নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্পেস-টাইম

there is no problem in the heavens and earth ;) problem lies in three places... beneath, between and within the hells.

গোলাম দস্তগীর লিসানি

বুলি বলে শুনতে পাই, রূপ কেমন তা দেখি নাই, ভীষম ঘোর দেখি।। পোষা পাখি চিনলাম না, এ লজ্জা তো যাবে না, উপায় কী করি, আমি উপায় কী করি।।

গোলাম দস্তগীর লিসানি › বিস্তারিত পোস্টঃ

শাহবাগে যাওয়াটা আসলেই ভুল হয়েছে।

১৮ ই জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০৮

চৌদিকে জিগির দেখে একটুখানি লগিন না করে পারলাম না। বিরতিতে যতি দিয়ে তাই ফিরে আসা। শুধু এই পোস্টটার জন্যই।



শাহবাগ রক্তে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল। শাহবাগ, পবিত্র, বিনিদ্র রজনীর পর ফোলা লাল চোখকে জুটিয়ে দিয়েছিল 'গাঁজাখোরের' অপবাদ। আহা, সেই প্রথম দিন, ভয়ে ভয়ে যাচ্ছি। সাথে ছোটভাই, ওর বন্ধু আর শুধু আমি। ভয়ে ভয়ে যাচ্ছি, জামাত না আবার বোমা মারে!



ঘুরে বেড়াই।



আমি বৈশাখি মেলায় যাই না, শ্রদ্ধা লাগে, টান লাগে না আর খুব একটা। বইমেলায় যাই না, এখন আর বইমেলা টানে না। ভিড়বাট্টায় কক্ষনো না। দশটা ন্যায্য দাবি নিয়ে বিশটা জনসমাবেশ হয়, যাই না। পোষায় না। জনারণ্যে ঘুরে বেড়ানোর শখ মরে হাড়-হাড্ডি বেরিয়ে গেছে বহু আগেই।

অথচ জুলজুলে চোখে চেয়ে থাকি রাজাকারের দিকে।



জুলুজুলু চোখে তাকিয়ে থাকি ভূমিজুড়ে বিছানো সস্তা পলিস্টারের সাদারঙা থানকাপড়ের দিকে। সেখানে বীভৎস রাজাকারের ছবি আঁকা। খালি ঘুরেই বেড়াই। মানুষগুলোর দিকে তাকাই। গর্বে বুক ফুল ওঠে। চোরাচোখে তাকাই ছেলেগুলোর দিকে- মেয়েগুলোর দিকে- বাংলাদেশ এখনো আছে। মরে নাই। মরে নাই।



তাকাতেই চিনতে পারি কয়েকজন ব্লগারকে। শরৎ এবং আরো অনেকে। কেমন যেন মজা লাগে, টান টান লাগে। পাশাপাশি দাঁড়িয়ে থাকি দশ মিনিট, বিশ মিনিট। নাম ধরে একজনের আরেকজনকে ডাকতে শুনি। খুব ভাল লাগে।



দেখি শক্ত চোয়াল, দেখি শান্ত প্রতিবাদ, মৌন চাপা ক্ষোভ।



ছোটভাইয়ের বন্ধুটা বলল, ভাই, চলেন, যাইগা। আমরা কি এদের কিছু মোমবাতি কিনে দিতে পারি না?

-অবশ্যই!



শ দুয়েক টাকার মোমবাতি কিনলাম। রাস্তার এখানে সেখানে জ্বালাই, যেখানটাই ম্রিয়মাণ সেখানেই জ্বালাই। তারপর, আরো ঘন্টাখানেক পর শ্রান্ত হয়ে চলে যাবার আগে বসে বসে যে ছেলেগুলো ন্যায়বিচারের স্বপ্ন দেখছে, তাদের হাতে তুলে দিয়ে গেলাম কিছু মোম।



ফিরে আসতে আসতে বললাম, খালি তিন দিন! তিনটা দিন যদি পার করতে পারে, বাংলাদেশ জ্বলবে! বাংলাদেশের মানুষের ভিতরে নতুন করে নিজের জ্বলন ফিরে আসবে।



এরপর তো গড়পড়তা প্রতিদিন গেছিই।

রাত কাটিয়েছি কতকত তার হিসাব নেই। আমার বাসা থেকেও খাবার গেছে শাহবাগে, সরকারি বিরানির খোঁজ তো পেলাম না। মানুষের টাকায় খাবার রান্না করতে দেখতাম।



এই যে একটা গণবিষ্ফোরণ, এই গণবিষ্ফোরণে দিনপাত, প্রাণপাত করা কিছু মানুষ আজকে উচ্চকিত কন্ঠে বলছে, শাহবাগে গিয়ে ঠিক করি নাই। এ ধারা কাজে আর যাব না।



শাহবাগের গণফিষ্ফোরণ ছিল শুদ্ধ অনুরণন। মন-মগজে ঝড়। কলঙ্কমুক্তির কামনা মাথার ভিতরে গেঁথে যাওয়া। মহান মুক্তিযুদ্ধের সাথে এর বিন্দুমাত্র তুলনা চলবে না, স্যাক্রিফাইসের দিক দিয়ে, কিন্তু লক্ষ্য ও অনুরণনের দিক দিয়ে ক্ষুদ্রতরভাবে তুলনা চলে।



এখন, মহান মুক্তিযুদ্ধের দুই বছর পর বঙ্গবন্ধুর চ্যালাচামুন্ডারা যখন স্বরাজ কায়েম করলেন, তখন একজন মুক্তিযোদ্ধা যদি বলতেন, শালার এই দেশটাকে স্বাধীন করে তো ভুল করলাম!



অথবা, জেনারেল জিয়ার ডিপ্লোম্যাটিক চাপের বশে রাজাকার পুনর্বাসনের সময়? অথবা, এরশাদের ক্ষমতালিপ্সার সময়? অথবা, বিএনপি-আওয়ামীলীগের একের পর এক দেশবিরোধী চুক্তি, দেশবিরোধী সিদ্ধান্ত, গণস্বাস্থ্যবিরোধী অনুমোদন, ক্রসফায়ার-গুম, অর্থনীতি অথর্ব-করা প্রক্রিয়া আর সবচে বড় কথা চুরি-চোট্টামির মহোৎসবে যদি কোন মুক্তিযোদ্ধা বলতেন, দেশটা স্বাধীন করে ভুল করলাম???



হ্যা, তারা অহরহই এ কথা বলেন। বলে বলে মুখে ফেনা তুলে ফেলেন। কিন্তু আমরা, কস্মিন কালেও বিশ্বাস করি না, যে, এই প্রায়-মহামানব পর্যায়ের ব্যক্তিটা মুক্তিযুদ্ধে মরতে মরতে বেঁচে গিয়ে সন্তান হয়ে নিজের মাতৃরূপী দেশের জন্ম দিয়ে ভুল করেননি। করতে পারেন না।



ব্যতিক্রম শুধু রাজাকার ও তার পারিবারিক-সামাজিক বাচ্চাবৃন্দ।



ঠিক তেমনি, লজ্জাপ্রাপ্ত মুখ লুকাতে অপারগ হে অবসরপ্রাপ্ত সাবেক 'শাহবাগী', আপনি যতই যিকির তুলুন না কেন, শাহবাগে গিয়ে ভুল করলাম, কস্মিন কালেও সে কথা আমরা বিশ্বাস করছি না।



হ্যা, বিষয়টা এমন হতে পারে, যে আপনি বুঝে যান নাই। হুজুগেই চলে গেছেন। হুজুগে মানুষের একটা সমস্যা হল, সে কোন কাজটা ঠিক করেছে এবং কোন কাজটা ভুল করেছে সেটা নির্ধারণ করতে পারে না। ফলশ্রুতিতে ভাল কাজ করেও পস্তায়। ভাবে, মানুষ যেহেতু বলছে চৌধুরীদের নতুন মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়ে আমি ভুল করেছি, আলবৎ আমি কোন একটা ভুল করেছি। সেটা আর একটু হলে ডিটেক্টও করে ফেলছি...



তবে, 'হুজুগে অবসরপ্রাপ্ত শাহবাগী', আপনাকে অ্যাশিওর করতে পারি, হুজুগে সারা জীবন এক লক্ষ একটা ভুল করে থাকলেও, আপনি এবার একটা ভাল সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, বন্ধুকে দেখে গিয়েছিলেন অথবা স্বত:প্রণোদিত হয়ে গিয়েছিলেন, কিন্তু আপনার যেহেতু ডিপার্টমেন্ট অভ মেজারমেন্টে কিছু গলতি আছে, আমাদের ডিপার্টমেন্ট অভ মেজারমেন্টের নিন্মোক্ত বিশ্লেষণ আপনার দৃষ্টিকে আকৃষ্ট করতে চাইছে-



আপনি নিচের এই এই প্রত্যাশা করে শাহবাগ গিয়ে থাকলে ভুল করেছেন-



১. আমি যেহেতু শাহবাগে যাচ্ছি, এতে আমীলীগের ফেভার করছি, তার পাল্টা ফেভারে আমিলিগ হ-গ্গ-ল রেযাকারের ফাঁসি দিয়ালাইবো।



২. আমি যেহেতু বিম্পি করি, কিন্তু সেইসাথে বাংলাদেশও করি, তাই শাহাবাগে গেছি, কিন্তু পরে বিতর্কিত হওয়ায় সাথে সাথে নিজের হাত ধুয়া নিসি। শাবাগ খারাপ।



৩. আপনি কি কোন ন্যাতা মেনে শাহবাগে গেছিলেন? যদি গিয়ে থাকেন...



৪. কোন রাজণৈতিক দলকে বিশ্বাস করে গেছিলেন? রাজণৈতিক দলকে বিশ্বাস করার মত ইমম্যাচুর্ড যদি সত্য সত্যই হয়ে থাকেন, তাহলে শাবাগ না গিয়ে গলির বিড়ির দোকানই আপনার উপযুক্ত ছিল।



৫. আপনি কি এই ব্শ্বিাসে শাবাগ গেছেন যে, সে কখনো বিতর্কিত হবে না?



৬. শাহবাগ কখনোই হাইজ্যাক হবে না? প্রথমে কমুনিস্টদের দ্বারা, পরবর্তীতে আলীগের দ্বারা এবং সবশেষে ইন্সটল্ড নেতৃত্বের দ্বারা?



৭. শাবাগে যারা হিরো থাকবে তাদের সোনার চামচে খাওয়ানো হবে, মহান হিরো নাম দেয়া হবে, কিন্তু নাস্তিক ফাস্তিক চরিত্রহীন লম্পট বলা হবে না?



৮. আপনি কি গার্লফ্রেন্ড/হবু গার্লফ্রেন্ড/সাবেক গার্লফ্রেন্ড বা বন্ধুর গার্লফ্রেন্ডকে (মেয়েদের ক্ষেত্রে ভাইস ভার্সা বয়ফ্রেন্ড শব্দ হবে) ইমপ্রেস করার জন্য, অথবা টিভিতে সাক্ষাৎকার দেয়ার জন্য অথবা বন্ধুদের সাথে ঘুরে দেখার জন্য, অথবা সবাই যায়, নিজেও একটু যাবার জন্য অথবা, 'যদ্যপি আমার গুরু এম্নি এম্নি যায়, তদ্যপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়' গেছিলেন?



আইচ্ছা,

দশ কথার এক কথা,

আপনি যিনি শাবাগ গিয়া এমনধারা ভুলটা করলেন, সে কি আমাদের মত অবোধ বালককে একটু শোনাতে পারেন, শাবাগ গিয়া এক্সাক্টলি কোন্ ভুলটা করছিলেন?



আরো একটা ভাইস ভার্সা কথা আছে, আপনে শাবাগ গিয়া ভুল করছেন এটা হান্ড্রেড পার্সেন্ট সহি। এহন পশ্ন হইল গিয়া, শাবাগ গেছেন কী কারণে?



আমি জ্বলনে গেছি। রাজাকারের বিচার হয় না বাংলাদেশে, ধর্ষিতা দেশের জন্য পথে গেছি।



আমার দেশমাতৃকার ধর্ষণের বিচারের জিম্মা খালেদা-হাসিনা-এরশাদের হাতে তুলে দিয়ে যাইনি। জ্বালা জুড়াতে গেছি। আপনি কি রাস্তায় দাঁড়িয়ে এই জিম্মা ওদের হাতে তুলে দিতে গেছিলেন?



তাহলে আপনি আবারো ভুল করবেন, ম্যান। জীবনভর করতেই থাকবেন।

তবে আশার কথা হল, এত ভুলের মধ্যেও একটা ঠিক কাজ ক্যাম্নে যেন করে ফেলেছিলেন। শাহবাগে চলে গিয়েছিলেন।

মন্তব্য ৫৮ টি রেটিং +১৯/-০

মন্তব্য (৫৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৫

দখিনা বাতাস বলেছেন: আমাদের অবস্হাও ভাই আপনার মত, বাসা থেকে খাবার নিয়ে গেছেন নাম হইছে সরকারি বিরিয়ানি। চাকরি করা সব বন্দুরা মিলে টাকা তুলে শুকনা খাবার দিলাম আমরা, নাম হইলো আওয়ামীলীগের। যে যতই বলুক, আওয়ামীলিগের চাল, নাস্তিক গাজাখোরের মিলন মেলা, যত ইচ্চা অপবাদ দিক- আমার মন থেকে রাজাকারের প্রতি ঘৃনা- কমবে না কোনদিন।

১৮ ই জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৯

গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: অপবাদ না দিলে আবার আন্দোলন হয় কী করে! জাগরণ হয় কী করে!

সরকারি বিরিয়ানি খায় কে! আগুন তখন জ্বলছে। হায়রে মানুষের আবেগ! হায়রে দেশপ্রেম... অকল্পনীয়।

তিন প্রজন্মের আত্মবিশ্বাস ধারণ করেছি এক শাহবাগ দিয়ে।

কলিমুদ্দি কইল, শাবাগ ভালা না, আমিও বিশ্বাস কর্লাম- এই শ্রেণীর ভেড়া নই।

২| ১৮ ই জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪০

উদাসী স্বপ্ন বলেছেন: তবে এইটা ঠিক বিএনপি জামাত এখন তারাই করবো যারা অশিক্ষিত পেডোফাইল মাদ্রাসার পোলাপান। ধইরা রাখেন নেক্সট ৫ বছর দেশের অবস্হা জঙ্গিদের আস্তানা হয়ে যাবে।

এরপর মানুষ কি করবে সেটাই দেখার বিষয়।


কিন্তু হাসিনা যা করছে, মানুষ এখন মুক্তিযুদ্ধ বা রাজাকার ইস্যু নিয়ে ভাবে কম। ভাবো এখন নিজের পেট আর কোনো মতে বেচে থাকা। কারন হাসিনা সবার পেটের ভাত আর বেচে থাকার অধিকার কেড়ে নিছে।

তারপর জামাতের স হবাসের এত গুন যে বিধবা হাসিনাও সেখান থেকে মুখ ঘুরাতে পারছে না যেমনটা পারেনি খালেদা জিয়া!

১৮ ই জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৪

গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: ভাই, আপনারে মন্তব্যে পাওয়াও একটা বড় ভাগ্যের ব্যাপার। আপনে তো জবানের শুশি করেন... মানে, কাঁচা মাছরে কাঁচা মাছ কই ক্যাম্নে, শুশি শুনতে ভাল লাগে, ঠিক যেন জাপানি কুইজিন...

বিশ্বাস করেন, আপনাদের মত দশ-বিশটা মানুষও পাই না। মুভ খুলতে মানুষ ভয় পায়, ভাবে, খোলার আগে কুলকুচি করে আসি, না জানি আমার মুখে কী আছে...

৩| ১৮ ই জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪২

ব্লগবাজ বলেছেন: থমথমে পরিবেশ! ইদানিং মন্তব্য করতেও লজ্জা পাই; লজ্জা পাই- ধর্ষিতা মায়ের কান্না দেখতে। লজ্জা পাই- নিজেকে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বলে পরিচয় দিতে। লজ্জা পাই- শাহবাগ নামক স্বপ্নের অপমৃত্যুর কথা বলতে। এইতো, আর মাত্র কয়েকটা মাস বাকি। তারপর, হায়নার দল বিজয় উল্লাস করবে। রাজনৈতিক মামলার নামে কেউ খালাশ পাবে। আর.... আমি চোখ বন্ধ করে আমার ধরিত্রি মাতার *র্ষনের স্বাদ উপভোগ করবো। তাই আমি আজ- আমার মৃত্যুদন্ডের দাবী তুলতে চাই...

১৮ ই জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৭

গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: ভাইরে, যে বাঙালি হুজুগে, যে বাঙালির বেশিরভাগ এই বিশ্বাস রাখে যে, ব্লগারমাত্রই নাস্তিক, আর নাস্তিকমাত্রই রাসূল দ. বিদ্বেষী... সেই বাঙালির উন্নতি হবে না কেন? বিলক্ষণ হবে, কিন্তু সেই উন্নতির জন্য যে ক্রম-সামাজিক পদক্ষেপ আছে, সেটা কেউ নিবে না।

ফলে, জিগির তোলার সাথে সাথে যেমন কোটি কোটি মানুষ শাহাবাগি হয়ে গেছিল,
তেম্নি জিগির তোলার সাথে সাথে এন্টি শাহাবাগি হতেও দেরি হয় না।

এরাই হচ্ছে সেই মাস-ভেড়া, দুইমাস পরপর যাদের 'লোম' (প্রকৃত শব্দটা বুঝে নেবেন) বিক্রি করে রাজনীতিবিদরা বেঁচে থাকে।

৪| ১৮ ই জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৫

ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল জয় বলেছেন: এতদিন কৈ ছিলেন লিসানী ভাই। এভাবে গায়েব হওয়া কি ঠিক ?

১৮ ই জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৮

গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: ভাই হিসাব মিলাতে পারি না। বাকির খাতা পূর্ণ থাকে। কিছু একটা করতে হবে। ছেলেগুলো বড় হচ্ছে। এইতো, আর কয়েক মাস পরেই ফিরব।

৫| ১৮ ই জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫৬

মুহাম্মদ আসাদুল্লাহ্ বলেছেন: অনেকদিন পরে সামুতে এত ভালো একটা পোস্ট পড়লাম। খুবই ভালো লাগলো। সোজা প্রিয়তে।

১৮ ই জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩৩

গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। আসলে হুট করে মনটা খারাপ লাগছিল, তাই হড়বড়িয়ে এত কথা বলে ফেললাম।

৬| ১৮ ই জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০৪

প্রািন্ত বলেছেন: অনেক দার্শনিক জড়ো হয়েছে দেখছি। রাজাকার আলবদরদের ফাঁসি চাই আমি। কিন্তু কোন রাজনৈতিক দলের পক্ষে চামচামি অবশ্যই কাম্য নয়। এই ব্লগে প্রথম পাতায় একটি পোষ্ট স্টিকি করা হয়েছে পড়ে দেখুন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থা। অথচ ভূয়া মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা মেধা না থাকলেও ঠিকই চাকরী বাগিয়ে নিচ্ছে। আবার ভূয়া মুক্তিযোদ্ধারা মারা গেলে পুলিশ অস্ত্র উচিয়ে তাদেরকে গার্ড অব অনার দিচ্ছে। বাঃ কি তামশা। বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকার ‍যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করেছে এই জন্য তাদের সাধুবাদ জানাই। কিন্তু দেশ শাসনের ক্ষেত্রে তারা শতভাগ ব্যর্থ। শুধুমাত্র রাজাকারদের বিচারই সরকারের কাজ নয়।

১৮ ই জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩৪

গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: আপনার প্রথম লাইন পড়ে একটু কেমন লাগলেও পরের প্রতিটা লাইনের সাথে কায়মনোবাক্যে একমত তো!

ধন্যবাদ ভাই।

৭| ১৮ ই জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৫

আলাপচারী বলেছেন: হিসাব মেলানো যায় না। বস্তুত: জীবনের সব হিসাব মেলে না।

শাহ্ বাগ আন্দোলনে কৌশলগত ভুল ছিল।

আমরা উত্থিত হয়েছিলাম অর্ন্ত:জাল থেকে।

কাজ শুরু করতে পারে সকলেই।

সফল জনই কাজ যথাস্থানে সমাপ্তি করতে পারে। কোথায় থামতে হবে এই কৌশল জানা ছিল না শাহ্ বাগী তরুণদের।

কাজ সমাপ্ত করে আবার মূলে অর্থাৎ অর্ন্ত:জালে ফিরে দীর্ঘমেয়াদী রসদ তৈরীতে মশগুল হওয়াই কর্তব্য ছিল।

যাই হোক, ভুল থেকে শিখতে হবে। এই অর্ন্ত:জাল থেকেই আবার গুছাতে হবে। আপনি শুরু করুন। আমরা আছি।

২২ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:৩৩

গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: ভাই,
আসলে হল কী, আমরা আজীবন যে স্বপ্ন লালন করে এসেছি, জন্ম থেকে ভেবে এসেছি, একটা দেশের জন্মের সময়টায় যারা বেঈমানী করে, সে দেশের মানুষের মনের ভিতরে তাদের বিরুদ্ধে অগ্রহণযোগ্যতার স্রোত বয়ে যায়।

এবং অবাক হয়ে দেখেছি, সেই অগ্রহণযোগ্যতার কথা পথে নেমে প্রায় কখনোই মানুষ বলে না।

এই একটা বিষয় নিয়ে গভীর হতাশা ছিল, বাংলাদেশের মানুষ নিজ রাষ্ট্রের জন্মপ্রক্রিয়ার সাথে এমন বেঈমানী কতদিন করবে...

তারপর, এই শাহবাগে অবাক হয়ে দেখেছিলাম, ধারণা ভুল। মানুষগুলো ভিতরে পুঁতে রেখেছিল যা, তা এবার বেরিয়ে এল!

আমরা ভুলিনি, এটাই সবচে বড় বিষয়!
এত বছরে যখন ভুলিনি, আর কখনো ভুলবও না... এই প্রমাণটা শাহবাগ আন্দোলন দিল! অন্তত এক জীবনের রসদ রয়ে গেল।

৮| ১৮ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১১:৩২

rafiq buet বলেছেন: লেখক বলেছেন: অপবাদ না দিলে আবার আন্দোলন হয় কী করে! জাগরণ হয় কী করে!




agree .............

২২ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:৩৪

গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: আন্তরিক শুভেচ্ছা জানবেন রফিক ভাই!

৯| ১৯ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১:২৩

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন: আপনার অসাধারন লেখাটা কয়েকবার পড়লাম!

শাহাবাগ ফুরিয়ে যায় নি, যেতে পারে না। মেজর কয়েকটি দাবি আদায় হওয়ার পর ও বিভিন্ন কারনে সাভাবিক ভাবেই সমাবেশ ছোট হচ্ছে।
এর মানে এইনা যে আমরা ভুলে যাব ফাঁসির দাবির কথা। আবার উল্টা পাল্টা রায় আসলে আরেকটা শাহবাগ তৈরী হতে ১ ঘন্টার বেশি লাগবে না।
Click This Link

২৩ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ১০:৫৯

গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: আপনার এই শেষ লাইনটা কিন্তু আলোড়ন তুলেছে ভাই। আশা জাগিয়েছে আমার মনেও, নিচে আরো কয়েকজনের কমেন্টে।

আসলে জাতি হিসাবে আমরা ভুলি না, শুধু চেপে রাখি এই হল সমস্যা।

১০| ১৯ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১:৫০

নগর সংগীত বলেছেন: সামুতে ঢুকলেই আজকাল শাহবাগ আর বিরানী শব্দ ২টা একসাথে দেখি, আপনার পোস্টটা দেখে ভালো লাগলো। টানা কয়েকদিন দুপুর থেকে সন্ধ্যা শাহবাগ দাড়িয়ে থাকলাম, ফ্রি বিরানীর "ব" ও দেখা যায়নি কোথাও। ক্লাসের বন্ধুরা কয়েকদিন পয়সা দিয়ে কিনে শুকনা খাবারের কার্টুন ঘাড়ে করে নিয়ে মানুষের মধ্যে দিলো, আর ইতর অমানুষ রাজাকার জামাতীরা আজে বাজে কথা ছড়ানো শুরু করলো। অবশ্য ওরা এটা না করলেই বরং অবাক হতাম।

"আমি জ্বলনে গেছি। রাজাকারের বিচার হয় না বাংলাদেশে, ধর্ষিতা দেশের জন্য পথে গেছি।" একমত, কাদের মোল্লার সেই "ভি" সাইনের কথা ভাবলে আর গোআজমের ভিআইপি কেবিনে চিকেন সুপের কথা ভাবলে মাথায় আগুণ ধরে যায়।

২৩ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:০১

গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: দেখেন শাহবাগ আন্দোলনের আরেকটা ফসল-

জামাতিরা যে কত্তবড় বেঈমান মিত্থুক বুকপিঠ ছাড়া পথভ্রষ্ট, তাদের প্রতি পল-অণুপলের কাজেই সেটা আরো স্পষ্ট হয়ে গেছিল ওই সময়টায়।

প্রতিটা সচেতন মানুষের চোখের সামনে ঝুলেছিল ওদের তখনকার তীব্র বীভৎস মিথ্যাচার।

১১| ১৯ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:৩৫

প্রকৌশলী রিয়াদ হাসান চৌধুরী বলেছেন: ভালো লাগলো।

২৩ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:০২

গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।

১২| ১৯ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:৪৯

শহীদুল্লাহ খান বলেছেন: rafiq buet বলেছেন: লেখক বলেছেন: অপবাদ না দিলে আবার আন্দোলন হয় কী করে! জাগরণ হয় কী করে!


হাসান কালবৈশাখী বলেছেন: আপনার অসাধারন লেখাটা কয়েকবার পড়লাম!

শাহাবাগ ফুরিয়ে যায় নি, যেতে পারে না। মেজর কয়েকটি দাবি আদায় হওয়ার পর ও বিভিন্ন কারনে সাভাবিক ভাবেই সমাবেশ ছোট হচ্ছে।
এর মানে এইনা যে আমরা ভুলে যাব ফাঁসির দাবির কথা। আবার উল্টা পাল্টা রায় আসলে আরেকটা শাহবাগ তৈরী হতে ১ ঘন্টার বেশি লাগবে না।

২৩ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:০২

গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: এই কথাটা আশা জাগিয়েছে কিন্তু!

ভাল থাকুন ভাই।

১৩| ২০ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১:১৭

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:

:( :( :(

২৩ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:০৩

গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: কান্ডারী ভাইয়ের প্রোপিক তো খেয়াল করি নাই! হেব্বি পছন্দ হয়েছে।

১৪| ২০ শে জুলাই, ২০১৩ ভোর ৪:৩৯

আমিনুর রহমান বলেছেন:


আমি কেন গেলাম আমার অপমানের প্রতিশোধ নিতে গিয়েছিলাম। ৫ ফেব্রুয়ারী যখন কাদের মোল্লার রায়ের কথা জানলাম তখন ক্ষোভ, অপমান আর লজ্জায় চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনি। অফিসে বসেই হাউমাউ করে কেদেছিলাম। শাহবাগের কিছু বিষয় আছে যা বিতর্ক সৃষ্টি করে তা সত্য কিন্তু আমি শাহবাগ যেয়ে ভুল করিনি।


লিসানি ভাই কেমন আছেন?

২৩ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:০৪

গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: আলহামদুলিল্লাহ ভাই! কৃতজ্ঞতা জানিয়ে শেষ করতে পারি না... আল্লাহ সবাইকে ভাল রাখুক, বিশেষ করে ঈদের পরে দেশটাকে।

১৫| ২০ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৫:২৯

ফারজুল আরেফিন বলেছেন: এখন আমি আপনার সাথে যেতে পারি - বান্দরবন, রাঙামাটি, সমুদ্রতীর.......

:)

২৩ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:০৬

গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: যাব যাব যাব যাব যাব!
সাগরের নীল জলে ডিগবাজি খাব!

(আমার আর একটু সময় লেগে যাবে যে! আশা করি খুব খুব ভাল আছেন আরেফিন ভাই... কাজে ব্যস্ত আপনি, তাই ব্লগে মিস করি।)

১৬| ২১ শে জুলাই, ২০১৩ ভোর ৪:১০

নস্টালজিক বলেছেন: শাহবাগ এ যেয়ে আমি কোনো ভুল করিনাই!


শুভেচ্ছা, লিসানী!



ভালো থাকুন নিরন্তর!

২৩ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:০৭

গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: শুভেচ্ছা আপনাকেও, কবি!
ভাল থাকুন অষ্টপ্রহর। প্রশান্তিতে ডুবে থাকুন চারপাশটা নিয়ে।

না, আমরা শাহবাগে যেয়ে কোন ভুল করি নাই।

১৭| ২১ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ৯:৫৮

মোটা মানুষ বলেছেন: +

২৩ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:০৮

গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। প্রোপিকটা ভাবায়। বিশেষ করে জেনেটিক ড্যামেজের কারণে মিউটেশন (ক্যান্সার) নিয়ে।

১৮| ২২ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:৫৯

এ্যাডভোকেট ইয়াসিন বলেছেন: হাসান কালবৈশাখী বলেছেন: আপনার অসাধারন লেখাটা কয়েকবার পড়লাম!

শাহাবাগ ফুরিয়ে যায় নি, যেতে পারে না। মেজর কয়েকটি দাবি আদায় হওয়ার পর ও বিভিন্ন কারনে সাভাবিক ভাবেই সমাবেশ ছোট হচ্ছে।
এর মানে এইনা যে আমরা ভুলে যাব ফাঁসির দাবির কথা। আবার উল্টা পাল্টা রায় আসলে আরেকটা শাহবাগ তৈরী হতে ১ ঘন্টার বেশি লাগবে না।

২৩ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:১০

গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই একমতে পাবার জন্য।
খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়ক পোস্টগুলো কোন একদিন শুরু করব, সেদিন আপনি আইন নিয়ে পাশাপাশি থাকবেন, এই স্বপ্ন কিন্তু এখনো ফিকে হয়ে যায়নি।

১৯| ২৪ শে জুলাই, ২০১৩ ভোর ৬:৪৫

মেলবোর্ন বলেছেন: একটা মেইল দিয়েন [email protected] আপনারে অনেক দিন না পেয়ে খুজতে ছিলাম ফেবুতে তো এডাই নাই ক্যমনে কি?

২৭ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৪:৫৬

গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: ভাই আসলেই ক্যামনে কী!!! দ্রুত অ্যাডানোর আঞ্জাম করছি... মাত্র কয়েকজন মানুষের জন্য ব্লগটাকে আপন লাগে, তাদের সাথে যোগাযোগ না থাকলে হয় কী করে!

২০| ২৪ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১২:৫২

হাসান নাঈম বলেছেন: লিসানী ভাই, অনেক দিন পরে আপনাকে দেখলাম।

আপনি যখন শাহবাগ এবং যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে একের পর এক জ্বালাময়ী পোস্ট দিচ্ছিলেন তখন সম্ভবত এই অধম তার একটু বিরোধীতা করেছিল। একটা প্রশ্ন করেছিলমা - যে যুদ্ধাপরাধী বিচার নিয়ে এত আয়োজন সেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে 'যুদ্ধাপরাধ' এর পরিবর্তে কেন 'মানবতা বিরোধী' অভিযোগ আনতে হল? যার বা যাদের বিরুদ্ধে নিজেদের তৈরী করা ও নিয়ন্ত্রিত ট্রাইবুনালে 'যুদ্ধাপরাধ' এর অভিযোগই আনা সম্ভব হয়নি তারা কিভাবে যুদ্ধাপরাধী হবেন?

তার পর থেকেই দেখলাম আপনি এই প্রসঙ্গে একেবারে নীরব হয়ে গেলেন। এই নিরবতার নেপথ্য কারণ এই অধমের 'রাজা তুমি ন্যাংটো কেন?' টাইপের উল্লেখিত প্রশ্নটি কি না ঠিক জানি না। তবে আপনি যে শাহবাগ নিয়ে এই আবেগময় লেখাটি পোস্ট করলেন সে ব্যাপারেও এই অধমের কিছু ব্যাতিক্রমী কথা আছে।

কথা হচ্ছে শাহবাগের মুল বক্তব্য কী ছিল? আপনি যতই ন্যায় বিচার চাওয়ারমত অতি উচ্চ চেতনার কথা বলুন না কেন - মানুষ দেখেছে আপনাদের প্রধান দাবি হচ্ছে 'কাদের মোল্লার ফাঁসি চাই' - কেন? কারণ সে রাজাকার যুদ্ধাপরাধী মানবতাবিরোধী অপরাধী - ইত্যাদি ইত্যাদি। যদি তাই হয়, আপনারা যদি তার এইসব অপরাধের ব্যাপারে এতটাই নিশ্চিত হন - তাহলে আর বিচারের প্রয়োজন থাকে কি? বিচার বলতে স্বাধারন ভাবে বুঝায় -'কোন ব্যাক্তি কোন অপরাধ করেছে কী না' সেটা যুক্তি, তথ্য, স্বাক্ষির মাধ্যমে যাচাই করে দেখা। যখনই কোন বিচারের আয়োজন হবে সেখানে অবশ্বই দুটি সম্ভাবনাই থাকতে হবে - অভিযুক্ত নিরপরাধ অথবা অপরাধী। কিন্তু আপনাদের মনোভাব ছিল ( বা এখনও আছে ) যেকোন উপায়ে অভিযুক্তদের ফাঁসি দেয়া। যা ন্যায় বিচারতো নয়ই বরং চরম অন্যায় দাবি ছাড়া আর কিছুই নয়।

তাহলে প্রশ্ন হতে পারে শাহবাগে এত মানুষ কেন আসল? সবাই কি অবিবেচক? আমি এটা নিয়ে ভেবেছি এবং আমার মনে হয়েছে শাহবাগের প্রথম বিবেচনা বোধের সাথে কিছুটা হলেও ন্যায় বিচারের সংযোগ ছিল। কাদের মোল্লার রায় প্রকাশিত হওয়ার পর প্রথম যে বিষয়গুলি সামনে এসেছিল তা হচ্ছে
১. কাদের মোল্লা কি তাহলে যুদ্ধাপরাধী নয়? তাহলে এতদিন তার বিরুদ্ধে যা কিছু প্রচার করা হল তার সবই কি মিথ্যা?
২. কাদের মোল্লা যদি অপরাধী হয় তাহলে কি বর্তমান সরকার নিয়োজিত প্রসিকিউসন তার অপরাধ প্রমানে ব্যার্থ হয়েছে? সবচেয়ে বড় প্রশ্ন ছিল
৩. তাহলে কি আওয়ামীলীগ ও জামাতের মধ্যে কোন সমঝোতা(৮৬ বা ৯৬ এরমত) হয়েছে?

এই তিনটি বিষয়ের মধ্যে প্রথমটি মেনে নেয়া মানে এতদিন যাদেরকে রাজনৈতিক ও আদর্শিক গুরু হিসেবে শ্রদ্ধা করা হয়েছে তাদের সবাইকে মিথ্যাবাদী হিসেবে মেনে নেয়া( আসলেই কি তারা খুব সত্যবাদী?)। সেই সাথে নিজেদের এতদিনের এত প্রচারনাকেও ভুল বলে স্বীকার করা। এটা সম্ভব ছিল না ( খুব অল্প সংখ্যক মহামনব ছাড়া কেউ নিজের ভুল মানতে চায় না)। ২ এবং ৩ নম্বর বিবেচনায় মানুষের ক্ষোভ ছিল সরকারের প্রতি। এবং প্রাথমিক ভাবে মানুষ ছুটে গিয়েছিল সরকারের ব্যার্থতা বা দুরভিসন্ধির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে। যদি এই আন্দোলন সেখানে স্থির থাকতে পারত, যদি আদালত বা ট্রাইবুনালের বিরুদ্ধে কোন কথা বলা না হত, যদি 'যে কোন উপায়ে অভিযুক্তদের ফাঁসি দিতেই হবে' এইরকম গাজোড়ালী অবস্থান নেয়া না হত এবং একই সাথে যদি সরকারের অন্যায় অপকর্মের বিরুদ্ধে (অন্তত আওয়ামী লীগের মধ্যে থাকা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে) প্রতিবাদ করা হত - তাহলে এই আন্দোলন সহজেই মানুষের আস্থা অর্জন করতে পারত। হয়ত প্রাথমিক ভাবে পুলিশের পিটুনি খেতে হত - কিন্তু নিরবে হারিয়ে যাওয়ারমত করুণ পরিনতি কখনই হত না।

আর একটা কথা বলা প্রয়োজন মনে করছি - একটা প্রবাদ আছে 'পোপের চেয়ে বড় খ্রিস্টান'। যখন কোন ব্যাক্তি নিজের খ্রিস্টানত্ব দেখাতে গিয়ে পোপের চেয়েও বেশীকিছু দাবি করে বসে তখন নিশ্চিত ভাবেই বুঝা যায় তার মধ্যে কিছু সমস্যা আছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে কার অবস্থান কী ছিল তা বঙ্গবন্ধু এবং তার নেতৃত্বাধীন '৭২ এর সরকারের চেয়ে বিশী কার পক্ষে জানা কি সম্ভব? সেই বঙ্গবন্ধু ও '৭২ এর সরকার যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আনলেন না, লক্ষাধিক ব্যাক্তিকে দালাল আইনে অভিযুক্ত করা হলেও যাদের নাম সেই তালিকায় ছিল না - আজকে চল্লিশ বছর পর যখন তাদেরকে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে প্রচার করা হয় এবং এত এত প্রচারের পর ট্রাইবুনালে অভিযোগ গঠন করতে গিয়ে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগই আনা যায় না - তখন স্বভাবতই সেই প্রশ্নটা এসে যায় - 'আমরা কি পোপের চেয়েও বড় খ্রিস্টান হতে চাইছি?' এই প্রেক্ষাপটে 'আমরা কি বঙ্গবন্ধু ও '৭২ এর সরকারের চেয়েও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে বেশী জানি বা তাদের চেয়েও বড় দেশ প্রেমিক বা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কি তাদের চেয়েও বেশী?'

আসলেই আমরা বড় বিভ্রান্তির মধ্যে আছি - আর ন্যায়ভ্রস্ট বিভ্রান্ত ব্যাক্তিদের দ্বারা কোন গঠনমুলক আন্দোলন গড়ে তোলা সম্ভব নয়। স্বাভাবিক ন্যায় নীতিবোধ থেকে যদি প্রথমে '৭২ এর সরকারের তালিকাভুক্ত ১৯৫ জন যুদ্ধাপরাধীর বিচারের উদ্যোগ নেয়া হত - তাহলে পুরোজাতি (এমনকি জামাত-শিবিরও!!) ঐক্যবদ্ধভাবে তার প্রতি নিরঙ্কুশ সমর্থন জানাত। যখনই মুল অপরাধীদের বাদ দিয়ে সহযোগী/সমর্থকদের বিচারের আয়োজন করা হয়েছে তখনই বিষয়টা ভিন্ন খাতে চলে গেছে। যখনই 'যুদ্ধাপরাধ' এর স্থানে 'মানবতাবিরোধী অপরাধ' এর অভিযোগ তোলা হয়েছে তখনই জামাত নেতা মুজাহিদের সেই উক্তি 'বাংলাদেশে কোন যুদ্ধাপরাধী নাই' প্রমানিত হয়ে গেছে।

ইতিহাসে এটাই লেখা থাকবে - 'যুদ্ধাপরাধ নিয়ে বহু প্রচার প্রচারনা ও আন্দোলনের পর যাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছিল তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোই দায়ের করা সম্ভব হয় নাই'। ইতিহাসে এটাও লেখা থাকবে - 'একদল বিভ্রান্ত তরুনের আন্দোলনের প্রভাবে যে সাইদিকে ট্রাইবুনাল থেকে ফাঁসি দেয়া হয়েছিল সেই সাইদির মুক্তির দাবিতে এই দেশেরই হাজার হাজার তরুন রাস্তায় প্রতিবাদ করেছিল এমনকি অনেকে জীবন উৎসর্গও করেছিল, যেখানে বঙ্গবন্ধুর নৃসংশ খুনের প্রতিবাদ করে কেউ রাস্তায় নামেনি'। এই সবই এখন ইতিহাস যা আপনি আমি বদলাতে পারব না। আমরা কেবল এ'থেকে শিক্ষা নেয়ার চেস্টা করতে পারি।

অনেক বড় কমেন্ট হয়েগেল। আশা করি একটু সময় নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করলে বিষয়টা অনুধাবন করতে পারবেন। আর কিছু না হোক অন্তত এটা বুঝতে পারবেন যে আপনার ন্যায় বিচার প্রত্যাশার চেতনা ব্যার্থ হয়নি ব্যার্থ হয়েছে তার প্রয়োগ পদ্ধতি। সঠিক পদ্ধতিতে প্রয়োগের চেস্টা করলে হয়ত তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হলেও হতে পারে।

২৭ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৫:১৪

গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: আসসালামু আলাইকুম নাঈম ভাই! উত্তপ্ত সময়, সাঙ্ঘাতিক উত্তপ্ত সময়... সাধারণ কথারও অসাধারণ অর্থ বের করার চেষ্টা, কথায় কথায় সংঘর্ষ...
এখন অনেক শান্ত লাগছে নিজেকে এবং পরিবেশ- আলহামদ।

রাজাকারির-আলবদরির-আলশামসির-শান্তি কমিটির নেতৃত্ব, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতা বিরোধী অপরাধ

এই তিনটা শব্দকে যে আমরা বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ একই অর্থে দেখি! কে কোন্ অভিযোগ এনেছে কেন কীভাবে এনেছে এগুলোর প্রভাব আমাদের উপর অতি সামান্য...

আবদুল কাদের মোল্লার ফেভারিট ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের আঙুল কাটা,

নিজামীর টিমের ফেভারিট ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের ও মেধাবী সন্তান, যাদেরকে বুদ্ধিজীবি বলা হয়, তাঁদের চোখ উপড়ানো,

আর গোলাম আযম তো এমনি ভয়ানক জ্ঞানপাপী যে, সে একাত্তরের এত নারকীয় ধ্বংসযজ্ঞের পরও এক যুগ যাবৎ সারা পৃথিবীতে 'বাংলাদেশ না-মঞ্জুর' আন্দোলন করেছে।

এগুলো আমি জানি, আপনি জানেন, জ্ঞান সম্পণ্ন শিবির-জামাতের প্রতিটা সমর্থক-কর্মী পর্যন্ত জানে।

জামাতের অনেক বড়স্তরে কানেকশনওয়ালা বেশ কয়েকজন মানুষের সাথে আমার কথা হয়েছে, তাদের জবানি শুনুন না,

'আচ্ছা, জামাত একাত্তরে রাজাকারি করেছিল, এটা ডেফিনিটলি ভুল সিদ্ধান্ত। এ ছাড়া জামাতের আর কোনও খারাপ দিক দেখাতে পারবেন?'- এই কথাটা আমাকে পার্সোনালি বলেছিল মিডিয়ার সাথে জড়িত এক ব্যক্তি, যে আবার জামাতের সিনিয়র একজন নেতার ছেলে।

'জামাতের সব কাজ কি ভাল নাকি? আর একাত্তরে ঠিক কাজ করেছিল নাকি? আর নেতা টাইপের সবাই কি ঠিক কাজ করেছিল? তার পরও তুমি পড়ে দেখতে পার আসলে কী বলতে চেয়েছিল মাওলানা (!) মওদুদী। ইসলাম প্রতিষ্ঠা...' -এই কথাটা এমন একজন বলেছে যার বাসায় দাওয়াত কবুল করেও নিরাপত্তার (পারিপার্শ্বিক) কথা ভেবে আসতে পারেনি সাঈদী।

'তখন জামাত যা করছিল দেশপ্রেমেই করছিল। তোমরা এখন সেটা বুঝতে পারবা না।' -বলেছিল এক ডেন্টিস্ট, যার মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট আছে।

আসলে বিষয়টা আপনি আমি ভালমতই জানি, তাই না? সারা বাংলাদেশের মানুষ জানে। সব্বাই জানে। তাও বলতে হয়। এখানেই সেলুকাসের আগমন।

২৭ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৫:২৫

গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: কেন ওই লোকগুলোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ 'ফাসি দিতেই হবে' স্ট্যান্ডে থাকে তা উপরের কমেন্টে গেল। এবার পরের পার্ট।

আসলে 'প্রো-জামাত-প্রোপাগান্ডা'য় একটা এলিমেন্ট হল, এন্টি-জামাতের নেতৃত্ব ভাল কিনা।

আমাদের কাছে কিন্তু সেটা কোন বিষয়ই না।
আমরা খুব ভাল করেই জানি, এন্টি-জামাত নেতৃত্ব বলতে যাদের বোঝায়, তাঁরা বহুবার প্রমাণ করেছেন যে তাঁরা ভাল না।
তাঁদের ভাল হওয়া বা খারাপ হওয়ার উপরে, সন্ধি করার উপরে জামাতের অপকর্মের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের মনোভাব তিলমাত্র পরিবর্তন হবে না। কারণ, আলটিমেটলি ওই অপকর্মের দায় জামাতের ঘাড়েই- বিএনপি আওয়ামীলীগের ঘাড়ে নয়।

(বাহাত্তর-তিহাত্তর-চুয়াত্তরে টেকনিক্যালি ছেড়ে দেয়া হয়েছিল, আরব আর পাকিস্তানি বলয়ের সাথে বৈদেশিক সম্পর্ক তৈরির জন্য... আমরা কিন্তু তা ভালমতই জানি। কেউ মুখে বলে, কেউ বলতে লজ্জা পায়। সেইম ফ্যাক্ট হল জেনারেল জিয়ার বিষয়ে। তিনি না পেরে সেই ঘটনা ঘটিয়েছিলেন, যাকে বলা হয় রাজাকার পূনর্বাসন। তিনি যে সেটা ইচ্ছা করে শখ করে করেননি তা ১৯৭৯-১৯৮১ পর্যন্ত এমনকি ওপেনও বলেছেন। বলেছেন, বহির্বিশ্বের কূটনৈতিক চাপে যারা ফিরে এসেছে বাংলাদেশের মানুষ 'তাদের' ভালমতই চেনে এবং প্রয়োজনে ইত্যাদি ইত্যাদি।

এখন এইসব বিষয় আওয়ামীলীগ ও বিএনপি পরস্পরকে ঘায়েল করার কাজে ব্যবহার করে।

আর এই দলেরা যে জামাতের সাথে এক টেবিলে বসতে জানে, এটাও বাংলাদেশের মানুষ খুব ভালমত জানে, তাদের বলতে হয় না।)

তো বিষয়টা হল, অ-জামাতি বা এন্টি-জামাতিরা মানুষ কেমন, সেটা শুধু রাজনীতিকরা বিবেচনা করবে। আমরা সাধারণ মানুষ রাজনীতিক নই, তাই বিবেচনাতেও রাখি না। আমরা ধরেই রেখেছি, রাজনীতিকরা বহুত ভাল, তারচে বহুত বহুত ভাল জামাত।

২৭ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৫:২৭

গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: যখনই 'যুদ্ধাপরাধ' এর স্থানে 'মানবতাবিরোধী অপরাধ' এর অভিযোগ তোলা হয়েছে তখনই জামাত নেতা মুজাহিদের সেই উক্তি 'বাংলাদেশে কোন যুদ্ধাপরাধী নাই' প্রমানিত হয়ে গেছে।

মনে হল কথাটা মুজাহিদের মুখে শুনলাম।

কোন কিছুই ব্যর্থ হয়নি।
সব জমে গেছে পরবর্তী প্রজন্ম পর্যন্ত।

২১| ২৫ শে জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫১

প্রকৌশলী রিয়াদ হাসান চৌধুরী বলেছেন: @হাসান নাঈম


কিছু বিষয়ে আপনার যুক্তি গ্রহনযোগ্য মনে হলেও আপনার মন্তব্যের সাথে পুরোপুরি একমত হতে পারছি না।

২৭ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৫:২৮

গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: বিষয়টা ঘুরেফিরে স্পষ্ট হয়ে গেছে ভাই। সো স্যাড।

২২| ২৭ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৫:০৪

তারিন রহমান বলেছেন: + + +

২৭ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৫:২৮

গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: আন্তরিক ধন্যবাদ রইল। ভাল থাকুন।

২৩| ২৭ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৫:৩৯

কাফের বলেছেন: যারা এখন বলতাছে তারা শাহবাগ যাইয়া তারা ভুল করছে!
তারা আসলে কোনো দাবীর সমর্থনে যায় নাই
তারা হইলো হাল বুঝিয়া চাল এবং ভাব বুঝিয়া কোপ মারইন্না পাবলিক।

পরিস্থিতি পালটাইছে তো! :|

২৭ শে জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০৪

গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: পরিস্থিতি যে স্থায়ী নয়, এটুকু বোঝার মত সামর্থ্য ডেভলপ তো অবশ্যই করবে, তাই না!

ওইযে, সেলুকাস আজকাল প্রিয় ক্যারেক্টার হয়ে গেল ভাইডি!

২৪| ২৮ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:০৩

হাসান নাঈম বলেছেন: ধন্যবাদ বিষদ উত্তরের জন্য।

আমি আবারও বলতে বাধ্য হচ্ছি আমি সম্ভবত আমার বক্তব্য পুরোপুরি পরিষ্কার করতে পারিনি। আরো সহজ করে বলি - দেখুন এবার বুঝা যায় কী না।

প্রশ্ন হচ্ছে - 'বিচার' নিয়ে। জামাত ভাল কি মন্দ, এন্টি-জামাত ভাল না মন্দ, বা জামাতের রাজনীতি বাংলাদেশের জন্য কল্যানকর না ক্ষতিকর - সেগুলি এখানে বিবেচনার বিষয় নয়। আমরা একটা বিচার চাইছি এবং বাংলাদেশ রাস্ট্র তার নাগরিকদের বিচার করছে - এখানে অবশ্বই এটা 'বিচার' হতে হবে - কিছুতেই জোর করে, আন্দোলন করে কাউকে শায়েস্তা করা যাবে না। যদি করা হয় তাহলে সেটা 'বিচার' না হয়ে হবে 'প্রতিহিংসা', 'প্রতিশোধ' - এবং তার পরিনতি কখনই শুভ হতে পারে না। দেশের স্বাধারণ মানুষের বিবেক বিষয়টি এ'ভাবেই দেখে - যদিও দু:খের বিষয় হচ্ছে অতি আবেগী অনেকেই সেটা বুঝতে চায় না।

কথা হচ্ছে - যদি আপনি আমি বা আর কেউ এ'ব্যাপারে নিশ্চিত হই যে জামাত বা অন্যকোন সংগঠন বা কোন ব্যাক্তি দেশ ও জাতির জন্য ভয়ংকর বিপজ্জনক - এবং তাকে বা সেই দলকে যেকোন উপায়ে হত্যা করাই একমাত্র সমাধান ( যেমনটা আপনারা দাবি করেছেন শাহবাগে ) - তাহলে তার কী করা উচিত? চিন্তা করুন - ৭১ সালে আমাদের আগের প্রজন্ম নিশ্চিত ভাবেই বিশ্বাস করেছিলেন যে পাকিস্তানী সেনাবাহীনি ও তার এ'দেশীয় সহযোগীরা এই দেশের মানুষের জন্য ঐ রকম বিপজ্জনক - তখন তারা কি সেই রাস্ট্রের কাছে 'বিচার' দাবি করেছিল? না কি নিজেদের জীবন বাজি রেখে ঐ শক্তির বিরুদ্ধে 'যুদ্ধে' ঝাপিয়ে পরেছিল? আজকে আফগানিস্তানে তালেবানরা নিশ্চিত ভাবে বিশ্বাস করে আমেরিকান সৈন্যরা তাদের দেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর - তারা কি কারজাই সরকারের আদালতে মামলা করেছে, না কি নিজেদের জীবন উৎসর্গ করে আমেরিকান সন্যদের হত্যা করছে??

শাহবাগে আপনারা মুলত 'যুদ্ধ' এবং 'বিচার' কে গুলিয়ে ফেলেছেন। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে যুদ্ধের নিয়ম হল প্রতিপক্ষকে যেকোন উপায়ে হত্যা করা আর বিচারের মুলনীতি হচ্ছে 'বহু অপরাধী মুক্তি পেয়ে যাক কিন্তু কোন নিরপরাধ যাতে সাস্তি না পায়'। শাহবাগের বক্তব্য অনুসারে যদি আপনারা ঐসব জামাত নেতাদের ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েই থাকেন যে তারা আমাদের দেশ ও জাতির জন্য ঐ রকম বিপজ্জনক এবং তাদেরকে যেকোন উপায়ে হত্যা করা ছাড়া এই জাতির মুক্তির কোন পথ নাই - তাহলেতো আপনাদের 'বিচার' চাওয়া উচিত হয় নাই, আপনাদের বরং 'যুদ্ধ' ঘোষনা করে দেশকে শত্রুমুক্ত করার অভিযানে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করে ঝাপিয়ে পরার কথা ছিল? দেশ ও জাতি আপনাদের আত্মত্যাগকে শহীদ হিসেবে শ্রদ্ধা করত - তাই না? সেটা না করে আপনারা যেভাবে বিচারের নামে অবিচার, আদালত অবমাননা এবং আন্দোলনের জোরে ফাঁসিরমত চুড়ান্ত রায় আদায়ের চেস্টা করেছেন কোন বিবেকবান মানুষের পক্ষে সেটা সমর্থন করা সম্ভব ছিল না।

আচ্ছা এই বিচারের আর একটা দিক নিয়ে একটু আলোচনা করা যাক। এই বিচারের মুল বৈশিস্ট কি আপনারা লক্ষ করেছেন? এখানে অপরাধ প্রমানের জন্য নির্ভর করা হচ্ছে অতি অল্প সংখ্যক সাক্ষির উপর যাদের প্রায় সবাই শোনা সাক্ষি, কেউ প্রত্যক্ষদর্শী নয়। এর সাথে আছে পত্র পত্রিকার প্রতিবেদন ও বিভিন্ন বই এর লেখা। এই বিচারে প্রতিপক্ষ বা আসামী পক্ষের সাক্ষির সংখ্যা নির্দিস্ট করে দেয়া হচ্ছে এবং তা সরকার পক্ষের চেয়ে অনেক কম - অর্থাৎ দুই পক্ষকে সমান সুযোগ দেয়া হচ্ছে না। আদালত সকার পক্ষের শোনা সাক্ষির বক্তব্য গ্রহন করলেও আসামী পক্ষের প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষিও উপেক্ষা করছে। অভিযুক্ত ব্যাক্তি এবং আদালতে উপস্থাপিত ব্যাক্তি একই কী না তার পক্ষে কোন ডকুমেন্ট উপস্থাপন করা হচ্ছে না। সাধারণ ভাবে অভিযোগ অনুযায়ী ধরে নেয়া হচ্ছে যে উপস্থাপিত ব্যাক্তিই সেই অভিযুক্ত ব্যাক্তি। এই ট্রাইবুনালের রায় ব্যাক্তির অপরাধের ভিত্তিতে হয় না, বরং রাস্তার আন্দোলনের প্রভাবে হয় - যেমন কাদের মোল্লার রায়ের সময় আন্দোলন ছিল না তাই জেল হয়েছে, সাইদির বিরুদ্ধে অভিযোগ অনেক কম গুরুতর হলেও রাস্তায় আন্দোলন থাকায় তার ফাঁসি হয়েছে।

এখন চিন্তা করুন - আপনারা আবেগতাড়িত হয়ে, নিজেদের জ্বালা জুড়াতে রাজাকার, যুদ্ধাপরাধী, মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের জন্য এই যে পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন এর মাধ্যমে যদি একজনকেও ফাঁসি দেয়া হয় তাহলে এটা কি একটা প্রাতিষ্ঠানিক রুপ পেয়ে যাবে না? আদলতের প্রতিটি রায় কিন্তু রেফারেন্স হিসেব ব্যাবহৃত হয়। তার পর এই পদ্ধতি যদি অন্য সবার বিরুদ্ধে ব্যাবহার করা শুরু হয় - তখন কী হবে? বাংলাদেশে এমন কোন রাজনীতিবিদ, ব্যাবসায়ী আছে যার বিরুদ্ধে ঐ রকম কয়েকজন শোনা সাক্ষি, কিছু পত্রপত্রিকার কাটিং সংগ্রহ করা যাবে না? আর শাহবাগে যত মানুষ জড় হয়েছিল তার চেয়ে বেশী মানুষতো জামাত-শিবিরও জড় করতে পারে। তাহলে কি তাদের আন্দোলনের দ্বারাও আমাদের রাস্ট্রীয় আদালতের রায় প্রভাবিত হবে?

যদি তর্কের খাতিরে ধরেও নেই যে বর্তমান সরকার তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার চেস্টা করছে না(?) বরং সত্যি সত্যি অপরাধীর বিচার করছে - তাহলেওতো এটা নিশ্চিত যে তারা মুলত একটা মারাত্মক অস্র তৈরী করছে। এই অস্র যদি কখনও অপব্যাবহার শুরু হয় তাহলে এই দেশে 'বিচার ব্যাবস্থা' বলতে আর কিছুই থাকবে না। যখন যে ক্ষমতায় থাকবে তখন সে তার প্রতিপক্ষকে ইচ্ছেমত যকোন স্বাস্তি দিতে পারবে। এই বিষয়টা আপনারা কিভাবে বিবেচনা করছেন? আপনাদের কি ধারনা আপনাদের পছন্দের দল চিরকাল ক্ষমতায় থাকবে?

"রাজাকারির-আলবদরির-আলশামসির-শান্তি কমিটির নেতৃত্ব, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতা বিরোধী অপরাধ - এই তিনটা শব্দকে যে আমরা বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ একই অর্থে দেখি!"

হ্যা এটা একটা গুরুত্বপুর্ণ কথা বলেছেন - আপনারা আসলেই সবকিছুকে গুলিয়ে ফেলেন - এবং শেষ পর্যন্ত বিষয়টা এমন দাড়ায় যে কোন ব্যাক্তি আপনাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হলে সে যেকোন ভাবেই খারাপ, তাকে যেকোন ভাবেই সাস্তি দিতে হবে। আর রাজনৈতিক স্বার্থের অনুকুল হলে তার সাতখুন মাফ। যেমন আওয়মী লীগের ভিতরে থাকা রাজাকার সংগঠক, শাক্তিকমিটির নেতাদের বিরুদ্ধে আপনাদের কোন রাগ ক্ষোভ নাই - অন্তত শাহবাগে তা দেখা যায় নাই। এমনকি অতি সুপরিচিত আলবদর নেতা মাওলানা মান্নানের পত্রিকা ইনকিলাবে স্কাইপ সংলাপ প্রথমে প্রকাশিত হলেও, শাহবাগের বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রচারণা চালালেও তার বিরুদ্ধে আপনাদের কোন কথা নাই - যত দোষ মাহমুদুর রহমান আর আমার দেশ পত্রিকার। - এই যে সবকিছু গুলিয়ে নিয়ে সবকিছুকেই রাজনৈতিক দৃস্টিতে বিবেচনা করা - এটা শাহবাগের ক্ষনস্থায়ী আন্দোলনের চড়ম ব্যার্থতার অন্যতম প্রধান কারণ।

আসলে তেল ঘি পানি লবণ - সবগুলি রান্নার উপকরণ হলেও সেগুলি সব একই নয়। রাজনীতি, যুদ্ধ, বিচার - সবগুলি অপরাধ প্রতিরোধ বা সমাজকে উন্নতকরণের উপকরণ হলেও সেগুলিও সব একই নয়। চিন্তা করে দেখুন - এই মাত্র সেদিন জে.এম.বির ছয় শীর্ষ নেতাকে বিচারের মাধ্যমে ফাঁসি দেয়া হল। কই সেখানেতো কোন বিশেষ ট্রাইবুনাল বা ঐরকম একমুখি আইন ও বিচার ব্যাবস্থা লাগল না। দেশে বা বিদেশে কোথাও সেই বিচার নিয়ে কোন প্রশ্ন/প্রতিবাদ/আন্দোলন কিছুই হল না। তাহলে আপনাদের বিবেচনায় এত বড় বড় অপরাধে অপরাধীদের বিচারে এতকিছু কেন লাগবে? কেন হাজার হাজার মানুষের খুনির বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ সাক্ষি খুজে পাওয়া যাবে না, বরং আসামীর পক্ষে এত বেশী সাক্ষি থাকবে যে আদালত থেকে সেই সংখ্যা অতি সীমিত করে দিতে হবে?

এর কারণ একটাই - আপনারা সবকিছুকে প্রতিশোধ, জ্বালা জুড়ান - ইত্যাদির বিবেচনায় গুলিয়ে ফেলেছেন। আপনাদের আত্মীয় মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছেন - সুতরাং যেকোন উপায়ে আপনাদের অপছন্দের ব্যাক্তিদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করতে পালেই আপনাদের জ্বালা মিটবে বলে মনে করছেন - অথচ যদি সেই ব্যাক্তি সত্যিকারের অপরাধী না হন, যদি একের অপরাধ অন্যের ঘাড়ে চাপান হয় বা বিচারটি স্বচ্ছ ও গ্রহনযোগন্য না হয় তাহলে আপনাদের দুই চার জনের জ্বালা আপতত মিটলেও সেটা যে আরো বহু জনের নতুন জ্বালার কারণ হবে এবং সুযোগ পেলে তারাও যে আপনাদের তৈরী পথেই জ্বালা মিটানোর চেস্টা করবে - এ'টাই আপনারা বুঝতে পারেন নাই।

"আসলে বিষয়টা আপনি আমি ভালমতই জানি, তাই না? সারা বাংলাদেশের মানুষ জানে। সব্বাই জানে। তাও বলতে হয়। এখানেই সেলুকাসের আগমন। "

- আপনি সবার জানার কথা বলছেন? হ্যা, নিশ্চয়ই বিষয়গুলি সবাই জানে - তার পরও এই দেশেরই অন্তত ১০% মানুষ জামাতকে ভোট দেয় - কেন? আপনারা কি এই ১০% (প্রায় দেড় কোটি) মানুষকেই ফাঁসি দিতে চান? আর সবার জানা বিষয় মাত্রই কি ধ্রুব সত্য? প্রচার প্রচারনার মাধ্যমে কোন একটা বিষয় সবার জানার মধ্যে আসলেই কি সেটাকে সত্য ধরে অভিযুক্তকে সাস্তি দেয়া যায়? আচ্ছা - এই যে ত্রিশ লাখ সংখ্যাটা এটাওতো সবাই জানে, শত মুখে হাজারকোটি বার বলে - তারপরও কি সবাই জানে না যে সংখ্যাটা অতিরঞ্জিত? গত চল্লিশ বছরে আমরা শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা তৈরী করতে পারিনি কেন? প্রকৃত সংখ্যাটা লজ্জাজনকভাবে কম হওয়ার ভয়ে? তাহলে যে দেশের মানুষ চল্লিশ বছর ধরে নিজেদের শ্রেষ্ঠ সন্তান শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে সত্য প্রচার করতে পারেনি, নেতার প্রতি অন্ধ আনুগত্যে জেনেশুনে অতিরঞ্জিত কথা প্রচার করেছে - তারা তাদের প্রতিপক্ষের ব্যাপারে খুব সত্য কথা প্রচার করবে এটা আশা করা যায় কি?

আসলে রাজনীতি আর বিচরকে এক করে ফেলা খুবই বিপজ্জনক। ধরুন আমি প্রথম থেকেই শাহবাগের বিরুদ্ধে কথা বলেছি - আমার কাছের মানুষেরা সেই স্বাক্ষি দেবে। ফেইসবুক বা ব্লগে কিছু লেখাও পাওয়া যাবে। আবার শাহবাগপন্থী রাজীব খুন হয়েছে - দুটিই সত্যি ঘটনা। এখন আপনিই বলুন রাজীব হত্যার দ্বায়ে কি আমাকে ফাঁসি দেয়া হবে? যদি আজ থেকে চল্লিশ বছর পর আমি কোন শাহবাগপন্থীর রাজনৈতিক/অর্থনৈতিক বা অন্যকোন স্বার্থের প্রতিপক্ষ হই - আর সে যদি আমার এই সময়ের শাহবাগ বিরোধী কথা - লেখা তুলে ধরে আমাকে রাজিব হত্যার দ্বায়ে ফাঁসি দেয়ার আয়োজন করে - আপনি কি তা সমর্থন করবেন??

২৯ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৪:২৬

গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: রাজিব হত্যার দায়ে আপনার ফাঁসি কেন হবে? আপনি যদি রাজীব বা সজীব বা যে কাউকে হত্যা করার নির্দেশ দেন অথবা হত্যা করেন তখনি ফাঁসি হতে পারে। তাই না?
একটা আন্দোলনের বিপরীতে আন্দোলন করা এক কথা, আর হত্যা করা অথবা হত্যার নির্দেশ দেয়ার মাধ্যমে হত্যা করানো ভিন্ন কথা।

১০% লোক জামাতকে ভোট দেয়। কথা কিন্তু সত্যি। জামাতের সমর্থক এরচে বেশিও হতে পারে। এই দেশের অন্তত ১০% মানুষ (রিগার্ডলেস অভ জামাত) কিন্তু পাকিস্তানও চাইতে পারে, তাও কিন্তু বাস্তবতা। এদেশের ৫০% মানুষ অশিক্ষিত, এটা আরো বড় বাস্তবতা। এদেশের ৩০% মানুষ শুধু খাওয়া পরা তো দূরের কথা, সামান্য এক প্যাকেট সিগারেটের বিনিময়ে ভোট বিক্রি করে দেয় এটাও সত্য। যেদেশে এক প্যাকেট সিগারেট সমান সমান একটা ভোট, সেদেশে নিশ্চিত ক্যারিয়ার, বিশাল ব্যাঙ্ক লোন, অসাধারণ সব স্টাইপেন্ড, সহজে পড়ালেখা করার বন্দোবস্ত, সামাজিক আর্থিক এবং সামষ্টিক নিরাপত্তার কাছে ১০% ভোট তো কিছুই না। আশা করি বুঝতে পারছেন ভাই।

যে কোন সোসাইটিতে ১০% এর মত মানুষ সমকামী, ১০% এর বেশি মানুষ চাইল্ড অ্যাবইউজার, ১০% এর বেশি মানুষ মানসিক রোগী... কথাটাকে খুব বাজে লাগছে হয়ত। কিন্তু সত্য কথা হল, ১০-১৫% মানুষ খুব সহজেই বিকে যেতে পারে।

তাহলে আরো একটা মজার কথা বলি, যদি জামাত কন্টিনিউ করতে পারে ঠিকমত, এদেশেরই ৩০-৪০% ভোট চিরদিনের জন্য নিজের করে নেয়া তার জন্য কোন ব্যাপার না।

খ্রিস্টান পাদ্রিরা বলেছিল, গরীবের হৃদয়ের সবচে কাছের পথ হল তার গলা।
আর কে যেন বলেছিল, ধর্ম (ইসলাম এখানে ব্যবহৃত, ইসলাম নয়, খোলাফায়ে রাশেদার ইসলাম নয়) হল সেই বিষয় যা (তার মতে) জ্ঞানীরা ওভারলুক করে, সাধারণ মানুষ ভয় করে এবং রাজা ব্যবহার করে।

তো একে গেল আর্থিক নিশ্চয়তার ব্যাপার, সেইসাথে ইসলাম প্রতিষ্ঠার জিগির তো আছেই। বিশভাগ মানুষকে গলানো এ দিয়ে কোন ব্যাপার নয়।

আর দেড় কোটি জামাতপন্থী মানুষকে কেন হত্যা করা হবে!
তার জন্য কিসাসই একমাত্র সাজা, যে হত্যা করেছে অথবা হত্যার নির্দেশ দিয়েছে- যদি না মানুষ ক্ষমা করে। আর পরিবার ক্ষমা করল না, তখন তার তো মৃততুদন্ডই হবে।

এমনকি একজন রাজাকার, যার হত্যার নির্দেশ দেয়ার রেকর্ড নেই, তার জন্যও শান্তিকালীন সময়ে মৃততুদন্ড হবে না। বড়জোর কারাবাস এবং তারপর অবশ্যই দেশের স্বাধীনতা রক্ষার স্বার্থে দেশের বাইরে বের করে দেয়া উচিত।

কিন্তু আমরা কথা বলছি গোলাম আজম, নিজামী, মুজাহিদ, কামারুজ্জামান, কাদের মোল্লাদের ব্যাপারে। এই মানুষগুলো যা করেছে তা তো জানা, তাদের শাস্তিও জানা।

আর ন্যায়বিচারের জন্য পথে কেন নামা যাবে না!

সেই নিহতের সংখ্যা, এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে আর কথা বলে কী হবে! আমাদের ভাবনার জগতই তো ভিন্ন। আমার ভাবনা যা দিয়ে ড্রাইভ হবে, যারা নিহতের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক করছেন তাদের ভাবনার চালিকাশক্তি তা হবে না।

এই শেষ বিষয়টা হচ্ছে মনোজগত গঠন বা ব্রেনওয়াশ। এটাকে ওভারকাম করতে হলে একমাত্র প্রচন্ড ইচ্ছাশক্তির মানুষ হওয়া প্রয়োজন।

নাহলে শাহবাগ আন্দোলন শুরুর আগেই শিবির যে শ্লোগান দিয়েছিল, একাত্তরের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার...

শিবির বা ইসলামী ছাত্রসংঘের হাতিয়ার একাত্তরে কোন্ কারণে গর্জে উঠেছিল? আর এবার আবার সেই একইভাবে গর্জে ওঠার কথা স্বাধীন বাংলাদেশে কীভাবে বলা হয়?

আর একজন স্বাধীন ইচ্ছাশক্তির বিবেকবান মানুষই বা কী করে সেখানে ওই শ্লোগান দেয়?

তাহলে এখানে আমরা তিনটা বিষয় পাচ্ছি, ১. আর্থিক সুবিধা ২. ধর্মীয় চাদর ৩. মনোজাগতিক দাসত্ব।

এগুলো যথেষ্ট।
তবে, যথাযথ পরিবেশ পেলে যে কোন মানুষ ঠিক হতে পারে, যদি না আল্লাহ তার জন্য হিদাআতের পথ বন্ধ করে দেন। সুতরাং দেড় কোটি নিয়ে ভাবিত হবার কিছু নেই, তাদের জোর করে জেলবন্দী করারও কিছু নেই।

২৫| ৩০ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ৭:৪৪

মেলবোর্ন বলেছেন: আলহামদুলিল্লাহ এই যে এত কস্ট করে জবাব দেন আলোচনা চালাচ্ছেন সেখান হতে ভালো কিছু বের হবেই আলোচনাই পারে সকল ভুলের অবসান ঘটাতে আল্লাহ আমাদের অন্তরের মোহর টা খুলে দিন। বোঝার ও বোঝাবার তৈফিক দিন। সঠিক পথে পরিচালিত করুন। মজলুমের পক্ষে থাকার তৈফিক দিন । সেই মজলুম যাদের নিবিচারে রাতের আধারে হত্যা করা হয়ছিল ঘরবাড়ি জালিয়ে দিয়েছিল আমার সেই সকল মা জননী বোনদের সম্ভ্রম হানী করে ছিল সেই মজলুমের পক্ষে যারা কথা বলতে পারেনা তারা কি রকম মুসলমান তা আল্লাহই ভালো জানেন।

৩০ শে জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২০

গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। আসলে পরিবেশ কী না করতে পারে! আমরাই ঠিক করি আমরা কাদের কথা শুনব, কাদের সাথে মিশব- এবং ফলাফল! ব্রেইন শেইপিং হয় সেই ভাবধারা অনুসারে।

মানুষ স্ট্রিক্টলি একটা বাজে বিষয়ের অনুসরণ করে, এটা কিন্তু কোন আজব বিষয় নয়।
আজব বিষয় হচ্ছে, সেই বাজে বিষয়কে সমাজে স্বীকৃতি দেয়া।

এই কারণেই জার্মানির বেশিরভাগ মানুষ (পরিবেশ এবং মেলামেশার সমাজ) নাৎসি হয়ে উঠেছিল।
আর এই বিষয়টাকে ওভারকাম করতে পারে খুব অল্পসংখ্যক মানুষ, যাদের ভাবনাজগত পুরোপুরি দখল করে রাখেনি কোন মতবাদ।

২৬| ১২ ই আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১০:১৪

অর্ক হাসনাত কুয়েটিয়ান বলেছেন: দারুণ। স্পিচলেস।+++

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৮:৪৯

গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: অর্ক ভাই কৃতজ্ঞতা। আশা করি অনেক অনেক ভাল আছেন।

২৭| ১২ ই আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১০:৪৮

কলাবাগান১ বলেছেন: "শাহবাগ নিয়ে প্রতিটা সচেতন মানুষের চোখের সামনে ঝুলেছিল ওদের (জামাতের) তখনকার তীব্র বীভৎস মিথ্যাচার।"

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৮:৫০

গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: আর এই মিথ্যাচারেই তাদের পরিচয় লুকিয়ে আছে।

উদ্দেশ্যমূলক, বারবার বলা মিথ্যা কখনো ধর্ম হতে পারে না।
গোয়েবলসের বাণী হতে পারে।

ধন্যবাদ ভাই, সাথে থাকার জন্য। আশা করি ভাল আছেন।

২৮| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৩৯

আবদুল্লাহ্‌ আল্‌ মামুন বলেছেন: অসাধারণ হয়েছে। এখন আর সামুতে বেশি আসি না... শুধু এই পোষ্টাতে কমেন্ট করার জন্যই লগিন করলাম। একই অনুভূতি !

কেমন যেন মানুষ গুলো বদলে গেলো। ভাবতে খারাপ লাগে। একটা শিক্ষিত ছেলে , একটা ভার্সিটি পড়া ছেলে... নিজের বিবেক'কে একটুও কাজে না লাগিয়ে কারো কারো থেকে শোনা কথা দেদারছে বলে যাচ্ছে, হায় !

পেয়ে যাওয়া জিনিসের কদর কমে যায়। দেশ'টা আমরা রেডিমেড পেয়েছি তো... আর শহীদ হওয়া মানুষ গুলো তো তার বিনিময় মূল্য... তাদের আবার বিচার কি !!!

আমিও এখন চুপ করে থাকি, বন্ধুদের ভিড়ে, রাজনৈতিক আলাপ করি না। মিথ্যের প্রতিবাদ করি না...

খুব কাছের বন্ধু গুলো জেনে বুঝে বিরোধিতা করে, শুধু মাত্র তর্কে জেতার জন্য, এবং একসময় সে এই ভুল গুলো বিশ্বাস করতে শুরু করে।

শুধু দেখি, ভাবায়, হতাস হই... পতাকায়, সকালে আর বিকালে এই বাংলার আকাশে লেগে থাকা শহীদের রক্তের লাল চিন্হ.....

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:০১

গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: মামুন ভাই অনেক দেরি করে ফেলেছি। এজন্য কষ্ট পাবেন না প্লিজ।

দেশ'টা আমরা রেডিমেড পেয়েছি তো... আর শহীদ হওয়া মানুষ গুলো তো তার বিনিময় মূল্য... তাদের আবার বিচার কি !!!

এই কথাটা সব সময় মনে রাখব। সব সময়।

মাঝে মাঝে নিরবতা অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়ে। একটা বিচারের শুভেচ্ছা আপনাকে জানিয়ে রাখলাম। বিজয় দিবসেরও শুভেচ্ছা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.