্রকাশ করে? দুই টাকা নিরানব্বই পয়সা খরচ করে ১০০ ম্যাসেজের একটা বান্ডল কিনে সারাদিন ম্যাসেজ পাঠায়; অথচ ছোট্ট একটা চিঠি লিখতে পারে না।



ওকে, আর কথা না বাড়াই। আজ এখানেই লেখায় ইস্তফা দিচ্ছি। বাংলাদশের খেলা আছে তা তো সবাইই জানেন। আমি অবশ্য বাংলাদেশের খেলা খুব একটা দেখি না। হার্টবিট বেড়ে যায় বহুগুণে। জাস্ট ক্রিকইনফোতে আপডেট দেখবো। লাইভ দেখবো না। /:)/:)/:) বাংলাদেশ আজও জিতবে, কোন না কোন ইতিহাস গড়বে, আমাদেরই কেউ না কেউ ম্যান অব দ্যা ম্যাচ হবে, আজই সিরিজ আমাদের হয়ে যাবে (ইন শা আল্লাহ্‌) -এই প্রত্যাশায় আজকের মতো এখানেই.........

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৬

কস্কি বলেছেন: আহা!!!!


ল্যান্ডলাইন !!


কত্ত স্মৃতি .......কত্ত কাহিনী টেলিফোনকে ঘিরে!!




রং নাম্বার!! B-)


সাথে কত্ত উদ্ভট চিন্তা!!!



গত একবছরে, শেষ কবে টিভির সামনে বসে নাটক দেখেছি, তা ভুলে গেছি!!! :(



নস্টালজিয়ায় ডুবে কমেন্ট টাইপ করেছি ...... তাই কি বলেছি নিজেই হয়তো জানি না !! B-)

৩১ শে অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৬

নিঃসঙ্গ অভিযাত্রিক বলেছেন: নস্টালজিয়ায় ডুবে কমেন্ট টাইপ করেছি ...... তাই কি বলেছি নিজেই হয়তো জানি না !!

জানা লাগবে না, নস্টালজিয়ায় পড়লে যা খুশি তাই করা যায়, যা খুশি তাই বলা যায়...... :) :) :)

২| ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৮:২৮

অ্যানোনিমাস বলেছেন: আহা!

৩১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:৪১

নিঃসঙ্গ অভিযাত্রিক বলেছেন: আসলেই আহা টাইপ :D B-) :)

৩| ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৮:৩৬

রাবেয়া রব্বানি বলেছেন: এখন আর একটা সিস্টেম আছে। তা হলো ধরি মাছ না ছুই পানি। সব ঈ হবে তবে এটা প্রেম না ফেরেন্ড শীপ। হা হা। তাই মোবাইল মেসজ বা এফ বি নকল নিক। আর ধরা না খাওয়া সিস্টেমে চলা। আমাদের আফসোস আমরা নব্বই দশকের রিয়েল চার্ম খাইতে পারি নাই। টেলিফিল্মটা দেখবো।

০১ লা নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৩:১৬

নিঃসঙ্গ অভিযাত্রিক বলেছেন: এখন আর একটা সিস্টেম আছে। তা হলো ধরি মাছ না ছুই পানি। সব ঈ হবে তবে এটা প্রেম না ফেরেন্ড শীপ। হা হা। তাই মোবাইল মেসজ বা এফ বি নকল নিক। আর ধরা না খাওয়া সিস্টেমে চলা।

একমত

৪| ১১ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৫৯

আমিনুর রহমান বলেছেন:




আহা ব্রাদার পুরান দিনের কথা মনে করিয়ে দিলেন। আমি রাতের বেলা ড্রয়িং রুম থেকে চুরি করে ফোন সেট নিয়ে সারা রাত কথা বলতাম আর বিল হাতে পেয়ে বাপজান সেইরকম বকাতো :(

১৫ ই নভেম্বর, ২০১৩ ভোর ৫:০৮

নিঃসঙ্গ অভিযাত্রিক বলেছেন: হায়, আপনি পেয়ে সেই কালের জন্য আফসোস করেন আর আমি না জন্মানোর কারণে ঐ সময় না পেয়ে আফসোস করি। :(

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.