নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মনের আবোলতাবোল চিন্তাগুলো সাজিয়ে গল্পে পরিনত করতে চাই। কখোনও গল্প হয়। আবার কখোনও হয় না। ভাল লিখতে জানি না।তবুও লিখি। কারন এটা শখ হয়ে গেছে। আরর এই শখ জেকে বসেছে।

পাবনার তাঁরছেড়া বালক

মনের আবোলতাবোল চিন্তাগুলো সাজিয়ে গল্পে পরিনত করতে চাই। কখোনও গল্প হয়। আবার কখোনও হয় না। ভাল লিখতে জানি না।তবুও লিখি। কারন এটা শখ হয়ে গেছে। আরর এই শখ জেকে বসেছে।

পাবনার তাঁরছেড়া বালক › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি মেয়ের ইজ্জত

২৭ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ৯:৩০


.
গ্রামে যেতে সাজুর ভয় লাগছে। দুইদিন আগে গ্রামে খুন হয়েছে। যেই গ্রামে কোন অশান্তি ছিল না। মানুষের মধ্যে কোন খারাপ সম্পর্ক ছিল না। আর সেই গ্রামেই খুন।ভাবতেই সাজুর অবাক লাগছে।
.
সাজু গ্রামে থাকে না প্রায় ছয় মাসের মত। কাজের জন্য সাজুকে গ্রামের বাইরে থাকতে হয়েছে। বলতে গেলে অনেকটা জিবিকা চালানোর জন্যই।
.
মানুষের জিবনে অনেক বিপদ আসে।সাজুর জিবনেও এসেছিল। কিন্তু এখন আর সেই বিপদ নেই। বিপদ থেকে সাজু অনেকটাই মুক্ত। সাজুর বিপদ ছিল ঋনের বোঝা।
.
পড়ালেখা শেষ করে সাজু চাকরি না পাওয়ায় ব্যাবসা শুরু করে। ব্যাবসা খুব ভালই চলছিল। হঠাৎ কি দিয়ে কি হয়ে সাজুর ব্যাবসায় ক্ষতি হয়ে পুজিও শেষ হয়ে গিয়েছিল।তাই ঋনের বোঝা কাধে নিতে হয়।
.
ঋনের বোঝা নিয়ে সাজু গ্রাম থেকে শহরে চলে যায় চাকরির জন্য। মা আর তার প্রেমিকা মানে বউকে রেখে যেতে ইচ্ছে না থাকলেও যেতে হয়েছে।
.
প্রায় সব টাকাই সাজু শোধ করে দিয়েছে। আর একজন সাজুর থেকে টাকা পাবে। আজ সেই টাকাও সাজু শোধ করে দেবে।গ্রাম থেকে তার বউকে নিয়ে আসবে। কারন শহরে সাজুর আজ অবস্থা ভাল। চাকরি করে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে পারবে। ইচ্ছা ছিল মাকেও নিয়ে আসবে। কিন্তু সেটা সাজু পারবে না।
.
সাজু চলে যাওয়ার মাসখানেক পরে সাজুর খবর পেল তার মা আর বেচে নেই। সাজু মায়ের মৃত্যুর পরে এসেছিল। কয়েকদিন থেকে আবার চলে যেতে হয়েছিল।
.
সাজু বাড়িতে যাওয়ার জন্য রওনা দিল। যেতে একটু দেরি হয়েছে। বাড়ি ফিরতে রাত হয়ে যাবে মনেহয় বাড়ি ফিরতে তাই ভয় লাগছে। গ্রামের অবস্থা ভাল না।
.

.
গ্রামে পুলিশ এসে অনেক মানুষকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। যে খুন হয়েছে সে গ্রামের ধনী ব্যাক্তি বলা চলে।আর গ্রামের সন্মানিয় ব্যাক্তিও বটে।
.
ব্যাক্তিগত শত্রুতা অথবা টাকা পয়সার কারনে খুন করা হয়েছে নাকি সেটা পুলিশ বুঝতে পারছে না।
.
অর্থ সম্পদের কারনে খুন হলে বাড়িতে হত।কিন্তু এখানে তা করা হয় নি।খুন হয়েছে অন্য বাড়িতে। তাই মামলা টা কিছুটা জটিল।
.
খুনের তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ইশাক কে।আর তাই ইশাক সবকিছু খুটিয়ে দেখছে। এই মামলার রহস্য বের করতে পারলে ইশাকের প্রোমোশন ঠেকায় কে?
.
মামলা টা নিয়ে যতই ভাবছে ততই ইশাকের খটকা লাগছে। কুপিয়ে খুনটা করা হয়েছে। আর সেটা করা হয়েছে বটি অথবা বড় অস্ত্র দিয়ে। খুন হওয়া ব্যাক্তি পালানোর চেষ্টা করেছে।
.
এস আই ইশাক এখনও হাল ছাড়ে নি।দুইদিন এই গ্রামে তদন্তের জন্য আছে। যেভাবেই হোক খুনের রহস্য বের করে প্রোমোশন নিতেই হবে।
.

.
সাজু বাস থেকে নেমে দেখে ঘড়িতে সাত টা সাতান্ন বাজে। তেমন রাত নয়। তাই একটা ভ্যান পেয়ে যাবে।
.
ভ্যানের কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলো
-ভাই যাবেন?
-যাবো।
-চলো।
-কোথায় যাবেন?
-আদিমপুর।
-তাহলে যাবো না।
-আরে ভাড়া বাড়িয়ে দেব। যাবেন না কেন?
-আরেহ পাগল হয়েছেন? কয়েকদিন আগে ওই গ্রামে একটা খুন হল।রাতে কেউ ওই গ্রামে যায় না।
.
কোন গাড়ি না পেয়ে সাজু হাটতে থাকলো। হেটে গেকে ত্রিশ মিনিটের মত লাগবে। হেটে বাড়ির দিকে যেতে থাকলো....
.
রাস্তা দিয়ে যেতে ভয় লাগছে। একা একা যাচ্ছে আর কাছে অনেক টাকা। তাই ছিনতাই কারির ভয় করছে। এই গ্রামে অবশ্য ছিনতাই হয় না। তবুও বলা যায় না। খুব হলে ছিনতাই হতে কতক্ষণ??কেন যে তারাতারি রওনা দিল না।
.
সাজু হাটতে হাটতে ভয় নিয়ে বাড়ির কাছাকাছি চলে এসেছে। এত বাড়ির কাছে এসে ঢুকতেই সাজু চমকে উঠলো। এত রাতে হাসির শব্দ পাচ্ছে।
.
খুনটা হয়েছে সাজুর বাড়ির উঠোনের উপরে।তাই কোন আত্বার বেপার না তো? কিন্তু হাসি তো মেয়ে মানুষের। আর চেনা চেনা লাগছে। এটা তো সাজুর বউয়ের হাসি।
.
একটু একটু ঘরের দিকে যাচ্ছে আর হাসি কাছাকাছি আসছে। মনেহয় ঘরের মধ্যে। ঘরের মধ্যে ঢুকতে যাবে এমন সময় পাশের বাড়ির মাতবরের গলার আওয়াজ পেল। যে সাজুর থেকে টাকা পাবে।কিন্তু সাজু তো বলেলে নি।তাহলে আগেই এসেছে কেন??
.
ঘরের মধ্যে না ঢুকে জানালা দিয়ে সাজু উকি দিল।উকি দিয়ে যা দেখলো সেটা দেখার জন্য সাজু প্রস্তুত ছিল না। সাজুর বউ মাতবরকে জড়িয়ে ধরে আছে। সাজু একবার ভাবলো ভেতরে গিয়ে সব খেলা শেষ করে দেবে। কিন্তু পরে আর গেল না। দেখা যাক কি হয়??
.
সাজুর স্ত্রি মাতবরকে চেয়ারে বসিয়ে চোখ বেধে দিল। মাতবর বলল
-চোখ বাধছো কেন?
-আপনার সামনে লজ্জা করছে।
-লজ্জা কিসের সুন্দরি?? আদর দিয়ে লজ্জা ভুলিয়ে দেব।
.
চোখ বাধা অবস্থায় মাতবর বসে আছে। সাজুর স্ত্রির কাজ দেখে সাজু অবাক হয়ে গেল।সাজুর বউ খাটের নিচে থেকে একটা বটি বের করলো। বের করেই মাতবরের শরিরে আঘাত করতে থাকলো।
.
সাজু ঘরের মধ্যে ঢোকার আগেই মাতবরকে কুপিয়ে ক্ষত বিক্ষত করে ফেলেছে। সাজু কাছে গিয়ে বটি কেড়ে নিয়ে বলল
-একি করলে তুমি??
-ঠিক ই করেছি।
-একজন জলজ্যান্ত মানুষকে কুপিয়ে মেরে ফেললে!!! কি করেছিল সে তোমার?? তুমি একটা খুনি হতে গেলে কেন??
-করার বাকি রেখেছে কোথায়? তুমি বাড়ি থেকে যাওয়ার কয়েকমাস পরে প্রতিদিন মাতবর আর করিম আমাদের বাড়িতে আসতো। তবে টাকার জন্য আসতো না।আসতো আমার জন্য।আমাকে কাছে পাওয়ার জন্য। আর আমাকে খারাপ প্রস্তাব দিয়ে যেত। আমি রাজি হই নি।কিন্তু যখন মাত্রা ছাড়িয়ে গেল তখন করিমের প্রস্তাবে রাজি হলাম।আর মাতবরকে পরে আসতে বললাম। করিমকে আমাদের বাড়িতে ডেকে নিয়ে এসে সব ক্ষোভ ঝারলাম। খুন করলাম করিমকে।
-তার মানে করিমকেও তুমি?
-হ্যা। করিমকে বাড়ির উঠোনে খুন করেছি। কিন্তু মাতবর রাজি না হওয়ায় ঘরেই...
-তাই বলে খুন করলে!!!
-নিজের ইজ্জত বাঁচাতে এছাড়া উপায় ছিল না। ইজ্জত রক্ষা করতে খুন করেছি। এখন বলো আমি কি খুনি?
-না। তুমি খুনি হলে আমি অপরাধি হবো।তারচেয়ে লাশটা সরিয়ে ফেলি।
.
এস আই ইশাক একক্ষন ধরে সব দেখছিল।খুনের রহস্য পেয়ে গেছে। এবারে শুধু গ্রেফতার করতে পারলেই প্রোমোশন পেয়ে যাবে।
.
গ্রেফতার করতে গিয়েও ইশাক পারলো না।কারন তার বিবেকের কাছে বাধা দিল। গ্রেফতার করে এই প্রোমোশন নিলে বিবেক ইশাককে ক্ষমা করবে না। তার প্রোমোশন এর চেয়ে বেশি দামি একটি মেয়ের ইজ্জত.....

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ১০:০১

অলস শরীফ বলেছেন: বিষয়টি মর্মান্তিক মনে হচ্ছে। ঘটনাটি সত্য নাকি ভাই?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.