নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবন সংগ্রামে হেরে যাওয়ার মাঝে কোনো বীরত্ব থাকেনা; তাই জীবনের এই যুদ্ধ ক্ষেত্রে সাহসীকতার সাথে লড়াই করার মাঝেই জীবনের প্রকৃত বীরত্ব লুকিয়ে থাকে, আর ভাগ্য সবসময় সাহসীদের পক্ষেই কাজ করে।

নৈশ শিকারী

আমার এই জন্মভূমিকে খুব ভালোবাসি আর এমন দেশের স্বপ্ন দেখি যে দেশে দারিদ্র্যতা, ক্ষুধা আর পথশিশু থাকবেনা। আর এই প্রকল্প বাস্তবায়নে আমৃত্যু কাজ করে যাবো ইনশাআল্লাহ।

নৈশ শিকারী › বিস্তারিত পোস্টঃ

পবিত্র কোরআনের আলোকে বিজ্ঞান। (পর্ব:৬II) সৃষ্টির মাঝে মহান স্রষ্টা আল্লাহ পাকের অস্তিত্ব ও বিজ্ঞান।

২৮ শে মে, ২০১৫ রাত ১০:১৬

আমদের এই সৌরজগতে ৯ টি গ্রহ এবং ১৬২ টি উপগ্রহ রয়েছে। এই গ্রহগুলো নিজ নিজ কক্ষপথে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে। সূর্যের সবচেয়ে কাছের গ্রহ থেকে শুরু করে এই ৯ টি গ্রহ যথাক্রমে বুধ, শুক্র, পৃথিবী, মঙ্গল, বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস নেপচুন এবং প্লুটো এই নয়টি গ্রহের মধ্যে পৃথিবীই একমাত্র গ্রহ যা জীবনধারণের উপযোগী করে গড়ে তোলা হয়েছে। আসুন জানার চেষ্টা করি গ্রহগুলো কিভাবে নির্দিষ্ট কক্ষপথে থেকে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে। সূর্যের মহাকর্ষীয় আকর্ষণ শক্তি এবং গ্রহের ঘূর্ণন শক্তির মধ্যে সাম্যতা গ্রহটিকে তার নিজ অক্ষে থাকতে সাহায্য করে। সূর্যের শক্তিশালী আকর্ষণ বল গ্রহটিকে নিজের দিকে আকর্ষণ করে, একে বলা হয় কেন্দ্রমুখী বল। আর ঘূর্ণায়মান গ্রহের বহির্মুখী বল এই আকর্ষণ শক্তির বিপরীত দিকে ক্রিয়া করে। একে বলা হয় কেন্দ্রবিমুখী বল। এই দুটি বল পরস্পর সমান এবং বিপরীত দিকে ক্রিয়াশীল বলে গ্রহটি একটি নির্দিষ্ট কক্ষপথে থেকে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে। যদি গ্রহের এই কেন্দ্রবিমুখী বল কিছুটা কম হতো অর্থাৎ গ্রহের ঘূর্ণন গতিশক্তি কিছুটা কম হতো তবে এটি সমানভাবে সূর্যের আকর্ষণ শক্তিকে নিষ্ক্রিয় করতে পারত না। সূর্য গ্রহটিকে নিজের দিকে আকর্ষণ করতো।

ফলে গ্রহটি ক্রমাগত ক্ষুদ্রতর ব্যাসার্ধের কক্ষপথে পরিভ্রমণ করে একসময় সূর্যের সাথে মিশে যেত। আবার যদি গ্রহের ঘূর্ণন গতিশক্তি বেশী হত তবে এর কেন্দ্রবিমুখী বল সূর্যের আকর্ষণ বল হতে বেশী হত। ফলে সূর্য থেকে গ্রহটির দূরত্ব বাড়তে থাকত। ক্রমাগত বৃহত্তর ব্যাসার্ধের কক্ষপথে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতে করতে একসময় গ্রহটি সূর্যের আকর্ষণ শক্তি ছিন্ন করে মহাশূন্যে হারিয়ে যেত। তাই কোনো গ্রহকে তার নির্দিষ্ট কক্ষপথে থেকে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতে হলে গ্রহটির উপর সূর্যের আকর্ষণ শক্তি এবং গ্রহটির কেন্দ্রবিমুখী বল সমান হতে হবে। অর্থাৎ সূর্য থেকে দূরত্বের উপর নির্ভর করে গ্রহটিকে একটি নির্দিষ্ট গতিতে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতে হবে। অন্যথায় গ্রহটি হয় মহাশূন্যে হারিয়ে যাবে নাহয় সূর্যের সাথে মিশে যাবে। এই সাম্যতা আমাদের পৃথিবীর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। যদি এই দুটি বলের মধ্যে সাম্যতা না থাকত অর্থাৎ পৃথিবী যদি একটি নির্দিষ্ট গতিতে পৃথিবী সূর্যকে প্রদক্ষিণ না করত তবে পৃথিবীতে প্রানের অস্তিত্ব থাকত না। তাহলে প্রশ্ন এসে যায় বিগ ব্যাং যদি একটি কাঁকতলিয় ঘটনা হয় তাহলে বলের এত সূক্ষ্ম এবং সঠিক সাম্যতা কিভাবে আসে?

নক্ষত্রবিদ্যা থেকে জানা যায়, আমাদের সৌরজগতের অন্যান্য গ্রহগুলোর সৌর ব্যবস্থার উপর আমাদের পৃথিবীর নিরাপত্তা এবং ব্যবস্থা নির্ভরশীল। বৃহস্পতি গ্রহ এর একটি চমৎকার উদাহরণ। আমাদের সৌরজগতে এই গ্রহটির নির্দিষ্ট অবস্থান পৃথিবীর সৌর ব্যবস্থার সাম্যতা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নক্ষত্র গতি বিদ্যার গননার মাধ্যমে পাওয়া গেছে যে, বৃহস্পতির বর্তমান অবস্থান সৌরজগতের অন্যান্য গ্রহগুলোকে তাদের নির্দিষ্ট কক্ষপথে থাকতে সাহায্য করে। বৃহস্পতি গ্রহের মতো বৃহৎ গ্রহ অন্যান্য সৌর ব্যবস্থায়ও পাওয়া গেছে। কিন্তু সেসব গ্রহ তাদের নিজ সৌর ব্যবস্থায় এতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে না। ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির নক্ষত্র বিজ্ঞানের প্রফেসর পিটার ওয়ার্ড একে এভাবে তুলে ধরেন,

“All the Jupiters seen today are bad Jupiters. Ours is the only good one we know of. And it’s got to be good, or you’re thrown out into dark space or into your sun”

পৃথিবীর উপর বৃহস্পতি গ্রহের কার্যকারিতা এতোটাই যে যদি এই গ্রহটি না থাকত তবে পৃথিবীতে প্রানের সৃষ্টি হতে পারত না বৃহস্পতি গ্রহের সৃষ্ট চুম্বকীয় ক্ষেত্র উল্কা এবং ধূমকেতুগুলোর গতিপথ বদল করে আমাদের পৃথিবীর সৌর ব্যবস্থায় প্রবেশে বাধার সৃষ্টি করে এবং পৃথিবীকে এসব উল্কা এবং ধূমকেতুর লক্ষ্যবস্তু হওয়া থেকে রক্ষা করে। বৃহস্পতি গ্রহের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজের কথা উল্লেখ করেন নক্ষত্রবিদ জর্জ ওয়েদারহিল তার “How Special ঝুপিটের Is” আর্টিকেল এ তিনি বলেন,

“Without a large planet positioned precisely where Jupiter is, the earth would have been struck a thousand times more frequently in the past by comets and meteors and other interplanetary debris. If it were not for Jupiter, we wouldn’t be around to study the origin of the solar system.”

গবেষণার মাধ্যমে জানা গেছে যে পৃথিবী এবং এর উপগ্রহ চন্দ্রের মধ্যে যে সৌর ব্যবস্থা বিদ্যমান তা সৌরজগতের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই দুটির অনুপস্থিতিতে বৃহস্পতি গ্রহের আকর্ষণ শক্তি শুক্র ও বুধ গ্রহের স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করত। এই আকর্ষণ শক্তি এই দুটি গ্রহের মধ্যে দূরত্ব ক্রমান্বয়ে কমিয়ে আনত। ফলে একসময় বুধ সৌর জগত হতে ছিতকে যেত এবং শুক্র গ্রহের কক্ষপথ পরিবর্তিত হতো।বিজ্ঞানীরা আমাদের সৌরজগতের কম্পিউটার মডেল তৈরি করে দেখতেপান যে গ্রহ গুলোর মধ্যকার এই order এবং সামঞ্জস্যতা যা বিলিয়ন বছর ধরে রয়েছে তা গ্রহগুলোর সঠিক ভর এবং অবস্থানের কারনেই সম্ভব হয়েছে। যদি এই order, ভর বা অবস্থানের কিছুটা পরিবর্তন হতো তবে আমাদের সৌরজগত ও পৃথিবীর অস্তিত্ব থাকত না। The Astronomical জার্নাল এ ১৯৯৮ সালের নভেম্বর মাসের সঙ্কলনে বলা হয়,

‘Our basic finding is nevertheless an indication of the need for some sort of rudimentary “design” in the solar system to ensure long-term stability”

অন্যকথায়, এই সৌরজগত এবং এর ব্যবস্থা মহান আল্লাহতায়ালা মানুষের বসবাসের উপযোগী করে গড়ে তোলার জন্য সৃষ্টি করেছেন। তিনি কোরআনে বলেছেন,

“তিনি তোমাদের কল্যাণের জন্য রাত ও দিন এবং সূর্য ও চন্দ্রকে বশীভূত করে রেখেছেন এবং সমস্ত তারকাও তাঁরই হুকুমে বশীভূত রয়েছে। যারা বুদ্ধিবৃত্তিকে কাজে লাগায় তাদের জন্য রয়েছে এর মধ্যে প্রচুর নিদর্শন। (আন নাহল। ১২)"

সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্ব এবং এর ঘূর্ণনের হার পৃথিবীতে জীবনের অস্তিত্বের ক্ষেত্রে যেমন গুরুত্বপূর্ণ ঠিক তেমনি এর আকৃতি এবং এর অভ্যন্তরের পদার্থ সমূহের উপড়ও নির্ভরশীল। আমেরিকান ভূতত্ত্ববিদ ফ্রাংক প্রেস এবং রেমন্ড সিলভার তাদের গবেষণার মাধ্যমে প্রাপ্ত ডাটার উপরভিত্তি করে বলেন, "পৃথিবীর আয়তন একেজীবনধারণের উপযোগী করে তোলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। যদি পৃথিবীর আয়তন কিছুটা কম হতো তবে এটি এর বর্তমান বায়ুমণ্ডল ধরে রাখতে পারত না। কারন এর অভিকর্ষীয় শক্তি গ্যাস সমূহকে ধরে রাখার ক্ষেত্রে যথেষ্ট হতো না। আবার যদি এর ভর কিছুটা বেশি হতো তবে এর শক্তিশালী অভিকর্ষীয় আকর্ষণ শক্তির দ্বারা এটি বেশি পরিমাণ গ্যাস ( ক্ষতিকারক গ্যাস সমুহ সহ) বায়ুমণ্ডলে ধারন করত। পৃথিবীর ভরের মতই এর আভ্যন্তরীণ পদার্থ সমূহের অবস্থা জীবনধারণের সহায়ক হিসেবে সূক্ষ্মভাবে পরিকল্পিত। এর কেন্দ্রের আয়রন কোর ( Iron core) এর চুম্বকীয় ক্ষেত্র তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে যা প্রাণ বা মানুষের জীবন ব্যবস্থার ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। "

ফ্রাংক প্রেস এবং রেমন্ড সেইভার বলেন “ পৃথিবীর অভ্যন্তরভাগ বিশাল কিন্তু সুষম তাপীয় ইঞ্জিন ব্যবস্থা যা Radioactivity দ্বারা পরিচালিত হয়। যদি এই তাপীয় ব্যবস্থা কিছুটা ধীরগতিতে চলত তবে ভূপৃষ্ঠের কার্যক্রমও ধীরগতিতে চলত। এর ফলশ্রুতিতে Iron core এর সৃষ্টি হত না এবং পৃথিবীর চুম্বক ক্ষেত্র বা ভূচুম্বকীয় ব্যবস্থা সৃষ্টি হত না। যদি এই ব্যবস্থা কিছুটা দ্রুতগতির হত তবে ভূপৃষ্ঠে প্রতিদিনই ভুমিকম্প এবং অগ্ন্যূৎপাত ঘটত প্রেস এবং সিলভার যে চুম্বক ক্ষেত্রের কথা বর্ণনা করেছেন তা আমাদের অস্তিত্ব রক্ষার ক্ষেত্রে অতীব গুরুত্বপূর্ণ। এই চুম্বকক্ষেত্রটি পৃথিবীর কেন্দ্রের চুম্বকীয় ধাতু যেমন লোহা এবং নিকেল দ্বারা সৃষ্টি হয়। এই কোরটির দুটি অংশ আছে। Outer Core এবং Inner Core। Inner ছোরে কঠিন পদার্থ দ্বারা গঠিত এবং Outer Coreটি তরল। এই দুটি লেয়ার পরস্পর বিপরীত দিকে ঘুরতে থাকে এবং তাদের এই ঘূর্ণনের ভূচুম্বকীয় ক্ষেত্র তৈরি হয়। এই চুম্বকীয় ক্ষেত্রটি আমাদের বায়ুমণ্ডলের স্তর ধরে রাখে এবং নক্ষত্রগুলো থেকে বিকিরিত ক্ষতিকারক Radiation হতে আমাদে রক্ষা করে।

এই চুম্বক ক্ষেত্রটি আমাদের বায়ুমণ্ডল ছেড়ে ১০০০০ কিমি পর্যন্ত বিস্তৃত। এটি পৃথিবী রক্ষাকারী বেল্ট হিসেবে কাজ করে। একে বলা হয় The Allan Belt. পৃথিবী মাঝেমাঝে প্রচণ্ড কসমিক রেডিয়েশনের প্রভাব বলয়ের মধ্যে পরে যায়। এই রেডিয়েশন হিরোশিমায় নিক্ষিপ্ত পারমাণবিক বোমার চেয়ে ১০০ বিলিয়ন গুন বেশি শক্তিশালী। কিন্তু এই Van Allan Belt এই রেডিয়েশন এর মাত্র ০.১% পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে আসতে দেয় যা বায়ুমণ্ডল কর্তৃক শোষিত হয়। এভাবে এই চুম্বক ক্ষেত্রটি পৃথিবী তথা মানুষের জন্য রক্ষাকারী ব্যূহ হিসেবে কাজ করে। এই চুম্বক ক্ষেত্র হতে প্রায় ১ বিলিয়ন অ্যাম্পিয়ার তড়িৎ প্রবাহের প্রয়োজন হয়েছে যা মানুষের সৃষ্টি থেকে এখন পর্যন্ত মানুষ দ্বারা তৈরিকৃত তড়িৎ শক্তির কাছাকাছি। যদি এই বেল্টটি না থাকত তাহলে পৃথিবী Cosmic Radiation দ্বারা ধবংস হয়ে যেত। ভূপৃষ্ঠের কেন্দ্রস্থলটি সঠিকভাবে এবং সঠিক পদার্থ দ্বারা গঠিত হওয়ার কারনেই এই পৃথিবী এসব রেডিয়েশন হতে রক্ষা পেয়েছে এবং আমাদের অস্তিত্ব টিকে রয়েছে। এসব বিষয় এটাই প্রমাণ করে যে পৃথিবীতে মানুষের অস্তিত্ব একটি মহাপরিকল্পনার ফসল। কোনো কাঁকতলিয় ঘতনা নয়।

মহান আল্লাহ্তায়ালাই পৃথিবী সৃষ্টি এবংএকে মানুষের বসবাসের উপযোগীকরে গড়ে তুলেছেন। এখন পর্যন্ত আমাদের সামনে যেসব বিষয় এসেছে (আগের পর্বগুলোতে) তাতে দেখা যায় যে এই মহাবিশ্ব, আমাদের সৌরজগৎ, পৃথিবীইত্যদির সৃষ্টি কাঁকতলিয় হতে পারেনা। এমনকি সবচেয়ে সরল এককোষী প্রাণটির সৃষ্টিও কাঁকতলিয় ভাবে হতে পারেনা। নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের প্রফেসর এবং বিশেষজ্ঞ ড়োবেরট Shaprio গানিতিক গবেষণার মাধ্যমে ব্যক্টেরিয়ার ২০০০ প্রোটিন অণুর কাঁকতলিয় ভাবে সঠিক হওয়ার সম্ভাব্যতা পান ১/১০^৪০০০ , যা এককথায় অসম্ভব। আর মানবদেহে বিদ্যমান ২০০০০০ বিভিন্ন ধরনের প্রোটিন অণুর কাঁকতলিয় ভাবে সঠিক হওয়ার সম্ভাব্যতা গণনাই করা যাবে না এবং অসম্ভব।তাহলে আমরা কিভাবে বিশ্বাস করি যে মানুষ বিবর্তনের ফলে আপনা আপনি সৃষ্টি। কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত গণিতবিদ্যা বিভাগের প্রফেসর Chandra Wickramasinghe, Robert Shaprio এর গণনা সম্পর্কে বলেন,

“The likelihood of the spontaneous formation of life from inanimate matter is one to a number with 104000 noughts after it…It is big enough to bury Darwin and the whole theory of evolution. There was no primeval soup, neither on this planet nor on any other, and if the beginnings of life were not random, they must therefore have been the product of purposeful intelligence.’'

সবচেয়ে সরলতম প্রোটিন অণুটির গঠন এত জটিল যে এটি দুর্ঘটনাবশত বা কাঁকতলিয় ভাবে সৃষ্টি হওয়া সম্ভব নয়। একটি সাধারন প্রোটিন অণু ২৮৮ টি ১২ ধরণের অ্যামাইনো এসিড দ্বারা গঠিত যার ১০^৩০০ টি বিভিন্ন ধরণের সমন্বয় সম্ভব। কিন্তু এসবের মধ্যে শুধুমাত্র এক ধরণের সমন্বয়ের মাধ্যমে প্রানের প্রোটিন অণু গঠিত হয়। অন্যান্য সমন্বয় গুলো অকার্যকরী অথবা ক্ষতিকারক। কোনো সৃষ্টিকর্তা ছাড়া প্রাণের প্রোটিন অণু সঠিক ভাবে গঠনের সম্ভাব্যতা ১/ ১০^৩০০ এবং গনিতিক নিয়ম অনুযায়ী ১/১০^৫০ এর চেয়ে ছোট কোনো সম্ভাব্যতাকেই অসম্ভব বলে ধরা হয়। এই ২৮৮ টি অ্যামাইনো এসিড নিয়ে গঠিত প্রোটিন অণুটি হচ্ছে সবচেয়ে সরলতম।

যখন একে মানবদেহের জটিল প্রোটিন অণু, যা হাজার হাজার অ্যামাইনো এসিড নিয়ে গঠিত, এর সাথে তুলনা করা হবে তখন এই জটিল প্রোটিন অণুর কাঁকতলিয় ভাবে গঠিত হওয়াটা অসম্ভবের চেয়েও বেশী কিছু। যদি জীবন সৃষ্টির পরবর্তী পর্যায়ে যাওয়া হয় তখন এই প্রোটিন অণুটিও প্রাণ সৃষ্টির ক্ষেত্রে খুব বড় কিছু বলে মনে হবে না। Mycopl Hominis H39 হচ্ছে মানুষের জানা সবচেয়ে প্রাগৌতিহাসিক ব্যাকটেরিয়া যা ৬০০ টি বিভিন্ন ধরণের প্রোটিন অণু নিয়ে গঠিত। এই ক্ষেত্রে এটির আপনা আপনি সঠিক হয়ে সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাব্যতা অসম্ভব বললেও কম বলা হয়। আমেরিকান বিজ্ঞানী উইলিয়াম স্টোকস তার “Essentials of earth story” বইটিতে Cytochrome-C প্রোটিন কাঁকতলিয় ভাবে সৃষ্টি হওয়ার সম্ভবনার ব্যাপারে বলেন,

“The likely probability of the formation of a cytochrome-C sequence is zero… To accept the alternative—that some metaphysical powers beyond our definition must have effected its formation—isn’t appropriate to the goals of science. Therefore, we have to look into the first hypothesis”

দর্শন এবং বিজ্ঞানের নিয়ম অনুযায়ী তাই বলা যায় যে যেহেতু এসব জিনিস কাঁকতলিয় ভাবে সঠিক হওয়ার সম্ভবনা শূন্য, তাহলে অবশ্যই এসব সৃষ্টিকৃত বা Created. বিবর্তনবাদ মতানুসারীরা বিজ্ঞান দ্বারা সমর্থিত “zero probability” কে বিজ্ঞানসম্মত ভেবে থাকেন। বস্তুবাদী মতাদর্শ সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বে বিশ্বাস করে না। তাই তারা এমন বিষয়কে গ্রহন করছে যা তাদের বৈজ্ঞানিক দর্শনেরই বিরোধী।

সৃষ্টির নির্ভুল অনুপাতঃ
সৃষ্টিতত্ত্ব বিজ্ঞানীরা এ তথ্য উপলব্ধি করেছেন যে, নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডল জুড়ে যেখানে যা কিছু রয়েছে সে সবের মধ্যে একটি নির্ভুল অনুপাত খুজে পাওয়া যায়। এ অনুপাত নির্ধারণের মধ্যে সুপরিকল্পনা এবং বুদ্ধির বিকাস সুস্পষ্ট। পৃথিবীর ঘটনা প্রবাহের বৈশিষ্ট্যাবলী এবং আকাশমণ্ডলের দৃশ্যাবলী নির্ধারিত হয়ে থাকে পদার্থ বিজ্ঞানের কিছু নিয়মের মাধ্যমে। এ নিয়ম গুলোর মধ্যে একটি সুন্দর সূক্ষ্ম সমতা কার্যকর ভূমিকা পালন করে। উদাহরণ স্বরূপ সৌরজগতের গ্রহ- উপগ্রহগুলোর ঘূর্ণনপ্রকৃতির নিয়মের কথা ধরা যাক।বিজ্ঞানী কেপলার গ্রহউপগ্রহগুলোর সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘূর্ণনের সুত্র তিনটি আবিষ্কার করেন।তাই সুত্র তিনটিকে Kepler’s Law বলা হয়।

সুত্র তিনটি হলোঃ
১। প্রতিটি গ্রহ একটি উপবৃত্তীয় কক্ষে সূর্যকে পরিভ্রমন করে এবং এই উপবৃত্তের দুটি ফোকাসের একটিতে সূর্য অবস্থান করে।
২। সূর্য এবং গ্রহের সংযোগকারী রেখা সমান সময়ে সমান ক্ষেত্র অতিক্রম করে।
৩। যেকনো গ্রহের নাক্ষত্রকালের বর্গ তাদের সূর্যের মধ্যবর্তী দূরত্বের ঘন অনুপাতের সমান।
এসব সুত্রের বিশ্লেষণ থেকে দেখা যায়, সূর্য এবং গ্রহয়গুলোর মধ্যে একটি নির্দিষ্ট এবং নির্ভুল অনুপাত বিদ্যমান। পূর্বে (আগের পর্বগুলোতে) এ বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। পৃথিবী বর্তমানে যে অবস্থানে রয়েছে তা হতে যদি ১% সূর্যের কাছাকাছি যেত তাহলে এই পৃথিবী জ্বলে –পুড়ে শুক্র গ্রহের রূপ ধারন করতো। এখানে জীবনের সৃষ্টি হওয়া সম্ভব হতো না। আর যদি পৃথিবী ১% দূরে সরে যেত তাহলে এটি মঙ্গল গ্রহের মত তুষারাচ্ছন্ন হয়ে পড়তো। পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ চাঁদ যদি তার অবস্থান থেকে কয়েক কিঃমিঃ পৃথিবীর নিকটবর্তী হতো তাহলে নদি- সমুদ্রের পানি ভূমীকে নিমজ্জিত করে রাখতো। আর যদি চাঁদ কিছুটা দূরে সরে যেত তাহলে পৃথিবী মরুভূমিতে পরিণত হতো। Solar System Atomic Model– থেকে আমরা দেখি সেখানে পরমাণুর নিউক্লিয়াস কে ঘিরে ইলেকট্রন ঘুরতে থাকে, আর নিউক্লিয়াস এ থাকে প্রোটন এবং নিউট্রন।

চারটি মৌলিক বল, যথাঃ সবল নিউক্লীয় বল, দুর্বল নিউক্লীয় বল,মহাকর্ষ বল এবং তড়িৎ চুম্বকীয় বল পরমাণুর গঠন উপাদানগুলোর উপর সক্রিয়। সবল নিউক্লীয় বল দুটি প্রোটনকে একসঙ্গে আকর্ষণ করে। কিন্তু তড়িৎ চুম্বকীয় শক্তি তাদের এক হতে বাধার সৃষ্টি করে। যদি সবল নিউক্লীয় বল সামান্য দুর্বল হতো তাহলে সাব-এ্যাটমিক কণাগুলো একসঙ্গে সংযোজিত হয়ে পরমাণুর নিউক্লি গঠন করতে পারতোনা। আবার যদি সবল নিউক্লীয় বল কিছুটা শক্তিশালী হতো তাহলে মহাবিশ্বের সকল হাইড্রোজেন হিলিয়ামে রূপান্তরিত হতো। বিশ্বজগতে হাইড্রোজেন খুজে পাওয়া যেত না। কিন্তু হাইড্রোজেন জীব কোষ গঠনে অপরিহার্য। সূর্য এবং অন্যান্য নক্ষত্র লক্ষ লক্ষ বছর ধরে আমাদের আলো এবং তাপ দিয়ে যাচ্ছে তাও এই হাইড্রোজেন জ্বালানীর কারনে। রসায়ন বিজ্ঞান থেকে আমরা জানি প্রত্যেকটি উপাদান নির্দিষ্ট আনুপাতিক হারে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে।

দুটি হাইড্রোজেন পরমানু এবং একটি অক্সিজেন পরমাণুর বিক্রিয়ায় পানির একটি অনু গঠিত হয়। এটা ছাড়া অন্যকোনো ভাবে পানির অনু সৃষ্টি করা অসম্ভব। বাতাসে অক্সিজেন এবং নাইট্রোজেনের অনুপাত ৪:১। এ অনুপাত যদি উল্টে দেয়া হতো অর্থাৎ ৪ ভাগ অক্সিজেন এবং ১ ভাগ নিত্রজেন হতো তাহলে সামান্য ফুলকির ফলেই ভয়ানক অগ্নিকান্ড ঘটত। আর অক্সিজেনের আধিক্যের দরুন সমগ্র প্রাণী জগত নিঃশ্বাস জনিত জটিলতায় বিনাশ হয়ে যেত। অপরদিকে নাইট্রোজেনের পরিমাণ কম হলে উদ্ভিদ জগতের absorption প্রক্রিয়া ব্যাহত হতো। সুতরাং এটি খুবই পরিষ্কার যে, আল্লাহ্ নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলকে একটি সুষম আনুপাতিক ধারায় বিন্যস্ত্য করেছেন যাতে সবকিছু সঠিকভাবে চলে, যাতে এই পৃথিবী মানুষের বসবাসের উপযোগী হয়। এ সম্পর্কে কোরআনে বলা আছে,

"তিনিই সঠিকভাবে নভোমন্ডল সৃষ্টি করেছেন। যেদিন তিনি বলবেনঃ হয়ে যা, অতঃপর হয়ে যাবে। তাঁর কথা সত্য। যেদিন শিঙ্গায় ফুৎকার করা হবে, সেদিন তাঁরই আধিপত্য হবে। তিনি অদৃশ্য বিষয়ে এবং প্রত্যক্ষ বিষয়ে জ্ঞাত। তিনিই প্রজ্ঞাময়, সর্বজ্ঞ।(৬:৭৩)" "আল্লাহ যথার্থরূপে নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল সৃষ্টি করেছেন। এতে নিদর্শন রয়েছে ঈমানদার সম্প্রদায়ের জন্যে।(২৯:৪৪)। এবং তোমাদের সেবায় নিয়োজিত করেছেন সূর্যকে এবং চন্দ্রকে সর্বদা এক নিয়মে এবং রাত্রি ও দিবাকে তোমাদের কাজে লাগিয়েছেন। (১৪:৩৩)।"

লেখাটি কষ্ট করে পড়ার জন্য ধন্যবাদ, যদি কোনো ভুল হয় ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। চলবে.....

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৪:৪৪

রাঘব বোয়াল বলেছেন: আপনাকে অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে + । অনেক কষ্ট করে এইরকম একটা পোস্ট দেবার জন্য আবার +।

০৪ ঠা মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২৬

নৈশ শিকারী বলেছেন: কষ্ট করে পড়ার জন্য আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।

২| ২৯ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৪:৫৮

জাতি_ধর্ম_বর্ণ বলেছেন: সবই আল্লাহ'র ইচ্ছা, তাঁর হুকুম ছাড়া দুনিয়াতে কিছুই হয় না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.