নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি সেটা নই যেটা আপনি ভাবছেন..!! আমি সেটাই যেটা আপনি ভাবছেন না.!! আমাকে ভাবা যায় না..!! বুঝতে হয়.!!

আর. এন. রাজু

আমি একদিন মারা যাব, এই সত্যটা নিয়ে আমার খুব বেশি আক্ষেপ নেই। তবে, আমার মৃত্যুর পর আরও অসংখ্য অসাধারণ সব বই লেখা হবে, গান সৃষ্ট হবে, চলচিত্র নির্মিত হবে। কিন্তু আমি সে সব পড়তে, শুনতে কিংবা দেখতে পারবো না। এই সত্যটা আমাকে খুব যন্ত্রণা দেয়।

আর. এন. রাজু › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রতিশ্রুতি - পর্বঃ ০২

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:১৬

প্রতিশ্রুতি - পর্বঃ ০২
লিখা- Raju Das Rudro
-
আজ শনিবার । তুমি স্কুলে আসছো আমি সকালে স্কুলে যাওয়ার পথে তোমাকে দূর থেকে দেখছিলাম । কিন্তু আজ আমি সামনে আসার সাহস পেলাম না কালকের ঘটনা গুলোর জন্য খুবই লজ্জিত ছিলাম । তোমাকে আজ খুব সুন্দর লেগেছিল, চুল ছড়িয়ে এসছো, ভালোই লাগছিল তোমাকে । তোমার হাসি এবং চোখের দিকেই আমার বেশি নজর গিয়েছিল ।
দ্বিতীয়ত, তোমার হাটাঁ, আমার খুবই ভালো লাগে । স্কুল ড্রেস পড়নে তোমাকে খুব সুন্দর লাগে ।
-
আজ আমাদের স্কুল তোমাদের আগেই ছুটি দিয়েছিল । ০৪:১৫ তেই দিয়ে দিল ছুটির ঘন্টা । আমি তোমাকে এক মুহূর্ত দেখার জন্য তোমাদের স্কুল থেকে কিছুটা দূরে ঐ তিন রাস্তার মোড়ে প্রতিদিনের মত আজকেও দাঁড়িয়ে আছি । একে একে স্কুল থেকে সকলে বের হল । অবশেষে তুমি আসলে এবং সাথে তোমার প্রিয় বান্ধবী প্রিয়াঙ্কা । তিন রাস্তার মোড়ে যখন আসলে তুমি তখন আজ আমাকে দেখতে পেলে । আমি তোমার মুখ দেখেই বুঝেছিলাম যে তুমি অবাক হয়েছো এবং ভাবছো “এ তো সেই ছেলে । যে কি না দু-দুদিন আমাদের বাসার সামনে ছিল এবং আমাকে দেখতে গিয়ে বকাটে ছেলের হাতে মার ও খেয়েছিল” ।
-
আমি হাসিমুখ নিয়ে তোমার দিকে তাকিয়ে আছি । আমার লজ্জা কোথায় গেছে আমি নিজেও বুঝতে পারিনি । দেখলাম যে তুমি প্রিয়াঙ্কা’র সাথে আজ কি নিয়ে কথা বলছো আর একটু পর পর আমার দিকে পিছন ফিরে তাকাচ্ছ । আমি ঐ একই জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি আর তোমার মিছে মিছে তাকানো লক্ষ্য করছি ।
-
প্রিয়াঙ্কা তোমাকে সেইদিন আমার কথা বলেছিল । আমি তোমার বাড়ির ঠিকানা নিয়েছি; তারপর তোমার অসুস্থ্যের কথা শুনে আমি উদাস হয়ে গেছি এবং সাথে সাথে তোমার বাসার সামনে গিয়েছি তোমাকে দেখতে, এসব তোমাকে বলেছে । তুমি সেদিন প্রিয়াঙ্কা’কে কিছুই বলতে পারোনি । একটি কথাও তুমি বলতে পারোনি । তুমি শুধু সেদিন প্রিয়াঙ্ক'র মুখ থেকে শুনেই চলেছিলে । আমি তাড়াতাড়ি বাসায় গিয়ে ড্রেস চেঞ্জ করে কিছু খেয়ে চলে আসলাম তোমাদের বাসার উদ্দেশ্যে ।
-
আমি গিয়ে বুঝতে পারছিলাম যে তুমি আমার আসার অপেক্ষায় ছিলে আজ । ভাবছো কিভাবে বুঝেছিলাম, কারণ তুমি আমার আসার অপেক্ষা করেছিলে এদিক-ওদিক তাকিয়ে । আর আমি সেটা দূর থেকে ঠের পাচ্ছিলাম; আমি ০৫:৫০ এ একই জায়গায় এসে দাঁড়ালাম । আজ তুমি আমার দিকে খুব মনযোগী হয়ে দেখছিলে, আমি ওখানে দাঁড়িয়ে কি করছি, না করছি । তুমি আমার দিকে চেয়ে মুচকি হেসেওছিলে । আমার খুব ভালো লেগেছিল সেদিন ।
-
পরেরদিন মানে আজ রবিবার, আজ আমি স্কুলে যাই নি । কিছুটা অসুস্থ্য ছিলাম আমি । তাই স্কুল যেতে মন চাইছিল না । বাসায় মিথ্যে বলে চলে এসেছিলাম তোমাকে একপলক দেখার জন্য । আজ ০৯:৪৫ বেজে গেল কিন্তু তুমি তখনো আসোনি । আমার মনটা তখন খারাপ হয়ে গেল । আমি আস্তে আস্তে সামনের দিকে এগুলাম তুমি আসছো কি না দেখতে । কিছুটা পথ আগাবার পর আমি একটি মোড়ে চলে এসেছি । যেই মোড়ের দিকে যাব অমনি তোমার মুখের সামনে আমি । তথমত খেয়ে গেলাম আমি । তাড়াতাড়ি করে তোমার আর প্রিয়াঙ্কার সামনে থেকে বাম পাশে চলে গেলাম । আমি তখন বুঝতে পেরেছিলাম যে তুমি তখন খুব রাগ করেছো ।
তোমার মুখ দেখে তখন আমার খুব দূঃখ হয়েছিল । জানো সত্যি আমি আমি জেনেশুনে তোমার সামনে যাইনি ।
-
তুমি স্কুলে গেলে । কিন্তু আমি আজ স্কুলে না যাওয়ার কারণে একা একা কিছু ভালো লাগছে না । তার উপরে তোমার ঐ রাগান্বিত চেহারা দেখে আরো খারাপ লাগতে লাগলো । তুমি আজ কিছুটা আমার উপর ডিস্টার্ব ফিল করলে । মন খারাপ করে পার্কে বসে রইলাম । সকালে কিছু খাইনি; দুপুর হয়ে গেছে এর মাঝে মুখে একফোঁটা দানাপানিও পরে নি। পেটের খিদায় খুব কষ্ট পাচ্ছিলাম । খুব কষ্টে দুপুরটা পার করলাম ।
-
তোমার স্কুল ছুটি হল । একে একে সবাই বেরিয়ে আসলো এবং তুমি আর প্রিয়াঙ্কাও ঐ দিনের মত আজকেও সবার শেষে স্কুল থেকে বেরুলে । আমি আজ তোমার পিছু যাচ্ছি । কিছুটা পথ যাবার পর যখন এলাকার রাস্তাঘাট জনশূন্য হল তখন তুমি প্রিয়াঙ্কাকে দিয়ে আমাকে তোমার কাছে যেতে বললে । আমি কোনো সন্দেহ বিবাধ বাদে তোমার কাছে গেলাম । যাবার পর যখন তোমাকে আমি আমার দুচোখ ভরে দেখছিলাম তখন আমার মনে হয়েছিল যে তুমি এতদিন কোথায় ছিলে, আজ কেন দেখা দিলে, কেন আমার মনটা কেড়ে নিলে । আমি তোমার দিকে এক মনে চেয়ে আছি ।
তুমি বললে, আমি ছেলেটা কেমন । মেয়েদের দেখলেই পিছু হাঁটি । তার বাসার ঠিকানা নিয়ে বাসার সামনে গিয়ে বাজে ছেলেদের মত কুদৃষ্টি নিয়ে তাঁকিয়ে থাকা । স্কুলে যাওয়ার সময় মেয়েদের ডিস্টার্ব করা । তার দিকে লোভাতুর দৃষ্টিতে থাকিয়ে থাকা । এসব কি ছেলেদের এবং আমার কাজ ।
-
তখন তুমি আবার বললে, এই ছেলে তুমি আর কখনো আমার দিকে তাকাবা না;
আমার পিছু আসবা না;
আমার বাসার সামনে গিয়ে দাঁড়াবা না;
তোমাদের মত ছেলেদের আমার চেনা আছে;
মেয়েদের দেখলেই শুধু ফেলফেল করে তাকিয়ে থাকা, না!
তুমি আমাকে আর কখনো ডিস্টার্ব করবা না;
এই মোড়ে আর কখনো দাঁড়িয়ে থাকবা না ।
প্রিয়াঙ্কা কথাগুলো শুনেই যাচ্ছে । ও কিছু বলতে পারছে না । যেন মনে হচ্ছে ওর মুখ ভগবান বন্ধ করে রেখেছেন । সে কিইবা বলতো । কিছুই বলার ছিল না ওর ।
-
এই ছেলে কথা বলছো না কেন..? আমার কথা কি তুমি শুনতে পাচ্ছ না ।
তোমার কথাগুলো আমি শুধু শুনেই গেছিলাম । কিছু বলার ভাষা আর জানা ছিল না । জানা থাকলেও তখন হয়তো বলতে পারতাম না; জানিনা কেন । তুমি খুব শাসিয়েছিলে সেদিন । আমার মনে খুব দূঃখ হয়েছিল তোমার ঐ মনভাঙা কথাগুলো শুনে । তখন আমার মনে হয়েছিল যে আমার পায়ের নিচ থেকে যেন মাটি সরে গিয়েছে । আমার কি এমন ভুল ছিল যার কারণে তোমার মুখ থেকে আমার এরকম কথা শুনতে হল । অন্য চা-পাঁচটা ছেলের সাথে আমাকে তুলনা করলে । ]আমি এতদিন বুঝতে পারিনি যে ভালোবাসা কি । আজ বুঝতে পারলাম পছন্দের মানুষের মুখ থেকে এমন কথা শুনে ভালোবাসা কাকে বলে । আমার মনটা ভেঙে দিয়েছিলে তুমি সেদিন ।
-
আমি সেদিন খুবই অসুস্থ্য হয়ে পরেছিলাম । এমনিতেও আমি অসুস্থ্য ছিলাম, তার পরে তোমার কথাগুলো আমাকে বার বার ভাবিয়ে তুলছে এবং আরো অসুস্থ্য হয়ে পড়েছিলাম । জ্বরে আমার পুরো শরীর পুড়ে যাচ্ছে । আমার মাথার পাশে মা বসে কাঁদছেন আর আমার মাথায় পানি ঢালছেন । পানি ঢালা শেষে মা একটি ছোট কাপড় পানি দিয়ে ভিজিয়ে আমার কপালে দিয়ে রাখলেন । কিন্তু আমার মাথায় একটাই চিন্তা তুমি আমাকে কেন এসব বলেছিলে । এই প্রশ্নগুলো আমার মনে বার বার আসছিলো কিন্তু আমি উত্তর খোঁজে পাচ্ছিলাম না । আমার কি এমন দোষ ছিল যার কারণে তুমি অন্য বাজে ছেলেদের সাথে তুলনা করলে ।
-
চলবে...

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.