নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিঃসঙ্গ অভিযাত্রিক

Never lose hope...., Never Stop Expedition....

নিঃসঙ্গ অভিযাত্রিক

ঘুরে বেড়ানো আমার একটা ভয়ংকর মাত্রার নেশা। আর আমার এই নেশার যোগানদাতা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সব দুঃসাহসিক অভিযাত্রিকেরা। ম্যান ভার্সেস ওয়াইল্ডের বিয়ার গ্রাইলস তাদের লিডার। এই মানুষটার জন্যই আমার মাথাটা খারাপ হয়ে গেছে। ঘোরার নেশা আমাকে গ্রাস করে বসেছে। একা পথচলা আমার খুব পছন্দ। একা চলায় কষ্ট আছে সত্য, কিন্তু তা আনন্দের কাছে চাপা পড়ে যায়।The one who follows the crowd will usually get no further than the crowd. The one who walks alone is likely to find himself in places no one has ever been.

নিঃসঙ্গ অভিযাত্রিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

জাহানারা ইমামের একাত্তরের দিনগুলিঃ ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৩ ভোর ৪:১১

৩ ডিসেম্বর শুক্রবার, ১৯৭১



আজকেও কেউ আসে নি। না আসার কারণও একটা অনুমান করছি। দেশের আবহাওয়া বড়ই উত্তপ্ত। চারধারে বর্ডার ঘিরে যুদ্ধও বেশ জোরেশোরে লেগেছে। সবগুলো খবর কাগজে মোটা হেডলাইন দিয়ে পূর্ব পাকিস্তানের বিভিন্ন সীমান্তে 'ভারতের আক্রমণের' নিন্দাসূচক খবর ফলাও করে বেরোচ্ছে। আমরা স্বাধীন বাংলা বেতার, আকাশবাণী, বিবিসি'র খবর শুনে সব খবর চালাচালি করে বুঝে নিই মুক্তিবাহিনী কোথায় কতটা এগোচ্ছে, পাকবাহিনী কোথায় কতটা মার খাচ্ছে। শরীফ রোজ ইংরেজি বাংলা চার-পাঁচটা খবর কাগজের খবর বিশ্লেষণ করে। সে ক'দিন ধরেই বলে চলেছে, 'দ্যাখো না, ঢাকাতেও যুদ্ধ বাঁধলো বলে। রংপুর, দিনাজপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, ফেনী, সিলেত-সব জায়গায় যেভাবে যুদ্ধ চলছে, তাতে মুক্তিবাহিনীর ঢাকায় ঢুকে পড়তে আর দেরি নেই।''



শরীর ভালো ছিল না। তাই রাতে তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়েছিলাম। আমার দেখাদেখি বাড়ির অন্যরাও। রাত দুটোর দিকে হঠাৎ বিমান-বিধ্বংসী কামানের ট্রেসার মারার ফটাফট শব্দে জেগে গেলাম। কি হচ্ছে, ঠিক যেন বুঝতে পারছিলাম না। জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখি-শূন্যে আলোর ফুলঝুরি। বুঝলাম সারাদিন যে যুদ্ধের সম্ভাবনার কথা নিয়ে সবাই চনমন করছে, তাই সত্যি হতে চলেছে। খুব উত্তেজনা বোধ করলাম মনের ভেতরে, সে অনুভূতি যেন ছড়িয়ে পড়ল শরীরেরও পরতে পরতে। আর শুয়ে থাকতে পারলাম না। উঠে বাবার ঘরে গেলাম, সন্তর্পণে, পা টিপে টিপে। উনি ঘুমোচ্ছেন, জামী খাটে বসে জেগে আছে। আমাকে দেখে নিঃশব্দে উঠে আমার সঙ্গে এ ঘরে এল। দুই ট্রেসারের অগ্নিঝলকের মধ্যবর্তী সময়টা কি নিকষ কালো। হঠাৎ খেয়াল হল, গভীর রাতে ঢাকা তো কখনো এত অন্ধকার থাকে না। রাস্তার বাতির জন্য একটা আবছা আলোময় আভা ফুটে থাকে ঢাকার আকাশে। আজ কি হল? তখন লক্ষ্য করলাম, আমাদের বাসায় সামনের বাতিগুলো জ্বলছে না। পেছনের ঘরের জানালা দিয়ে বলাকা বিল্ডিংয়ের দিকে তাকালাম, সেদিকেও কোন আলোর আভা নেই। তাহলে কি ব্ল্যাক আউট দেওয়া হয়েছে?



বাকি রাতটা আর ঘুম এল না। শরীফ, জামী, আমি তিনজনে বিভিন্ন ঘরের বিভিন্ন জানালা ও বারান্দাতে ঘুরে ঘুরেই কাটিয়ে দিলাম।



একাত্তরের দিনগুলি

জাহানারা ইমাম




-----

১৯৭১: একটি সত্য গল্প 1971: A True Story -একটি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আপোষহীন পেইজ

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:২৪

নিজাম বলেছেন: এরকম লাখো মা আছে এদেশে। যেদিন তাদের খোজ নেয়া হবে সেদিনই শহীদ জননীর লেখা স্বার্থক হবে।

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১:৫৬

নিঃসঙ্গ অভিযাত্রিক বলেছেন: এরকম লাখো মা আছে এদেশে।

অত্যন্ত সত্য কথা...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.