নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কথার ঝুড়ি

প্রতীক মজুমদার

আমি কে???????

প্রতীক মজুমদার › বিস্তারিত পোস্টঃ

সুখী হতে হলে কি করবেন? জেনে নিন। :)

০৭ ই জুন, ২০১৮ রাত ২:০১


এক ব্যাক্তির "জুতা" ছিল না, তাই তার খুব দুঃখ ছিল। কিন্তু সে একদিন দেখতে পেল আরেক ব্যাক্তির 'পা' নেই। তখন সে খুবই সুখী বোধ করলো। প্রিয় পাঠক, সুখ কেমন পরিবর্তনশীল দেখেছেন?
সুখ নিয়ে আপনারা সবাই খুব সচেতন। পৃথিবীতে এমন কোনো প্রাণী খুজে পাওয়া যাবে না যে কিনা সুখী হতে চায় না। কিন্তু আপনারা অনেকেই বুঝতেই পারি না যে আপনারা,"কোথায়? কিভাবে ? কখন ? কিসে ?" সুখ খুজে পাবো। সুখ কি ললনার খোপায় বাঁধা বেলি নাকি মায়ের আঁচলে ছেলের ঘাম মুছে ফেলার আনন্দ?সুখ আসলে আপেক্ষিক অনুভূতি । ধরা যায় না, ছোঁয়া যায় না, শুধু অনুভব করা যায়।
আর এই আপেক্ষিক অনুভূতির পেছনে ছুটেই আপনারা আপনাদের জীবন শেষ করে ফেলি । হয়তো খুজে পাই আবার হয়তো খুঁজে পাই না। বিজ্ঞানীরা বলেন সুখ নির্ভর করে মস্তিষ্কের হরমোনাল ক্রিয়ার উপর। অর্থাৎ মানুষের মস্তিষ্কের রঙ্গলীলাই সুখ দুঃখের অনুভূতি দেয়। কোন কাজ ভাল লাগলে বা ভালো কিছু করার ফলে ভালো অনুভব করলে পুরষ্কার হিসেবে মস্তিষ্ক কিছুটা ডোপামিন নামক হরমোন নিঃসৃত করে যা আপনার মনে এক ধরণের আনন্দদায়ক অনুভুতি দেয় ফলে আপনি সুখ অনুভব করেন এবং আবার সেই কাজটি করার জন্য উদ্বুদ্ধ হন। তাহলে এটা বোঝা যাচ্ছে আপনারা যদি আপনাদের ভালো লাগা,খারাপ লাগা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি তাহলে আপনারা আপনাদের সুখ গুলো নিজেরাই নিয়ন্ত্রণ করতে পারবো। সুখ আসলে একটি পছন্দ মাত্র। আপনারা চাইলে নিজের কর্মকান্ড দ্বারা সুখী হতে পারি। আসুন আলোচনা করা যাক আপনারা কিভাবে আপনাদের দৈনিক কাজ দ্বারা সুখী হতে পারিঃ

১। ইতিবাচক ভাবে ভাবাঃ সুখী হবার সবচেয়ে প্রথম এবং প্রধান কাজ হচ্ছে সবসময় ইতিবাচক ভাবে ভাবা। ভালো বা মন্দ যেকোন ঘটনাকেই যদি আপনি ইতিবাচক ভাবে দেখতে পারেন তাহলে আপনি সব সময়ই সুখের সমুদ্রে বিরাজ করবেন। ধরুণ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার খুব ইচ্ছে আপনার, আপনি খুব নিশ্চিত ছিলেন আপনি ভালো করবেন কিন্তু ভর্তি পরীক্ষায় ভালো করতে পারলেন না। তখন আপনি এটাকে ইতিবাচক হিসেবে কিভাবে দেখবেন?
অবশ্যই উপায় আছে। আপনি ভাবতে পারেন,'আপনার জন্য হয়তো এমআইটি অপেক্ষা করছে, বুয়েট, শাহাজালাল অপেক্ষা করছে।' আপনি হয়তো এখন বলবেন আপনি MIT তে পড়ার কথা স্বপ্নেও কল্পনা করেন নি। কিন্তু ইতিবাচক মানুষরা
সব সময়ই সব কিছুর মধ্যে ভালো দিক দেখতে পায়। তাই তারা সুখে থাকে। এপিজে আবুল কামাল এর কথাই ধরুন না, তিনি হতে চেয়েছিলেন পাইলট । কিন্তু পারেন নি। তিনি হতাশ হন নি। সব সময় পজেটিভ চিন্তা করেছেন , কাজ করেছেন।
শেষে তিনি হয়ে গেলেন রকেট বিজ্ঞানী। মিস্টার মিশাইল ম্যান। জীবন আপনাকে কখন কিভাবে উপহার দিবে আপনি সেটা জানেন না। সো , সব সময় ইতিবাচক ভাবুন। সুখী হতে পারবেন।


২। কৃতজ্ঞ হতে হবেঃ "একটি ছোট শিশুকে তার শিক্ষক গণিতে ৯৯ নম্বর দিলেন। যদিও শিশুটি ১০০ তে ১০০ পবার যোগ্য তবুও শিশু যাতে অহংকারী না হয়ে পড়ে তাই শিক্ষক এই কাজ করলেন। শিশুটি খুব দুঃখী হয়ে পড়ল। সে স্রষ্টা,শিক্ষাব্যাবস্থা এবং শিক্ষককে বকা দিতে শুরু করলো। তখন তার মা বললেন, 'তুমি ৯৯ মার্কেসের জন্য সুখী না হয়ে ১ মার্কসের জন্য কেন দুঃখ করছ? শিশুটি তার ভুল বুঝতে পারল"। আপনিও অনেক সময় এই শিশুটির মত আচরণ করেন । আপনি আপনার বড় প্রাপ্তির জন্য কৃতজ্ঞ হন না, সুখী হন না বরং ছোট অপ্রাপ্তি গুলো নিয়ে দুঃখবোধ করেন। আপনার যা আছে তার জন্য কৃতজ্ঞ হতে হবে এবং কৃতজ্ঞতা মন থেকে আনতে হবে তাহলেই আপনি সুখী হতে পারবেন।


৩। সুখি থাকার ব্রত পালন করুণঃ এক রাজা একবার সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি সুখী মানুষ খুঁজে বের করবেন, তিনি সারা রাজ্য খুঁজেও কোনো সুখী মানুষ খুঁজে পেলেন না। জমিদার থেকে শুরু করে ধনী ব্যাক্তি সবাই নিজেকে অসুখী বলে দাবি করতে শুরু করলো। শেষমেশ তিনি দেখলেন একলোক খালি গায়ে হেঁটে আসছেন, লোকটির পরনে শুধু মাত্র একটি ল্যাংগট। তাকে রাজা জিজ্ঞেস করলেন ," তুমি কি সুখী?"লোকটি বললেন তিনি সুখী। আপাত দৃষ্টিতে মনে হতে পারে এই লোকটির সুখী হবার কারণ নেই । কিন্তু তিনি সুখী। তিনি নিজেকে সুখী ভাবেন তাই তিনি সুখী। আপনি যদি ভাবেন আমি সুখে থাকবো তবে কেউ বা কিছু আপনার সুখ বাধাগ্রস্থ করতে পারবে না। আপনাকে শুধু সুখী থাকার পথ বেচে নিতে হবে। সুখী থাকার অভ্যাস করতে হবে।


৪।দুঃখের মূল উৎপাটন করুণঃ অনেক সময় আপনি সুখের খোজ করার পাশাপাশি ছোট খাটো দুঃখ গুলোকে বহন করে চলেন। ফলে আপনি সুখী হতে পারি না। মনে করুণ আপনার বন্ধু কিংবা ভালোবাসার মানুষের সাথেআপনার আজকাল মতের মিল হচ্ছে না। প্রায় ঝগড়া হচ্ছে । ফলে আপনি অসুখী হয়ে পড়ছেন। এবং প্রতিনিয়তই ঝগড়া হচ্ছে আর আপনি অসুখী হয়ে যাচ্ছেন। তাহলে এ ক্ষেত্রে আপনি সমস্যাটির সফল সমাধান না করলে কখনোই এই দৈনিক দুঃখ থেকে বের হতে পারবেন না। পারস্পরিক ভাবে সমস্যার সমাধান করে ফেলুন । আর সমস্যা সমাধানের অযোগ্য হলে ব্যাক্তিকে এড়িয়ে যান। ১ম এ কিছুদিন হয়তো খারাপ লাগবে কিন্তু আপনি সফল ভাবে দুঃখ থেকে মুক্তি পেতে পারবেন। দুঃখের মূল কারণ খুঁজে বের করতে পারাও একটা বড় চ্যালেঞ্জ। আপনি যখন কোনো কারণে কষ্ট পাচ্ছেন তখন ভেবে দেখুন সেই কারণটাই কি আপনার দুঃখের প্রকৃত কারণ নাকি এর পেছনে বড় কোনো কারণ আছে? যদি বড় কোনো কারণ থাকে তবে সেই বড়/ আসল কারণটি সমাধানের জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হয়ে কাজে নেমে পড়ুন। ছোট খাটো সমস্যা গুলো অটো সমাধান হয়ে যাবে। আপনি সুখী হতে চাইলে কোনো সমস্যাই সমস্যা নয়।

৫।সেবামূলক কাজ করুণঃ সুখ যেহেতু মনের ব্যাপার সেহেতু আপনি মনের খোঁড়াক মিটাতে পারলেই সুখী হতে পারবেন। একবার ভেবে দেখুন আপনার চারপাশে কত মানুষ না খেয়ে আছে, কত মানুষ রোগে ভুগছে ,কত মানুষ অসহায় জীবন যাপন করছে। আপনি চাইলেই কিন্তু তাদের প্রতি সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে দিতে পারেন। আপনি চিন্তাও করতে পারবেন না যে এই সাধারণ কাজে কি অসাধারণ সুখ নিহিত আছে। আপনি যদি কোনো মৃত্যু পথযাত্রী মানুষ কে রক্তদিয়ে বাঁচিয়ে তুলতে পারেন তাহলে হয়তো সমাজ আপনাকে বাহবা দেবে না, আপনি হয়তো সোশাল মিডিয়াতে ভাইরাল হবেন না কিন্তু আপনি মানসিক যেই প্রশান্তি অনুভব করবেন সেটা কোটি টাকা দিয়েও কিনতে পারবেন না। আপনি এই অকৃত্রিম সুখ থেকে কর্মদ্যোম পাবেন অনেক দিন।

৬।সামাজিক যোগাযোগ বাড়াতে হবেঃ যারা ৯০ এর দশকে জন্ম নিয়েছেন তারাই সবচেয়ে বেশী সামাজিক যোগাযোগ রক্ষা করে থাকেন। তবে প্রব্লেম হচ্ছে সেটা আমরা করি সোশাল মিডীয়ার মাধ্যমে। আপনার বাস্তবিক জীবনেআপনি প্রচন্ড একা। আর সেজন্যই আপনারা একাকীত্বে ভুগেন এবং সুখের লেজও খুঁজে পাই না। আপনি ইচ্ছে করলেই কিভাবে সুখী হতে পারেন দেখুন, যখন আপনি মানুষের সাথে কুশল বিনিময়ের ছলে বলেন,"ভালো আছি" তখন আপনার মস্তিষ্কে ভালো থাকার বার্তা যায়। এভাবে বার বার বার ভালো থাকার বার্তা গেলে আপনার মস্তিষ্ক বিশ্বাস করতে শুরু করে যে আপনি ভালো আছেন তখন আপনি মানসিক সুখ বোধ করেন। আমি বানিয়ে বলছি না । আলোচনার শুরুতেই ডোপামিনের কথা বলেছিলাম মনে পড়ে? ঘটনা সেটাই। সামাজিক মেলামেশার আরেকটা সুবিধে হচ্ছে আপনি খুব সহজেই আপনার আসেপাশের মানুষ গুলোর কষ্ট নিজের চোখে দেখতে পারবেন। তখন আপনি বুঝতে পারবেনআপনি আসলে তুলনামূলক ভাবে ভালো আছেন। আপনি সুখী অনুভব করবেন।

৭।মানসিক শক্তি বাড়ানঃ একটা দালান নির্মাণ করলে মাটির উপরে যতটুকু দেখা যায় তার চেয়ে কয়েকগুণ পরিমান ভিত্তি হিসেবে মাটির নিচে থাকে । দালান যত বড় হয় ভিত্তির পরিমান ততই বাড়তে থাকে । তেমনি মানসিক শক্তি হচ্ছে আপনার জীবনের ভিত্তি। আপনি মানসিক ভাবে যতবেশী শক্তিশালী হবেন আপনার জীবন ততবেশী সাফল্যময় হবে । আপনার সুখ ততই বেড়ে যাবে। মানসিক শক্তির উপর নির্ভর করে কোনো ঘটনার প্রতি আপনি কিভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাবেন। আপনি ভালোভাবে খেয়াল করলে দেখবেন আপনার বন্ধুমহলেই নানা রকমের মানসিক শক্তি সম্পন্ন মানুষ রয়েছেন। আপনার এমন একজন বন্ধু আছে যে কিনা পরীক্ষায় ২ মার্কস কম পেলে কান্নাকাটি করে।
ফলে তার পরের পরীক্ষাটিও খারাপ হয়। আবার এমন একজন বন্ধু আছে যে কিনা পরীক্ষায় কোনো কারনে ফেল করলেও স্বাভাবিক থাকে। পরের বার ভালো করে পড়ে এবং ঠিকই ভালো ফলাফল করে। ঠিক যেমন দালানের মতই,যেই দালানের ভিত্তি মজবুত সে যত ঝড়ঝাপটাই আসুক না কেন অনড় থাকে। মানসিক শক্তিশালী মানুষরা কখনোই বিচলিত হয় না। তারা সকল দুঃখদায়ক আবেগ অনুভূতি মানসিক শক্তি দিয়ে মুকাবেলা করেন। সব কিছুকে যুক্তি দিয়ে ভাবতে শিখুন। কোনো ভুল কাজ কেন করলেন, কিংবা কেন আপনি সুখ পাচ্ছেন না সেটা বের করুণ এবং মকাবেলা করুণ। কখনোই সমস্যাকে এড়িয়ে যাবেন না। সমস্যার মুখমুখি হতে শিখুন ধীরে ধীরে মানসিক ভাবে শক্তিশালী হতে পারবেন।


৮।নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখুনঃ একমাত্র আপনিই পারেন আপনার উপর নিয়ন্ত্রণ তৈরী করে সব কিছুকে নিজের অনুকূলে নিয়ে আসতে। সমস্যা সবার জীবনেই থাকে কিন্তু সেই সমস্যার প্রতি আপনি কিভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাবেন এটা আপনার উপর নির্ভর করে। আপনার প্রতিক্রিয়ার ফলেই আপনার মস্তিষ্কে সুখ দুঃখের সঞ্চার হয়। আপনার সুখগুলো আপনার নিয়ন্ত্রণেই রাখুন। কাউকে আপনার সুখ নিয়ন্ত্রণ করতে দেবেন না। অনেক সময় এমন হয় যে আমরা বন্ধু কিংবা ভালোবাসার মানুষের প্রতি অতি মাত্রায় নির্ভরশীল হয়ে পড়ি ফলে আমাদের সুখের নিয়ন্ত্রণ তার কাছে চলে যায়। তার অনুপস্থিতি বা খারাপ আচরণ আমাদের কষ্ট দেয়। দুঃখের সাগরে নিমজ্জিত করে। কিন্তু আমরা যদি সচেতন হয়ে সম্পর্ক গড়ি তাহলে এই সমস্যাটি হবার কথা নয়। আমাদের অবশ্যই সচেতন হতে হবে। নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ বাড়ানোর জন্য ধ্যান একটি উত্তম পন্থা। এতে মাথা ঠান্ডা থাকে ও মন শান্ত হয়।


আপনার দুঃখের কথা জনে জনে বলে বেড়ানোর মধ্যে কোনো ক্রেডিট নেই। আপনি দুঃখের কথা বলে অন্য ১০ জনের সুখ নষ্ট কেন করছেন? আপনার দুঃখের কারণ আপনি এবং আপনিই পারেন সেই দুঃখ কে সুখে রুপান্তর করতে। ভালো থাকুন,ভালো রাখুন ,ভালোবাসুন মানবতা কে।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই জুন, ২০১৮ সকাল ৮:৪১

শরিফুল ইসলাম (ফরহাদ) বলেছেন: আমি ভালো আছি

২| ০৭ ই জুন, ২০১৮ সকাল ৯:০২

রাজীব নুর বলেছেন: বই পড়ে যেমন সাঁতার শেখা যায় না, তেমনি সুখী হওয়া এর সহজ নয়।

০৭ ই জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৬

প্রতীক মজুমদার বলেছেন: অবশ্যই । তবে আমরা দিক নির্দেশনা পেতে পারি। :)

৩| ০৭ ই জুন, ২০১৮ সকাল ৯:১০

লাবণ্য ২ বলেছেন: সুন্দর পোস্ট।

৪| ০৭ ই জুন, ২০১৮ সকাল ৯:১০

ওমেরা বলেছেন: চাহিদা ও হিংসা যার যত কম সে তত সুখী হতে পারবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.