নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শিরোনামহীন....

আমার স্বপ্নের কথা বলতে চাই

পথেরদাবী

সাংস্কৃতিক কর্মী শিল্প তৈরি করতে পারেন আবার নাও করতে পারেন..... তবে শিল্পীর শিল্প তৈরি হওয়া চাই-ই-চাই.......সাংস্কৃতিক কর্মীর মূল কাজ শিল্পীর তৈরি শিল্পকর্ম এবং জনগনের মধ্যে মেল বন্ধন অর্থাৎ সহজ ভাষায় বললে, সেতু তৈরি করা..... আর এই সেতু তৈরির কাজ সাংস্কৃতিক কর্মীর করা চাই ই-চাই....এখানে ফাঁকিবাজির সুযোগ নাই.....সুযোগ নাই শিল্পীর মতো ব্যক্তি কেন্দ্রিক চিন্তা করার..... সাংস্কৃতিক কর্মীকে তাই মাঝে মাঝে শিল্পীর চাইতে সংগঠকের ভুমিকায় বেশি অবতীর্ণ হন...... এতে দোষের কিছু দেখি না....সব ঠিকঠাক থাকলে সাংস্কৃতিক কর্মী নামক শব্দের উৎপত্তি ঘটতো না..... সবাই শিল্প চর্চাই করতো.....শিল্প চর্চা করতে এসে কেউ বিপ্লবের কথা বলতো না..... যেহেতু বিপ্লব একটি কঠিন সত্য...... বিপ্লব দীর্ঘজিবী হোক.....\\\\\\\\\\\\\\\\n(১৪ মার্চ ২০১৫, পল্টন ...........)

পথেরদাবী › বিস্তারিত পোস্টঃ

"একজন খুনি রফিকুল আর বেঁচে যাওয়া নাজমুলের গল্প অথবা দুটো চিঠি...." (শেষ পর্ব)

২৪ শে মে, ২০১৫ রাত ১২:৩১

৪.
রফিকুল এখন কারাগারে বন্দি। বোধ করি তার মনের আশা পূরণ হয়েছে। সে এখন রাষ্ট্র ঘোষিত একজন খুনি। কারাগারের একাকিত্ব তাকে আরো নিজের কাছে নিয়ে আসে। অন্তত এখন আর তাকে কোন ক্ষোভ নিয়ে বাঁচতে হচ্ছে না। যেনো সফল একজন মানুষ। এই প্রথম নিজেকে একজন সফল মানুষ মনে করে রফিকুল আজ বেশ তৃপ্ত। রফিকুল জীবনে অনেক কিছুই করতে চেয়েছে, কিন্তু সবটাই যেনো তার ব্যর্থ। খুন করে একজন মানুষ কি করে নিজেকে সফল মনে করে তা সবার কাছে একটি বিশাল গোলক ধাধা মনে হলেও তার কাছে এর সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা আছে। সে যাই হোক আর কিছুদিন পরই তার ফাঁসি হবে বলে সে জানত পারে। তাই শেষ কিছু লিখে যাবে বলে সে স্থির করে। সে স্থির করে দু’টো চিঠি সে লিখবে। আর তার জন্য জেলারের কাছে কিছু কাগজ আর কলম চায়। জেলার এক কথায় রাজি হয়। কারণ জেলার তেমন রফিকুলের লেখার ভক্ত না হলেও বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে শিল্প সাহিত্যের আশেপাশের গলি দিয়ে হাঁটার কারনে লেখালেখির মর্মটা বোঝে। ১২ টা কাব্যগন্থ আর ৬ টা ছোট গল্পের বই বের করে কোন প্রকার পরিচিতি না পাওয়া লেখক রফিকুলের আর কিবা এমন লিখবে, এমনটাও ভাবে জেলার। তো পুঁই শাক ভাজি, রুই মাছের তরকারি, ডাল আর করলা ভাজি দিয়ে রাতের খাবার শেষ করেই রফিকুল চিঠি লিখতে বসে যায়। প্রথমটা মেয়ে অনন্যার কাছে….

অনন্যা,

ভালো নেই নিশ্চই? থাকার কথাও নয়। শুনেছি আগামী দু’তিন দিনের মধ্যে আমাকে ফাঁসিতে ঝোলাবে। আমি চাই আমাকে ফাঁসিতে ঝোলাক। তুমি নিশ্চই ভাবছো আমাকে নিয়ে পত্রিকার রগরগা ঘটনাগুলো নিয়ে। বিশ্বাস করো ওই মেয়েকে আমি চিনি না। কিন্তু আদালতে তার অনিচ্ছাকৃত মিথ্যা স্বাক্ষ্য আমাকে আসল ঘটনা বর্ণনা থেকে বিরত রেখেছে। তোমার মনে প্রশ্ন আসতে পারে আমি ছুরি নিয়ে কেনো ঘুরছিলাম সেদিন। সে উত্তর আমি তোমাকে দিবো না। আমি চাই না তুমি জানো। আমি শুধু এটুকুই বলতে চাই, সেদিন আমি কাউকে খুন করতে বের হইনি।

এসব কথা না শুনে আমার এ শেষ চিঠিতে তোমাকে আমার কারাগার সম্পর্কে বর্ণনা দেই। এখানে আমাকে ১০ নম্বর সেলে রাখা হয়েছে। পাশের সেলেই নাকি নেতাদের হত্যা করা হয়েছিলো। তাও বহু বছর আগের কথা। স্বাধীনের পরপর। তো আমি বেশ রমাঞ্চিত। তুমিতো জানো আমার মধ্যে কারাগার নিয়ে এক ধরনের ভীতি কাজ করতো। কিন্তু আজ আমি বেশ আপন করে নিয়েছি এই কারাগারকে। এখানে নানা অপরাধের মানুষ আছে। সবার ভিন্ন ভিন্ন গল্প। সবাই তার অপরাধের বৈধতা দিতে পেছনের অনেক দুঃখের গল্প বলে। হয়তো আমিও তাই। আসলে অপরাধ বোধ এমন এক বিষয় মানুষ প্রতিনিয়তো সেখান থেকে বের হতে চায়। আর তখনই দুঃখগুলো সামনে নিয়ে আসে।

সে যাই হোক, তোমার মা কে দেখে রেখো। আমার ফাঁসি হয়ে গেলে তুমি তোমার মায়ের কাছে চলে যেও। সে খুব একা। আমি থেকেও না থাকার মতোই ছিলাম। অনিচ্ছাকৃত চাওয়ার ফসল তুমি। হয়তো ওটা হাতে থাকলে তোমারও জন্ম হতো না। তবে তোমার মা একজন সংগ্রামী সৎ মানুষ। আমিতো সারা জীবন একটা ক্ষোভকে পুষে রেখে তোমার মাকে ভালোবাসতে পারিনি। আবার হয়তো পেরেছি। কিন্তু দেখাইনি। দেখাইনি কেনো যদি কারণ হিসেবে জানতে চাও তবে বলবো, হারানোর ভয়। আবার একই ভয় সে পেতো বলে নানান অভিযোগ থাকা স্বত্বেও আমাকে ছেড়ে যায়নি কোনদিন।

যদি পারো অনেক সাহসী হতে চেষ্টা কোরো। এখানে বেঁচে থাকতে হলে সাহসী হতে হয়। আমার মতো ভীত আর ব্যর্থদের কোন স্থান নেই এই সমাজে। তোমাকে সাদা আর কালোর মধ্যে পার্থক্য শিখতে হবে। উপরে উঠার সিড়ি হিসেবে কখনো সংক্ষিপ্ত পথ বেছে নিবে না। বন্ধুর পথ অতিক্রমই বীরের কাজ। তুমি হয়তো ভাবছো একজন খুনি এসব কি বলছে? ভাবতেই পারো। কিন্তু আমি খুনি হই, তোমার জন্মদাতা হই সেটা এখানে আলোচ্য বিষয় নয়। আলোচ্য বিষয় হলো আমি যে কথাগুলো বলছি তার গুরুত্ব অনুধাবন।

সব শেষে আমার লাশ নিয়ে কোন প্রকার টানা হেচড়া যেনো না হয়। আমি চাই আমার লাশ দান করা হোক। আর তোমরা যদি দাফন করতে চাও সেটাও তেমাদের অধিকার। আমার আসলে নিজের লাশ নিয়ে কোন চিন্তা নেই। কারণ মৃত্যুর পরে যা যা ঘটবে তার কোন কিছুই আমি দেখবো না। এর পরের জীবনে আমার বিশ্বাসও নেই। তোমরা ভালো থেকো। সুখে থেকে।



৫.
দ্বিতীয় চিঠিটা রফিকুল পাঠায় তার সেই যুবক বয়সের প্রেমিকার কাছে….

শ্যামা,

নিশ্চই এতো বছরপর আমার চিঠি পেয়ে বিচলিতো হচ্ছো? বিচলিতো হবারই কথা। পত্রিকায় আমাকে নিয়ে যা পড়ছো তার কোন বাস্তব ভিত্তি নেই। সবই মিথ্যে। তোমার মনে আছে নাজমুলকে? যে নাজমুলের জন্য আমাদের সম্পর্কে চির ধরেছিলো? আমি সেদিন নাজমুলকে মারতে গিয়েছিলাম। কিন্তু বিশ্বাস করো নাজমুলকে খুন করার কোন উদ্দেশ্য আমার ছিলো না। গতো সাতাশ বছর আমি একটি ইচ্ছাই পুষে ছিলাম মনের মধ্যে যে, নাজমুলকে আমি একটা থাপ্পড় দিবো। কিন্তু সাহস আর সঠিক সময় আমি বের করতে পারিনি এতোগুলো বছরেও। কিন্তু হুট করেই সব হাতের নাগালে চলে এলো এবং সেই খুনের দিন আমি বের হই ছুরিটা একটা বাজারের ব্যাগে ভরে। নাজমুলকে তার বাসার সামনেই আঘাত করবো এমনটাই আমার আশা ছিলো, কিন্তু গাড়ি দিয়ে বের হয়েছে বলে আর ধরতে পারিনি। তাই ঠিক করি বিকেল পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকবো এবং তার অফিস থেকে বের হলেই তাকে সে বহু প্রতিক্ষিত থাপ্পড়টি দিয়ে মনের সকল ক্ষোভ দূর করবো। আমি ছুরিটা নিয়েছিলাম মুলতো ভয় দেখানোর জন্য। কিন্তু সেই ছুরি একই ভাবে আমার জন্য যেমন কাল হয়ে দাঁড়ালো ঠিক তেমনি এক ধরনের আর্শিবাদও বয়ে আনলো বলবো।

যখন বিকেল ছুঁই ছুঁই তখন আমি নাজমুলের অফিসের পাশের গলিতে দাঁড়িয়ে ছিলাম। চারদিক দেখছিলাম। কোন দিক দিয়ে তাকে চড় দিয়ে আবার কোন দিক দিয়ে বের হয়ে যাবো সে চিন্তা করছিলাম। কিন্তু হঠাৎ দেখলাম দু’তিনটা ছেলে একটা মেয়েকে পেছন থেকে জাপটে ধরেছে। মুখ চেপে ধরে একটা গাড়িতে ওঠানোর চেষ্টা করছে। মেয়েটা যেনো নড়তে না পারে সেজন্য একজন তার জামা পেছন দিক থেকে একটানে ছিড়ে ফেলে এবং মেয়েটা প্রায় অর্ধনগ্ন। আশেপাশের অল্প কিছু মানুষ দেখছিলো কিন্তু তারা কেউ এগিয়ে আসছিলো না। আমিও সাহস পাচ্ছিলাম না। হঠাৎ, এসব দেখে ভয়ে দৌড় দিয়ে পালানো একজন মানুষ আমাকে ধাক্কা দিয়ে চলে যায় এবং বাজারের ব্যাগটা অমনি হাত থেকে ছুটে কিছুদূর গিয়ে পড়ে। আমি তখন দেখতে পাই ছুরির মাথাটা ব্যাগ থেকে একটু বের হয়ে চকচক করছে। এবং আমার মনে হলো এটা দিয়েই কিছু একটা করতে হবে। আমি এগিয়ে যাই এবং ওদের মধ্যে একজনকে খুন করে ফেলি।

ব্যাস ! তোমার নাজমুল থাপ্পড় থেকে বেঁচে গেলো আর আমি এখন কারাগারে বসে তোমাকে চিঠি লিখছি। সে যাই হোক, এরপরে ঘটনাটা কিভাবে ঘুরে গেলো সেটাও তোমার জানা দরকার। মেয়েটা চাকরি করতো একটা বেসরকারি ফার্মে। রিসিপশনিস্ট হিসেবে। মালিক এবং মালিকের ছেলের মনোরঞ্জন করাই ছিলো তার কাজ। ইচ্ছাকৃত এসব করতে হতো তা নয়। তার এর বিকল্প উপায়ও ছিলো না। তো এক সময় সে অনেকটা ক্ষিপ্ত হয়ে যায় এবং এর প্রতিবাদ করে। সে চায় পুরো বিষয়টা সে কোথাও না কোথাও জানাবে। আর সেজন্যই তাকে তুলে নিতে এসেছিলো সেদিন। আমার কারনে সে সেদিনের জন্য বেঁচে গেলেও পরে তার জীবনে নেমে আসে ভিষণ দুর্ভোগ। প্রতিষ্ঠান মালিক একজন সরকার দলীয় এমপি, এবং তার পোষা মিডিয়া থাকাতে ঘটনা ঘুরে দাঁড়ায় এই রকম-

মেয়েটা খুন হয়ে যাওয়া ছেলেটার প্রেমিকা এবং আমার সাথে তার নতুন করে সম্পর্ক গড়ে ওঠাতে আমি ছেলেটাকে খুন করেছি। এবং মেয়েটা যদি এ স্বাক্ষ্য না দেয় তবে নাকি তার পুরো পরিবারকে আরো দূর্ভোগ পোহাতে হবে। মেয়েটা জেলেগেটে আমার সাথে দেখা করে উপায় খুঁজতে চায় এবং সে আমাকেও বাঁচাতে চায়। কিন্তু আমি তাকে বলি, ঘটনা এখন যেদিকেই মোড় নিক আমি এখন একজন খুনি এটাই আমার পরিচয়। তাই শাস্তি আমার পাওয়া উচিত। আর সেদিন আমি তোমার উপকার করতে চেয়েছিলাম। মেন হয় পারিনি, তাই এখন আমার মৃত্যুর মধ্য দিয়ে যদি তোমার কিছুটা উপকার হয় তবে আমি এই প্রথম নিজেকে সফল একজন মানুষ মনে করবো। এই হলো পুরো ঘটনা। বিশ্বাস অবিশ্বাস তোমার বিষয়।

শ্যামা,
এখন তোমার বয়স ৫৮, আমার ৫৪। আমাদের বয়সের পার্থক্য একটা সমস্যার কারণ ছিলো। কিন্তু দেখো এখন আমরা দুজনই বৃদ্ধ। দু’জনেরই শরীরের চামড়া ঝুলে পড়েছে। তোমার সে রুপ লাবন্য নাই নিশ্চই। অথচ বয়সের এ পার্থক্যই নাকি ছিলো প্রথা বিরোধী। আমি সেসব ভাঙতে চেয়েছিলাম। এবং সফল ভাবে ব্যার্থ হয়েছি। আমাদের সম্পর্কে সবচেয়ে বড় সমস্যা ছিলো বিশ্বাস। আমি যে নুপুর দিয়েছিলাম প্রথম বেতন পেয়ে তাতে ছিলো গভীর মায়। আর তুমি আমাকে যে ঘড়ি উপহার দিয়েছিলে, সম্পর্ক ভাঙনের পর আমার মনে হলো, সেটা ছিলো এক ধরনের ইনভেস্টমেন্ট। তোমার তখন একটা সঙ্গ দরকার ছিলো আর আমার ছিলো মানুষ। কিন্তু তুমি প্রতিনিয়ত সঙ্গ বদলাতে থাকলে। সেটা তোমার স্বাধীনতা। আর আমার ব্যর্থতা আমি তোমাকে ধরে রাখতে পারিনি। তবে তোমাকে বলে রাখা ভালো, নাজমুল মুল ক্ষোভের কারণ ছিলো না। আমার ক্ষোভ ছিলো লুকোচুরি এবং সবশেষে আমার আর তোমার অসম প্রেমের কথা তুমি অস্বীকার করলে। এবং আমাকে একজন উত্তক্তকারী হিসেবে সবার সামনে পরিচয় করালে।

ক্ষোভ এখানেও নয়। ক্ষোভ হলো সবাই সব জানার পরও কেনো একটাবার সব সমাধানের উদ্যোগ নিচ্ছিলো না? এছাড়া, আমার তখন বারবার মনে হচ্ছিলো এখানে মানবিক মনের অধিকারী কেউ নেই। এবং কেউ এসে জানতে চাইছিলো না, আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগগুলো সত্য কিনা। আমি আরো অবাক হচ্ছিলাম তোমার মিথ্যা বক্তব্যের উপর দাঁড়িয়ে প্রতিষ্ঠান কি ভাবে স্বৈরাচারের ভুমিকায় অবতীর্ণ হয়। তারা যেনো আমাকে চিনছিলো না। অথচ আমিও সে প্রতিষ্ঠানের একজন ছিলাম। যদিও সবকিছুর পেছন থেকে কলকাঠি নাড়ছিলো নাজমুল।

সেসময় আমি দেখেছি শরীর কি করে উপরে ওঠার সিড়ি হতে পারে। তোমার সিনিয়র ম্যানেজার সে তো আপাদোমস্তক একজন যৌন নিপীড়ক ছিলেন, তারপর তোমাদের মার্কেটিং হেড জাহিরুল্লাহ ফরায়জী, কমিউনিকেশন রিসার্চার কাজী আরিফুর সিদ্দিক তাদের থেকে তোমার একজন নারী সহকর্মী কি নিপীড়ন থেকে রক্ষা পেয়েছিল? অথচ তোমরা কিছুই বলতে না। তুমি বা তোমরা কি বেশ উপভোগ করতে বিষয়গুলো? কোন দিনতো প্রতিবাদ করোনি। কি জানি হয়তো প্রতিবাদ করলে সেই মেয়েটার মতো তোমার অবস্থাও হতে পারতো। অথবা না। সবচেয়ে আশ্চর্যকর বিষয় হলো, সেসময় বেছে নিলে নিপীড়কদের একজনকে, তাও কিছুদিনের জন্য।

যখন দেখলাম এই সব সকলে জেনেও না জানার ভান করে অথচ আমার চাকরিটা চলে যায় তখন নিজেকে অচ্ছুত মনে হতে থাকে। এবং প্রতিশোধ প্রবন হয়ে উঠি। আর তার শেষ পরিণতি আজ এই অন্ধকার প্রকষ্ট। আমি আরো ভাবতে থাকি সমাজের পিছিয়ে পড়া দেখে। কেনো আমরা আগাতে পারছি না। যারা শিক্ষিত দাবিদার তারা কেনো এমন অবিবেচকের ভুমিকায় অবতীর্ন হবেন সে হিসেব আমি তখন মেলাতে পারছিলাম না, এখনো না। আর সবচেয়ে বড় আঘাত, যা আমি পেয়েছি তোমার কাছ থেকে তা হলো, মিথ্যা মিথ্যা মিথ্যা। শূনেছি তুমি এখন শহরের টপটেন নারী উদ্যোগতাদের একজন। তোমার এ সফলতাকে আমি সম্মান জানাই। কিন্তু যেনো তেনো উপায়ে এ সম্মান অর্জনের কারণে আমি ভিতো আমার মেয়েকে নিয়ে। কারণ সামস্টিক পরিবর্তন যেহেতু তোমরা করতে পারোনি তাই আমার মেয়েও হয়তো কোন অফিসের রিসিপশনিস্ট হবে এবং একই উপায়ে মনোরঞ্জন করবে। হয় বড় হবে না হয় সে মেয়েটার মতো অর্ধনগ্ন হয়ে রাস্তায় পড়ে থাকবে।

আমার মেয়ে এখন বেশ বড়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ বর্ষে পড়ছে। স্ত্রীকে চাকরির সুবাধে বিভিন্ন জেলায় থাকতে হয়। তাদের গল্প না হয় আর নাই শুনলে। শুধু এতোটুকু্ই বলি, শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সব কিছু শুধুমাত্র দু'জন মানুষ জানে, এক হচ্ছো তুমি আর দুই আমার স্ত্রী। যে আর তিনদিনের মধ্যে গায়ে সাদা কাপড় জড়াতে যা্চ্ছে। শ্যামা, আমি এই একাকিত্ব বেশ উপভোগ করছি। ঠিক এমনিভাবে চেয়েছিলাম পালাতে। কিন্তু কখনোই সুযোগ হচ্ছিলো না। নাজমুলদের না মারতে পারি, ব্যর্থতায় ভরা পুরো জীবনে কোন একজন মানুষের উপকার করতে পেরেছি এটাই আমার জন্য এখন সবচেয়ে বড় সুখের কারণ। নিজেকে সত্যিই আর ব্যর্থ মনে হচ্ছে না। আমার আর কোন ক্ষোভ নেই কারো প্রতি।

ভালো থেকো…..

(২৩ মে ২০১৫, পল্টন)

মন্তব্য ১ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৪:৪২

মুহাম্মদ তৌহিদ বলেছেন: ভালও লেগেছে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.