নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শিরোনামহীন....

আমার স্বপ্নের কথা বলতে চাই

পথেরদাবী

সাংস্কৃতিক কর্মী শিল্প তৈরি করতে পারেন আবার নাও করতে পারেন..... তবে শিল্পীর শিল্প তৈরি হওয়া চাই-ই-চাই.......সাংস্কৃতিক কর্মীর মূল কাজ শিল্পীর তৈরি শিল্পকর্ম এবং জনগনের মধ্যে মেল বন্ধন অর্থাৎ সহজ ভাষায় বললে, সেতু তৈরি করা..... আর এই সেতু তৈরির কাজ সাংস্কৃতিক কর্মীর করা চাই ই-চাই....এখানে ফাঁকিবাজির সুযোগ নাই.....সুযোগ নাই শিল্পীর মতো ব্যক্তি কেন্দ্রিক চিন্তা করার..... সাংস্কৃতিক কর্মীকে তাই মাঝে মাঝে শিল্পীর চাইতে সংগঠকের ভুমিকায় বেশি অবতীর্ণ হন...... এতে দোষের কিছু দেখি না....সব ঠিকঠাক থাকলে সাংস্কৃতিক কর্মী নামক শব্দের উৎপত্তি ঘটতো না..... সবাই শিল্প চর্চাই করতো.....শিল্প চর্চা করতে এসে কেউ বিপ্লবের কথা বলতো না..... যেহেতু বিপ্লব একটি কঠিন সত্য...... বিপ্লব দীর্ঘজিবী হোক.....\\\\\\\\\\\\\\\\n(১৪ মার্চ ২০১৫, পল্টন ...........)

পথেরদাবী › বিস্তারিত পোস্টঃ

সোমা অথবা সুস্বপ্ন-দুঃস্বপ্নের গল্প….

১২ ই এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ৯:৫৯

পাশাপাশি ঘরে আমি আর আমার সহদর। সময় তখন প্রায় ভোর রাত ৪ টার মতো। বিছানায় শুয়ে আমার বারবার মনে হচ্ছিলো একটু তার কাছে যাই। গিয়ে বলি- সময়টা ভালো যাচ্ছে না, ভালো লাগছে না কিছুই। কেনো যেনো মনে হচ্ছিলো কোনো একটা বিপদ আসবে আসবে বলে মন বলছে। কাঁধে হাত রেখে বলি- সাবধানে থাকিস। কিন্তু তেমনটা বলতে পারছিলাম না সে রাতে।

সে রাতে বেশ গরম পড়ছিলো আর এলাকার কুকুরগুলো এমন হিংস্রভাবে ডাকছিলো যেনো ডাকতে ডাকতে ঘরে ভেতর ছুঁটে আসছে আর এসেই তার সূঁচালো দাঁতগুলো দিয়ে কামড়ে শরীরের প্রতিটি অঙ্গ প্রতঙ্গ টেনে হিঁচড়ে খেয়ে ফেলবে। মনে হচ্ছিলো পুরো ঘর থকথকে রক্তে ভরে থাকবে। আর পরদিন পত্রিকার আট কলাম জুড়ে শিরোনাম হবে- ‘বুনো নয়, শহুরে কুকুরের কামড়ে দুই যুবকের ছিন্ন ভিন্ন লাশ উদ্ধার’।

অদ্ভত এসব কল্পকাহিনী ভাবতে ভাবতে সে রাতে আমি ঘুমিয়ে পড়ি। আমার ঘুমে তখন ফজরের আজান হয়তো বাজছিলো। কিন্তু আমি তো ঘুমে। কিছুই শুনছিলাম না। নিশ্চই ঘুম থেকে নামাজ যে উত্তম এই সত্য আমার কাছে তখন সত্য মনে হচ্ছিলো না হয়তো। হয়তো এর চেয়ে কোনো সত্যের সন্ধান আমি পেয়েছিলাম সে রাতে। কেননা, ‍ঘুমের ঘোরে যে স্বপ্ন আমাকে তাড়া করছিলো এর চাইতে বড় সত্য আর কীবা হতে পারে।

আমি দেখলাম বহুদিন বহুরাত পর আমার প্রাক্তন প্রেমিকা আমার সামনে হাজির হলো একটাই প্রশ্ন নিয়ে। প্রশ্ন একটা হলেও অত্যন্ত সত্য সে প্রশ্নে জর্জরিত হয়ে আমার গলা শুকিয়ে আসছিলো, ঠিক সেসময় তার কাছে পানি চাইতেই আমার মুখে পেশাব করে দিয়ে বললো ‘নে পানি খা’। সে কী বিশ্রী স্বাদ আর গন্ধ। তখন পুরো ঘরকে আমার দোজখ মনে হচ্ছিলো। না এর আগে দোজখে যাবার সুযোগ না হলেও প্রতি জুম্মায় দোজখের যে কাল্পনিক বর্ণনা হুজুর করতেন তার চাইতেও বেশি কিছু মনে হলো সে মূহুর্তটাকে। আমি সোমার কাছে প্রশ্ন করলাম কী চাও এতোদিন পর?

সোমার রক্তাক্ত চোখের দিকে আমি তাকাতে পারছিলাম না। এতোটা ক্রোধ তার চোখে জ্বলজ্বল করছিলো যে তাকানোটা খুবই কষ্টসাধ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিলো সে রাতে, হয়তো ঘুমের ঘোরে। তবু তার ডান পায়েল নুপুরের দিকে তাকিয়েই আবার প্রশ্ন করি, কী চাও তুমি? সোমা কিছু বলে না। আমি আবার জানতে চাই, কী চাও বলছো না কেনো?

এবার সোমা মুখ খোলে। প্রথম প্রশ্ন, তুমি সেদিন বসলে না কেনো? আমি জানতে চাই, ‘কোনদিন’? ওই যে শেষদিন। এতো করে বললাম যেও না। থেকে যাও। তুমি আসলে কোথায় যাচ্ছিলে? আমি তো সেই থেকে একাই আছি। এতোদিন পর সোমার এমন প্রশ্নে আমি বিচলিত হই। উত্তরে বলি, তুমি তো একা নও। শুনেছি তোমার নতুন সংসার হয়েছে। এটা আমাদের উভয়ের জন্যই ভালো হয়েছে। আমাদের রাস্তা ভিন্ন, চিন্তা ভিন্ন সবই ভিন্ন ছিলো। তাই এ সম্পর্ক টেনে নিয়ে যাওয়ার কোনো মানে ছিলো না। সদ্য যৌবনে পা দেয়া প্রেম খুব কমই সূর্য দেখতে পেয়েছে। তুমিতো যেমন চেয়েছো তেমন পেয়েছো বলে আমাকে জানিয়েছিলে। কিন্তু আজ আমার কাছে এমন প্রশ্নের কোনো মানে আছে কী?

সোমা আরো অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে। তারপর ধীরে ধীরে মুখটা আমার মুখের খুব কাছে এনে বলতে থাকে আমার শাড়ি তুমি দেখতে পাচ্ছো না? হ্যা দেখতে পাচ্ছি বলেই, যে শাড়িকে এতোক্ষন হালকা নীল রঙের জামদানি ভাবছিলাম সেটিই নিমেষে ধবধবে সাদা হয়ে গেলো। কেনো এমন হলো জানি না। কিন্তু আমি সে প্রশ্নে না গিয়ে আমি বললাম, হ্যা কাল বৈশাখ সাদা শাড়িই পরবে। এমনটাই তো কথা ছিলো। কিন্তু লাল পাড় নেই কেনো? উত্তরে সোমা জানায়, সিঁদুর মুছে গেছে গত রাতে।

আমি এই অপ্রস্তুত বাক্যে স্থির হয়ে যাই আরো কিছু মূহুর্তের জন্য। তখন আর গরম লাগছিলো না। বাতাস বাতাস আর বাতাস। দক্ষিনের জানালা, পশ্চিমের জানালা, পূবের জানালা, উত্তরের জানালা সবটা দিয়েই শনশন করে বাতাস ঢুকছিলো। এক বাতাসের শব্দ ছাড়া কিছুরই শব্দ নেই। কিন্তু কিভাবে যেনো কাট টু শটে আমরা দু’জন ঘর ছেড়ে সাগরের পাড়ে চলে যাই।

সোমার পরনে বেগুনী রঙের জামদানি এবার। আমার গায়ে পাতলা খদ্দরের সাদা ফতুয়া। আমরা স্বপ্নের ভিতরে আরেক স্বপ্নে প্রবেশ করি। চুল তার উড়ছিলো। খালি পা। ডান পায়ে নুপুর আর আমার ডান হাত ধরা। চুড়ি ছিলো হাতে। ব্লাউজের বিশাল গলার কারনে সোমার পিঠে যে রোদ প্রতিফলিত হচ্ছিলো সে রোদ আমার শরীরে এসে পড়ছিলো। আমি আলোকিত হচ্ছিলাম। একটু থেমে গিয়ে তার সে উন্মুক্ত পিঠে হাত বুলাই, চুমু খাই পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে। তারপর আবার আমরা হাঁটতে থাকি। রঙিন হতে থাকে সব। সাগরের পানি স্বচ্ছ থেকে স্বচ্ছ হতে থাকে তাই দু’জন সে স্বচ্ছ পানিকে আয়না ভেবে দেখে নেই নিজেদের সুখী মুখগুলো। হঠাৎ দেখি মাথার উপর দিয়ে সাদা পায়রার দল উড়ে যায় আর চিঠি ফেলে যায়, একটি। যেখানে লেখা ছিলো, আলিঙ্গন করো হে নর-নারী। সে চিঠির পেছনে একটা মাঝারি আকারের লাল টিপও ছিলো। তারপর আকাশ, সাগর আর উড়ে যাওয়া পায়রাকে সাক্ষি রেখে লাল টিপ পরিয়ে দেই সোমার কপালে। সেই টিপ দেয়া কপালে চুমু খেয়ে আমরা পরস্পরকে আলিঙ্গন করি। কিন্তু হঠাৎ বাতাস বন্ধ হয়ে যায়। সব গুমোট হতে থাকে। আর ধীরে ধীরে চোরাবলিতে হারাতে থাকি দু’জন। এমন সময় সোমা আমার হাত ধরে ঝাঁকুনি দিলে আমি দ্বিতীয় স্বপ্ন থেকে আবার প্রথম স্বপ্নে আবার ফিরে আসি কখন মনে নেই।

সোমার মুখ এবার বেশ মলিন। আর চোখ দু’টো তখন ভেজা শামুকের মতো। মুখ তুলে আমাকে অপরাধির কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে বলতে থাকে সেদিন এভাবে চলে না গেলে আজ আমাকে এমন বসনে ঘুরতে হতো না। আমি এমন অভিযোগ, ঘৃনা আর তিরস্কারের কারণ বুঝতে পারি না। তাই তার ক্ষোভের উত্তর না খুঁজে আমি শুধু জানাই, ভুল, সবই মরিচিকা। আমি তো মরেছি তারও আগে। এই যে কথা বলছো আমার সাথে। আমাকে ছুঁয়ে দেখো, কিছু কি অনুভব করতে পারো? পারবে না। আমি এখন একজন হাওয়াই মানব। বারবার বলবো, আমি মরেছি তারও আগে। তোমার মানুষ কী করে হারালো আমি জানি না, তবে আমি হারিয়েছি তারও আগে। তোমরা জানো নাই কোনোদিন। তাই আবারও বলছি আমি থাকলেও তোমার আজকের মতো একই পরিনতিই হতো। সাদা শাড়িই জুটতো তোমার কপালে। সেকারনেই সেদিন এতোবার বলার পরও আর বসিনি। বলেছি তো আমার মৃত্যু হয়েছে তারও আগে, তোমার মানুষেরও আগে। জানতে চেয়ো না মৃত্যুর কী কারণ, কটা বলবো? শুধু এতোটুকুই বলি- ওই যে ওই ঘরে সহদের ঘুমায়। এরাও সব মৃত্যু পথযাত্রী। বুনো নয়, শহুরের কুকুরেরা তাদের খুন করছে প্রতিদিন। আমি শুধু সাহস করে বলতে পারিনা তাদের, সত্যের পথে মৃত্যুই শেষ কথা। ওরাও বাঁচবে না বেশি দিন।

(১১,১২ এপ্রিল ২০১৬, ধানমন্ডি/ পল্টন)

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১০:৪০

মু. মিজানুর রহমান মিজান (এম. আর. এম.) বলেছেন: আপনি কী গ্রামে থাকেন?

২| ১২ ই এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৪:৫০

মির্জা বাড়ির বউড়া বলেছেন: আসেন দেখেন ব্লগের সবচেয়ে পুরান নাটকের পুন:প্রচার। শরণার্থী নিকে ব্যাপক ল্যাদানির পরও মনমত সাড়া না পাওয়ায় অগ্নিসারথি গতকালকে নিজেই খুলেন বেলের শরবত নামে এক ইচিং ব্লগিং ক্যারেক্টার, তারপর সারাব্লগ ভাসিয়ে দেন নিজেই নিজেকে গালি দিয়ে কমেন্ট করে যেন মানুষের সহানুভূতি আদায় করে ভোট পাওয়া যায়। নিজের গোমর নিজেই গভীর রাতে ভুলে ফাঁস করে ফেলেন পোস্ট দিয়ে যে তিনি ববস.কমে জিতে চাকরি ছেড়ে রেসিডেন্ট ব্লগার হতে চান এই ব্লগের। মারহাবা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.