নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ঘোরাঘুরি আনলিমিটেড

ঘুড়তে থাকা চিল

আমি ঘুরতে খুব ভালোবাসি,মোটামোটি প্রকৃতির কোলে গিয়ে ঘুমানোর স্বপ্নটাকে জীবনের মুল প্রতিপাদ্য করে নিয়েছি ৷

ঘুড়তে থাকা চিল › বিস্তারিত পোস্টঃ

দুঃসাহসিক অভিযাত্রাঃকমলদহ,সুপ্তধারা,মূল সহস্রধারা

০৩ রা অক্টোবর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৬



কোনো কিছু না ভেবেই দুই ভাই মিলে রওনা হই সিতাকুন্ডের উদ্দেশ্যে ৷ উদ্দেশ্যে হলো কমলদহ ঝর্না ৷ ১ তারিখ রাতের হানিফ বাসে করে রওনা হলাম আমরা ৷ মিরসরাই পৌছানোর পর থেকেই বৃষ্টি শুরু ৷ ভোরে সিতাকুন্ড পৌছাই,হোটেল এ কিছুক্ষন রেস্ট নিয়ে বের হয়ে যাই কমলদহের উদ্দেশ্যে ৷ গ্রামের রাস্তা ধরে যখন হেটে চলছিলাম তখন অনেকেই বলছিলো আজ যেতে পারবেন না ৷ ঝিরির পানি বুক সমান ৷ কিন্তু কারো কথায় বিশ্বাস হচ্ছিলো না,হাটতে হাটতে ঝিরির কাছে পৌছালাম ৷ গিয়ে মাথা নষ্ট,বৃষ্টির কারনে ফ্লাশ ফ্লাড হচ্ছে ৷ মনটাই খারাপ হয়ে গেলো,ফিরলাম সিতাকুন্ড তে ৷ এবার পথ দিলাম ইকো পার্ক এর দিকে ৷ ধাপে ধাপে উপরের দিকের রাস্তা ধরে উঠতে উঠতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম ৷হঠাতই চোখে পড়লো সুপ্তধারার সাইনবোর্ড ৷ কিন্তু যেতে হবে ২৩০০ ফুট নিচে ৷ তখনই দেখা হলো এক ১৪ জনের গ্রুপের সাথে, যারা সহস্রধারা ঘুরে এসে ক্লান্ত ৷ ওদেরকে মানিয়ে একসাথে শুরু করলাম সুপ্তধারার পথ ৷ পিচ্ছিল সিড়ি,তাও বেখাপ্পা ৷ পা পিছলালেই খতম ৷ প্রায় ৫০০ এর মতো সিড়ি নেমে পৌছালাম ঝিরি পথের কাছে ৷ এখান থেকেই শুরু আমাদের জীবনের নতুন অধ্যায় ৷ যা কখনো করিনি আজ তা করবো ৷ প্রচন্ড স্রোতের এর মধ্যে দড়ি ধরে ধরে ঝিরি টা পার হলাম ৷ সবাইরে এই সুযোগে জোক বাবাজি কামড়ায় নিলো ৷ অপর পারে উইঠা সবায় জোক খোজায় ব্যাস্ত ৷ আবার হাটা শুরু করলাম,প্রচন্ড স্রোত,পাহাড়ি ঢালুর মধ্যে আবার বড় বড় পাথর,গাছের শিকড় ধরে আগানো!! প্রায় চলে এসেছি ৷ কিন্তু সবচেয়ে কঠিন মুহুর্ত টা এখন ই ৷ প্রবল স্রোত পড়ছে এক স্টেপ নিচে ৷ এগোতে হলে ঝিরির অপর প্রান্তে যেতে হবে ৷ প্রায় আধ ঘন্টা সময় লাগছে ১৪ জনের মাত্র ২ মিটার যায়গা পার করতে ৷ ছুটতে পারলে কিসের সাথে আঘাত খেতাম,শেষ টা বা কোথায় হতো জানা ছিলো না ৷
ও বলা হয়নি ১৪ জনের গ্রুপের একজন জোকের ভয়ে আর সামনে আসেনি আমাদের সাথে,সেখানেই দাড়িয়ে ছিলো ৷
ঠাস!! তানভীর ভাই আর আমি পিছলাইয়া পড়লাম পাথরে,পুরাই চিৎ ৷
আমরা দুর থেকে দেখেই নয়ন জুড়িয়েছি,বাকিরা সামনে থেকে দেখে এলো দানবাকৃতির সুপ্তধারা ঝর্না ৷ নাম তার সুপ্ত হলেও ঝর্না মোটেও সুপ্ত ছিলোনা,ছিলো আস্ত এক দানব ৷
এবার ফিরার পালা,ফিরতে অতটা কষ্ট হয়নি ৷ তবে সেই ৫০০ সিড়ি উঠতে গিয়ে প্রানটা যায় যায় অবস্থা ৷ বসবো যে তাও সম্ভব না,বসলেই জোক বাবাজির কামড় ৷ শরীর এতটাই ক্লান্ত যে আমরা আর সহস্রধারা ১ এর দিকে যাইনি ৷
বিকালে গিয়েছিলাম কুমিরা ঘাটে ৷ সুন্দর একটা বিকেল কাটালাম সমুদ্রের পাড়ে আমরা দুজনে ৷
প্রথম দিনের পরিসমাপ্তি ৷
পরদিন ভোরে আবারও কমলদহ ৷ আজকে বাকি ১৩ জন কে নিয়ে ৷ সেই একজন ভয়ে চলে গেছিলো চট্টগ্রাম সেদিন দুপুরেই ৷
হাটতে হাটতে আবারও কমলদহের ঝিরিপথ ৷ মনটা তৃপ্ত ৷ পানি হাটুর নিচে ৷ প্রায় ২০ মিনিট হেটে পৌছালাম অতি প্রাকৃতিক ঝর্না কমলদহ!!
আমরা আর উপরের স্টেপে যাইনি,১৩ জনের ১২ জন উপরে গিয়ে ছাগলকান্দা ঝর্নাটাও ঘুরে আসছিলো ৷ কমলদহ তে গা ভিজিয়ে যাত্রা এবার মূল সহস্রধারার পথে ৷ ছোট দারোগার হাট এসে পিকাপে করে সবায় গেলাম পাহাড়ের পাদদেশে ৷ সেখান থেকে আবারও হাটা শুরু ৷ আকা বাঁকা পাহাড়ি পথ আর ছোট এবং সহজ ঝিরি পথ পার করে দেখা পেলাম মূল সহস্রধারার ৷ দেখে সবায় বাকহীন!! আমার দেখা সবচেয়ে সুন্দর ও বিশাল ঝর্না ৷ শরীরের উপর পানি পরে আর শরীর ফাটায়!! তাও শান্তি ৷ শেষ সময়ে যদি এই ঝর্নাটার ছোয়া না পেতাম,জীবনটা স্বার্থক হতোনা ৷ কোনোমতেই ছেড়ে যেতে ইচ্ছে হচ্ছিলো না ৷ প্রায় ১ ঘন্টা থেকে ফিরলাম সিতাকুন্ড ৷
সারা বিকেলটা ঘুমিয়ে রাতের বাসে করে ফিরলাম আমরা ঢাকা ৷
যা করতে পেরেছি তা ১৪ জনের গ্রুপের শাকিল ভাই না থাকলে হয়তোবা হতোনা ৷
কৃতজ্ঞ শাকিল ভাইয়ের প্রতি ৷
কিছু ছবিঃ
১)কমলদহে প্রথম দিনের স্রোত

২)কমলদহ গ্রামে

৩) ঝিরি পথ পার হচ্ছি

৪) দূর থেকে দানব সুপ্তধারা

৫)পরদিন কমলদহের ট্রেইল ধরে হাটছি

৬)ঐ যে কমলদহ

৭)জয় করেছি আমি

৮) আয়েশি আমি

৯)কমলদহ ঝর্না

১০)মূল সহস্রধারার পথে

১১)বিমুগ্ধ আমি

১২)আমরা সবায়

১৩) ঝর্নায় গোসল

১৪) মূল সহস্রধারা ও আমরা

১৫)ঝর্নাটা আমাদের

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৮:০৫

সাদা মনের মানুষ বলেছেন: এমন এ্যডভেঞ্চারের কাহিনী পড়তে ছবি দেখতে ভীষণ ভালোলাগে আমার, সহস্রধারাটা দেখেছি উপড়ে দাঁড়িয়ে নেমে দেখা হয়নি.....ওখানে আসলে ঝর্ণা কয়টা ভাইজান?

০৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১১:৫৩

ঘুড়তে থাকা চিল বলেছেন: ইকোপার্ক এ দুইটা ঝর্না ৷ সহস্রধারা ১ ও সুপ্তধারা ৷ সহস্রধারা টা সিম্পল ৷ সুপ্তধারা টা দানব ৷ সুপ্তধারায় পানি পরে চারটা ঝর্নার মতো ৷

২| ০৩ রা অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৮:০৭

সাদা মনের মানুষ বলেছেন: আপনার ছবি দেখে ইচ্ছে করছে এখনি ছুট লাগাই, আগামী বর্ষায় একবার ট্রাই করে দেখতে হবে।

০৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১১:৫৪

ঘুড়তে থাকা চিল বলেছেন: ভরা বর্ষায় গেলে অনেক প্রস্তুতি নিয়ে যেতে হবে ৷ বর্ষার শেষ অবস্থায় যাওয়াটা মনেহয় বেশী ভালো

৩| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১২:২১

জে আর সিকদার বলেছেন: চমৎকার

০৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১১:৫৫

ঘুড়তে থাকা চিল বলেছেন: ধন্যবাদ ৷

৪| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৬ ভোর ৫:০২

রক্তিম দিগন্ত বলেছেন:
দারুণ অভিযান।

ছবিগুলো বেশ।

০৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১১:৫৬

ঘুড়তে থাকা চিল বলেছেন: ধন্যবাদ ৷

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.