নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মনের আবোলতাবোল চিন্তাগুলো সাজিয়ে গল্পে পরিনত করতে চাই। কখোনও গল্প হয়। আবার কখোনও হয় না। ভাল লিখতে জানি না।তবুও লিখি। কারন এটা শখ হয়ে গেছে। আরর এই শখ জেকে বসেছে।

পাবনার তাঁরছেড়া বালক

মনের আবোলতাবোল চিন্তাগুলো সাজিয়ে গল্পে পরিনত করতে চাই। কখোনও গল্প হয়। আবার কখোনও হয় না। ভাল লিখতে জানি না।তবুও লিখি। কারন এটা শখ হয়ে গেছে। আরর এই শখ জেকে বসেছে।

পাবনার তাঁরছেড়া বালক › বিস্তারিত পোস্টঃ

সপ্ন আর বাস্তবতা (গল্প)

১৬ ই মে, ২০১৫ সকাল ৯:১১

সপ্ন আর বাস্তবতা
.

.
মাহিন ব্যাগ গুছিয়ে সকাল সকাল ট্রেন স্টেশনে রওনা দিল। রাত যেন শেষ হতেই চায় না। সময় যেন শেষ হতে চায় না।
.
রাতে অনেক অপেক্ষা করেছে।আজ মাহিন বাড়িতে যাবে। অনেকদিন হল মাহিন বাড়িতে যায় না।অনেকদিন পরে মাহিন আজ বাড়িতে যাচ্ছে। তাই খুশিটা একটু বেশি।
.
রিক্সায় করে ব্যাগসহ সবকিছু নিয়ে ট্রেন স্টেশনে এসে পৌছাল। স্টেশনে এখনও তেমন লোকজন আসে নি। কয়েকজন একজন রেল কর্মকর্তা এসেছে।
.
মাহিন লোকজন তেমন না দেখে স্টেশনের একটি বেঞ্চে বসে পরলো।
.
কিছুক্ষণ পরে ভাবলো টিকিটের খবর নেওয়া দরকার। তাই হাটতে হাটতে টিকিট কাউন্টারের দিকে গেল।
.
টিকিট কাউন্টারে গিয়ে একটি টিকিট কিনলো। আর টিকিট কাউন্টার থেকে জানতে পারলো ট্রেন ছাড়তে ১০.৪০ বাজবে।
.
টিকিট নিয়ে মাহিন আবার বেঞ্চে গিয়ে বসলো। পকেট থেকে মোবাইল বের করে দেখলো এখন সকাল ৮.০৩ বাজে। তারমানে মাহিন অনেক আগেই চলে এসেছে। আসার আগে সময় দেখে আসলে পারতো। কিন্তু সেটা করে নি। মাহিনের এই অভ্যাস অনেক আগে থেকে। পকেটে ঘড়ি থাকলেও কোন কাজে যাওয়ার আগে সেটা দেখে না। এই কারনে অনেক ঠকতে হয়।
.
এখন সকাল ৯.০৪ বাজে। স্টেশনে অনেক লোক চলে এসেছে। ক্ষুধায় মাহিনের পেট চো চো করছে। একটা রুটি একটা কলা আর এক গ্লাস পানি হলেই মাহিনের সকালের নাস্তা হয়ে যায়। মেসে থাকার পরে মাহিনের এটা অভ্যাস হয়ে গেছে। আগে কয়েকটি রুটি খেয়ে দুইটা ডিম খেয়েও মাহিনের যেই পেটে কিছু হত না। মাহিনের সেই পেট এখন একটা কলা আর একটা রুটিতে ভরে যায়। অবস্থা মানুষকে অনেক কিছু শিখায়। মাহিনও তেমনি শিখে নিয়েছে।
.
সকালের নাস্তা সেরে মাহিন বেঞ্চেই বসে থাকলো। মাহিনের সময় শেষ হতে চায় না। আজ যেন সময় আর ঘড়ির কাটা থেমে গিয়েছে। তাই বসে বসে একা প্রহর গুনছে।
.
এখন সকাল ১০.৫৩ বাজে। তবুও ট্রেন ছাড়ছে না। বাংলাদেশের ট্রেন পথে এই একটা সমস্যা।ভাল একটা সিট বুকিং করেছে। অনেক পথ যেতে হবে।
.

.
মাহিন ট্রেন থেকে নেমেই বিন্তিকে দেখে অবাক হয়ে গেল। মাহিন বিন্তিকে জানায় নি সে আসছে। আর জানাবেই কিভাবে? কয়েকমাস বিন্তির সাথে যোগাযোগ নেই।তাই অবাক হওয়ার কথা।
.
বিন্তির কাছে গিয়ে মাহিন প্রথমে মাহিনের কেমন যেন লাগছে। মাহিনকে দেখে বিন্তির খুশি হওয়ার কথা। কিন্তু বিন্তির মুখ শুকিয়ে আছে। মাহিন বলল
-কেমন আছ?
-দেখতেই তো পাচ্ছ।
-কি হয়েছে তোমার?
-কিছুই না।
-এতদিন পরে আমাকে দেখে খুশি হও নি?
-হয়েছি তো।
-তাহলে এমন করে আছ কেন?
-আমি তোমাকে দেওয়া কথা রাখতে পারি নি মাহিন।
-কি বলছো কি?
-তোমাকে বলেছিলাম তোমার জন্য আমি অপেক্ষা করবো।কিন্তু তা পারলাম না।
-সব ঠিক হয়ে যাবে আমি চলে এসেছি।
-অনেক দেরি করে ফেলেছ তুমি। আমার বিয়ে হয়ে গেছে।
ট্রেনের হুইছেল বাজার কারনে মাহিন ঠিকমত শুনতে পায় নি। তাই মাহিন জিজ্ঞেস করলো।
-কি হয়েছে?
-আমি অন্য কারো বউ হয়ে গেছি। আজ জানতে পারলাম তুমি আসছো। তাই তোমার সঙ্গে দেখা করতে আসলাম। আর পারলে ক্ষমা করে দিও।
কথাগুলো শোনার পরে মাহিন স্তন্ধ হয়ে দাড়িয়ে থাকলো। তার জিবন যেন থেমে গিয়েছে। চারপাশের কথাগুলো কানের ভেতরে যাচ্ছে না। চোখ দিয়ে পানি বের হচ্ছে। যার জন্য এত আশা নিয়ে এল সেই কিনা.....
.
মাহিন যখন সাভাবিক হয়ে তাকালো সামনে বিন্তিকে দেখতে পেল না। বিন্তিকে খুঁজতে খুঁজতে দেখলো বিন্তি চলন্ত ট্রেনের সামনে যাচ্ছে। মাহিন চিৎকার করে বলল
-বিন্তি তুমি এ কি করছো? দাড়াও দাড়াও বিন্তি।
মাহিন চিৎকার করতে গিয়েও কাজ হল না। বিন্তি ততক্ষনে ট্রেনের নিচে চলে গিয়েছে। আর ট্রেনের নিচে তার শরির যেন ছিন্নভিন্ন হয়ে গেল।
.
মাহিন হঠাৎ চমকে উঠলো। গা ঘেমে গিয়েছে চিন্তায়। রাতে চিন্তায় ঘুমাতে পারে নি। ঘুমিয়ে মাহিন এই ধরনের সপ্ন দেখে চমকে উঠেছে। শরির দিয়ে ঘাম ঝড়ে পরছে। ব্যাগ থেকে পানি বের করে ঢক ঢক করে পুরো বোতলের পানি খেয়ে ফেলল। এখন আর মাহিনের ঘুম হবে না। তাই সারা পথ বসেই যাবে।
.

.
ট্রেন থেকে নেমে মাহিন স্টেশনে অনেক লোককে দেখলো। কেউ চেনা কেউ বা অচেনা। একজন এসে বলল
-আরে মাহিন ভাই। কেমন আছেন? কোথায় যাবেন?
-বাড়িতে যাবো।
-তাহলে আমার ভ্যানে আসেন।
.
মাহিন অনেকদিন পরে গ্রামে যাচ্ছে। একদিন মাহিন তার বাবাকে বলল
-বাবা আমি বিন্তিকে বিয়ে করবো।
-কি বললি!!বিয়ে করবি!!!
-বাবা। আমি ওকে অনেক ভালবাসি।
-তোকে আমি বিয়ে দিব না।আজই বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যাবি।
সেদিন রাগ করে মাহিন বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যায়।অভিমান করে বাড়িতে যোগাযোগ করে নি।
.
কালকে বাবার ফোন পেয়ে গ্রামে ফিরছে। তার বাবা বলেছে তার সব আবদার মেনে নিবে। তাই আজ বাড়িতে ফিরছে।
.

.
বাড়িতে এসে মাহিন সবার আগে মাকে দেখলো। মাহিনের মা মাহিনকে বলল
-এতদিন পরে এলি?তোর বাবা তোর জন্য অপেক্ষা করছে। দেখা করে আয়।
-পরে দেখা করবো।
.
মাহিন ব্যাগ রেখে কাপড় না পাল্টেউ বিন্তিদের বাড়ির দিকে রওনা দিল। দ্রুত দৌড়াচ্ছে। তবুও মাহিনের মনে হচ্ছে সে পিছিয়ে যাচ্ছে।
.
বিন্তিদের বাড়িতে এসে মাহিন কাউকেই দেখছে না। সব যেন শুনসান হয়ে আছে। মাহিন কাউকে না পেয়ে বিন্তির ঘরে গেল।
.
বিন্তির ঘরে গিয়ে দেখলো বিন্তির টেবিলের উপরে একটা খাতা পরে আছে। উপরে লেখা "কেন ছেড়ে গেল?"
মাহিম খাতাটি হাতে নিয়ে এক পৃষ্টা উল্টাচ্ছে আর মাহিনের সম্পর্কে সব লেখাগুলো পড়ছে। এক পৃষ্টা দেখে মাহিনের চোখে পানি চলে আসলো। সেখানে লেখা "তোমার সাথে কি আমার দেখা হবে না?
.
মাহিন আর সহ্য করতে পারছে না। তাই এই ঘর থেকে বেড়িয়ে যাবে।
.
ঘুরে তাকাতেই মাহিন চমকে গেল।দরজায় বিন্তি দাড়িয়ে আছে। মাহিন বিন্তিকে দেখে শুধু তার দিকে তাকিয়ে আছে। কেউ কিছু বলছে না। বিন্তির চোখে পানি টলমল করছে।
.
মাহিন বিন্তির কাছে গিয়ে বলল
-কেমন আছো তুমি?
-আমাকে ছেড়ে কেন থাকলে বলো?
-এই ছাড়ো কেউ এসে পরবে তো।
-আসলে তাতে কি। তোমার সাথে আমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। আর বাবা মা বাড়িতে নেই।
.
মাহিনের বুকে ঝাপিয়ে পরে বিন্তি কেদে চলেছে। তার চোখ থেকে অঝড় ধারায় পানি পরে যাচ্ছে। মাহিন জানে এই কান্না সহজে থামবে না। কারন এই কান্না অভিমানের কান্না সুখের কান্না। তাই মাহিন বিন্তুকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে সেও কেঁদে চলেছে।আর এটা সপ্ন নয় বাস্তব।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই মে, ২০১৫ সকাল ৯:৩৪

সাঈদ মোহাম্মদ ফাহিম আবরার বলেছেন: ভালো লাগল।++

২| ১৬ ই মে, ২০১৫ সকাল ১০:০০

নতুন অভিনেতা বলেছেন: আমারো খুব লাগল +++

৩| ১৯ শে মে, ২০১৫ রাত ১২:০৫

পাবনার তাঁরছেড়া বালক বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাদের

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.