নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি সেটা নই যেটা আপনি ভাবছেন..!! আমি সেটাই যেটা আপনি ভাবছেন না.!! আমাকে ভাবা যায় না..!! বুঝতে হয়.!!

আর. এন. রাজু

আমি একদিন মারা যাব, এই সত্যটা নিয়ে আমার খুব বেশি আক্ষেপ নেই। তবে, আমার মৃত্যুর পর আরও অসংখ্য অসাধারণ সব বই লেখা হবে, গান সৃষ্ট হবে, চলচিত্র নির্মিত হবে। কিন্তু আমি সে সব পড়তে, শুনতে কিংবা দেখতে পারবো না। এই সত্যটা আমাকে খুব যন্ত্রণা দেয়।

আর. এন. রাজু › বিস্তারিত পোস্টঃ

“আমাদের বিবেক”

০৬ ই অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৫:৩৪

“আমাদের বিবেক”
লিখাঃ- Raju Das Rudro

স্যার একটা কথা কমু?
বল ।
আজ আমাকে দেড়টায় ছুটি দিবেন?
কেন কি করবি?
স্যার বাসায় গিয়ে ভাত খাব, খুব খিদে লাগছে ।
কেন? সকালে খেয়ে আসিস নি?
জ্বী না স্যার ।
কেন?
স্যার তরকারি নাই । তাই খেতে পারিনি । তেল আর লবণ দিয়ে ভাত খেতে পারি না স্যার । তাই স্যার খেতে পারিনি ।
(কথাটা শুনে কেমন জানি লাগলো বুকের মধ্যে)

রাতে কি দিয়ে খেয়েছিস?
গতকালের মসুর ডাল দিয়ে ।
এখন গিয়ে কি দিয়ে ভাত খাবি তুই?
জানিনা স্যার । স্যার মা বলছিলেন স্কুল থেকে যাওয়ার পথা কচু কেটে নিয়ে যাই । এই দেখেন স্যার মা এই দা টা দিয়েছেন । (ব্রেঞ্ছের নিচ থেকে দেখালো । ওরে ধমক দিতে পারলাম না ।) এখন কচু কেটে নিয়ে বাসায় যাব এরপর মা ধুয়ে, কেটে রান্না করবেন, তারপর খাব স্যার । কচু দিয়ে মজা করে ভাত খাব । আমার মা অনেক ভালো কচু রান্না করেন স্যার । (কখন যে চোখটা ঝাপসা হলো বুঝতেই পারলাম না ।)

একদিন তোর মায়ের হাতের রান্না করা কচু খাওয়াবি?
আপনি সত্যি খাবেন স্যার? এ তো আমার ভাগ্যের ব্যাপার । (ছেলেটার কথা শুনে অনেক ভালো লাগলো ।)
হ্যাঁ রে । যা এখন বাসায় যা । গিয়ে পেট ভরে খেয়ে নে ।

মুখে পৃথিবী জয় করা হাসি নিয়ে বই
হাতে নিয়ে তার চলে যাওয়ার দিকে
মন্ত্রমুগ্ধের মত তাকিয়ে রইলাম ।
তরকারির জন্য ভাত খেতে পারছে না ।
অথচ আমাদের এই সমাজে কত মানুষ আছে
যাদের খাবারের মেনুতে কত আইটেম
থাকে । যা তাঁরা খেয়ে শেষ করতে পারে
না । উচ্ছিষ্ট অংশ চলে যায় ডাস্টবিনে ।
এমন অনেক বাবা মা আছেন যারা
ছেলেকে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে
পড়ান । গাড়ি করে নিয়ে যান । ছেলের কত
আবদার ! সব পূরণ করতে ব্যস্ত । অথচ রাস্তায়
পড়ে থাকা মানুষগুলোর দিকে ফিরেও
তাকান না ।
তাকাবেন কেন?
তাকালেই তো ঘাড়ে এসে পড়বে । আমরা তো
নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত । হাজার টাকার
বডি স্প্রে গায়ে দিয়ে ঘুরে বেড়াই ।

ঈদ, পূজা আসলে ব্যস্ত হয়ে পড়ি শপিং নামক
টাকা উড়ানোর খেলায় । কেউ পাখি, কেউ কিরণমালা,কেউ শীলা কি জাওয়ানি
নামক উদ্ভট সব পোশাক কিনতে ব্যস্ত
হয়ে পড়ি । কিন্তু বুঝতে চাই না এই
বাইরের পোশাকগুলোতে আমাকে কি
মানাচ্ছে? অথচ একটা গরীব লোক এসে
বলছে-দুইটা টাকা দেন । তখন বলি-
ভাংতি নাই । মাফ কর।
গার্লফ্রেন্ডকে নিয়ে চাইনিজ এ যাই ।
কত টাকা খরচ হয় হিসাব রাখি না ।
অথচ গরীব রিক্সাচালক যখন বলে-পাঁচটা টাকা
বাড়াইয়া দেন । তখন তার গায়ে হাত
তুলতে দ্বিধাবোধ করি না
ঐ গরীব লোকগুলোর অপরাধ কি?
.
অপরাধ একটাই যে
সৃষ্টিকর্তা তাদেরকে গরীবের ঘরে জন্ম
দিয়েছেন । আর আপনাকে সোনার চামচ
মুখে দিয়ে কোন ধনী বাবার ঘরে।
আমি ছেলে মেয়ে কাউকে কটাক্ষ করে
এই পোস্টটা দেইনি । আমি আমাকেই
এখানে কল্পনা করছি । তাই এটা পড়ে
জানি অনেকেই আমাকে তিরস্কার
করবেন ।
বলবেন লাইক কমেন্ট এর আশায়
সময় কষ্ট করে পোস্ট লেখলাম কেন?
"এটার কারণ শুধু আমাদের ঘুমন্ত
বিবেকটাকে একটু জাগ্রত করা"।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.