নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মনের আবোলতাবোল চিন্তাগুলো সাজিয়ে গল্পে পরিনত করতে চাই। কখোনও গল্প হয়। আবার কখোনও হয় না। ভাল লিখতে জানি না।তবুও লিখি। কারন এটা শখ হয়ে গেছে। আরর এই শখ জেকে বসেছে।

পাবনার তাঁরছেড়া বালক

মনের আবোলতাবোল চিন্তাগুলো সাজিয়ে গল্পে পরিনত করতে চাই। কখোনও গল্প হয়। আবার কখোনও হয় না। ভাল লিখতে জানি না।তবুও লিখি। কারন এটা শখ হয়ে গেছে। আরর এই শখ জেকে বসেছে।

পাবনার তাঁরছেড়া বালক › বিস্তারিত পোস্টঃ

যৌতুকের কারনে

১৩ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:০২


.
আজিজুল সাহেব সোফায় বসে আছে।আর তার পাশে বসে আছে তার মেয়েকে। আর তাদের সামনে ছেলেপক্ষ বসে আছে।যারা মেয়ে দেখতে এসেছে। আর তারা আজিজুল সাহেবের মেয়ে আলেয়াকে দেখতে এসেছে।
.
ছেলের বাবা আজিজুল সাহেবকে বলল
-আপনার মেয়েকেকে আমাদের পছন্দ হয়েছে। তাহলে এবার বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করা যাক।
-হ্যা। তাহলে কবে দিন ঠিক করতে চাচ্ছেন?
-সামনের মাসের ছয় তারিখে।
-আচ্ছা তাহলে এই দিনই থাক।
-একটা কথা আপনাদের মেয়েকে আপনারা সাজিয়ে দিবেন নাকি আমাদের ই...
-আরে নাহ।আমার একমাত্র মেয়ে। সোনা দিয়ে আমি সাজিয়ে দেব।
-তাহলে তো কোন কথাই থাকলো না।আর জামাইকে কিছু দিতে....
-ও বলতে হবে না।জামাইকেও কিছু দেব।
-দেখুন আমরা ভদ্র পরিবার। আমরা যৌতুক নেব না।দিতে চাইলে আমাদের ছেলেকে একটা হোন্ডা দিতে হবে।
-আচ্ছা দেব।
-আচ্ছা তাহলে ওই কথাই থাকলো।
.
আজিজুল সাহেব ছেলেপক্ষকে বিদায় করে বসে ভাবতে থাকলো। আজিজুল সাহেবের স্ত্রি এসে বলল
-তুমি যে বললে। মেয়েকে সোনা দিয়ে সাজিয়ে দিবে।অত টাকা কোথায় পাবে?
-আরেহ চিন্তা করছো কেন?আমাদের পাশের যে জমিটা আছে। ওই জমি বিক্রি করে দেব।
-কোন কিন্তু নয়।একটি মাত্র মেয়ে।আর মেয়ের খুশির জন্য এটা কোন ব্যাপার ই না।
.
আজিজুল সাহেব জমি বিক্রি করার জন্য জমির দালালদের কাছে যাচ্ছে....শুধু গহনা তৈরি করলেই হবে না।বিয়ের খরচ আছে।আবার জামাইকে একটা হোন্ডা কিনে দিয়েও হবে।
.

.
দেখতে দেখতে কবে যে বিয়ের দিন চলে আসলো সেটা আজিজুল সাহেন বুঝতেই পারে নি।আজ বিয়েতে আজিজুল সাহেব খুবই ব্যাস্ত।মেহমানদারি করছে। আবার সবদিকে দেখাশোনা করছে। একমাত্র মেয়ের বিয়ে বলে কথা।
.
আজিজুল সাহেব কে তার ভাতিজা ডাক দিয়ে বলল
-চাচা। ওদের আসার কথা একশ জন। এসেছে একশ পঞ্চাশ জন।
-আরে না আসে। দরকার হলে তুই বাজারে গিয়ে সবকিছু বেশি করে কিনে নিয়ে আয়।টাকা নিয়ে যা।
-আচ্ছা।
.
আজিজুল সাহেব টাকা জোগার করতে পেরেছে ঠিকই।কিন্তু অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। জমি বিক্রি করতে না পেরে লোন নিয়েছে বিয়ের জন্য।তবুও টাকা জোগার করতে পেরেছে এই অনেক।তবুও হোন্ডা কেনার টাকা জোগার করতে পারে নি।
.
বিয়ের কাজ শেষ হয়েছে। মেয়েকে এখন বিদায় দিতে হবে।আজিজুল সাহেব মেয়ের কাছে এসে দাড়িয়ে আছে।চোখ দিয়ে মাঝে মাঝে পানি পরছে।কিন্তু কান্না চেপে রয়েছে। কারন মেয়েকে বিদায় জানাতে হবে।
.
মেয়েকে বিদায় জানাতে গিয়ে গিয়েও পারছে না।মেয়ে তাকে ধরে রয়েছে। কান্না করছে শুধু। আজিজুল সাহেব বলল
-মারে।কাদিস না।আমি তো যাবো তোদের বাড়িতে। তোকে তো পর করে দিচ্ছি না।তুই শুধু আমাদের বাড়ি থেকে ওদের বাড়িতে যাচ্ছিস। ওরা খুব ভাল।
.
মেয়েকে অনেকে কষ্টে বিদায় জানিয়ে আজিজুল সাহেব ঘরে এসে বাচ্চাদের মত কান্নাকাটি শুরু করলো মনে হচ্ছে। মেয়েকে তার কাছ থেকে দুরে সরিয়ে দিচ্ছে। তবুও আজিজুল সাহেবকে মেনে নিতেই হবে।
.

.
বাবা বলেছিল এটা ভদ্র পরিবার। কতটা ভদ্র পরিবার সেটা আলেয়া এক রাতেই বুঝে গিয়েছে। আর তাদের আচর আচারনও বুঝতে পেরেছে।
.
বিয়ের রাতে মানুষ বউ দেখতে আসে।আর ছেলের আত্বিয়রা বউ দেখতে না এসে সোনা দেখতে এসেছিল। একজন তো সোনার গহনা দেখে ছেলের মাকে বলল
-কয় ভড়ি সোনা?
-ওই দিয়েছে নাম অল্প। নাম করার কথা নাম করেছে।
-আর মোটরসাইকেল কি দিয়েছে?
-নাহ।আমরা কি মোটরসাইকেল চেয়েছিলাম নাকি?নিজে থেকে দিতে চেয়েও দেয় নি।
-আর দিবেও না কোনদিন।
.
এইসব দেখেও আলেয়া মেনে নিয়েছে। আর মেনে নিতেও হবে।এদের আপন করেই তাকে থাকতে হবে।বাবা মা ভালর জন্যই এখানে বিয়ে দিয়েছে।
.

.
কয়েকদিন আগে আলেয়া এসে বলল
-বাবা তোমাদের জামাই ব্যাবসা করবে তার টাকা লাগবে। কিছুদিন পরে তোমাদের টাকা ফেরত দিয়ে দিবে।
-আরে ফেরত দিতে হবে কেন?আমার সব টাকা পয়সা তো তোরই জন্য।আর তোর স্বামিকে দিলে সে টাকা ফেরত নেব কেন?
.
আজিজুল সাহেব টাকার খোঁজে বের হল।জমি বিক্রি কিছু টাকা ব্যাংকে রাখা ছিল। তাদের ভবিষ্যৎ এর জন্য।জমি বিক্রি বাকিটাকা জামাইয়ের হোন্ডা কিনে দিয়েছে আর লোন শোধ করতে লেগেছে।মেয়েই তাদের ভবিষ্যৎ। আরর মেয়ের জন্য আজিজুল সাহেব সবকিছু করবে।
.
আজিজুল সাহেব বেড়িয়ে যেতেই আলেয়ার মা বলল
-কিরে ওই বাড়িতে কি খাস না নাকি?কি অবস্থা হয়েছে তোর?
-খাব না কেন?সারাদিন খাওয়ার উপরেই থাকি।
-তাহলে এমন হয়ে গেছিস কেন?আয়তো আমার সাথে।
-উউ
-কিরে তোর হাতে কি হয়েছে দেখি?
-আরেহ কিছু হয় নি।
-দাগ এল কোথা থেকে?এ তো আঘাতের দাগ।এ দাগ কোথা থেকে এল?
-তোমাদের জামাই দিয়েছে এই দাগ।আমি টাকা নিতে আসতে চাই নি বলে মেরেছে। আমি বললাম "কিছুদিন আগেও তো টাকা এনে দিলাম।তাহলে এখন আবার কেন?"
"আরে আমি কি যৌতুক চাচ্ছি?আমি ব্যাবসা করবো বলে চাচ্ছি"
-বলিস কি?আয় আমার সাথে আয়।
.

.
মেয়েটিকে সেদিন টাকা দেওয়ার পরে আর তেমন মেয়েটির সাথে যোগাযোগ করতে পারে নি।আলেয়ার মা এসে বলল
-এই শুনছো? আলেয়া ফোন করেছে।
-নিয়ে আসো।
.
ফোন ধরতেই ওপাশ থেকে বলল
-বাবা।আমাকে বাচাও।আমাকে নিয়ে যাও
আর কিছু শোনা গেল না।
.
আজিজুল সাহেব ফোন কেটে দিয়েই ছুটলো মেয়ের বাড়ির দিকে।.....
.
মেয়ের শ্বশুরবাড়ি গিয়ে দেখলো মেয়ে ঘুমিয়ে আছে।তবে এই ঘুম চিরদিনের ঘুম। আজিজুল সাহেব চিৎকার দিয়ে মেয়ের কাছে গিয়ে শুধু বসে পরলো।
.
বাবার কাছে সবচেয়ে ভারি হল তার সন্তানের লাশ। আর এই ভারি জিনিসই কোনদিন বহন করতে হবে সেটা হয়তো আজিজুল সাহেব কোনদিন ভাবে নি।
.
মেয়েকে বাড়ির সামনে কবর দিল।কারন যখনই মেয়ের কথা মনে পরবে কবরের দিকে তাকিয়ে কাঁদতে পারবে।
.
বাড়ির মধ্যে আসতেই পুলিশ বলল
-আপনার মেয়েকে মারার পিছনে কারা দায়ি?
-জেনে আর কি করবেন?
.
আজিজুল সাহেন চাইলেই আলেয়ার শ্বশুরবাড়ির লোকদের শাস্তি দিতে পারবে।কিন্তু তাহলে কি আর মেয়েকে ফেরত পাবে???
.
আমাদের মাঝেই রয়েছে আলেয়ার শ্বশুরবাড়ির লোকদের মত কেউ না কেউ। আমাদের মানসিকতা এমনই রবে?নাকি কোনদিন পরিবর্তন হবে?এভাবেই আমাদের দেশের অনেক আলেয়া যৌতুকের কারনে নির্যাতনের শিকার।কিন্তু আমরা কয়জনের খবর জানি বা কয়জনের খবর রাখি????

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:৩৪

হানিফঢাকা বলেছেন: সময় পরিবর্তন হয়েছে, কিন্তু গল্প সেই একই রয়ে গেছে। গল্প কেন পরিবর্তন হয়না?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.