নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ঘোরাঘুরি আনলিমিটেড

ঘুড়তে থাকা চিল

আমি ঘুরতে খুব ভালোবাসি,মোটামোটি প্রকৃতির কোলে গিয়ে ঘুমানোর স্বপ্নটাকে জীবনের মুল প্রতিপাদ্য করে নিয়েছি ৷

ঘুড়তে থাকা চিল › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রকৃতির খুব সান্নিধ্যেঃ বগা লেক

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৩:৩১



শুধু কী ঘুরলেই হবে? শখের ব্লগ ও তো নিখতে হবে!
লিখবো লিখবো করে সময় ই পাচ্ছিলাম না ৷ আজ লেখবো আমাদের বগা লেক ভ্রমনের গল্প, আমরা ঘুরতে থাকা চিল ৷
গত ২৩-২৬ মার্চ এর ছুটিটা ছিলো ভ্রমনের জন্যে সেরা ৷ তাই আমরা ৭ জন রওনা হলাম বগা লেকের উদ্দেশ্যে ৷ টিকেট নিয়ে বিড়ম্বনা বান্দরবান এর নিত্য নৈমত্তিক ঘটনা,আর তা যদি হয় টানা কোনো সরকারি ছুটি তাহলে সেইসব দিনের টিকেট বুকিং অন্তত দেড় মাস আগেই হয়ে যায় ৷ আমরা বাধ্য হয়ে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম এর এনা বাসের টিকেট কাটি ৷ ভোগান্তির শুরু ঢাকা থেকেই ৷
একটা কৌতুক বলি,
জুয়েলঃ রাত ১২ টা,ঘুমাই একটু ৷ (কাঁচপুর)
জুয়েলঃভোর ৫ টা, ভাই আমরা কোথায়?
আমরাঃ ভাই মেঘনা ব্রীজ !! :-P
জ্বী হ্যা পুরো ৫ ঘন্টা আমরা জ্যাম এ আটকায়ে ছিলাম! একটু একটু করে সময় যাচ্ছিলো আর একটু একটু করে সময় মিলাচ্ছিলাম,প্লান সাজাচ্ছিলাম নতুন করে ৷ সকাল ৯ টা বাজে,পৌছিয়েছি আমরা চট্টগ্রাম ৷ নেই এবার কোনো বান্দরবান এর বাসের টিকেট!! চড়ে বসলাম কেরানীহাট এর বাসে! ভোগান্তি চরম শিখরে! চন্দনাইশ এর জ্যামে আরও ১ ঘন্টা শেষ ৷ বান্দরবান পৌছাই ২ টার সময়!!
যেখানে আজই আমাদের বগা লেক থাকার কথা সেখানে দুপুর হয়ে গেলো মাত্র পৌছালাম আমরা বান্দরবান ৷ ২ঃ৩০ টার রুমার বাস ধরলাম ৷ মনের মধ্যে ক্ষীন আশা,হয়তো শেষ সময়ের জ্বীপ ধরতে পারবো ৷ বাসে ছাদে করে চলে আসলাম রুমা,দুপুর ঘড়িয়ে তখন প্রায় শেষ বিকেল ৷ আজ আর বগা লেক যাওয়া হচ্ছেনা ৷ অনেক খোজাখুজি করার পর খোজ পেলাম লেক ভিউ রিসোর্ট, রুমা বাজার থেকে আরও ২ কিমি দূরের একটি হোটেলের ৷ ভোগান্তি,হতাশা আর ক্লান্ত দেহ সব একসাথে ভর করছিলো ৷
ক্ষুনাক্ষরেও ভাবিনি অন্যতম শ্রেষ্ট একটা রাত,রাতের পর ভোর আমাদের ই অপেক্ষায় ৷
একটি রুম নিলাম সৌজন্যতার জন্যে, যায়গাটা আমাদের পছন্ধ হয়েছে ৷ পাহাড়ের সাথে বিশাল একটি লেক,লেকের ঝুলন্ত ব্রীজ পার করে গেলাম হোটেলে ৷ রাতে থাকবো আমরা তাবুতে ৷ তাবু পিচ করে নিলাম লেক এর পানি ঘেসে ছোট্ট একটু যায়গায় ৷ ততক্ষনাৎ সিদ্ধান্ত নিলাম,যেই টাকা গাইড এর পিছনে দিতে হতো সেই টাকা দিয়ে নাহয় আজ BBQ করবো ৷ রবিউল নামের একটা পিচ্ছি ছিলো আমাদের সাথে ৷ সবকিছুতেই ও আমাদের সাহায্য করেছে ৷ ওকে নিয়ে বাজার থেকে সব কিছু কেনাকাটা করে নিলাম ৷ দ্রুতই আবার ফিরে আসলাম হোটেলে ৷ নিজের দেশে থেকেও পুরোপুরি স্বাধীন মনে হচ্ছিলো না ৷ কেনো?
রুমা তে নিরাপত্তার স্বার্থে রাত ৯ টার পর হাটাই নিষেধ,টহল চলে আর্মি বাহিনীর ৷
লেকে এসে শুরু করলাম মাংস পোড়ানো ৷ BBQ এর স্বাধ ও হয়েছে অসাধারন ৷ খেয়ে দেয়ে এবার ঘুমানোর পালা ৷
ভোর ৫ টা, অসাধারন! আমি মোটেই প্রস্তুত ছিলাম না এই সৌন্দর্যের জন্যে ৷ লেক এর পানি থেকে ধোয়ার মতো কুয়াশা উড়ছে,কোকিল ডাকছে, পাহাড়ের ভাজে মেঘ, সূর্যের কিরণ খেলছে কুয়াশার সাথে ৷
জীবনের শ্রেষ্ঠ একটি সকাল, আজ পর্যন্ত নিঃসন্দেহে বলে দিলাম ৷
ব্যাগ ঘুছিয়ে চলে আসলাম রুমা বাজার ৷ নতুন এক বিড়ম্বনা, রুমা বাজারে একজন গাইড ও নেই ৷ অনেক চেষ্টা করেও কাওকে পেলাম না ৷ তাওহীদ(গাইড) ভাই কে ফোন দিলাম ,উনি তার বড় ভাই সাদেক(গাইড) ভাই কে আমাদের জন্যে বগা লেক থেকে পাঠিয়ে দিলেন ৷ সেখান থেকে ৩ জনের একটি গ্রুপ আমাদের সাথে যোগ হয়েছে ৷ জ্বীপ ভাড়া করে রওনা হলাম স্বপ্নের বগা লেক এর পথে ৷ কিছুদুর যাওয়ার পরেই শুরু খেলা!! রাস্তা তো নয় রোলার কোস্টার! ধূলাময় এক রাজ্যে আমাদের আগমন ৷ ২ ঘন্টার রোলার কোস্টার জার্নির পর পৌছালাম বগা লেক ৷ আর্মি ক্যাম্প এ এনট্রি করে চলে গেলাম সিয়াম দিদির ঘরে ৷ তৈরি হচ্ছে আমাদের খাবার,ততক্ষনে সবায় গোসলের জন্যে প্রস্তুত ৷
বগালেক এর স্বপ্ন বহু বছর ধরেই দেখছি,তবে বগা লেক এ গোসল করবো তা কখনো ভাবিনি ৷ স্বচ্ছ,শীতল পানিতে শরীর ডুবিয়ে মনে হচ্ছিলো শান্তির অমৃত তে ভেসে যাচ্ছি ৷ গোসল করে ,খাওয়া দাওয়া করে নিলাম ৷ বিশ্রামের পালা,দুপুর ২ টা পর্যন্ত বিশ্রাম করলাম ৷ আজই আবার চলে যাবো কেওক্রাডং ৷
কিছু ছবিঃ
১)রুমাতে প্রবেশ

২)সাঙ্গু পাড়

৩)লেক ভিউ রিসোর্ট এ প্রবেশ

৪)ঝুলন্ত ব্রীজ

৫)BBQ

৬)লেকের পাড়ে তাবু

৭)অপার্থিব সকাল

৮)বগালেক এর আর্মি ক্যাম্প এর পথে

৯)বগালেক পাড়া

১০)বগালেক এর ইতিহাস

১১)গোসল চলছে

১২)প্রকৃতি দেখছি

১৩)স্থির বগালেক

অপার্থিব সকাল এর ভিডিও: https://www.youtube.com/watch?v=RrVT0mrjh7c
পরবর্তী পর্বে লিখবো কেওক্রাডং জয়ের গল্প ও সেখান থেকে ঢাকা ফেরার কথা ৷

মন্তব্য ২০ টি রেটিং +৭/-০

মন্তব্য (২০) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৪:২০

সঞ্জয় নিপু বলেছেন: অপেক্ষায় রইলাম পরের পর্বের।
ভাল লাগলো লেখাটা। সকাল বেলাটা আসলেই অনেক সুন্দর।

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১১:৫৪

ঘুড়তে থাকা চিল বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।

২| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৫:০০

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: আপনাদের ঘোরাঘুরি অনেক ভাল লাগল।

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১১:৫৪

ঘুড়তে থাকা চিল বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।

৩| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২৭

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: খুব সুন্দর একটি ভ্রমন বিবরণী সাথে ছবি ব্লগ , দেখে ও পাঠে খুব ভাল লাগল । অনেক সুন্দর সুন্দর ছবি দিয়েছেন ।বগা লেকের পাকৃতিক দৃশ্যগুলিও সুন্দরভাবে উপন্থাপন করেছেন । এই সুযোগে বগা লেক সম্পর্কে অআরো তথ্য সকলের সাথে অআমরা অআপনার এই পোষ্টে শেয়ার করতে পারি ।

উল্লেখ্য যে বলকাইন হ্রদ বা বগা হ্রদ বা স্থানীয় নামে বগা লেক বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উচ্চতার স্বাদু পানির একটি হ্রদ। বান্দরবান শহর থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরে বগাকাইন হ্রদের অবস্থান কেওকারাডং পর্বতের গা ঘেষে, রুমা উপজেলায়। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা প্রায় ২,৪০০ ফুট (কিওক্রাডাং-এর উচ্চতা ৩,১৭২ ফুট)। ফানেল বা চোঙা আকৃতির আরেকটি ছোট পাহাড়ের চুড়ায় বগা লেকের অদ্ভুত গঠন অনেকটা আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখের মতো।

রুমা উপজেলার পূর্ব দিকে শঙ্খ নদীর তীর থেকে ২৯ কিলোমিটার অভ্যন্তরে অবস্থিত একটি মৌজার নাম 'নাইতং মৌজা'। এই মৌজার পলিতাই পর্বতশ্রেণীর অন্তর্গত একটি পাহাড়ের চূড়ায় হ্রদটি অবস্থিত। বাংলাদেশের ভূতাত্ত্বিকগণের মতে বগাকাইন হ্রদ মৃত আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ কিংবা মহাশূন্য থেকে উল্কাপিণ্ডের পতনের ফলে সৃষ্টি হয়েছে । বাংলাদেশে এরকম ভুগঠন একেবারেই বিরল । নীচের ছবিতে দেখা যেতে পারে ।

স্থানীয় আদিবাসীদের রুপকথা অনুযায়ী, অনেক কাল আগে পাহাড়ের গুহায় একটি ড্রাগন বাস করতো। বম ভাষায় ড্রাগনকে "বগা" বলা হয়। ড্রাগন-দেবতাকে তুষ্ট করতে স্থানীয়রা গবাদী পশু উৎসর্গ করতেন। কিন্তু একবার কয়েকজন এই ড্রাগন দেবতাকে হত্যা করলে চূঁড়াটি জলমগ্ন লেকে পরিণত হয় এবং গ্রামগুলোকে ধ্বংস করে ফেলে। যদিও এই রূকথার কোনো বাস্তব প্রমাণ নেই, তবুও রূপকথার আগুন উদগীরণকারী ড্রাগন বা বগা এবং হ্রদের জ্বালামুখের মতো গঠন মৃত আগ্নেয়গিরির ধারণাটির সাথে মিলে যায়।

এই হ্রদটি তিনদিক পর্বতশৃঙ্গ দ্বারা বেষ্টিত। এই শৃঙ্গগুলো আবার সর্বোচ্চ ৪৬ মিটার উঁচু বাঁশঝাড়ে আবৃত। এটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪৫৭ মিটার ও ৬১০ মিটার উচ্চতার মধ্যবর্তী অবস্থানের একটি মালভূমিতে অবস্থিত। এর গভীরতা ৩৮ মিটার (১২৫ ফুট)। এটি সম্পূর্ণ আবদ্ধ হ্রদ— এ থেকে পানি বের হতে পারে না এবং কোনো পানি ঢুকতেও পারে না। এর আশেপাশে পানির কোনো দৃশ্যমান উৎসও নেই। তবে হ্রদ যে উচ্চতায় অবস্থিত তা থেকে ১৫৩ মিটার নিচে একটি ছোট ঝর্ণার উৎস আছে যা বগা ছড়া নামে পরিচিত। হ্রদের পানি কখনও পরিষ্কার আবার কখনওবা ঘোলাটে হয়ে যায়। কারণ হিসেবে অনেকে মনে করেন এর তলদেশে একটি উষ্ণ প্রস্রবণ ( Hot Water Spring ) রয়েছে। এই প্রস্রবণ থেকে পানি বের হওয়ার সময় হ্রদের পানির রঙ বদলে যায়। এই Hot Water Spring টাকে যদি সঠিকভাবে সনাক্ত করে মেশিনের সাহায্যে পাআইপের দিয়ে যুক্ত করা যেতো
ও ফোয়ারার আকারে পানির উপরে দেখানো যেত , যেমনটা থাইল্যন্ডের চিয়াংমাই এর অদুরে পাহাড়ী এলাকায় পর্যটকদেরকে দেখানো হয় , তাহলে এই বগা লেকের পর্যটন আকর্ষণ আরো বহুগুণে বেড়ে যেতো বলে মনে করি ।
তথ্য সুত্র : Click This Link

এই লেকের বর্তমান পর্যটন সম্ভাবনার সুন্দর চিত্র উঠে এসেছে আপনার লিখাটিতে । পাঠে ভাল লাগল । এর পরবর্তী পর্বে বগা লেগের জীব বৈচিত্র সম্পর্কে কিছু জানতে পারলে ভাল লাগবে ।

অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১১:৫৪

ঘুড়তে থাকা চিল বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।

৪| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৩৮

আরািফন বলেছেন:

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১১:৫৫

ঘুড়তে থাকা চিল বলেছেন: অসাধারণ।

৫| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:২১

সুমন কর বলেছেন: সুন্দর পোস্ট।

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১১:৫৫

ঘুড়তে থাকা চিল বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।

৬| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১০:০৯

ধ্রুবক আলো বলেছেন: বাহ! খুব ভালো লাগলো পোষ্টে ++

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১১:৫৬

ঘুড়তে থাকা চিল বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।

৭| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১২:৩৫

আখেনাটেন বলেছেন: সুন্দর পোষ্ট...

১৮ ই এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১০:৫৫

ঘুড়তে থাকা চিল বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।

৮| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ৮:৪৯

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: খুব শীঘ্রই বগালেক যাবো। বগালেক কিভাবে সৃষ্টি হলো সেটা খুজে বেড় করার বা উদ্ঘাটন করা প্রচেষ্টা থাকবে । যাওয়ার আগে আপনার পোস্ট ভাল লাগলো ।

১৮ ই এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১০:৫৬

ঘুড়তে থাকা চিল বলেছেন: শুভকামনা আপনার জন্যে ।

৯| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৫:২৫

দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: ভালো লাগলো।







ভালো থাকুন নিরন্তর। ধন্যবাদ।

১৮ ই এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১০:৫৭

ঘুড়তে থাকা চিল বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।

১০| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৮:২০

বিজ্ঞানবাক্স বলেছেন: সুন্দর জায়গা :)

১৮ ই এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১০:৫৭

ঘুড়তে থাকা চিল বলেছেন: জি ভাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.