নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মনের আবোলতাবোল চিন্তাগুলো সাজিয়ে গল্পে পরিনত করতে চাই। কখোনও গল্প হয়। আবার কখোনও হয় না। ভাল লিখতে জানি না।তবুও লিখি। কারন এটা শখ হয়ে গেছে। আরর এই শখ জেকে বসেছে।

পাবনার তাঁরছেড়া বালক

মনের আবোলতাবোল চিন্তাগুলো সাজিয়ে গল্পে পরিনত করতে চাই। কখোনও গল্প হয়। আবার কখোনও হয় না। ভাল লিখতে জানি না।তবুও লিখি। কারন এটা শখ হয়ে গেছে। আরর এই শখ জেকে বসেছে।

পাবনার তাঁরছেড়া বালক › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটা মধ্যবিত্ত বেকার যুবক

১৬ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১২:২৪

আশিক চাকরির ইন্টার্ভিউ রুমের দরজায় দাড়িয়ে বলল
-আসতে পারি?
-হ্যা। এসে বসুন।
-ধন্যবাদ।
-আপনার সবকিছু আমরা দেখলাম। তো আপনি এই চাকরি কেন করতে চাচ্ছেন?
-আমার এই চাকরিটা আমার খুব দরকার।
-এই অফিসের উপর মহলে আপনার কেউ চাকরি করে?
-না।
-চাচা,মামা যে কেউ?
-না। কেউ না।
-দেখুন আশিকুর রহমান। আপনাকে আমরা চাকরিটাটা দিতে চাই।কিন্তু আপনার উপর মহলে লোক নেই।তাহলে আপনাকে চাকরি কিভাবে দেওয়া যায়?
-লোক...
-দেখুন আমাদের অফিসে চাকরি করতে হলে কাউকে তো দায়বদ্ধ থাকতে হবে।আপনার তো কোন লোক নেই। তাহলে আপনি অন্য একটা কাজ করতে পারেন।
-কি কাজ?
-আপনি আমাদের অফিস ফাউন্ডেশন এ চার লাখ টাকা জমা করে দিন।
-আচ্ছা।
-এবারে আসতে পারেন।দুইদিনের মধ্যে টাকা না দিতে পারলে আমরা অন্য কাউকে নিয়ে নেব।
.
আশিক বাইরে চলে আসলো। আশিক জানে এটা এটা কোন অফিসের টাকা না।এটা অফিসের লোকদের জন্য ঘুষ। আর এই ঘুষের কারনেই এতদিনেও আশিকের চাকরি হয় নি। আশিক এর আগে অনেকবার ইন্টার্ভিউ দিয়েছে। কিন্তু এই কারনেই চাকরি হয় নি।
.
বাড়িতে যাচ্ছিল। এমন সময় আশিকের প্রেমিকার ফোন আসলো।ওপাশ থেকে বলল
-তোমার চাকরি হয়েছে?
-না।
-এবারেও হয় নি?তুমি তো জানো আমার বাবা ছেলে দেখছে আমার বিয়ের জন্য।এবারে কিন্তু আমার বিয়ে দেবে অন্য ছেলের সাথে। আমি আটকাতে পারবো না।
-এর পরের বারে হয়ে যাবে।
-এইবারেই কিন্তু শেষ সুযোগ।
-আচ্ছা।
.
বাড়িতে এসে ঢুকতেই মা জিজ্ঞেস করলো
-তোর চাকরি হল রে?
-না।
-কেন? তোর পরিক্ষা গুলো তো ভালই হয়েছিল।চাকরি হল না কেন?
-ওরা শুধু পরিক্ষা ভাল চায় না। ওরা টাকা চায়।
-টাকা!!
-হ্যা। অথবা উপর মহলের লোক চায়।আমাদের যা নেই।
-কত টাকা?
-চার লাখ।
-চার লাখ!! এত টাকা।!!
-হ্যা। এত টাকা।এত টাকা নাহলে আমার চাকরি হবে না।
-চিন্তা করিস না পরের বারে হয়ে যাবে।
.
রাতে খেয়ে বিছানায় শুয়ে রাজ্যের চিন্তা নিয়ে আশিক শুয়ে থাকলো।আশিক প্রেমিকাকে আশ্বাস দিয়েছে তার চাকরি হবে। কিন্তু সে নিজেও জানে না কবে তার চাকরি হবে? অথবা চাকরি হবে কি না?
.
বিদ্যা অর্জন করা ভাল।বেশি বিদ্যা অর্জন করে শিক্ষিত হওয়া গরিবের জন্য ভাল না।এটা গরিবের জন্য বিলাশিতা মাত্র।আর এই বিলাশিতা গরিবের জন্য খাটে না। কারন চাকরি পাওয়ার জন্য তাদের টাকাও থাকে না অথবা তাদের উপর মহলের লোকও থাকে না।আর কিছু লোক এমনিতেই চাকরি পেয়ে যায়। যারা সেরাদের সেরা হয় তারা।কিন্তু সেরাদের সেরা কয়জন হয়?
.
বিদ্যা ভাল থাকলেও গরিবের জীবিকা নির্বাহ করতে বিদ্যা শিখতে হয়।আর এই বিদ্যাই যদি জিবিকার কাজে না লাগে তাহলে কি গরিবের বিদ্যান হয়ে লাভ আছে?শুধু জ্ঞ্যানই অর্জন করা হয়। বইয়ে লেখা থাকে "পড়ালেখা করে যে গাড়িঘোরা চড়ে সে।" কিন্তু এদের জন্য হয় "পড়ালেখা করে যে বেকারত্বের গ্লানি সহে সে"
.
আশিকের মা আশিককে আশ্বাস দিল।কিন্তু সেও জানে না আশিকের চাকরি হবে কিনা?কিন্তু মধ্যবিত্ত আর গরিবদের একটা ব্যাপার হল তারা সপ্ন দেখতে ভালবাসে আর তারা আশা বাঁচিয়ে রাখে। তাই তারা এভাবে সপ্নকে জিইয়ে বাঁচে।
.
হয়তো কোন একদিন আশিকের চাকরি হতে পারে।কিন্তু সেদিন আশিকের প্রেমিকা থাকবে না।তার প্রেমিকা অন্য কোন সাহেবের বউ হয়ে যাবে।আর তার উপর থেকে আশিকের অধিকারটুকু উঠে যাবে।
.
আর চাকরি পেলেও পাবে হয়তো কোন সামান্য চাকরি।আর সে চাকরি পেয়ে সংসার কোনরকমে চলে যাবে।কিন্তু তার সপ্নটা ভেঙে যাবে। তার সপ্নের রাজপ্রাসাদ ও তৈরি করা হবে না।আর তার সপ্নের রানিও থাকবে না।
.
কিন্তু জিবন চালানোর জন্য কোন না কোনভাবে জিবনকে তো চালিয়ে নিয়ে যেতেই হবে। তাই ছোট খাটো চাকরি করেই জিবন কে তার আপন গতিতে তার সামনের দিকে নিয়ে যেতে সেটা ইচ্ছা হলে অথবা বাধ্য হয়ে।
.
আর এটাই।একজন শিক্ষিত মধ্যবিত্ত গরিব ছেলের জিবন।যেই জিবন তার নিজের সাথেও মাঝে মাঝে বেইমানী করে ফেলে।তবুও একেই আঁকড়ে বাঁচতে হয় একজন মধ্যবিত্ত ছেলেকে।
.
-- Jubaer Hasan Rabby

মন্তব্য ১ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১:১০

সুমন কর বলেছেন: নির্মম সত্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.