নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মনের আবোলতাবোল চিন্তাগুলো সাজিয়ে গল্পে পরিনত করতে চাই। কখোনও গল্প হয়। আবার কখোনও হয় না। ভাল লিখতে জানি না।তবুও লিখি। কারন এটা শখ হয়ে গেছে। আরর এই শখ জেকে বসেছে।

পাবনার তাঁরছেড়া বালক

মনের আবোলতাবোল চিন্তাগুলো সাজিয়ে গল্পে পরিনত করতে চাই। কখোনও গল্প হয়। আবার কখোনও হয় না। ভাল লিখতে জানি না।তবুও লিখি। কারন এটা শখ হয়ে গেছে। আরর এই শখ জেকে বসেছে।

পাবনার তাঁরছেড়া বালক › বিস্তারিত পোস্টঃ

অবশেষে

১৯ শে মে, ২০১৫ রাত ১২:০৪

রাত ২ টা ৩ মিনিট। মুন বার মোবাইলটা হাতে নিয়ে বসে আছে।শুধু একজনের ফোনের আশায় এত রাত পর্যন্ত জেগে আছে।এর আগের বছরে রাত ১২.১ মিনিটে রবি ফোনে মুনকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছিল। কিন্তু এই বছরে এত রাত পর্যন্ত ফোন আসে নি। অনেকদিন রবির ফোন আসে না।মুন জানে জন্মদিনে সবার আগে রবি তাকে উইশ করবে।
.
মুন ঘুম থেকে জেগে গিয়েছে। এমনিতে রাত জাগলে মুনের ঘুম থেকে উঠতে অনেক দেরি হয়।কিন্তু আজ চিন্তার কারনে মুনের ঘুম হয় নি। মোবাইল টা হাতে নিয়ে দেখলো অনেকগুলো মেসেজ।
.
মেসেজগুলো দেখে মুনের মনে আশা জাগলো।নিশ্চয় রবি তাকে মেসেজ দিয়ে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছে। এটা হতে পারে রবির নতুন সারপ্রাইজ।
.
মেসেজগুলো বের করে দেখছে। কিন্তু একটাও রবির মেসেজ নেই।মুনের কেমন যেন লাগছে।
.
কয়েক সপ্তাহ আগে......
রবি পার্কে আসতেই মুন বলল
-এই তুমি চাকরি করো না কেন?
-চাকরি দিয়ে কি করবো? আমার বাবার কি কম আছে নাকি?
-তোমার বাবার থাকলে তোমার কি?
-আমার কি মানে!!! আমার বাবার থাকলেই তো আমার।
-এইরকম হলে তোমার আর আমার বিয়ে কোনদিন হবে না।কারন আমার বাবা কোন বেকার ছেকের সাথে আমার বিয়ে দিবে না।
-না দিলে সমস্যা নেই।আমি তোমাকে বিয়ে করে আমার বাড়িতে নিয়ে যাবো।
-আমি আমার বাবার পছন্দে বিয়ে করবো। ইচ্ছা ছিল তুমি চাকরি পেলে বাবার কাছে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যাবে।আর বাবা অবশ্যই রাজি হবে।
-কোন কুৎসিত চাকুরিজিবি যদি তোমার বাবার কাছে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যায় আর তোমার বাবা রাজি হলে তাকে বিয়ে করবে?
-দরকার হলে তাই।
-তুমি চাও আমি চাকরি করি?
-হ্যা।
-আচ্ছা। ঠিক আছে।আমি চাকরি পেয়ে তবেই তোমার সামনে আসবো।আর চাকরি না পেলে কোনদিন তোমার সামনে আসবো না।
.
কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়েই রবি চলে গেল।ফিরেও তাকাল না।
.
সারাদিন রবি মুনের সাথে যোগাযোগ করলো না।মুন ভাবলো হয়তো এমনিতেই যোগাযোগ করে নি।কারন মাঝে মাঝেই রবি এরকম করে।
.
পরেরদিন মুন রবির কোন খোজ না জেনে তাদের বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ করেও রবির কোন খোজ পেল না।
.
আজ পর্যন্ত রবির কোন খোজ পায় নি।
একজন লোক এসে মুনকে একটি পার্সেল দিয়ে গেল। পার্সেলের উপরে লেখা Happy Birthday। মুন পার্সেল খুলে ভেতরে দেখলো একটা কেক। কেকটা তার বান্ধবি পাঠিয়েছে। মুন প্রথমে ভেবেছিল রবি পাঠিয়েছে। কিন্তু পরে দেখলো রবি পাঠায় নি।
.
কেটে গেল আরো কয়েকদিন তবুও রবির কোন খোজ খবর নেই। মুন রবির বন্ধুদের তেমন চেনে না। দুই একজন বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ করেছে। তারাও নাকি রবির ঠিকানা জানে না।
.
মুনের বাবা অনেক বাজার নিয়ে বাড়িতে আসলো। অনেক মাছ আরও অনেক আয়োজন। মুনের বাবা মুনের মাকে ডাক দিয়ে সবকিছু বলল।
.
মুন ঘরে শুয়ে আছে। মুনের মা এসে মুনকে ডাক দিয়ে বলল
-এই শাড়িটা পরে তৈরি হয়ে নে।
-এই সময় শাড়ি পরে কি হবে?
-একটু পরে ছেলে পক্ষ তোকে দেখতে আসবে।
-মানে কি!! তোমরা আমাকে বিয়ে দিতে চাচ্ছ।
-ছেলেটাকে তোর বাবার খুব পছন্দ হয়েছে। তোর বাবা চায় না কোনভাবেই ছেলে পক্ষ তোকে অপছন্দ করুক।
-কিন্তু আমার তো পড়ালেখা শেষ হয় নি।এখন বিয়ে করবো না।
-তুই তো জানিস তোর বাবার মুখের উপরে কেউ কথা বলতে পারবে না। আর ছেলের পরিবার শিক্ষিত। বিয়ের পরে তোকে পড়ালেখা করাবে।
.
মুনের মা চলে যেতেই মুন রবির ছবিটা বের করে দেখছে। মুনের পড়ালেখা শেষ না করেই বিয়ে করতে কোন অসুবিধা নেই।
মুন বিয়ে করতে চাচ্ছে না রবির কারনে।আজ যদি রবি বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসতো.....
.
মুনের সাহস নেই তার বাবার সামনে গিয়ে ভালবাসার কথা বলবে। তাই এই সবকিছুই মুনকে নিরবে সহ্য করতে হবে।
.
মুনকে ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসিয়ে তার মা সাজিয়ে দিচ্ছে। মুনের চোখ দিয়ে শুধু পানি পরছে।মুনের মা বলল
-কিরে মা। কাঁদছিস কেন?
-বিয়ে হলে তোমাদের ছেড়ে যেতে হবে ভেবে চোখে পানি চলে এসেছে।
-তবুও মেনে নিতে হবে রে মা।
.
মুনের অনিচ্ছা সত্তেও মুনকে শাড়ি পরে সাজতে হল।একদিন কলেজের একটা অনুষ্ঠানে মুন শাড়ি পরেছিল। সেদিন রবি মুনকে বলেছিল
-জানো।তোমাকে শাড়ি পরলে খুব সুন্দর লাগে।
-

মুনকে সুন্দর করে সাজিয়ে ছেলে পক্ষের সামনে নিয়ে যাওয়া হল। সোফায় বসিয়ে ছেকের বাবা সবকিছু জিজ্ঞেস করছে। মুন খুব কষ্টে কান্না চাপিয়ে প্রশ্নের উত্তর দিয়ে যাচ্ছে।
.
সব কথা বলার পরে ছেলের বাবা মুনের বাবাকে বলল
-বিয়েই সাহেব। মেয়ে পছন্দ হয়েছে।
-তাহলে তো আপনিও বিয়েই হয়ে গেলেন। হা হা হা।
এইসব মশকরা শুনে মুনের গা জলে যাচ্ছে। সে শুধু নিচের দিকে তাকিয়ে আছে। চোখ তুলে ছেলেটার দিকে তাকাচ্ছে না।কারন ছেলেটাকে মুনের বাবার পছন্দ। এখানে মুনের পছন্দ না হলেও কিছু না।
.
কথা বলতে বলতে মুনের বাবা বলল
-আচ্ছা ছেলে আর মেয়েকে আলাদা একটু কথা বলার সুযোগ দেওয়া উচিৎ। আপনাদের ছেলের পছন্দ হয়েছে কি না?
-আমাদের পছন্দের উপরে আমাদের ছেলে কথা বলেবে না। আমাদের পছন্দ মানে তার পছন্দ।
-আমার মেয়েও তাই। তবুও একে অন্যকে জেনে নিলে ভাল হয়।
.
মুন আগে আগে রুমে ঢুকলো। রুমে ঢুকে নিচের দিকে তাকিয়ে কেদে যাচ্ছে। ছেলেটি কথা বলা শুরু করলো। কন্ঠ মেয়েলি মেয়েলি। ছেলেটি বলল
-আমাকে আপনার পছন্দ হয়েছে?
-.......
-আপনি অন্য কাউকে ভালবাসেন?এটা আমাদের দুইজনের জিবনের বেপার।
-না।
-দেখুন আপনার চোখ দেখে বোঝা যাচ্ছে আপনি কাউকে ভালবাসেন।
-কাউকে ভালবাসি না।
-আমার চোখের দিকে তাকান।তাকিয়ে বলুন।
মুন চোখ তুলে তাকাতেই অবাক হয়ে গেল।কারন তার সামনে রবি দাড়িয়ে আছে। মুনের সব চাপা কান্না একবারে বেড়িয়ে আসছে। মুন কিছুই বলতে পারছে না।রবি বলল
-কি। কাউকে ভালবাসো না?
-না। তুমি আমার সাথে এইরকম করেছ।তাই তোমাকে ভালবাসি না।
-তাহলে আমি চলে যাই।
-তোমাকে যেতে দিলে তো যাবে।
মুন কাঁদতে কাঁদতে রবিকে জড়িয়ে ধরলো। যাতে বন্ধন ছেড়ে যেতে না পারে........
.

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.