নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শিরোনামহীন....

আমার স্বপ্নের কথা বলতে চাই

পথেরদাবী

সাংস্কৃতিক কর্মী শিল্প তৈরি করতে পারেন আবার নাও করতে পারেন..... তবে শিল্পীর শিল্প তৈরি হওয়া চাই-ই-চাই.......সাংস্কৃতিক কর্মীর মূল কাজ শিল্পীর তৈরি শিল্পকর্ম এবং জনগনের মধ্যে মেল বন্ধন অর্থাৎ সহজ ভাষায় বললে, সেতু তৈরি করা..... আর এই সেতু তৈরির কাজ সাংস্কৃতিক কর্মীর করা চাই ই-চাই....এখানে ফাঁকিবাজির সুযোগ নাই.....সুযোগ নাই শিল্পীর মতো ব্যক্তি কেন্দ্রিক চিন্তা করার..... সাংস্কৃতিক কর্মীকে তাই মাঝে মাঝে শিল্পীর চাইতে সংগঠকের ভুমিকায় বেশি অবতীর্ণ হন...... এতে দোষের কিছু দেখি না....সব ঠিকঠাক থাকলে সাংস্কৃতিক কর্মী নামক শব্দের উৎপত্তি ঘটতো না..... সবাই শিল্প চর্চাই করতো.....শিল্প চর্চা করতে এসে কেউ বিপ্লবের কথা বলতো না..... যেহেতু বিপ্লব একটি কঠিন সত্য...... বিপ্লব দীর্ঘজিবী হোক.....\\\\\\\\\\\\\\\\n(১৪ মার্চ ২০১৫, পল্টন ...........)

পথেরদাবী › বিস্তারিত পোস্টঃ

নব্য রাজাকারদের বলছি.........

২৫ শে নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫৭

যুদ্ধাপরাধী সাকার ছেলে হুম্মাম কাদেরকে (হুকা) দেখলে বোঝা যায় প্রজন্মের চিন্তা এখনো দু’ভাগে বিভক্ত। তিনি দাবি করেছেন তার বাবা নাকি নির্দোষ এবং সুযোগ পেলে এ ফাঁসির বদলা নিবেন। অর্থাৎ তিনি আভাস দিলেন, বাপ দাদার মতো তিনিও সেই পাকিস্তানি ধ্যান ধারণাকে সাথে করে আগামীতে রাজনীতিতে আসছেন। তবে এসব সময়ের উপরই ছেড়ে দেয়া উচিত, সময়ই সব বলবে কে কাকে ফাঁসি দেয়। এদিকে হুকাকে নিয়ে গুঞ্জনের পাশাপাশি, সাকা-মুজাহিদের মৃত্যুরপর পাকিস্তান পররাষ্ট্র দপ্তরের দেয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তি নিয়েও সবাই বেশ আলোচনা করছে। করাটাই উচিৎ। কিন্তু এই আলোচনায় একটি বিষয় এড়িয়ে যাচ্ছে, সেটা হলো রায় কার্যকরের একদিন কি দুদিন আগে পাকিন্তান জামাতের আমিরের দেয়া একটি বিবৃতি। পাকিস্তান জামাতের আমির সিরাজুল হক বিবৃতিতে বলেছেন “Ali Ahsan Mujahid had done his duty as a Pakistani citizen to save his country from the foreign invaders in the war thrust by India as was not a crime in any sense.” বিবৃতির একদম শেষে সবচেয়ে মজার যে বিষয়টি স্বীকার করেছে তারা, “JI leaders in Bangladesh were offering huge sacrifices for the sake of Pakistan even now while those claiming to be the true heirs of the Pakistan ideology had forgotten the objectives of the creation of this country”। অর্থাৎ বাংলাদেশের জামাত কর্মীরা যে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সংগঠিত মানবতা বিরোধী অপরাধগুলোর সাথে সম্পৃক্ত ছিলো এবং আজ পর্যন্ত যে সেই পাকিস্তানের মতার্দশকে মনে প্রানে ধারণ করে, সেটি জামাতের হেডকোয়ার্টার থেকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসলো। তবে বিষয়টি নিয়ে আমার ব্যাখার প্রয়োজনীয়তা অনেকটাই হারিয়ে যায় যখন খোদ পাকিস্তান থেকেই এসব নিয়ে কথা ওঠে। পাকিস্তান সরকার এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সাকা-মুজাহিদের ফাঁসিরপর নানা বক্তব্য-বিবৃতি দেখে দেশটির মানবাধিকার কর্মী আইনজীবি আসমা জাহাঙ্গীর রীতিমতো এ দুই যুদ্ধাপরাধীকে বাংলাদেশে নিয়োজিত পাকিস্তানের ‘চর’ বলে সন্দেহ প্রকাশ করেন। এবং তিনি তার সরকারকে নিজেদের অভ্যন্তরীন বিষয়ে সচেতন হবারও পরামর্শ দেন। যা দেশটির সরকারের জন্য ‘অপ্রিয় সত্য’ বলেই সকল মহলে বিবেচিত হবে বলে মনে করি।

একটা ঘটনা বলি। বছর দু’য়েক আগে ছাত্র ইউনিয়ন করা কালে এক রাতে পোষ্টার লাগাতে বের হই ধানমন্ডি এলাকায়। পোষ্টার লাগনোর সময় কয়েকজন ছেলে এসে অনেকটা গায়ে পড়ে নানা বিষয় উসকে দিচ্চিলো, প্রশ্ন করছিলো উদ্ভট ধরনের। তাদের প্রশ্নের ধরণ শুনে কিছুটা আন্দাজ করি এরা শিবির কর্মী, কিন্তু নিশ্চিতও হওয়া যাচ্ছিলো না। অবশ্য এর জন্য খবু বেশি কষ্ট করতে হলো না আর, কেননা একটুপর তারাই সন্দেহ দূর করে দেয় যখন আলোচনায় মুক্তিযুদ্ধ, যুদ্ধাপরাধ ইস্যু, ধর্ম নিরপেক্ষ রাজনীতি না ধর্মভিত্তিক রাজনীতি ইত্যাদি বিষয় চলে আসে। যুক্তিতে না পেরে আলোচনায় একজন হুট করে বলে ওঠে ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় ছিলাম না, কাজেই সেসময়ে কি ঘটেছিলো তা কিভাবে বলবো’। আমার আর বুঝতে বাকি থাকে এরা কারা। আমিও পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়ে দেই, ভাই মুসলমান, নবীর উপর বিশ্বাস রাখেন, বদর অথবা ওহুদের যুদ্ধ বা ইসলামের ইতিহাস ঠিকঠাক জানেন? খুব ঈমানদার মুমিনের মতো শিনা টানটান করে বললো, ‘হ্যা জানি, অবশ্যই বিশ্বাস করি। না জানলে বা বিশ্বাস না করলে তো ঈমানই নাই’। তখন তার কাঁধে আলতো করে অভয়ের হাত রেখে কাছে টেনে বললাম, ভাই আপনারা প্রায় ১৪’শ বছরের অধিক সময় পার করা ঘটনা জানেন আর চল্লিশ বেয়াল্লিশ বছর আগের ঘটনা জানেন না? এমন প্রশ্নের কোন উত্তর না দিয়ে বললো ‘আজ যাই ভাই, পরে দেখা হলে কথা হবে’। যদিও আর কোনদিন দেখা হয়নি সে রাতের ভাইদের সাথে।

যে ঘটনাটা বললাম, সেখানে উপস্থিত ছেলেগুলোর বয়স খূব বেশি হলে সেসময় বিশ কি বাইশ হবে। অর্থাৎ একেবারেই তরুন বয়স। স্বাধীনতারপর জামাত এধরনের মন মানসিকতার লক্ষ লক্ষ কর্মী তৈরি করেছে সারা দেশে। এসব দেখে বুঝতে বাকি থাকে না, এই লক্ষ লক্ষ তরুনদের ইসলাম রক্ষার নামে ব্যবহার করে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী মত প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সাকা-মুজাহীদরা কিভাবে তাদের দূর্বল ভিত শক্ত করেছে প্রতিদিন। গত পয়তাল্লিশ বছরে এরা এমন একটি ডায়নোসরে পরিণত হয়েছে, যার ফলে বাবা যুদ্ধাপরাধী প্রমানিত হবার পরও ঔদ্ধত্য দেখাতে এক বিন্দু ভয় পায় না ছেলে হুকা। কিন্তু সে কি জানেনা দেশে আরেকটি প্রজন্ম আছে যারা দাঁড়িয়ে আছে সত্যের উপর। তার(হুকা) কি এই দেশের সার্বভৌমত্বের উপর যাদের অকৃত্রিম ভালোবাসা আছে সে বিশাল দেশপ্রেমিক গোষ্ঠিটি সম্পর্কে বিন্দুমাত্র ধারানা নাই? আমার মনে হয় নাই, থাকলে এমন হুংকার করতো না সাকা জুনিয়রেরা। আমরা যে হুকার এমন হুঙ্কারে ভয় পেয়েছি বিষয়টা তেমন নয়। আমরা শুধু এতোটুকুই বলবো, তাদের মতো পাকিস্তানি মন মানসিকতার মানুষদের ব্যপারে আমরা তরুন প্রজন্মের আরেক অংশ ‘ডিপলি কনসার্ণ’ টার্মটি ব্যবহার করতে চাই। সাথে আরো বলতে চাই, তিনি যে সাহস দেখিয়েছেন, সে সাহস যদি বাবার অপরাধের সাফাই না গেয়ে বাপ-দাদার অন্যায়ের বিরুদ্ধে দেখাতেন তাতে হয়তো হুকা নিন্দিত না হয়ে নন্দিত হতেন। সাদাকে সাদা আর কালো কে কালো বলার সৎ সাহস বোধ হয় তার থাকা উচিৎ ছিলো। কিন্তু দুঃখের বিষয়, সে সাহস তার নেই।

আমাদের আশেপাশে যে সকল মানুষ এসে ৭১’এর আলবদর কমান্ডার মুজাহিদের মতো বলবে, ‘পাস্ট ইজ পাস্ট’, তাদের কাছে বসিয়ে এককাপ গরম চা খাওয়ানোর চেষ্টা এখন থেকেই শুরু করা উচিৎ। তারপর চা খেতে খেতে তাদের বলতে হবে, পাকিস্তান অবশ্যই ‘পাস্ট’। কিন্তু ‘বাংলাদেশ ইজ প্রেজেন্ট’। তাদের আরো বলা উচিৎ, ১৯৫ জন বাদে সব যুদ্ধাপরাধীদের যদি কেউ ক্ষমা করেও থাকে, যদি সীমলা চুক্তি হয়েও থাকে তবে তা সে সময়ের নেতৃত্ব এবং জনগনের দায়িত্ব। সে দায় বর্তমান প্রজন্ম নিবে না, এবং বর্তমান প্রজন্ম তেমনটা মনে করেছে বলেই ৭১ এর অপরাধীগুলোর আজ শাস্তি হচ্ছে। কেননা আজও শহীদ পরিবারের সন্তানেরা তাদের পিতৃহত্যার বিচারের দাবি এক মূহুর্তের জন্য ছাড়েনি। কাজেই এটি অবশ্যই এমন একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, যা বাংলাদেশের মানুষের দ্বারাই নির্ধারিত হয়েছে। তাদের আরো স্মরণ করিয়ে দেয়া উচিৎ, বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে বলেই পাকিস্তান হাইকমিশনার কে তাদের ‘পাগলের প্রলাপের’ জন্য ডেকে কড়া কথা শোনানো যায়, বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশের জার্সি গায়ে ১১ জনের দল সেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে খেলতে পারে। এমন আরো বহু কৃতিত্ব আমাদের আছে। আর এর পুরোটাই সম্ভব হয়েছে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্যই। কাজেই মুক্তিযোদ্ধা বা মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করে এড়িয়ে যাবার কোন সুযোগ নেই এই দেশে। ‘পাস্ট ইজ পাস্ট’ বলে আমরা শুধু পাকিস্তানকে ভুলতে চাই এছাড়া আর কোন কিছুই ভুলে যাওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়, কেননা এই ভোলাভুলির কথা বলেই সাকা-মুজাহিদ-নিজামীরা এতো শক্তিধর হয়েছে প্রতিটি দিন আর দেশ বিচ্যুত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন আর আদর্শ বাস্তবায়নের লক্ষ্য থেকে।

তবে আমি শুধু স্বাধীনতা বিরোধীদের ক্ষেত্রেই মুক্তিযদ্ধের চেতনার প্রতিফল দেখিয়ে দায়িত্ব শেষ করার পক্ষপাতি নই। কেননা অনেকেই আছেন যারা ‘পক্ষে বলে বিপক্ষে বলছে’, অর্থাৎ মুখে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বললেও অন্তরে আছে ভিন্ন কিছু। এরা যখনই সুযোগ পেয়েছে তখনই জনগনের মতামতকে উপেক্ষা করে নিজের আখের গোছানোতেই ব্যাস্ত ছিলো সবচেয়ে বেশি, যা এখনো আছে। আমরা সবাই তাদের চিনি, জানি এবং রাজাকারদের পাশাপাশি তাদেরও দেখে আসছি বছরেরপর বছর । তাই আমাদের আদি রাজাকার দমনের পাশাপাশি, এ ধরনের নব্য রাজাকারদের বিরুদ্ধে আরো বেশি সোচ্চার হওয়ার এটাই বোধ হয় সবচেয়ে উর্বর সময় পার হচ্ছে। এবং নব্য রাজাকার অর্থাৎ দেশ বিরোধীদের বারবার গোলাম আযম গং’দের পরিনামের কথা মনে করিয়ে দিয়ে সতর্ক করতে হবে এই বলে যে, দেশ বিরোধী সকল কাজের শাস্তি একদিন না একদিন পেতেই হবে। এটাই নিয়ম, এই ফাঁসিগুলো অন্তত তাই শিক্ষা দেয়।

(২৪ নভেম্বর ২০১৫, পল্টন)

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৪৮

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: সাকার সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে নেয়া উচিৎ| তা না হলে, হুকাও একদিন রাজনীতিতে আসবে, এসে হয়ত ক্ষমতাও পেয়ে যেতে পারে| এদেশে অসম্ভব নয়| তার আগেই ভাঙতে হবে মেরুদন্ড

২৫ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:১৩

পথেরদাবী বলেছেন: সহমত....

২| ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৫৯

রেজা এম বলেছেন: +++++++++++++++++++++++++++++++

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.