নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মনের আবোলতাবোল চিন্তাগুলো সাজিয়ে গল্পে পরিনত করতে চাই। কখোনও গল্প হয়। আবার কখোনও হয় না। ভাল লিখতে জানি না।তবুও লিখি। কারন এটা শখ হয়ে গেছে। আরর এই শখ জেকে বসেছে।

পাবনার তাঁরছেড়া বালক

মনের আবোলতাবোল চিন্তাগুলো সাজিয়ে গল্পে পরিনত করতে চাই। কখোনও গল্প হয়। আবার কখোনও হয় না। ভাল লিখতে জানি না।তবুও লিখি। কারন এটা শখ হয়ে গেছে। আরর এই শখ জেকে বসেছে।

পাবনার তাঁরছেড়া বালক › বিস্তারিত পোস্টঃ

এ কোন মায়ায়

১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:৫৬


.
বাড়িতে ফিরে ঘরে ঢুকে বসতে না বসতেই রুপার মা এসে বলল
-তোর বাবা তোর বিয়ে ঠিক করেছে।
-বিয়ে মানে!!
-বিয়ে মানে বিয়ে। ছেলে শহরে থাকে।বয়স একটু বেশি হলেও চাকরি করে ভাল।
-তাই বলে বেশি বয়সি ছেলের সাথে!!!
-দেখ। পুরুষ মানুষ হল বটগাছের মত।যত বয়স হবে তত জায়গা জুড়ে ছায়া দেবে....
.
মায়ের কথা না শুনে রুপা ঘর থেকে বাইরে এসে পুকুরপাড়ে চলে গেল। পুকুর পাড়ে বসে ভাবতে থাকলো। বিয়ে হলে কি তার নিজের স্বাধীন বলে কিছু থাকবে? নাকি স্বামির কথামত চলতে হবে?
.
আরো অনেক কথা ভেবে রুপা সিদ্ধান্ত নিল এই বিয়েতে রুপা না করে দেবে।কিন্তু পরেই মনেহল তারা বাবার কথা। তার বাবা বলেছে।তাহলে এই বিয়ে বন্ধ করার সাহস কারো নেই।
.

.
নাজিমুল অফিসের চেয়ারে বসে মোবাইলের দিকে তাকিয়ে আছে। মোবাইলে একটা ছবি ভেষে রয়েছে। ছবির মেয়েটির নাম রুপা।যেই মেয়ের সাথে নাজিমুল এর বিয়ে ঠিক করা হয়েছে।
.
ক্যারিয়ার নিয়ে ব্যাস্ত থাকায় বিয়েটা করা হয় নি।পরে মনে হল বিয়েটা করা উচিৎ। আর বিয়ের জন্য মেয়ে খুঁজতে গিয়ে রুপার ছবিটা দেখেই রাজি হয়েছে। বয়সের যথেষ্ট দুরত্ব থাকলেও রুপার বাবা মা রাজি হয়েছে। তাই নাজিমুল ও বিয়ে করতে চেয়েছে।
.
একজনকে ভালবাসতে বয়স কোন বাধা দিতে পারে না।ভালবাসা মন থেকে আসে।সেটা কখন আসে কিভাবে আসে সেটা মানুষ বুঝতে পারে না। আর সেখানে কোন বাধাই বাধা মনে হয় না।
.

.
রুপা বিয়ের সাজে ঘরে বসে আছে।আর তার পাশে তার বান্ধবিরা। রুপাকে সাজিয়ে দিয়ে তার পাশে সবাই গল্প করছে।রুপাও তাদের সাথে গল্প করতে চাচ্ছে।কিন্তু মায়ের জন্য পারছে না।মা বলেছে
-বিয়ের দিনে কোন গল্প করতে নেই।
বিয়ের দিনেই তো গল্প করবে। কারন আজ এ বাড়ি থেকে চলে যাবে।কিন্তু মা কথা বলতে বারন করেছে।
.
কেউ একজন এসে বলল
-এই বর এসেছে। সবাই বর দেখতে চলো।
রুপাও উঠে চলে যাচ্ছিল বর দেখতে। এমন সময় তার এক ভাবি বলল
-কোথায় যাচ্ছিস?
-বর দেখতে।
-বিয়ের আগে বর দেখতে হবে না।শ্বশুরবাড়ি গিয়ে দেখবি।
রুপা তাই বসে রইলো। যার সাথে রুপার সারাজিবন জড়াতে যাচ্ছে। তাকেই নাকি দেখতে পারবে না?এটা রুপা মানতে পারছে না।তবুও মানতে হচ্ছে।
.
কাজি আসলো বিয়ে পড়াতে।বিয়ে পড়াতে গিয়ে রুপা কবুল বলতে চাচ্ছে না।কারন যাকে দেখলো না জানলো না।তার সাথে এভাবে কবুল বলতে রাজি না।কবুল যখন বলতেই চাচ্ছিল না।তখন রুপার বাবার কথা মনে পরলো। রুপার বাবা বলেছে
-তোকে এখানেই বিয়ে দেব। তাতে যা হয় হবে।
.
রাজি না থাকলেও শেষে কবুল বলতেই হল।কবুল বলার পরে রুপা বসে ভাবতে থাকলো...
.
বিয়ের পরে এখন রুপাকে সেই অচেনা লোকটির সাথে তাকে দিয়ে দেওয়া হল।রুপার স্বামি হলেও রুপার কাছে লোকটা অচেনা।
.

.
সবাই যাওয়ার পরে নাজিমুল বাসর ঘরে ঢুকলো।নাজিমুল ভেবেছিল রুপা তাকে পছন্দ করবে না। এখন মনে হচ্ছে রুপা তাকে পছন্দ করেছে। বাড়ি ছেড়ে আসার সময় একবারও রুপাকে কাঁদতে দেখে নি।
.
রুপার দিকে তাকিয়ে নাজিমুলের হুমায়ন স্যারের গল্পের রুপার কথা মনে পরে গেল। নাজিমুলের রুপা চরিত্রটা পছন্দ। আর নাজিমুল এমন কাউকেই চেয়েছিল। হুমায়ন স্যারের রুপা ছিল কাল্পনিক।কিন্তু এই রুপা বাস্তব। এই রুপা হুমায়ন স্যারের রুপা চরিত্রের চেয়েও বেশি সুন্দর।
.
নাজিমুল রুপার কাছে গিয়ে বলল
-বসতে পারি?
-না।
-কেন?
-আপনাকে আমার পছন্দ হয় নি।তাই আপনাকে আমার কাছে বসার অনুমতি দেব না।
-পছন্দ হয় নি!!!তাহলে আমাকে বিয়ে করেছ কেন?
-পারিবারিক চাপের কারনে বিয়ে করতে রাজি হয়েছি।
-আমাকে তোমার কি কারনে অপছন্দ?
-আপনার বয়স বেশি বলে।
-বয়স বেশি কোন ব্যাপার?ভালবাসায় বয়স কোন কিছু না।
-সেটা উপন্যাস অথবা গল্পে হয় কিন্তু জিবনে হয় না। আপনি আমার নামে মাত্র স্বামি হয়ে থাকবেন। কিন্তু কোনদিন স্বামির অধিকার ফলানোর চেষ্টা করবেন না।
.

.
ব্যালকনিতে রুপা দাড়িয়ে আছে একা একা।বিয়ের একমাস হয়ে গেলেও রুপার কথা নাজিমুল এখনও মেনে চলেছে। এখনও জোড় করে স্বামির অধিকার ফলাতে আসে নি।রুপা কেন যেন নাজিমুল কে মেনে নিতে পারে না।
.
কয়েকদিন ধরে রুপা খেয়াল করছে একটা ছেলে প্রায়ই তাকিয়ে থাকে তার দিকে। রুপার সাথে চোখাচোখি হলে মুচকি হেসে চলে যায়। রুপাও তার দিকে তাকিয়ে থাকে।কোন একটা মায়া রুপাকে তার দিকে আকৃষ্ট করে।রুপার একবার মনেহয় সে বিবাহিত। কিন্তু ছেলেটার দিকে তাকালে এইসব কথা ভুলে যায়।
.
আজ রুপা ছেলেটাকে দেখছে না।তাই রুপা না চাইলেও মায়ার টানে ছেলেটাকে খুঁজতে রুপা নিচে চলে গেল।
.
নিচে গিয়ে চারদিকে তাকিয়ে খুঁজতে খুঁজতে হঠাৎ রুপা চমকে গেল। কারন ছেলেটা কখন তার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে সেটা রুপা বোঝে নি।ছেলেটি প্রথমে বলল
-আমাকেই খুঁজছিলে?
-আপনাকে কেন খুঁজবো?
-তাহলে নিচে এসে এদিক সেদিক কেন তাকাচ্ছিলে?
-এমনিতেই।
-সত্য কথা বলো। মিথ্যা বলে পরে মনের কাছে আসামি মনে হবে।
-আপনাকেই খুঁজছিলাম।
-কেন খুঁজছিলে?
-কোন এক মায়ায় টানে। কিন্তু চাইলেও এই মায়ার বাধনে আমি জড়িয়ে থাকতে পারবো না।কারন আমি অন্য কারো বউ।
-বউ!!কিন্তু আমি জানি তুমি তাকে স্বামি বলে মানো না।তাকে ভালবাসো না।তোমার এই চোখ বলছে তুমি আমাকে ভালবাসো।
-আপনাকে কেন ভালবাসবো?
-মনকে জিজ্ঞেস করো কেন ভালবাসবে?
-জানি না।
.
রুপা এক দৌড়ে উপরে চলে আসলো।আর এসে ভেবে নিল সে ছেলেটির মায়ায় জড়িয়ে থাকবে। আর ছেলেটিকেই ভালবাসবে।দরকার হলে এই সংসার নামক শিকল ছিঁড়ে বেড়িয়ে যাবে। হয়তো তার নাম হবে পরকিয়া প্রেম।
.

.
রুপাকে নাজিমুল সন্দেহের চোখে দেখে নি আগে।কিন্তু এখন কেন যেন সন্দেহ হচ্ছে।তাই আজ রুপার দিকে নজর রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
.
অফিসে না গিয়ে রুপার জন্য নাজিমুল অপেক্ষা করছিল। কিছুক্ষণ পরে রুপা এসে রিক্সায় উঠলো। আর রিক্সায় উঠে একদিকে যেতে থাকলো। নাজিমুল ও তার পিছনে ছুটলো।
.
নাজিমুল পিছনে আসতে আসতে দেখলো রুপা একটি পার্কে ঢুকলো। আর পার্কে ঢুকে একটা ছেলের কাছে গিয়ে বসলো। ছেলেটির কাছে বসতে দেখে নাজিমুল এর কেমন যেন মনে হল। তাই কিছুটা এগিয়ে গেল।
.
কাছে গিয়ে বুঝতে পারলো ছেলেটা রুপার প্রেমিক হবে।আর ছেলেটাকে আলিঙ্গন করেই রুপা বসে আছে। নাজিমুল আর দাড়িয়ে থাকতে পারলো না।তাই তার।মত চলে গেল।
.

.
আজ অফিস থেকে ফিরে দেখলো রুপা ব্যাগ গোছাচ্ছে। রুপাকে ব্যাগ গোছাতে দেখে বলল
-কোথাও যাবে?
-হ্যা।আমার বান্ধবির বিয়েতে যাবো।
-আমাকে যেতে হবে?
-নাহ।আমি একাই যাবো।
.
নাজিমুল অনেক্ষন ধরে রুপার দিকে তাকিয়ে আছে। কারন আজই হয়তো রুপার সাথে শেষ দেখা হতে পারে। ব্যাগ গোছানো দেখেই নাজিমুল বুঝেছে রুপা বিয়েতে নয় সেই ছেলেটার সাথে চলে যাচ্ছে। চাইলে আটকাতে পারে। কিন্তু লাভ নেই।
.
নাজিমুল দাড়িয়ে আছে একাকি। রুপা অন্য কারো মায়ায় জড়িতে তাকে ছেড়ে যাচ্ছে। কিন্তু নাজিমুল রুপার মায়ায় জড়িয়ে থাকবে। নাজিমুল এর কি অন্যায় ছিল? সে তো এই মায়ায় জড়াতে চায় নি? রুপার বাবা মাই তো বিয়ে দিয়েছিল।রুপার সাথে থেকে রুপার উপরে মায়ার টানে জড়িয়ে গেছে।
নাজিমুল পারবে না এ মায়া ভুলতে। তার মনে প্রশ্ন থেকে গেল। এ কোন মায়ায় জড়ালে??

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:২৬

প্রামানিক বলেছেন: চমৎকার গল্প। ধন্যবাদ

২| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১:৩৪

রিফাত হোসেন বলেছেন: +

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.