নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ঘোরাঘুরি আনলিমিটেড

ঘুড়তে থাকা চিল

আমি ঘুরতে খুব ভালোবাসি,মোটামোটি প্রকৃতির কোলে গিয়ে ঘুমানোর স্বপ্নটাকে জীবনের মুল প্রতিপাদ্য করে নিয়েছি ৷

ঘুড়তে থাকা চিল › বিস্তারিত পোস্টঃ

মেঘের ভেলকিঃ মারায়ং তং জাদী

১২ ই মে, ২০১৭ সকাল ১১:৩৯


আরও কঠিন,দুর্দান্ত স্বপ্ন এবারের ৷ আমরা ঘুরতে থাকা চিল স্বপ্ন টাকে যে পূরন করতেই হয় ৷
এক প্রকার ভাবে ঘুরতে থাকা চিলেদের দ্বিতীয় ঘর বললে সেই ঢাকা-চট্টগ্রাম মেইল ট্রেইন ই হবে :-p ৷ মে মাসের ০৩ তারিখ রাতে আমরা ১৪ জন রওনা হই চট্টগ্রাম এর উদ্দেশ্যে ৷ ভোর ৭ টায় আমরা পৌছাই চট্টগ্রাম,সেখান থেকে আমাদের সাথে যোগ হয় আরও দুজন ৷ মোটে দাড়ালো ১৬ জন ৷ অত্যন্ত গভীর স্পৃহা থাকাতে ১৬ জনের মধ্যে ৩ জন ইমন,জিনিয়াস আর তপদ্দার এর এই প্রথম ট্রেকিং !! আশ্চর্যজনক ভাবে জিনিয়াস এর তো প্রথম ঘুরতে বের হওয়া ৷
সকালের নাস্তা টা সেড়ে রওনা হলাম চকরিয়ার পথে, রাতে তেমন ঘুম হয়নি ৷ ঘুম সেড়ে নিতে হবে বাসেই ৷ দুপুর তখন ১২ টা ,আমরা ফাসিয়াখালি ৷ এখান থেকেই ভ্রমনের গন্তব্য খুব কাছে ৷ জীপ ভাড়া করে নিলাম দ্রুত ৷ কেউ ভিতরে,কেউ ছাদে ৷ ছাদে উঠা মানুষের পাল্লা একটু বেশী ভারী ৷ আকা বাঁকা,উচু নিচু পথ ৷ দুপাশে পাহাড়, বড় বড় গাছের ছায়া ৷ ৩৫ কিলো পথ পাড়ি দিয়ে পৌছাই আলীকদম শহরে ৷ আমাদের গাইড ফারুক আমাদের অপেক্ষা করছিলো সেখানে ৷ সবায় জম্পেশ একটা গোসল সেড়ে নেই ছোট্ট ঘাট বাধানো একটি পুকুরে ৷ আজকের গন্তব্য আমাদের মারায়ং তং জাদী ৷
আবাসিক এর ছোট্ট হোটেলে দুপুরের খাবার খেয়ে নিলাম সবায় ৷ তারপর ঘুরতে থাকা চিলেদের উঠতে থাকা শুরু
:-p
মাথার উপর দুপুরের সূর্য,তীর্যক আলো রশ্নি দিয়ে সবার মাথার ১২ টা বাজাচ্ছিলো ৷ তার মধ্য দিয়ে শুধুই উপরে উঠতে থাকা ৷
তবে অন্যান্য পাহাড়ী পথের মতো এই পথ টা অতটা সংকীর্ন নয় ৷ প্রতিবছর মাঘ মাসব্যাপী মারায়ং তং চূড়ায় একটি মেলা হয় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী দের ৷ মেলা টিতে অংশগ্রহণকারী সকল ছেলে এবং মেয়েরা উপরাংশে অনাবৃত থাকে(পাহাড়ী) ৷ মেলা তে প্রশাসনের মানুষেরাও উপস্থিত থাকে , আর এই মেলার জন্যেই সুবিশাল রাস্তার কাজ চলছে এই পাহাড়ে ৷ আমরা সেই রাস্তা ধরেই হাটছি ৷ প্রায় ১ ঘন্টা নাগাদ উপরে উঠে আমরা পাই একটি মুরং গ্রাম ৷ গ্রাম থেকে আমরা রাতের জন্যে পর্যাপ্ত পানি সংগ্রহ করে নেই ৷ সেখান থেকেই মৌহের শুরু ৷ নিচে তাকালে দেখা যাচ্ছে পুরো শহর টা ,শহরের মাঝে দিয়ে ছুটে চলা মাতামুহুরী নদী ৷ উপরে উঠার তো ক্ষ্যান্ত নেই, চূড়া খুব বেশী দূরে নয় ৷ পথিমধ্যে পড়েছিলো ছায়া বেষ্টিত একটি সমতল খেলার মাঠ ৷
পাহাড়ে ট্রেকিং এ আমি বরাবরই কচ্ছপ ! মানে সবার পিছনেই চলি ৷ সবার সামনে থাকা তনময় আর জুয়েল এর মধ্যে নাকি একটা রেস ও চলেছিলো ৷ তাইতো সবার সামনে থাকা জুয়েল এর পাশ দিয়ে ঝর বেগে এক দৌড় দিয়ে তনময় প্রথম হয়েছিলো মারায়ং তং এর চূড়ায় ৷ চূড়ায় আমরা সবায় যখন পৌছাই তখন সূর্যের আলো আর নেই ৷ চাঁদনী এক রাত, ফারুক রান্না বান্নায় ব্যাস্ত ৷ আমরা ব্যাস্ত তাবু পিচ করাতে ৷ মারায়ং তং এর চুড়াতে ২ টি বৌদ্ধ মুর্তি স্বগর্ভে দাড়িয়ে আছে ৷ আছে দাড়িয়ে আরও দুই,তিনটি বটগাছ ও ৷
এবার একটু ভয় পাওয়ার পালা!!
সবসময় তো বটগাছ ই মানুষকে ভয় দেখিয়ে বেড়ায়, তবে এবার বোধহয় বটগাছ আমাদের দেখে ভয় পেয়ে গেছে ৷
বটগাছের ঢালে ঝুলছে ৩ টে হ্যামক ,তা তে ৩ টে মানুষের শরীর লিলুয়া বাতাসের সাথে প্রেমে মগ্ন ৷ আসল কাহিনী তে আসি ৷ গাছের সবার উপরের ঢালে একটা ভুত তন্ময়!! তার নিচে ক্রমান্বয়ে ইমন,মাসুদ,জুবায়ের,সুপ্রভ,তপদ্দার!!
মানে এক বটগাছ কে ভয় দেখাচ্ছে ৯ টা ভুত!!
প্লান চলছিলো রাতে বটগাছেই থেকে যাওয়ার,কিন্তু রাত যত গভীর হচ্ছিলো মশার কামড় ও মাত্রা পেরুচ্ছিলো ৷ তাই তো নির্বিকার হয়ে সেই তাবুতেই আমাদের ঠাই মেলে ৷
ভোর ৪ টায় ঘুম ভাংলো ৷ এদিক সেদিক হাটছি ৷ কোথায় আমাদের সেই সকাল,যার অপেক্ষায় আমরা ৷ হঠাতই চোখ পড়লো মেঘের সমুদ্রে ৷
আহ!! এ জীবন পদে পদে আমাকে স্বার্থক করছে ৷
পাহাড়ের গা জুড়ে শুধুই দুগ্ধসাদা মেঘের ভেলকী! প্রতিটি নজর যেনো মৌহান্বিত!
প্রতিটি নজর যেনো আচ্ছন্ন,বিভোর মেঘ ছোয়ার স্বপ্নে ৷
এ এক অপার্থিব সকাল,যার মৌহ শুধু নিজের উপস্থিতিই অনুভব করতে পারবে ৷ কোনো লেখা বা কোনো ছবি নয় ৷ মেঘের ভেলকী শেষ হয়ে সূর্য উঠলো ৷ সব কিছু ঘুছিয়ে এবার নিচে নামার পালা ৷ নিচে নামতে খুব বেশী একটা সময় আমাদের লাগেনি ৷ ৯ টা বাজেই আমরা পৌছাই আবাসিক এ ৷
কিছু ছবিঃ
১)পথচলা শুরু

২)সুবিশাল পথ

৩)উপর থেকে আবাসিক

৪)পথের ধারে বিশ্রাম

৫)বাশ সংগ্রহ করছে

৬)শান্তিতে বেকে গেছে

৭)মুরং পাড়া

৮)জুবায়ের একসাথে ২ ব্যাগ উঠায়া কাহিল

৯)বিশাল বটবৃক্ষ

১০)আদিম সভ্যতা

১১)মেঘের উপর সূর্যদয়

১২)আমি মেঘে ঝাপ দিবো

১৩)মেঘে ঢাকা মাচাং ঘর

১৪)একলা একটি গাছ

১৫)গৌতম বুদ্ধ

১৬)আমরা সবায়

১৭)মুরং ছেলেরা

১৮)তাবু

১৯)বট গাছে ভুত ঝুলে

পরবর্তী পর্বে লেখবো থানকোয়াইন ঝর্নায় পৌছানোর কাহিনি ৷

মন্তব্য ০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.