নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মনের আবোলতাবোল চিন্তাগুলো সাজিয়ে গল্পে পরিনত করতে চাই। কখোনও গল্প হয়। আবার কখোনও হয় না। ভাল লিখতে জানি না।তবুও লিখি। কারন এটা শখ হয়ে গেছে। আরর এই শখ জেকে বসেছে।

পাবনার তাঁরছেড়া বালক

মনের আবোলতাবোল চিন্তাগুলো সাজিয়ে গল্পে পরিনত করতে চাই। কখোনও গল্প হয়। আবার কখোনও হয় না। ভাল লিখতে জানি না।তবুও লিখি। কারন এটা শখ হয়ে গেছে। আরর এই শখ জেকে বসেছে।

পাবনার তাঁরছেড়া বালক › বিস্তারিত পোস্টঃ

বেইমানি

০৫ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৮:৫৭

গাড়ি তার আপন গতিতে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। চালকের পাশে বসে আরিফ।আর তার পাশেই রাশেদ বসে আছে।রাতের আলোতে রাস্তায় কিছু শিশির জলজল করছে। আর তার উপরে গাড়ির আলো পরে চিকচিক করছে।
.
কিছুদূর যেতেই গাড়ি থেমে গেল। রাশেদ চালককে বলল
-কি বেপার? গাড়ি দাড় করালে কেন?
-আর যাওয়া যাবে না।
-কেন?
-সামনে ওই দেখেন পুলিশ দাড়িয়ে আছে।কি করবো বলুন এখন।
-গাড়ির আলো নিভাও। পুলিশ অনেক দুরে আছে।আমাদের অবস্থান টের পাবে না।
-আচ্ছা। তাই করি।
.
রাশেদ এতক্ষণ চুপ করে বসে ছিল।অবস্থা দেখে বলল
-ভাই এখন কি করবো?
-আমিও বুঝতে পারছি না।
-মন্টু ভাইরে ফোন করলে কেমন হয়?
-মন্টু ভাইরে ফোন করে কি হবে?
-এর আগে তো মন্টু ভাই আসতো। সে নিশ্চয় বিকল্প পথ জানে।
-আচ্ছা। মন্টু রে ফোন দেই আমি।ফোন রাখলাম কোথায়?
-ওই যে।
.
আরিফ ফোন নিয়ে মন্টুকে ফোন দিল।কিন্তু কয়েকবার চেষ্টা করেও যখন ফোন ধরলো না।তখন আরিফের মেজাজ খিচরে গেল।তবুও আবারও চেষ্টা করতে থাকলো।
.
কিছুক্ষণ পরে ফোনন ধরলো। ফোন ধরে বলল
-কি খবর পার্টনার?
-খবর পরে বলি।আগে বল ফোন ধরছিলি না কেন?
-আরেহ টয়লেটে গেছিলাম।
-এদিকে আমাদের টয়লেট হয়ে যাচ্ছে আর উনি টয়লেটে গেছে।
-কি হয়েছে?
-সামনে পুলিশ। এখন কি করবো?
-কতদুর? তোমাদের দেখে নি তো?
-নাহ। সামনে গেলেই দেখবে।
-আছো কোথায় এখন?
-হাইওয়ের পাশে যে একটা জঙ্গল। তার কাছাকাছি।
-তাহলে এক কাজ করো গাড়ি জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে ঢুকাও।
-কিন্তু....
-কিন্তু নয়। জঙ্গলের মধ্যে কিছুপথ খারাপ আছে।তবুও যাওয়া যাবে। কিছুদূর গেলেই বড় রাস্তা পাবে।
-আচ্ছা।
.
জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে গাড়ি যাচ্ছে। মাঝে মাঝে গাড়ি দোল খাচ্ছে।মনে হচ্ছে এই বুঝি একদিকে উল্টে গেল।তবুও ভাল বৃষ্টি নেই।বৃষ্টিতে রাস্তা ভেজা থাকলে গাড়ি কাদায় আটকে যেত।
.
অবশেষে গাড়ি পার করে বড় রাস্তায় এসে পৌঁছাল।গাড়ি আবারও আগের গতিতে চলতে থাকলো। এই রাস্তায় লোকজন কম।আর পুলিশ আসার সম্ভাবনাও কম।
.
বড় রাস্তা দিয়ে যেতে রাশেদ বলল
-ভাই। এখন মন্টু ভাইরে জানানো উচিৎ।
-কি জানাবো? এমনিতেই জানবে।
-তবুও...
-আচ্ছা। ফোনটা দে।
-আমার ফোন কেন?
-আমারটাতে চার্জ নেই।
-আচ্ছা ধরেন।
.
রাশেদের ফোন নিয়ে আরিফ মন্টুকে ফোন করলো। মন্টু ধরে বলল
-রাশেদ এখন কোথায়?
-আমি রাশেদ না আরিফ।
-রাশেদের ফোন ধেকে ফোন করেছ কেন?
-আমার ফোনে চার্জ নেই।বন্ধ হয়ে আছে।
-একদিকে ভালই হয়েছে। পুলিশ তোমাদের খবর জানতে পেরে মোবাইল নেটওয়ার্ক এর মাধ্যমে তোমাদের অবস্থান জানার চেষ্টা করছে।
-তাহলে ফোন বন্ধই থাক।
-হ্যা। বন্ধই রেখ। কোথায় তোমরা এখন?
-জঙ্গল পার হয়ে বড় রাস্তায়।
-এখন আর সমস্যা নেই।মনে রেখ এবারে কিন্তু অল্প টাকার চালান না।এখানে কিন্তু দুই কোটি টাকার মাল আছে।
-তুমি চিন্তা করো না।
-যদি এবারে ঠিকমত আসতে পারো তাহলে আমরা লালে লাল হয়ে যাব। এলাকায় এখন ড্রাগ সরবরাহ বন্ধ আছে।আর আমরা ড্রাগ এনে চড়া দামে বেশি লাভ করবো।
-হ্যা জানি।ঝামেলা না করে পাইকারি বেচে দেব।তাতেও অনেক লাভ হবে।
-হ্যা।
-আচ্ছা রাখছি।সব জানাবো ফোনে।
-আচ্ছা।
.
ফোন রেখে আরিফ বলল
-ড্রাইভার ভাই।সামনে গিয়ে বামে যাও।
-আচ্ছা।
.
গাড়ি এদিকে যাওয়া দেখে রাশেদ বলল
-কি বেপার ভাই?এদিকে যাচ্ছেন কেন?
-এটা নতুণ ঠিকানা।
-কিন্তু মন্টু ভাই তো কিছু বলল না।
-মন্টুও জানে না এই ঠিকানা।
-মানে!!
-কথা না বলে চুপ করে বসে থাক।সময় হলে সব মানের উত্তর পেয়ে যাবি।
-হুম।
.
ট্রাক এসে জঙ্গলের মধ্যে একটা ঘরের সামনে থামলো। ঘরের সামনে থামিয়ে দুইজন ই নামলো। গাড়ি থেকে থেকে আরিফ প্রস্রাব করে এসে বলল
-যাক বাচা গেল।হাপ ছেড়ে বাঁচলাম। দুই চাপ একেবারে চেপেছিল।
.
মন্টু কাছে গিয়ে বলল
-ভাই।এখন কি মাল নামানোর জন্য লোক ডাকবো।
-না। এক পার্টির সাথে কথা হয়েছে। ওরা শতকরা ২০% লাভ দিয়ে ট্রাকসহ মাল নিয়ে যাবে।
-তাহলে মন্টু ভাইরে ডাক দেই।
-নাহ। মন্টুরে জানানো যাবে না।
-কি বলছেন ভাই?
-এই মালের টাকা আমি একা চাই।আর এই কথা কাউকে না জানিয়ে আমার সাথে চুপচাপ থাক।
-কিন্তু মন্টু ভাইয়ের সাথে বেইমানি ঠিক হবে?
-যদি তুই মন্টুরে বলিস তাহলে পাবি অল্প কয়েকভাগ। আর আমার সাথে থাকলে পাবি লাভের ২০%।ভেবে দেখ।
-যদি মন্টু ভাই জানতে পারে তাহলে কি হবে?
-কিছুই হবে না। জানতে জানতে আমরা চলে যাব বিদেশে। এই দেখ তোর আর আমার পাসপোর্ট ভিসা।
-তাহলে আমি রাজি।কারন টাকার কাছে কোন বেইমানি বলে শব্দ নেই।
-বুঝেছিস।তোর ফোনটা দে।ফোন করে পার্টিকে ডাকি।
-আমার ফোনে বেশি টাকা নেই।
-বিশ লাখ টাকা পেলে রিচার্জ করে নিস।
.
একটা কোম্পানির সাথে কথা বলে মাল বুঝিয়ে দিল। তারা টাকা দিয়ে ট্রাকসহ মাল নিয়ে তাদের মত চলে গেল।রাশেদ বলল
-এবার তাহলে আমার পাওনা টা বুঝিয়ে দিন।
-আরে এলসাথেই তো যাবো।পরে নিয়ে নিস।
-এখনই দিতে হবে।
-পাগল হয়ে গেছিস দেখছি।আচ্ছা বস এখানে। এখানে তো চেক তোকে টাকা দেব কিভাবে? আমার কাছে ১৭% আছে।আর ৩% টাকা তুলে দেব।
-পুরোপুরি দিতে হবে।
-এখন নাঈ।
-তাহলে চেকটাই আমাকে দিয়ে দিন।
-কি বললি শুয়োরের বাচ্চা।
.
আরিফের হাতে থাপ্পড় খেয়ে রাশেদ চুপ করে দাড়িয়ে থাকলো। আরিফ মেরে চলে যাচ্ছিল এমন সময়ে রাশেদ পকেট থেকে পিস্তল বের করে লোড করে নিল।
.
লোড করার শব্দ শুনেই আরিফ তার দিকে ঘুরে তাকাল। রাশেদ ততক্ষনে আরিফের শরিরে গুলি করা শুরু করে দিয়েছে। আরিফ কিছু বলতে গিয়ে বলতে পারলো না। শরিরটা নিচে পরে গেল।
.
রাশেদের শরিরে এখনও জিবন আছে।ছটফট করছে। রাশেদ কাছে গিয়ে পকেট থেকে চেকটা নিয়ে নিল।আর পাসপোর্ট খুঁজতে থাকলো। কিন্তু কোথায় রেখেছে পাসপোর্ট??
.
অবশেষে পকেট থেকে পাসপোর্ট পেয়ে হাতে নিয়ে আরিফের দিকে তাকিয়ে অট্টহাসি হেসে বলল
-ভাই আমার ২০% না।আমার পুরো ১০০% চাই। অল্প নিয়ে আমি খুশি না।
হাসতে সামনের দিকে পা বাড়াল। উদ্দেশ্য এখান থেকে চলে যাওয়া।
.
রাশেদ আজকের পর থেকে আর দেশে থাকবে না। বিদেশে চলে যাবে।সবাই জানবে ড্রাগ নিয়ে পুলিশের সাথে গোলাগুলি হয়ে আরিফ মরছে।আর এতে তেমন কিছু হবে না।
আর মন্টু জানবে না আসল কাহিনি। আর যদিও জেনে যায় তাহলে রাশেদের কিছুই করতে পারবে না। ততদিনে রাশেদ বিদেশে কিছু করে খাচ্ছে।
.
রাশেদ বেইমানি করলেও তেমন কিছু মনে হচ্ছে না।কারন দুই কোটি চল্লিশ টাকা পেয়ে তার মত ভাগ্য খুলে ফেলেছে। টাকার কাছে বেইমানি বলে কিছু নেই।টাকার কাছে সবই তুচ্ছ। সেটা রাশেদ ঠিকই জানে।....

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:১১

প্রামানিক বলেছেন: সুন্দর গল্প। ধন্যবাদ

২| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:৫৩

ঢাকাবাসী বলেছেন: শরিরটা নীচে পড়ে গেল। তারপর, ' রাশেদের শরীরে তখনও জীবন আছে'র জায়গাতে আরিফের শরীরে তখনো জীবন আছে হবে। মোটামুটি লাগল্ ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.