নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি ভাল , আমাকে বাসবেন না :প

নিশা মাহমুদা

নিশা মাহমুদা › বিস্তারিত পোস্টঃ

সেন্ট মার্টিনে মৃত্যু, প্রশাসনের অসচেতনতা

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ ভোর ৪:০৪

আমি ক্ষুদ্ধ, আমি হতবাক, আমি বিস্মিত !!

পহেলা বৈশাখে আর সবার মতই আনন্দ করতে যেয়ে AUST এর ২ ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে সেন্ট মার্টিনে গোসল করতে যেয়ে আর ৪ জন এখনও নিখোঁজ। আহছানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের শেষ বর্ষের ৩৪ জন শিক্ষার্থী গত রোববার ঢাকা থেকে ট্রেনে চট্টগ্রাম যায়। পরদিন সকালে বাসে করে টেকনাফ পৌঁছে এলসিটি কুতুবদিয়া জাহাজে চড়ে সেন্ট মার্টিনে রওয়ানা হয়ে দুপুর ১২টার দিকে দ্বীপে পৌঁছায়। সেখানে আবাসিক হোটেল সেন্ট সৌর রিসোর্টে উঠে সবাই। বেলা দুইটার দিকে শিক্ষার্থীরা দ্বীপের জেটি ঘাটের উত্তর-পূর্ব পাশে প্রিন্স হ্যাভেন পয়েন্ট দিয়ে গোসলে নামে। তখনি ঘটে ভয়াবহ এ দুর্ঘটনাটি। স্রোতের টানে ভেসে যায় কয়েকজন। অনেকেই নিজকে কূলে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালায় এবং ফিরেও আসে কিন্তু দেরি হয় মানফেজুল ইসলাম ইভান, সাদ্দাম হোসেন অঙ্কুর, ফয়সাল বিন হাবিব, আসিফ মোস্তবা, ফারহান-উল হক, ইশতিয়াক বিন মাহমুদ, শাহরিয়ার ইসলাম নোমান, সাব্বির হাসান ও এস এম গোলাম রহিম বাপ্পীর। শেষ পর্যন্ত ইভান, অঙ্কুর, ফয়সাল, আসিফ, ফারহান ও ইফতেখারকে উদ্ধার করে আনা হয়। পরে ইভান, ও অঙ্কুরকে টেকনাফ হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিত্সক তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন। কিন্তু ইশতিয়াক, নোমান, সাব্বির ও বাপ্পীর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।

জানা যায় প্রতি বছর এই একই জায়গায় অনেকেই প্রাণ হারায়। সেন্টমার্টিন ফেরীলাইন থেকে পায়ে হেটে ব্রীজ পার হয়ে এসে নামতে হয় সেন্টমার্টীন দ্বীপে। এর হাতের ডানদিকে একটা বীচ আছে, এই বীচ ধরে হেঁটে ব্রীজের গোড়ার দিক থেকে পানিতে নেমে কিনারা ঘেষে ডানে সামনের দিকে এগিয়ে পানিতে নেমে ঠিক সোজা সামনে গেলেই দ্বীপটা হাতের বা দিকে টার্ন নেয়। ঐ জায়গাকে বলা হয় “জিনজিরা উত্তরপাড়া” স্থানীয়রা বলেন উত্তর বীচ। দুইদিকের পানির স্রোত এবং ঐ ত্রিকোনাকৃতির মধ্যস্রোত এই জায়গাটিতে মিলিত হয়েছে এবং ত্রিমুখি স্রোতের কারনে পানির চাপ খুব বেশী ওখানটায় এবং চাপটা নিন্মমুখি। এই ত্রিমুখি স্রোতের কারনে অনেক জায়গাজুড়ে বড়সড়ো গর্ত তৈরী হয়েছে। কোন নির্দেশনা নেই বলে অনেকেই সাতার কাটতে কাটতে এই টার্ন দিয়ে বাম পাশের বীচের দিকে এগুতে থাকে, আর তখনি কিছু বুঝে উঠার আগেই সমুদ্রের অতলে হারিয়ে যায় অনেকেই। আর এবার পহেলা বৈশাখে আরও একবার এখানে প্রাণ হারাল কিছু তরুণ। পুরো ব্যাপারটাই দুঃখজনক, কিন্তু দুঃখটা আরও বেড়ে যায় যখন জানতে পারি ঐ ৪ জনের ১জন আমার পরিচিত, শুধু পরিচিত না ভালই পরিচিত। সাব্বির হাসান আমি এখনও মেনে নিতে পারছিনা ব্যাপারটা। অক্টোবর ২০১২ থেকে এই মানুষটাকে আমি চিনি, গত ২১ মার্চ আমাদের শেষ কথা হয়েছে। এখন পর্যন্ত এই ছেলেটার মধ্যে আমি বাজে কিছু খুঁজে পাইনি। আমার জানামতে সাব্বির তার বাবা-মায়ের একমাত্র ছেলে, বাসা মোহম্মদপুর এবং সম্ভবত এইটাই তার লাস্ট সেমিস্টার ছিল। কি অবস্থা এখন তার পরিবারের ভাবতেই আমি অস্থির হয়ে যাচ্ছি। সেই সাথে তার ভালবাসার মানুষ রাইফার ই বা কি অবস্থা! এই স্বল্প পরিচয়েও আমাকেই এই খবর কাঁদিয়ে দিয়েছে সেখানে তার জন্মদাত্রী মায়ের কি অবস্থা। ১২ এপ্রিল বিকালে সাব্বির ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিল- "চলে যাচ্ছি দোস্ত, একদম নেটওয়ার্কের বাইরে"! কিন্তু সত্যিই যে সে নেটওয়ার্কের বাইরে চলে যাবে তা কে জানত! পরিচিত কোন মানুষের এরকম একটা ব্যাপার মেনে নেওয়া সত্যিই খুব কষ্টদায়ক, এই অনুভুতি আসলে প্রকাশ করা কঠিন। সাব্বির, ভাইয়া তুমি ঐ সাগরের বুক থেকে ফিরে আস প্লিজ। হে আল্লাহ , তুমি সাব্বিরকে ফিরিয়ে দাও। সত্যিই একটা মিরাকলের অপেক্ষায় আছি। আল্লাহ তুমি সর্ব শক্তিমান ....



বিঃদ্রঃ এটা একটা বিশাল পর্যটন এলাকা অথচ আজ পর্যন্ত কোন সিগন্যাল ফ্ল্যাগ দেয়া হয় নাই ওখানে, এবারো যদি প্রশাসনের টনক না নড়ে তাহলে আর কয়টা প্রাণ যাওয়ার পর নড়বে? ? ?

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ ভোর ৪:৩৮

সীমানা ছাড়িয়ে বলেছেন: খুবই দুঃখজনক ঘটনা। প্রশাসন কোনভাবেই এর দায় এড়াতে পারে না। প্রতিদিন শতশত পর্যটক যাচ্ছে সেন্ট মার্টিনে। এই সেক্টর থেকে সরকারের প্রচুর রাজস্বও হচ্ছে। তারপরেও প্রশাসন পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়টিকে কিভাবে হেলাফেলা করে?

২| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ৯:৪৩

নিজাম বলেছেন: আরও তথ্য আছে। ভাটার সময় সমূদ্রে নামা নিরাপদ নয়। এই তথ্য অনেক জায়গায় লিখা থাকে। কিন্তু আমরা অনেকে এটা মানি না।

৩| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১০:১৪

হেডস্যার বলেছেন:
কথায় আছে না...."অধিক আনন্দে বুদ্ধি বিনাশ"
তাদের হইছে ঐ অবস্থা....

নিজেকে কন্ট্রোল করতে হবে...সাবধান থাকতে হবে, তবেই একমাত্র এরকম দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব। প্রশাসন এখানে কিছুই করতে পারবে না।

কক্সবাজারে খেয়াল করেছেন নিশ্চই যে লাল পতাকা টাঙ্গানো থাকা সত্বেও ডুবুরি ও নিরাপত্তাকর্মীদের সকল আহবানকে কাঁচকলা দেখিয়ে যে যার ইচ্ছা মত পানিতে দাপাদাপি করছে।

৪| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১০:১৫

হেডস্যার বলেছেন:
আপনি কমেন্ট মডারেট করে রেখেছেন কেন?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.