নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ঘোরাঘুরি আনলিমিটেড

ঘুড়তে থাকা চিল

আমি ঘুরতে খুব ভালোবাসি,মোটামোটি প্রকৃতির কোলে গিয়ে ঘুমানোর স্বপ্নটাকে জীবনের মুল প্রতিপাদ্য করে নিয়েছি ৷

ঘুড়তে থাকা চিল › বিস্তারিত পোস্টঃ

মেঘালয় ভ্রমনঃ পর্ব ১( ডাউকি,মাওলিনং,আমলারেম)

১০ ই জুলাই, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:২৮


জাফলং ছিলো আমার ঘুরতে জাওয়া প্রথম গন্তব্য!! সেই খান থেকেই অপর প্রান্তের দেশের প্রতি আমার লোভ!
আগেই বলে নেওয়া ভালো,আমি প্রকৃতি কে ভালোবাসি কোনো বিশেষ দেশ কে নয়। একদিন না একদিন মেঘালয় যাবোই সেই স্বপ্ন পুষে রেখেছিলাম বহু বছর!
অবশেষে বহু কাঙ্ক্ষিত সেই গন্তব্বের উদ্দেশে আমরা ৭ জন ঘুরতে থাকা চিল রউনা হই গত ২৮ জুন রাতের শ্যামলী বাসে করে সিলেট এর উদ্দেশে। সকালে পৌছাই সিলেট , সেখান থেকে বাসের ছাদে করে চলে যাই তামাবিল বর্ডার। মনের মধ্যে ভয় কাজ করছিলো কিছুটা। প্রথম তো তাই, সেখানে গিয়ে দেখা হলো আমার আইডল বিল্লাহ ভাইয়ের সাথে,উনার সাথে কথা বলেই মনের জড়তা কেটেছিল। অবশেষে সকল কাজ শেষ করে ১০ টা নাগাদ মেঘালয় এর প্রবেশ করি। সেখানকার ইমিগ্রেসন থেকে এন্ট্রি সিল লাগিয়ে আমরা অফিশিয়ালি প্রবেশ করি ভারতের মেঘালয় রাজ্যে!
ডাউকি তে সকালের নাস্তা টা করে একটা গাড়ি ঠিক করে ফেলি আজকের দিন টার জন্নে! মুহূর্তের মধ্যেই পৌঁছে যাই দূর থেকে দেখা সেই ব্রিজ।


ব্রিজ এর উপর থেকে দেখা জায় নিলাভ সবুজ রঙের ডাউকি নদির পানি আর দুরের নিজ দেশ জাফলং এ মানুষের মেলা!

মেঘালয় যেনো ঝর্নার মেলা নিয়ে বসে আছে প্রকৃতি প্রেমিদের জন্নে! কিছুদুর এগিয়ে জাওয়ার পরেই দেখা পাই উমক্রেম ঝর্নার! ভরা যৌবন এ সে!

পুরো মেঘালয় যেন ঘিরে আছে সিলেট কে, উমক্রেম ঝর্না পেরিয়ে কিছুদুর এগিয়েই দেখা পাই জাফলং এর খাসিয়া পল্লির!

আকা বাঁকা পাহাড়ি পথ ধরে এগুচ্ছি, মাঝে মাঝেই ঝলক দেখা যায় নিজের দেশের! হটাত বিশালাকার গর্জন! চলে এসেছি সেই পাংথুমাই ঝর্নার কাছে,যেটি বাংলাদেশের আরো একটি আফসোস! যাকে শুধু দূর থেকেই দেখতে হতো আজ তার সামনে দাড়িয়ে আছি! ভাবতেই ভালো লাগছিলো!
শত শত মানুষ হয়তো তাকিয়ে আছে পাংথুমাই ঝর্নার দিকে!! আর আমরা ঝর্নার উপর প্রান্ত বড়হিল থেকে আবেগী দৃষ্টিতে তাদের পানে চেয়ে আছি!!
পাংথুমাই থেকে আরো অনেক খানি দূরে মাওলিনং গ্রাম। আমরা আগেই চলে যাই নওহেত লিভিং রুট ব্রিজ এ, এটি সিংগেল ডেকার!

ডাবল ডেকার এ যাবো ভ্রমনের তৃতীয় দিন ৷
অসাধারন ভাবে গাছের শিকড় দিয়ে সৃষ্টি এইসব লিভিং রুট ব্রীজের! পুরো মেঘালয় জুড়ে অসংখ্য যায়গায় দেখা যায় এরকম ব্রীজ ৷ নিজেরাই তারা গাছের শিকড় বিভিন্ন ভাবে ঝুলিয়ে দেয় যেনো একটি সময় সৃষ্টি হয় এরকম জীবন্ত ব্রীজের ৷
নওহেত ব্রীজ এর নিচ দিয়েই প্রবাহিত হচ্ছিলো অসাধারণ একটি বিশালাকার ঝিরি ৷ অপরপ্রান্তেই বাংলাদেশের বিছানাকান্দি, হতে পারে এই ঝিরির ই একটি অংশ!!
সেখান থেকে আমরা চলে যাই মাওলিনং এ ৷ যাকে এশিয়ার সবচেয়ে পরিষ্কার গ্রাম বলে মানুষ চিনে ৷ গ্রামটিতে প্রবেশ করতে গাড়ি প্রতি ৫০ রুপী দিতে হয় যা তারা ব্যায় করে গ্রাম টি পরিষ্কার রাখার তাগিদে!

পুরো মেঘালয় রাজ্যই ছিলো পরিষ্কারাছন্নের প্রতীক ৷ প্রায় প্রতিটি ঘরের সামনেই ঝুলানো ছিলো একটি করে ময়লা ফালানোর ঝুরি, যা আমাদের বিমোহিত করেছে ৷
মাওলিনং গ্রামের মানুষেরা এখন পর্যটক দের জন্যে বিভিন্ন জিনিসের পসরা বসিয়ে রাখে বলেই হয়তো ব্যাস্ত এই গ্রাম টা পরিষ্কার হওয়া সত্তেও মনে ধরেনি আমাদের!
ঘুরা শেষে আমরা ফিরে আসি ডাউকী তে ৷ এবার যাবো আমলারেম এর দিকে ৷ কিছুদুর যাওয়ার পর এক নতুন সৌন্দর্য আমাদের চোখে ধরা দিলো ৷ এ যেনো চারিদিকে সবুজের বিছানো মখমলের কার্পেট ৷ তার মাঝে ছোট ছোট গম্বুজাকার টিলা গুলো কে অসাধারণ লাগছিলো! যতদূর চোখ যাচ্ছিলো এ যেনো সবুজে ঠাসা প্রকৃতি ৷ পূর্বে কখনো এরকম সৌন্দর্য চোখে পড়েনি আমাদের কারোরই! তাই সবার মন একটু বেশীই উৎফুল্ল ৷

বিকেলে আমরা পৌছাই ক্রাং সুরি ঝর্নার গেট এ ৷ সেখানে আমরা দুপুরের খাবার টা সেরে নেই ৷
সিড়ি ধরে নামতে লাগলাম,একটু পরই পেয়ে গেলাম প্রথম ভিউ পয়েন্ট ৷ এখান থেকে ঝর্নাটাকে অতি ক্ষুদ্রই মনে হয় ৷ ক্রাং সুরি ঝর্না টি নদীর উপর একটি বাধ দেওয়ায় সৃষ্টি যতটুকু জানি!

প্রায় ১০ মিনিট সিড়ি নামার পর পৌছই ঝর্নার নিচে ৷ দানবাকার এক ঝর্না,ঝর্নার নিচে স্বচ্চ নীল পানি যেনো ডাকছিলো আমাদের!!
লোভ না সামলাতে পেরে গোসল সেরে নিয়েছিলাম ৷ সাতার এর প্রতিযোগীতাও হয়ে গেছিলো এক দফা!!

সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছিলো, তাই ফিরে আসলাম উপরে ৷ গোধুলির আলোতে রওনা হয়েছি স্নোনেংপেডেং এর দিকে ৷ রাত ৮ টাই পৌছাই সেখানে ৷ থাকার জন্যে তাবু পিচ করে চলে যাই নদীতে ৷ আগামীকাল দিনের আলোতে সৌন্দর্য দেখার অপেক্ষায় ঘুমুতে যাই!
চলবে......

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ৮:০১

তাসলিমা কাজি বলেছেন: আমাকে নিয়ে যাইতেন

১১ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ১১:৪৭

ঘুড়তে থাকা চিল বলেছেন: পূর্বে পরিচয় থাকলে নিয়ে জাওয়া যেতো !!

২| ১০ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ৮:১২

সাদা মনের মানুষ বলেছেন: অসাধারণ, মেঘালয়ে যখন গিয়েছিলাম তখন এসব ঝর্ণাগুলোতে পানি ছিল অনেক কম, কোন এক আগষ্টে আবার যাওয়ার ইচ্ছা আছে।

১১ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ১১:৪৮

ঘুড়তে থাকা চিল বলেছেন: জুলাই,আগস্ট এ মেঘালয় পুরো যৌবন এ থাকে! তবে মাঝে মাঝে মেঘের জন্যে কিছু দেখা যায়না বলে মন ও খারাপ হয়!

৩| ১০ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ৯:২২

কামরুন নাহার বীথি বলেছেন:
মেঘালয় দেখার স্বপ্ন এখনও মনে পুষে রেখেছি!!
কবে যে পূরণ হবে!!

চমৎকার ছবিগুলো দেখে লোভ আরো বেড়ে গেল।
অনেক অনেক ধন্যবাদ ছবিগুলোর জন্য!!

১১ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ১১:৪৯

ঘুড়তে থাকা চিল বলেছেন: হাতে সময় আর টাকা নিয়ে বের হয়ে যান! সেপ্টেম্বর এ গেলে বেস্ট পাবেন সব কিছু!

৪| ১১ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ১০:২৫

কাজী আবু ইউসুফ (রিফাত) বলেছেন: @সাদা মনের মানুষ--- মেঘালয় যাবার আগে সম্ভব হলে আমাকে একটু নক করবেন...আপনার সাথে ঘুড়ার মজাটা হয়তো আলাদা হবে-- আপনার ট্রেন রুট ট্রাভেলের সবকটি লেখাই আমার পড়া হয়েছে।

৫| ১১ ই জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৫:১৬

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: মেঘালয় দেখলে মনের ভেতরে এক অপার্থিব ভাল লাগায় ভরে যায়।
আপনার লেখা সাথে ছবি অনেক ভাল লাগল । পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।

১১ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ১১:৫১

ঘুড়তে থাকা চিল বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.