নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মনের আবোলতাবোল চিন্তাগুলো সাজিয়ে গল্পে পরিনত করতে চাই। কখোনও গল্প হয়। আবার কখোনও হয় না। ভাল লিখতে জানি না।তবুও লিখি। কারন এটা শখ হয়ে গেছে। আরর এই শখ জেকে বসেছে।

পাবনার তাঁরছেড়া বালক

মনের আবোলতাবোল চিন্তাগুলো সাজিয়ে গল্পে পরিনত করতে চাই। কখোনও গল্প হয়। আবার কখোনও হয় না। ভাল লিখতে জানি না।তবুও লিখি। কারন এটা শখ হয়ে গেছে। আরর এই শখ জেকে বসেছে।

পাবনার তাঁরছেড়া বালক › বিস্তারিত পোস্টঃ

জিবনের অগ্রগতি

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:২৭

শরিফ এক রাশ হতাশা নিয়ে বাইরে এসে দাঁড়াল। পকেটে হাত দিয়ে দেখে কয়েকটাকা অবশিষ্ট আছে। এখন হোটেলে গিয়ে ভাত খাওয়ার মত টাকা নেই। তাই পকেটে যা আছে তাই দিয়ে আপাতত ক্ষুধা নিবারণ করতে হবে।
.
চায়ের দোকানে এসে দুইটা রুটি নিয়ে খেতে থাকলো। রুটি খেতে খেতে ভাবছে শেষে আলিম ভাইও ফাকি দিল। আলিম ভাই বলেছিল আসলে একটা চাকরি দেবে কিন্তু চাকরি নাকি অন্য একজনকে দিয়ে দিয়েছে। আর আলিম ভাইয়ের কথা কি জিবনটাই যখন ফাকি দিচ্ছে সেখানে আলিম ভাইয়ের এটা কোন ব্যাপার নাহ।
.
জিবন যদি ফাকি না দেবে তাহলে শরিফের মা কেন মরবে? আর কিছুদিন পরে বাবা কেন নতুন আরেকটা বিয়ে করবে? আর সৎ মায়ের অত্যাচারে বাড়ি ছাড়া হতে হবে কেন?
.
কখন রুটি ফুরে গিয়েছে শরিফ বুঝতেই পারে নি। পেটে ক্ষুধা থাকলে হয়তো এমনই হয়। তাই ফুরে গিয়েছে। এখন গন্তব্য সামনের দিকে। আর কোথায় গিয়ে ঠেকবে সেটা এখনও শরিফ চিন্তা করে নি।
.
শরিফ কি করবে চিন্তা করছে। সামনে একজন গার্মেন্টস কর্মিকে যেতে দেখে মনেহল সে গার্মেন্টস এ চাকরি করবে। শুনেছে সেখানে খাটতে হয়। জিবন যখন চলছে না তখন এই কাজই করতে হবে। পকেটে সার্টিফিকেট থেকে কি হবে? যদি সেই সার্টিফিকেট এর মত চাকরি না পায়।
.
গার্মেন্টস এ কাজ করা একজনের সাথে শরিফের পরিচয় আছে। এর আগে যখন ছেলেটির মা অসুস্থ হয়েছিল। শরিফ তখন তার মায়ের চিকিৎসার টাকা দিয়েছিল। এখন সেখানেই যেতে হবে। ঠিকানা টা শরিফের জানা আছে।
.
ছেলেটির যেখানে থাকে সেখানে এসে ডাকতে থাকলো। ছেলেটি বাড়িতেই ছিল। বেড়িয়ে এসে বলল
-আরে ভাই আপনি!! কেমন আছেন?
-আল্লাহর রহমতে বেচে আছি। আপনার কি খবর?
-আল্লাহ ভালই রেখেছেন।
-আচ্ছা আপনাদের গার্মেন্টস এ কি নতুন কোন কর্মি ভর্তি করায়?
-হ্যা। প্রতিদিন ই তো নতুন কর্মি ভর্তি হয়।
-আচ্ছা আমাকে ওরা কাজে নেবে না?
-কি বলেন আপনি!! আপনি গার্মেন্টস এ চাকরি করতে যাবেন কেন?
-আমার খুব দরকার ভাই।আমার এই উপকার করতেই হবে।
-আচ্ছা চলুন।
.
গার্মেন্টস এ গিয়ে সবকিছু ঠিক। এখন লোকটি এসে বলল
-আপনার কাছে চার হাজার টাকা আছে?
-কেন?
-চাকরি নিতে গেলে চার হাজার টাকা দিতে হবে। আপনি তো জানেন মায়ের চিকিৎসা করতে আমার সব টাকা ফুরিয়ে যাহ। নাহলে আমি দিতাম।
-আপনাকে দিতে হবে না। আমি ব্যাবস্থা করছি।
-আচ্ছা দেখেন।
.
শরিফ বন্ধু আরিফের কাছে ফোন দিল। ফোন ধরে আরিফ বলল
-হুম। বল।
-আমাকে চার হাজার টাকা ধার দিতে পারবি? আমার খুব দরকার।
-আমার কাছে টাকা নেই। আর যা আছে তা আমার নিজেরই লাগবে।
-খুব তারাতারি দিয়ে দেব। দে প্লিজ।
-আমি পারবো না।
.
একে একে সবার কাছ থেকেই হতাশ হতে হল। কেউ টাকা দিল না। কিন্তু শরিফের যখন টাকা ছিল। আরিফ এসে বলল
-দোস্ত পাঁচ হাজার টাকা ধার দে।
-কি করবি?
-আমার খুব দরকার।
-আমার কাছে চার হাজার টাকা আছে। এই টাকাই নে।
.
পরে জানতে পেরেছিল আরিফ গার্লফ্রেন্ড এর সাথে ডেটিং মারতে টাকা নিয়েছিল। কিন্তু আজ শরিফের বিপদের সময় আরিফ টাকা দিল না।
.
শরিফ এক রাশ হতাশা বুকে নিয়ে রাস্তা দিয়ে গেটে চলেছে। মাথায় অনেক ধরনের চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে অগোছালোভাবে। হঠাৎ মাটিতে পরে গিয়ে বাস্তবে ফিরলো। একটা গাড়ি এসে পিছন থেকে ধাক্কা মেরেছে।
.
গাড়ির মধ্যে থেকে এক ভদ্রলোক আর তার স্ত্রি বেড়িয়ে এল। শরিফ উপরের দিকে চোখ তুলে তাকাতেই ভদ্রলোক বলল
-আপনার কোথাও লাগে নি তো?
-এটা কোন ব্যাপার নাহ।
-এই টাকাগুলো নিন। ঔষধ কিনে নিবেন।
-ওর চেয়ে কত আঘাতে কিছু হল না। আর এই আঘাতেও কিছু হবে না।
-তবুও।
-নাহ। ঠিক আছে।
.
পাশ থেকে ভদ্রলোকের স্ত্রি বলল
-টাকা নিয়ে নিন। আপনাদের টাকা দরকার হয়।
-না ম্যাডাম। অসহায় হতে পারি। কিন্তু এইধরনের সাহায্য নেব না।
.
শরিফ দুরে এসে পার্কে বসে আছে। শরিফের ধাক্কাতে ব্যাথা না লাগলেও ভদ্রলোকের স্ত্রিকে দেখে ব্যাথা লেগেছে।
.
ভদ্রলোকের স্ত্রি শরিফের প্রাক্তন প্রেমিকা। যে ছিল শরিফের সবচেয়ে কাছের কেউ। মেয়েটি শরিফ কে খুব ভালবাসতো। কিন্তু যেদিন শরিফ বাড়ি থেকে বেড়িয়ে এসে ছন্নছাড়া হয়ে গেল সেদিন তার প্রেমিকাও ছেড়ে গেল।
.
শরিফের সুশিল জিবন তার পছন্দ ছিল এমন ছন্নছাড়া জিবনে শরিফের সঙ্গি হতে পারবে না। তাই শরিফকে ছেড়ে গিয়েছিল।
.
জিবনে যখন বিপদ আসে তখন আপন সব লোকই দুরে চলে যায়। কাছের মানুষগুলো দুরে চলে যায়। কারন সবাই সুখের ভাগি হতে রাজি। কিন্তু দুঃখের ভাগি হতে কেউ রাজি না।
.
জিবনটা তবুও তো চলে যাচ্ছে। আর দুঃখ কষ্ট নিয়ে তবুও শরিফ বেচে থাকবে। কারন জিবন কোন না কোন ভাবে এগিয়ে যায়। হয়তো জিবনের অগ্রিগতি কম হতে পারে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.