নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবন সংগ্রামে হেরে যাওয়ার মাঝে কোনো বীরত্ব থাকেনা; তাই জীবনের এই যুদ্ধ ক্ষেত্রে সাহসীকতার সাথে লড়াই করার মাঝেই জীবনের প্রকৃত বীরত্ব লুকিয়ে থাকে, আর ভাগ্য সবসময় সাহসীদের পক্ষেই কাজ করে।

নৈশ শিকারী

আমার এই জন্মভূমিকে খুব ভালোবাসি আর এমন দেশের স্বপ্ন দেখি যে দেশে দারিদ্র্যতা, ক্ষুধা আর পথশিশু থাকবেনা। আর এই প্রকল্প বাস্তবায়নে আমৃত্যু কাজ করে যাবো ইনশাআল্লাহ।

নৈশ শিকারী › বিস্তারিত পোস্টঃ

আল্লাহ পাক কি এমন একটা পাথর বানাতে পারেন; যার ওজন তিনি নিজেই বহন করতে পারবেন না?

১০ ই জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৪

আল্লাহ পাক কি এমন একটা পাথর বানাতে পারেন; যার ওজন তিনি নিজেই বহন করতে পারবেন না? এটা কথিত মুক্তমনাদের অন্যতম একটা প্রশ্ন; আসুন এর ব্যাখ্যা করি, উত্তর: সেটা সম্ভব না, কারন সেটা আল্লাহর অস্তিত্তের বিরোধী। আসলে এটাকে বলে প্যারাডক্স। যেমন: প্যারাডক্সের মানে হলো এক বা একাধিক বাক্য যা নিজেকে বা নিজেদেরকে স্ববিরোধী করে ফেলে। নিচের বাক্য দুটি খেয়াল করা যাক, নিচের বাক্যটি মিথ্যা। উপরের বাক্যটি সত্য। যেমন “আমি সবসময় মিথ্যা কথা বলি” এই বাক্য যে সব সময় মিথ্যা কথা বলে সে যদি বলে, আমি সবসময় মিথ্যা কথা বলি তাহলে এই কথা কি সত্যি বলে ধরে নেয়া হবে? কিন্তু সবসময় যে মিথ্যা কথা বলে সে তো এই কথাও মিথ্যা বললো। কি এবার তো পরিস্কার হলো যে প্যারাডক্স মানে কি? প্যারাডক্সের কিছু অপব্যবহার আছে।

যেমন এটাকে যদি কোন সত্য বাক্যের সাথে জুরে দেয়া যায় তখন সত্য বাক্যটিকে আর সত্য বাক্য হিসাবে প্রমান করা যায় না। যেমন কিছুক্ষন আগে দেয়া উদাহরণটিকে যদি ব্যবহার করিঃ "করিম সবসময় সত্যবাদি; করিম মিথ্যা কথা বললো।" একই সাথে একটি ব্যাপার সত্য অথবা মিথ্যা হতে পারে না। প্যারাডক্স এই ধাধাকেই ব্যবহার করে। আল্লাহের ক্ষমতা খাটো করার জন্যও প্যারাডক্স ব্যবহার করা হয়।এই ক্ষেত্রে প্যারাডক্স এরকমঃ “আল্লাহ তো সব তৈরী করতে পারেন। তো আল্লাহ কি এমন পাথর তৈরী করতে পারেন যা উনি নিজেই উঠাতে পারেন না”। প্রথমত প্রশ্নটাতেই স্ববিরোধী যুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। এর উত্তরে প্রশ্নকর্তাকে জিজ্ঞাশা করা যেতে পারে, ”Can you tell me story that you never have?”, “আপনি কি কোন কথা না বলে একটা কথা বলতে পারবেন? যদি তা না পারেন, তাহলে সেটা পেরে তারপর আমার কাছে আসুন।”

একটু সহজ ভাবে বললে, ধরা যাক আপনি একজন দক্ষ ও ভালো মানের নামকরা মোটর সাইকেল রেইসার। আপনি সবসময় নিজেকে ভালো ও দক্ষ মোটর সাইকেল রেইসার হিসেবে পরিচয় দিতে ভালোবাসেন, কারণ আপনি সত্যি সত্যিই ভালো রেইসার সেটা আপনি ভালোভাবে অবগত তাই আপনি আপনার সমালোচকদের উদ্দেশ্যে বললেন, আমি যে কোন ধরনের মোটর সাইকেল রেইসে জিততে সক্ষম । এখন সমালোচক পক্ষ থেকে আপনাকে বলা হল যে, “আপনি কি এমন কোন মোটর সাইকেল চালাতে পারেন! এবং সেটা চালিয়ে রেইস জিততে পারেন যা আদৌ নেই? ” যদি আপনি তা করতে পারেন তাহলে আপনি একজন ভালো রেইসার এবং যে কোন মোটর সাইকেলের রেইসে আপনি জিততে সক্ষম আর যদি তা করতে না পারেন তাহলে আপনি যে কোন ধরনের মোটর সাইকেল চালাতেও জানেন না এবং জিতার মত ক্ষমতাও আপনার নেই !!


কি বুঝলেন প্রশ্ন কতটা ভিত্তিহীন ??? এধরনের কথায় হয়ত যুক্তির পর্দা দিয়ে কোন সত্য বিষয়কে ঢেকে দিয়ে মিথ্যা প্রমান করা যায় কিন্তু পর্দার আড়ালে বাস্তবতা যেটা ছিল সেটা সত্যই থেকে যাবে। প্রথমতঃ কথা হলো, ধরেন কেউ এই প্রশ্নের জবাবে এই উত্তর দিলো যে,আল্লাহ্ উঠাতে পারবেন না, এমন পাথর আল্লাহও বানাতে পারবেন না। তো এতে কি সমস্যা? এর দ্বারাতো আর আল্লাহ্ নাই প্রমাণ হয়না। বরং আল্লাহ্ আছেন এবং তিনি বিরাট শক্তিমান এই বিশ্বাস করার পরই তো এই প্রশ্ন করা যায়। তখন নাস্তিক বলবে যে, সমস্যা একটা আছে। আল্লাহ্ নাই এটা প্রমাণ হয়না বুঝলাম, কিন্তু কোরআনের আয়াত ভুল প্রমাণ হয়; কেননা, কোরানে আছে যে, আল্লাহ্সব করতে পারেন। নাস্তিকের এই কথার জবাব হলো, কোরানেই আবার অন্য আয়াতে এটাকে ব্যাখ্যা করা হয়েছে যে, আল্লাহ যা চান, সেটাই করতে পারেন। তাই বলা যায় , আল্লাহ্ এমন পাথর বানাতে চাবেন না, যেটা তিনি নিজেই উঠাতে পারবেন না। এটা হলো সবচেয়ে সহজ সরল জবাব।

এটা যৌক্তিক প্রশ্ন মনে হলেও , এর কোন ভিত্তি নেই যা আল্লাহ সম্পর্কে সম্পূর্ন অযৌক্তিক কূযুক্তি। কেননা , মানুষ এমন একটা বস্তু তৈরি করল যা সে উঠাতে পারবে না! এটা কোন দৃষ্টিতে আপনাদের কাছে যুক্তি মনে হচ্ছে? আমার কাছে তো আবালের চিন্তাভাবনার ফল মনে হচ্ছে!! কেননা মানুষ যেভাবেই যেরকম ভারি বস্তুই তৈরি করুক না কেন, সেটাকে কোন উপায়ে, কত টুকু বল প্রয়োগ করলে উঠানো যাবে, সেটাকে ক্রেন দিয়ে তুলবে নাকি অন্য কোন কৌশলে তুলবে সেটা মানুষের তথা তৈরি কারকের অবশ্যই জ্ঞাত বিষয়।

সুতরাং, এ ধরনের প্রশ্ন অযৌক্তিক ও ভিত্তিহীন। তাঁরা মূলত তাদের প্রশ্নে পিছনের ভিত্তিহীনতাকে লোকাতে সক্ষম হয় আমাদের সামনে। বিশেষ করে এই প্রশ্নটা আল্লাহর সাথে যায়-ই না , কারণ তিনি কুরআনে স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন তিনি যা ইচ্ছা তা করতে সক্ষম অর্থাৎ যা তার অনিচ্ছা তা তিনি করতে যৌক্তিক ভাবে সক্ষম হলেও তিনি তা করেন না যতক্ষন পর্যন্ত না তিনি তা চান। সুতরাং এক কথায় বলতে গেলে,হ্যাঁ আল্লাহ এমন একটি পাথর বানাতে পারেন যা তিনি তুলতে পারবেন না কিন্তু যতক্ষন পর্যন্ত তিনি তা তোলার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। সুতরাং স্ববিরোধী কাজ তিনি করবেন কেন?? সেটা তিনি অনেক আগেই বলে দিয়েছেন তাহলে তাকে কোনো যুক্তিতে বাঁধার সাধ্য আপনার নেই। কোন ক্লাস ফাইভের ছেলেও মনে হয় এভাবে উত্তর দিবে, হ্যা পারেন, এমন পাথর যা নিজেই উঠাতে পারেন না। কিন্তু ততক্ষণ পর্যন্ত তিনি তা উঠাতে পারবেন না, যতক্ষণ পর্যন্ত তিনি তা না চান। কিন্তু তিনি আবার এটি উঠাতে পারবেন, যখন তিনি তা চান। অর্থাৎ ঘটনা এই দাড়াল যে তিনি পারেন তবে করেন না। কী ভাই, মাথা কি ঘুরাইতাছে?

কিন্তু আল্লাহ পাক এসব কাজ করেন বলে কুরআন হাদীসেও নেই। যে কাজ তাকে দিয়ে মানায় না, সে কাজ করতে আমরা শুনি নাই। তাহলে বলুন তিনি তাঁর স্ববিরোধী কাজ কেন করবেন?? বস্তুত আল্লাহ পৃথিবীর কোন বস্তুর মত নহেন, যে আপনি ধারণা করবেন তিনি এরূপ করতে পারবেন কিনা, না কোন বস্তুর বৈশিষ্ট্য তাকে দিতে পারবেন, (যেমন: তিনি পাথর তুলতে পারবেন কি না) আপনাকে বুঝতে হবে, সৃষ্ট এবং স্রষ্টা এর পার্থক্য। আল্লাহ পাক কোন কিছুর মত নন, তাই কোন সৃষ্ট বস্তু বা প্রাণী বা অন্য কিছুর কোনরূপ বৈশিষ্ট্য, ক্ষমতা আল্লাহ পাকের উপর আরোপ করতে পারবেন না। জোর করে আরোপ করতে চাইলে বাক্যের কোন অর্থ থাকে না। কেননা তিনি এও বলেছেন যে জাগতিক ও পাথির্ব সকল বিষয় থেকে তিনি সম্পূর্ণ মুক্ত। এবং ভর বা ওজন এধরনের প্রশ্ন শুধুমাত্র সৃষ্টি জগতের জন্য, স্রষ্টার জগতে এর কোন অস্তিত্ব নেই। কেননা মহান আল্লাহ তা’য়ালা আরশের উপর সমাসিন। আর আরশ হচ্ছে সমগ্র সৃষ্টি জগতের উপর দিকে অসীম আলোক বর্ষ দূরে অবস্তিত।

যারা এধরনের প্রশ্ন করে, তারা আসলে নিজেরাই চিন্তা করে দেখেনি তাদের প্রশ্নটাই কতখানি অবাস্তব। প্রথমত, ভারি মানে কি? ভারি মানে হচ্ছে যার ওজন বেশি। ওজন কি? ওজন হচ্ছে অভিকর্ষ ফলে কোন বস্তু যে টান অনুভব করে। পৃথিবী কোন বস্তুকে যে বল দিয়ে টানে, সেটাকে ওজন বলে। এখন উপরের প্রশ্নটা কতখানি অবাস্তব সেটা চিন্তা করে দেখুন। প্রথমত, কোন কিছু ভারি হওয়া মানে অন্য কোন কিছু তাকে অভিকর্ষ দিয়ে টানছে। কিন্তু পৃথিবীতে কিংবা অন্যান্য গ্রহে ওজন-ভর থাকলেও পুরো সৃষ্টিজগত থেকে বাইরের জগতে এর অস্তিত্ব নেই বললেই চলে আর যদিও থাকে তাহলে তা আমাদের জাগতিক পর্যায়ের নয়। সুতরাং জাগতিক পর্যায়ের ওজন ভরের মাপকাঠিতে সৃষ্টিকর্তার জগতকে পরিমাপ করা অত্যান্ত অযৌক্তিক ।

আমরা ভূলে যাই স্রষ্টা সকল বিতর্কের উর্ধে কারন স্রষ্টা এমন মস্তিষ্ক মানুষকে দেন নাই যা দিয়ে স্রষ্টার অস্তিত্ব সরাসরি পর্যবেক্ষন করতে পারে, অথচ বর্তমান যুগের যুব সমাজ নাম মাত্র শিক্ষিত হয়ে স্রষ্টার অস্তিত্বের হাজার প্রমান থাকা সত্যেও স্রষ্টাকে অস্বিকার করে স্রষ্টার প্রত্যক্ষ দর্শনের অভাবে; এটাকে শিক্ষিতদের মূর্খামি নাকি মানসিক বিকার গ্রস্থ বোকামি বলবো?

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২৫

নৈশ শিকারী বলেছেন: ধন্যবাদ পরে চেষ্টা করব।

২| ১০ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ৯:৪৫

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: মানুষ যেহেতু চিন্তা-চেতনায় স্বাধীন, যে কোন প্রশ্ন করতেই পারে; এটা দোষের কিছুনা । আপনার উত্তর জোড়াতালি দেয়া । যাহোক, নাস্তিকরা আরো একটা প্রশ্ন করে । আল্লাহ্ কি আত্মহত্যা করতে পারে? এটার ব্যক্ষা চাচ্ছি!

১০ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১১:৪৮

নৈশ শিকারী বলেছেন: প্রথমত অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্ন যা এই পোস্টের বিষয় বস্তুর সাথে সামজ্জস্য পূর্ননা। মানুষ যা খুশি তা প্রশ্ন করতে পারে তবে সেটা যৌক্তিক এবং বিশ্লেষণ পূর্ণ হতে হয়, সাধারণত আবাল, বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও বিবেকহীনরাই অযৌক্তিক এবং তাৎপর্যহীন প্রশ্ন করে থাকে যা কখনোই গ্রহন যোগ্য বলে গন্য হয়না, স্রষ্টা আত্ন হত্যা করতে পারে কিনা এটা সম্পূর্ণ অবান্তর প্রশ্ন; কেননা অবিনশ্বর কিছুর ধ্বংসের কথা তথা আত্ন হত্যার কথা ভাবা আঁতেল পুষ্ট মগজের অসম্ভব কল্পনা প্রসুত বিষয়। জীবন, মৃত্যু, আত্ন হত্যা, ঘুম, খাদ্য গ্রহন এগুলো জৈবিক ক্রিয়াকলাপ এগুলো স্রষ্টার সাথে মিলানো যুক্তি যুক্ত নয়, যিনি স্রষ্টা তিনি সমস্ত জৈবিক ক্রিয়া এবং চিন্তা চেতনার উর্ধে।

৩| ১১ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১২:১১

সজা১২৩ বলেছেন: অত্যান্ত চমৎকার বিশ্লেষণ। স্রষ্টায় বিশ্বাস: কারা সঠিক? (আশা করি আস্তিক-নাস্তিক উভয়ে একমত হবেন)

১১ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১:৩৪

নৈশ শিকারী বলেছেন: ধন্যবাদ

৪| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:২৩

নুর আয়শা আব্দুর রহিম বলেছেন: ভাবছিলাম লেখাটি পাড়াব কি পড়বেনা.....!!!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.