নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্পেস-টাইম

there is no problem in the heavens and earth ;) problem lies in three places... beneath, between and within the hells.

গোলাম দস্তগীর লিসানি

বুলি বলে শুনতে পাই, রূপ কেমন তা দেখি নাই, ভীষম ঘোর দেখি।। পোষা পাখি চিনলাম না, এ লজ্জা তো যাবে না, উপায় কী করি, আমি উপায় কী করি।।

গোলাম দস্তগীর লিসানি › বিস্তারিত পোস্টঃ

শিয়া ধর্মবিশ্বাস সম্পর্কিত

২২ শে জুন, ২০১৪ বিকাল ৪:২৫

আজকাল শিয়া এবং তথাকথিত 'সুন্নি' (আসলে ওয়াহাবি) দের মধ্যে সারা পৃথিবীতেই সফলভাবে যুদ্ধ শুরু করে দিয়েছে শিয়া-ওয়াহাবী উভয়ের কমন শত্রু।



ব্রিটিশের ডিভাইড অ্যান্ড রুল।



শিয়াদের ধর্মবিশ্বাস বিষয়ে কেউ যখন লিখবে, তখন সে হয় পক্ষে লিখবে, নয়ত বিপক্ষে। এই লেখাটা এই কারণে বিষয়টা বোঝায় সাহায্যকারী হতে পারে যে, লেখার সময় পক্ষ-বিপক্ষ থেকে সরাসরি ফ্যাক্টের বিষয়গুলো আলোচনা হবে এবং শিয়া ও সুন্নির সরাসরি গোড়া থেকে আলাপ শুরু হবে।



লেখাটা ম্যাচিউর্ড মনোভাবে আসবে। অর্থাৎ, অকারণ আবেগ পরিহার করা হবে এবং অকারণ দলাদলির কথাবার্তা পরিত্যাগ করে ইসলামের অতি অভ্যন্তরের বিষয়ে সরাসরি হস্তক্ষেপ করা হবে। এবং সংক্ষেপে অতি দ্রুত বিষয় পরিবর্তন করা হবে।



প্রথমেই ইসলামের মতভেদ বিষয়ক। আমি তো রেফারেন্সওয়ালা না। বুখারি সহ অণ্তত পাঁচটি সহিহ গ্রন্থের হাদিস, ইসলামে ৭৩ মতভেদ হবে, এবং একটি হবে পূর্ণ সঠিক আর তারা হল রাসূল দ. ও তাঁর সঙ্গী-অনুসারীদের দল।



আরো এক সঠিক হাদিস অনুসারে, রাসূল দ.'র গৃহবাসীগণ তথা তাঁর মহান জামাতা, মহান কন্যা ও তাঁদের দুই পুত্র এবং আল্লাহ ও রাসূল দ. যাদের যাদেরকে আহলে বাইত বলেছেন, সেই রাসূল দ.'র বংশধরগণ, তাঁর স্ত্রীগণ এবং সালমান ফার্সি রা. সহ কয়েকজন সাহাবা - এই আহলে বাইতগণই নূহ আ.'র কিশতি স্বরূপ, যে এতে অারোহণ করবে, মুক্তি পাবে, যে আরোহণ করবে না, ধ্বসে যাবে।



শিয়া মনোভাব তৈরি হয় তিন ক্ষেত্রে-



১. সাইয়্যিদি আলী রা. কে যাঁরা খিলাফাত ও ইমামাত এর একমাত্র যোগ্য উত্তরসুরী মনে করেন অথবা ওই অবস্থায় (তিন খলিফা যাবার পর) একমাত্র উত্তরাধিকারী মনে করতেন, তারাই আলী রা.'র অনুসারী বা শিয়া ছিলেন। এই অবস্থানে সাহাবা রা. গণের সাথে সাহাবা রা. গণের মতভেদ হতো যেখানে উভয়ই সঠিক। অর্থাৎ, ওই সাহাবা ও ওই তাবিয়িদের শিয়া বলা হলেও তাঁরা সর্বমান্য এবং সঠিক, যা পরবর্তীতে গ্রহণীয় নয়।



২. হাজারো বছর ধরে আরব কোন সক্ষম জাতি ছিল না। একদিকে ইরানের পারসিক সাম্রাজ্য আরেকদিকে ইতালির রোমান সাম্রাজ্য ছিল হাজারো বছর ধরে পৃথিবীর সবচে বড় এবং ক্ষমতাবান দুই সাম্রাজ্য এবং এ উভয়ের মধ্যবর্তী দক্ষিণমুখী অঞ্চল ছিল আরব।



আরবদের শাসনের অধীনে আসা সাবেক রোমান সাম্রাজ্যের অংশ যেমন সিরিয়া এবং সাবেক পারসিক সাম্রাজ্যের অংশ যেমন বর্তমান ইরাক এই উভয় অঞ্চলের মানুষ অন্য অঞ্চলের উপর প্রাধান্য চায়। এই প্রাধান্য চাইবার অংশ হিসাবে নিজ নিজ অঞ্চলের গভর্নর/খলিফা হজরত আলী রা. ও হজরত আমীর মুআবিয়া রা. কে তারা তাদের নিজ নিজ অঞ্চলের সম্মানিত জামাতা করে নেয়ার সৌভাগ্য অর্জন করে।



সাবেক রোমান কিন্তু মুসলিম হওয়া সিরিয়রা (লেভ্যান্ট) চায় আমীর মুআবিয়া রা. খলিফা হোন এবং তাঁর মাধ্যমে সাম্রাজ্যতে তাদের প্রাধান্য থাক যেহেতু তারা সাম্রাজ্যের প্রাধান্যের গুরুত্ব সম্পর্কে হাজারো বছর যাবত ওয়াকিফহাল। একইভাবে ইরাকি অঞ্চলের (দজলা-ফোরাত অববাহিকা) মানুষ চায় আলী রা. কে প্রাধান্যে চাইতে। যদিও আলী রা. নি:সন্দেহে সর্বাধিক অগ্রগণ্য কিন্তু সেই অগ্রগণ্য থেকে বেশি প্রাধান্য পায় তাদের জাতীয়তাবোধ।



এভাবেই, শিয়া মনোভাব মূলত পারসিক/ফার্সি জাতীয়তাবাদের প্রোডাক্ট। অর্থাৎ, শিয়া মনোভাব ফার্সি জাতীয়তাবাদ এবং পাশাপাশি আহলে বাইতের ভালবাসায় সিক্ত।



এরই প্রমাণ স্বরূপ বলা যায়, শিয়ারা মাত্র ৩ জন অথবা বড়জোর একশো জনকে (মতভেদ সাপেক্ষে, শিয়াতেও মতভেদ রয়েছে) সাহাবা হিসাবে স্বীকৃতি দেন। এই তিনজনের একজন হলেন সালমান ফার্সি রা. যিঁনি ফার্সি, অথচ রাসূল দ.'র দেড় লক্ষ সাহাবী এবং পাঁচ লক্ষ তাবিয়ির প্রায় সবাইকে পথভ্রষ্ট বলা হয়।



৩. কিছু মানুষ বাহ্যিক পড়ালেখার মাধ্যমে একটা সিদ্ধান্তে আসেন এবং আহলে বাইতে রাসূল দ.'র ভালবাসা বলতে শুধু শিয়া মনোভাবকেই গ্রহণ করেন। এই ধরনের প্রচুর উদাহরণ সারা পৃথিবীতেই ছড়ানো আছে।



এবার শিয়াদের কিছু ধর্মবিশ্বাস সম্পর্কে সরল দৃকপাত করা যাক-



১. শিয়াদের অনেকেই বিশ্বাস করেন, (যেহেতু শিয়াতেও মতভেদ আছে) মাওলা আলী রা.'র নবী হওয়ার কথা ছিল এবং জিব্রাঈল আ. রাসূল দ.'র কাছে চলে আসার কারণে রাসূল দ.ই নবী হয়েছেন। কিন্তু শিয়ারা নবুয়্যতে বিশ্বাস স্থাপন করেন ও রাখেন, এই বিষয়টা আমাদের বিবেচনায় রেখে এগুতে হবে।



২. শিয়ারা সিদ্দিকে আকবর রা., ফারুকে আজম রা. এবং যুন নূরাইন রা. এই তিন মহান খলিফাকে সম্পূর্ণ পথভ্রষ্ট, অন্যায়কারী, অন্যায় শাসক এবং সম্পূর্ণ পথচু্ত মনে করেন তাই শুধু না, মূল ধারার মতভেদে একটা কথা প্রচলিত আছে যে, সিদ্দিকে আকবর রা. এবং ফারুকে আজম রা.'র উপর যে কোন মানুষের যে কোন পাপ প্রথমে আপতিত হয়।



৩. শিয়ারা মনে করেন আলী রা., ফাতিমা রা. ও হাসান-হুসাইন রা. গণের সম্মান এবং সক্ষমতা এবং অধিকার অন্য সকল সাহাবার থেকে ঊর্দ্ধে। আহলে বাইতের হিসাবে তাদের এই বিশ্বাস সম্পূর্ণ সঠিক। খলিফা হিসাবে মাওলা আলী রা.'র পাশাপাশি বাকি তিন খলিফা অত্যন্ত অগ্রসর এই বিশ্বাস তাদের নেই।



৪. আশারায়ে মুবাশশারা তথা বেহেশতের দশ সুসংবাদপ্রাপ্ত সাহাবাকে পথভ্রষ্ট মনে করেন।



৫. রাসূল দ.'র প্রায় সকল সম্মানিতা স্ত্রীকে পথভ্রষ্ট মনে করেন, যা কুরআনের সরাসরি বিপরীত। রাসূল দ.'র সকল গৃহিণী আহলে বাইত- কুরআন অনুসারে, কুরআন অনুসারে তাঁরা সকলে সকল মুসলিমের মাতা।



৬. তাঁরা বিশ্বাস করেন, কুরআনের দুটি আয়াত বাদ দেয়া হয়েছে, কেউ কেউ বিশ্বাস করেন, কুরআনের একটি সূরা বাদ দেয়া হয়েছে। এছাড়া তাঁরা বর্তমান কুরআনের পুরোটাকেই মানেন, শুধু দুটি আয়াত যুক্ত হয়েছে এমনটা মনে করেন।



৭. চার মাজহাবের সকল ইমাম, সকল পথপ্রদর্শক, ৫০+ হাদীসের গ্রন্থের সকল ইমাম সবাইকেই পথভ্রষ্ট মনে করেন। সকল হাদীসগ্রন্থকে পথভ্রষ্ট মনে করেন। শিয়াদের নিজস্ব হাদীসগ্রন্থ রয়েছে যার মধ্যে আলী রা.'র লেখা হিসাবে প্রচলিত নাহজুল বালাগা- যে গ্রন্থে সত্যি আলী রা.'র কিছু লেখা রয়েছে- মানেন। শিয়ারা ইমামগণের গ্রন্থকে হাদীস হিসাবে বিবেচনা করেন।



৮. তাঁরা বিশ্বাস করেন, মাওলা আলী রা. প্রথম, ইমাম হাসান রা. দ্বিতীয় এবং ইমাম হুসাইন রা. কে তৃতীয় ধরে মহামহিম তাবিয়ি আলী ইবনে হুসাইন জাইনুল আবিদীন রা, কে চতুর্থ ধরে পরবর্তী বংশধারায় আরো আটজন সহ মোট বারোজন ইমাম এসেছেন। এই বারোজনের মধ্যে সর্বশেষজন ইমাম মাহদি রা. এখনো আসেননি অথবা তিনি এসেছেন কিন্তু আপন পিতার/ কোন আপনজনের জানাজার পর পাহাড়ে অদৃশ্য হয়েছেন বারো বছর বয়সে এবং তিনি ফিরে আসবেন সময়মত।



বলা বাহুল্য, এই বিশ্বাসগুলো প্রায় সম্পূর্ণ সঠিক। অসঠিকত্ব শুধু এই বিষয়গুলোতে- তিন খলিফাকে সেই বারোজনে অন্তর্ভুক্ত না বিবেচনা করা।



৯. কোন কোন শিয়া বিশ্বাস, (অধিকাংশ) এমন যে, বারো ইমামগণের কাছেও ওয়াহি আসত এবং তা কিতাব আকারে এবং সেই হিসাবে তাঁরা নবী বা নবীর সমতুল্য। অবশ্যই আহলে বাইতের ইমামগণের কাছে আল্লাহর বাণী আসতো, তা ওয়াহী নয়, বরং ইলহাম। তা কোন কিতাব নয় এবং নবুয়্যত নয়।



১০. শিয়াদের আরেক বিশ্বাস, বারো ইমাম নবীগণের থেকেও শ্রেষ্ঠতর। এই কথা সাধারণ হিসাবে সত্যি, কারণ রাসূল দ. বারবার বলেছেন, তাঁর উম্মাহর মধ্যে নবীগণ থেকেও উচ্চতর মর্যাদার ব্যক্তিরা আসবেন, কিন্তু তাঁরা অবশ্যই নবী নন। নবীর মর্যাদা নবুয়্যতের মর্যাদা যা ভিন্নতর অন্য সবকিছু থেকে।



১১. শিয়াদের বিশ্বাস, এই বারো ইমাম এবং রাসূল দ. এবং ফাতিমাতুয যাহরা রা. এই চোদ্দজন মা'সুম বা নিষ্পাপ। বিশ্বাস সঠিক, কিন্তু নবীগণ যেভাবে মা'সুম, নবী ভিন্ন অন্য মহানগণ সেভাবে মা'সুম নন। কিন্তু সম্পূর্ণ নিষ্পাপ অবশ্যই। এই চোদ্দজন ছাড়াও উম্মতে মুহাম্মাদীতে আরো অনেক মা'সুম বা সম্পূর্ণ নিষ্পাপ রয়েছেন।



১২. শিয়াগণ কারবালার ঘটনায় নিহত আহলে বাইত রা. গণের শাহাদাতের জন্য এজিদ এবং তার শাসনব্যবস্থাকে দায়ী করেন যা সম্পূর্ণ সঠিক।



১৩. শিয়ারা কখনো তিন ওয়াক্তের সময়ে পাঁচ ওয়াক্ত আদায় করেন যা আমরা অন্য মুসলিমরা করি না, যদিও তা রাসূল দ.'র সুন্নাহ হিসাবে সঠিক।



১৪. অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, আশহাদুআন্না মুহাম্মাদার রাসূলআল্লাহ বলার পর আযানে তাঁরা আশহাদু আন্না আলী ওয়ালিউল্লাহ বলেন। কথা সঠিক হলেও তা আযানে অকারণ সংযোজন।



১৫. শিয়ারা সাময়িক বিবাহ তথা মু'তা বিবাহে বিশ্বাস রাখেন যা অন্য ধারার মুসলিমরা রাখেন না। সাময়িক বিবাহ ইসলামে রদ হয়ে গেছে।



১৬. আলী রা. ও আহলে বাইতে রাসূল দ. গণকে জীবিত এবং সাহায্য প্রদানে সক্ষম মনে করেন, যা সম্পূর্ণ সঠিক।



১৭. তাঁদের তারাবীর নামাজের ধরণ ভিন্ন।



১৮. তাঁরা বুক চাপড়ে আহলে বাইতে রাসূল দ.'র শাহাদাত দিবসের স্মরণসমূহে শোক পালন করেন, নিজেদেরকে আহত করেন, ইমাম হুসাইন রা.'র প্রতীকী কবর নিয়ে মিছিল করেন, বাদ্য করেন, ইমাম হুসাইন রা.'র ঘোড়া দুলদুল এর প্রতীকী ঘোড়া সাজান, কখনো ছাগলের বাচ্চাকে আঘাত করে 'আবু বকর' নামের প্রতি কটাক্ষের মাধ্যমে প্রতীকীভাবে আয়িশা সিদ্দিকা রা. কে আঘাত করার অনুকরণ করেন, শোকগাঁথা গান- যার প্রতিটা কাজই সজ্ঞানে করা সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত এবং নিষিদ্ধ। কিন্তু জিঘাংসামূলক নয় এমন শোকগাঁথা, বুক চাপড়ানো ইত্যাদি কাজে কোন সমস্যা নেই।



১৯. এছাড়াও অনেক ধরনের সংস্কার প্রচলিত রয়েছে শিয়া বিশ্বাসে যার কোনই ভিত্তি নেই। তবে, আহলে বাইতে রাসূল দ. গণের স্মৃতিময় বস্তুসমূহ, তাঁদের মহামহিম মাজারসমূহে তাঁরা যে শ্রদ্ধা ও আদব প্রদর্শন করেন, সেসবকে শিরক বলা সম্পূর্ণরূপে বাড়াবাড়ি এবং বড় পাপ।



আশা করি এটুকুই শিয়া মতবাদের সাথে সাধারণ প্রচলিত অন্যান্য ইসলামি মতবাদের পার্থক্য স্পষ্ট হয়। আহলে বাইতে রাসূল দ.'র ভালবাসার বিষয়ে শিয়াদের কোনপ্রকার দোষদুষ্ট করা যাবে না। তাদের ভুল যা, তা বাড়াবাড়ি, অন্যকে দোষারোপে, আহলে বাইতে রাসূল দ.'র প্রতি ভালবাসায় কোন সমস্যা নেই।



আমাদের মনে রাখতে হবে, আহলে বাইতে রাসূল দ. গণ কোন সাধারণ মুসলিম নন বা এমনকি আর সব সাহাবাগণের সাথেও তুলনীয় নন। আমাদের মনে রাখতে হবে, প্রতিবারের নামাজে আমরা আহলে বাইতে রাসূল দ. গণের উপর সালাত আদায় করি। তাঁদের উপর সালাত আদায় না করলে চলে না। সুতরাং তাঁদের বিষয়ে সাবধানতা অবলম্বন করা এবং সঠিকভাবে জানা আমাদের উপর সর্ব্বোচ্চ কর্তব্য।



শিয়া থেকে ভিন্নতা থাকাটাই স্বাভাবিক, কিন্তু সেই ভিন্নতা আমাদের ইসলামকে সঠিকভাবে বুঝতে সহায়তা করছে কিনা, সেই ভাবনাটাই কার্যকর, আরসব অকার্যকর।

মন্তব্য ২৯ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২৯) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে জুন, ২০১৪ বিকাল ৫:১৮

এইচ তালুকদার বলেছেন: গ্রীন জোন মুভিটার কথা মনে পড়ে গেলো।সেখানে একজন হাইরাঙ্ক সিআইএ এজেন্ট আশঙ্কা করে বলেছিলো ইরাকে ছয় মাসের মধ্যে(আমেরিকা ইরাকে আসার) শিয়া সুন্নী দের ভেতর গৃহযুুদ্ধ লেগে যাবে।

২২ শে জুন, ২০১৪ বিকাল ৫:৩৫

গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: দারুণ বলেছেন ভাই। এই ব্রিটিশের রক্তগুলো যেখানেই যায়, সেখানেই ধর্ম নিয়ে জাতি নিয়ে যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। দাঙা শুরু হয়ে যায়। ভারতে হিন্দু মুসলিম, ইরাকে শিয়া সুন্নি। কথা একই।

২| ২২ শে জুন, ২০১৪ বিকাল ৫:২২

ফািহম িসিিদ্দকী বলেছেন: কেন আমার এ প্রবন্ধ লেখা ?

আমি ‘শিয়া মতবাদ’ সম্পর্কে ছিলাম সম্পূর্ণ অজ্ঞ। অর্থাৎ শিয়া নামে মুসলমানদের একটা বিতর্কিত দল আছে বিশ্বব্যাপী তা আমি জানতাম না। খবরের কাগজে দেখতাম ঢাকার বংশাল হোসেনী দালান থেকে মহররম পালনের উদ্দেশ্যে মুসলমানদের তাজিয়া মিছিল বের হচ্ছে । কিন্তু এইসব মুসলমানের আভ্যান্তরীন বিষয়ে ছিলাম সম্পূর্ণ অজ্ঞ। মনে পড়ে গেল সেই চিরন্তন কথাটি – “যে ভ্রমণ করেনি তার কিছুই জানা হলোনা”। সত্যিই তাই অনুভব করেছিলাম যেদিন বিদেশে এসে এইসব মুসলমানদের আভ্যান্তরীন বিষয়ে জানতে পারলাম। ১৬ই ডিসেম্বর ২০০০ ইং তারিখে দেশ ত্যাগ করে যখন সৌদি আরবের মদিনায় এসে কর্মস্থলে পৌঁছলাম,তখন জ্ঞান রাজ্যের দ্বার যেন মুক্ত হয়ে গেল। জানতে পারলাম এই শিয়া নামের বিতর্কিত মুসলীমের এ দলটি সম্পর্কে। বুঝতে পারলাম আমি যে স্পন্সরের হয়ে এখানে কাজ করতে এসেছি , সেই স্পন্সরই এ বিতর্কিত মুসলীমদের একজন।২০০০ সালে যখন কর্মে যোগ দিলাম মুক্ত হতে থাকল এ দলের আভ্যন্তরিন দিক সমুহ। আমার স্পন্সরের ইসলামী আকিদা অনুসরণ আমাকে অবাক করলো, ভাবিয়ে তুলল আমায়। এ কোন ধরণের মুসলীম ? মনের অজান্তেই বের হয়ে এল এ প্রশ্ন! যাদের নামাজ পড়তে দেখি দুই ওয়াক্ত , তাও লুকিয়ে আন্ডারগ্রাউন্ডে গিয়ে। তারা মুসলমানদের মসজিদে নামাজ না পড়ে মাটির নীচে লুকিয়ে নামাজ পড়ে। আরও কত কিছু দেখলাম যা সবই এই প্রবন্ধেই উল্লেখ রয়েছে । এসব দেখে আমি আমার ভিসা যার কছ থেকে কিনেছি তাকে জিজ্ঞেস করলাম – এগুলো কোন ধরণের মুসলীম । সে বললো এগুলো শিয়া মুসলীম ।এদের ইসলামী আকিদা আমাদের মত নয়। সেদিনই প্রথম জানলাম এ শিয়া মুসলীম সম্পর্কে। তারপর তাদের সম্পর্কে বিস্তারত জানার কৌতুহল জেগে উঠল মনে। সেই সুত্রেই দেশ থেকে ডাকযোগে ইসলামী ম্যাগাজিনগুলোর গ্রাহক হতে থাকি। সংগ্রহ করতে থাকি এ বিষয়ক বিভিন্ন বই–কিতাব। জানা হলো অনেক কিছু। আর এ সকল তথ্য দিয়েই এ প্রবন্ধের আয়োজন।

‘শিয়া মতবাদ’ কি ?

সাহাবায়ে কেরামের কাল থেকেই মুসলীম উম্মাহর মধ্যে ‘শিয়া’নামক একটা দল সৃষ্টি হয়ে মুসলীম উম্মাহর ঐক্য ও সংহতির ক্ষেত্রে মারাত্মক সমস্যার সৃষ্টি করে রেখেছে*১।

মৌলিকভাবে শিয়া একটি বিভ্রান্ত দলের নাম। এদের মধ্যে অনেক দল-উপদল রয়েছে*২।

প্রথমদিকে এ ফেরকাটি সৃষ্টির পেছনের কারণ রাজনৈতিক হলেও পরবর্তীতে ইসলামের মৌলিক আকিদা বিশ্বাসের ঠিক বিপরীত ধ্যান-ধারণা দ্বারা প্রচারিত হয়েছে*৩।

তৃতীয় খলিফা হযরত উসমান(রাঃ)এর শাসনামলে আবদুল্লাহ ইবনে সাবা নামক ইয়েমেনের এক ইহুদী পণ্ডীত মুসলমানদের ছদ্মবেশে মদিনায় এসে মুসলমানদের মধ্যে দলাদলীর সৃষ্টি করে। কারবালার মর্মান্তিক ঘটনার পর আবদুল্লাহ ইবনে সাবার দলটিই ‘শিয়া আন্দোলনকে’ একটি ধর্মীয় ফেরকায় রূপান্তর করে*৪।

‘শিয়া মতবাদ’ হলো মূলতঃ ইহুদী মতবাদের দ্বিতীয় সংস্করন*৫।

ইসলামের প্রতি এক বিদ্বেষী মতবাদের নামই হলো ‘শিয়া মতবাদ’। শিয়া আকিদা যদি সত্যি হয় তবে ইসলাম হবে মিথ্যা। আর ইসলাম যদি সত্যি হয় তবে শিয়া মতাদর্শের বাতুলতা সম্পর্কে সন্দেহ থাকার অবকাশ নেই*৬।

‘শিয়া মতবাদ’ উৎপত্তির মূলে

শিয়ানে আলী বা আলী (রাঃ)এর প্রতি নিবেদিত প্রাণদের দলটি ছিল শুরুতে একটি রাজনৈতিক মতভেদ মাত্র। হযরত রাসূলে কারীম (সাঃ)এর ওফাতের পর মুসলমানদের খলিফা কে হবেন , তা নিয়ে সৃষ্ট মতভেদ থেকে ক্ষুদ্র একটি দল হযরত আলী (রাঃ)কে খেলাফতের বৈধ উত্তরাধীকারী এবং তাঁর পূরববর্তী তিন খলিফাকে অন্যায়ভাবে ক্ষমতা দখল করেছিলেন বলে মনে করতো। এ ভিন্নমতটিই রাজনৈতিক মতপার্থক্যের সীমা অতিক্রম করে ধর্মীয় আঁকার ধারণ করে*৭।

‘শিয়া মতবাদ’ হযরত(সাঃ)এর ওফাত দিবস থেকেই নবীর সহিত উম্মতের সম্পর্কচ্ছেদ ঘটাতে এবং দ্বীনের মূলোৎপাঠনে স্বচেষ্ঠ। ফলে ইসলামের মোকাবেলায় ইহুদী কর্তৃক শিয়া ধর্মের উৎপত্তি ঘটে*৮।

ইসলামের তৃতীয় খলিফা হযরত উসমান(রাঃ)এর হত্যার ষড়যন্ত্র ছিল ইহুদী ষড়যন্ত্র। এরপর হযরত আলী(রাঃ)এর ওফাত। এরপর শিয়া ধর্মের উৎপত্তি। ইহুদী পণ্ডীত আবদুল্লাহ ইবনে সাবা আল ইহুদীর চিন্তা-চেতনার আলোকেই এই ‘শিয়া মতবাদ’এর উৎপত্তি*৯।

ইসলামের চিরশত্রু এ ফিৎনা সৃষ্টিকারী ইহুদীদের মূলনায়ক মুনাফিক আবদুল্লাহ ইবনে সাবা আল ইহুদী এবং তার মদদপুষ্টরা ইসলামের প্রবাহমান স্রোতধারাকে স্তব্ধ করার লক্ষ্যে এবং মুসলীম ঐক্যে ফাটল ধরিয়ে দেয়ার নিমিত্তে হযরত আলী(রাঃ)এর প্রেমে মুগ্ধ হবার রূপ দিয়ে শিয়া ফেরকার ভিত্তি স্থাপিত হয়*১০।

‘শিয়া মতবাদ’এর ভিত্তি রচনাকারী মূল নায়কের পরিচয়

‘শিয়া মতবাদ’এর মূল উদগাতা ছিল ইহুদী তাত্বিক আবদুল্লাহ ইবনে সাবা আল ইহুদী। ইয়েমেনের অধিবাসী এ ধূর্ত লোকটি তৃতীয় খলিফা হযরত উসমান(রাঃ)এর শাসনামলে মদীনায় আগমন করে নিজেকে একজন নিষ্টাবান মুসলমান রূপে প্রকাশ করে খলিফার নৈকট্য প্রাপ্তদের মধ্যে স্থান করে নিতে স্বচেষ্ঠ হয়। কিন্তু, উসমান(রাঃ) তার গতিবিধি দেখে সন্দিহান হয়ে তাকে দূরে সরিয়ে দেন। এ ব্যক্তিই পরে এমন একটি বক্তব্য দাঁড় করায় যে , হযরত নবী করীম(সাঃ)এর পর তাঁর বৈধ উত্তরাধীকারী ছিলেন হযরত আলী(রাঃ)। কিন্তু, চক্রান্ত করে তাঁকে সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এ ব্যক্তি হযরত উসমান(রাঃ)এর বিরুদ্ধেও নানা ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করতে থাকে*১১।

ফলশ্রতিতে হযরত উসমান(রাঃ) দুষ্কৃতকারীর হাতে শাহাদত বরণ করেন। আর এ আবদুল্লাহ ইবনে সাবা আল ইহুদীই প্রথম ব্যক্তি যে প্রচার করেছিল যে , হযরত আলী(রাঃ) মৃত্যুবরণ করেননি, তিনি আবার ফিরে আসবেন। শুধু ক’দিনের জন্য একটি পর্বতের অপর প্রান্তে লুকানো অবস্থায় থাকবেন। তার এ চিন্তা-চেতনায় নির্ভর করে মুসলমানদের মধ্যে ভাঙ্গন সৃষ্টির স্থায়ী রূপ দেয়া হলো তাও ইহুদীদের হাতে*১২।

‘শিয়া মতবাদ’এর জন্মদিন ঐতিহাসিক হিট্টির মতে – ১০ই মুহররম ‘শিয়া মতবাদ’এর জন্ম হয়*১৩।

বহুধাবিভক্ত ‘শিয়া মতবাদ’এ বিশ্বাসীরা

ইহুদী তাত্বিক আবদুল্লাহ ইবনে সাবা আল ইহুদীর চিন্তা-চেতার ধারায় শেষ পর্যন্ত শিয়ারা একটা বিরাট দলে পরিণত হয়ে যায়। কালে কালে তারা ইসলামী আকিদা বিশ্বাসের সমান্তরাল নতুন আকিদা-বিশ্বাস , এবাদত পদ্ধতি এবং চিন্তা চেতনার সৃষ্টি করে*১৪।

বিচিত্র বিশ্বাসের অনুসারী হয়ে তারা পরবর্তীতে বহুধাবিভক্ত হয়ে বিভিন্ন উপদলে অস্থিত্ব লাভ করে। এমনকি ৭০(সত্তর) এরও অধিক উপদলে বিভক্ত হয়ে যায়। এসব কোন কোন উপদলের বিশ্বাস এতই জগণ্য যে, তাদেরকে কোন মাপেই মুসলীম উম্মাহর অংশ রূপে গণ্য করার উপায় নেই*১৫।

শিয়াদের বহুধাবিভক্ত উপদলের মধ্যে সবচেয়ে প্রভাবশালী যে দল , সেটি হলো – ‘শিয়ায়ে ইমামিয়া বা শিয়ায়ে ইসনা আশারিয়া’। বর্তমানে এ দলটিই ‘শিয়া’ নামে পরিচিত। অন্যান্য উপদলগুলোর মধ্যে – দরুজী, হুমাইরী , গোরাবী দলগুলো অন্যতম*১৬।

‘শিয়ায়ে ইমামিয়া বা শিয়ায়ে ইসনা আশারিয়া’এর বিংশ খ্রীষ্টাব্দের ইমাম

বিগত বিংশ খ্রীষ্টাব্দে ‘শিয়ায়ে ইমামিয়া বা শিয়ায়ে ইসনা আশারিয়া’র পথ প্রদর্শক ও মহান নেতা ছিল ইরানী বিপ্লবের আহ্বায়ক আয়াতুল্লাহ রুহুল্লা খোমেনী*১৭।

শিয়াদের আকিদা-বিশ্বাস

শিয়াদের মূল দল তথা ইহুদী পণ্ডীত আবদুল্লাহ ইবনে সাবার মতাদর্শীরা দাবী করে যে, খলিফা হবার অধিকারী ছিলেন হযরত আলী(রাঃ)। এটা তাঁর রাজনৈতিক অধিকার নয় , ধর্মীয় অধিকার। সাহাবায়ে কেরামের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ট অংশ হযরত আলী(রাঃ)কে খলিফা রূপে মনোনীত না করে ধর্মচ্যুত হয়েছিলেন*১৮।
শিয়াদের আরেক দল আরও একটু অগ্রসর হয়ে হযরত আলী(রাঃ) সম্পর্কে এরূপ ধারণা প্রচার করতে থাকে যে , প্রকৃত প্রস্তাবে হযরত আলী(রাঃ)ই নবী ছিলেন। ফিরিস্তা জীবরাঈল(আঃ) ভুলক্রমে ওহী হযরত মুহাম্মদ(সাঃ) র নিকট নাযিল করে ফেলেছিলেন*১৯।
শিয়াদের আরেক দলের বিশ্বাস যে, কারবালার ঘটনার পর বিদ্রোহ ঘোষনাকারী নিখোঁজ হওয়া মুহাম্মদ ইবনুল হানাফিয়্যাকে ইরাকের একটি পাহাড়ী অঞ্চলে সুরক্ষিত করে রাখা হয়েছে। কেয়ামতের আগে দাজ্জালের মোকাবেলা করার উদ্দেশ্যে প্রতিশ্রুত ইমাম মাহদীর সহযোগী রূপে তাঁর আবির্ভাব হবে*২০।
শিয়াদের উপদল সমুহের একটি বিরাট অংশের ধারণা – ইবলিশ শয়তান পৃথিবীর প্রতি ইঞ্চি জমিনে সিজদা করে সমগ্র ভূ-ভাগই নাপাক করে ফেলেছে। একমাত্র কারবালার ঐ অংশটুকুই এ অভিশাপ থেকে মুক্ত আছে, যে অংশে হযরত ইমাম হোসাইন(রাঃ) এবং আহলে বাঈতের সদস্যগণ তাবু স্থাপন করেছিলেন*২১।
শিয়াদের ‘আকিদায়ে ইমামত’ হলো- ইসলামী আকিদা মতে একজন স্বতন্ত্র শরীয়াতধারী নবীর যে অর্থ , অবস্থান ও মর্যাদা; তাদের নিষ্পাপ ইমামেরও ঠিক একই অর্থ, মর্যাদা ও মহত্ত্ব*২২।
শিয়াদের মতে, নবী করীম(সাঃ)এর ওফাতের পর সমগ্র সাহাবায়ে কেরামদের মধ্যে যাঁরা হযরত আবু বক্কর সিদ্দীক(রাঃ)কে খলিফা পদে স্বীকৃতি দিয়ে তাঁর হাতে বাইয়াত নিয়েছিলেন , তাঁরা সকলেই কাফেরে পরিণত(নাউযুবিল্লাহ)। কেননা, তাঁরা নিষ্পাপ ইমাম হযরত আলী(রাঃ)এর হাতে বাইয়াত হন নাই। এটাই হলো শিয়াদের সাহাবায়ে কিরামের প্রতি বিদ্বেষ*২৩।
শিয়াদের মতে, কিয়ামত পর্যন্তের জন্য নবী করীম(সাঃ) মানুষের হিদায়াতের উদ্দেশ্যে প্ররীত হয়েছিলেন- এটা সত্য নয়। নবী করীম(সাঃ)এর ওফাতের পর একদিনের জন্যও ইসলাম টিকে থাকেনি। কারণ, দীর্ঘ ২৩(তেইশ) বছরে ইসলামের যে সেনাদল তিনি নিজের ও উম্মতের মধ্যে সেতুবন্ধন রূপে তৈরী করেছিলেন, সে সেনাদলের গোটা জামাতই নবী করীম(সাঃ)এর ওফাতের পর ধর্মান্তরিত হয়ে গেছে (নাউযুবিল্লাহ)। শিয়াদের সাহাবায়ে কিরামের প্রতি বিদ্বেষের এটা আর একটা নমুনা*২৪।
শিয়াদের মতে, কোরআন মজিদ অবিকৃত থাকেনি। বর্তমান আকারে যে কোরআন মজিদ মুসলমানদের হাতে আছে , তা নির্ভেজাল কোরান নয় বরং তা হযরত উসমান(রাঃ) কর্তৃক সংকলিত কোরআন*২৫।
শিয়াদের প্রসিদ্ধ আলেম ও মুহাদ্দিস ‘নূরী তাবরছি’ কোরআনে কারীমের মধ্যে পরিবর্তন পরিবর্ধনের প্রমাণের লক্ষ্যে একটি বৃহৎ গ্রন্থ রচনা করেছেন। যার নাম ‘ফছলুল খিত্বাব ফি এছবাতি তাহরীফে কিতাবে রাব্বিল আরবাব’। এ গ্রন্থে লেখা হয়েছে যে, পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও রূপান্তরের ক্ষেত্রে কোরআনে কারীম তাওরাত ও যবুর , ইঞ্জিলের মতই (নাউযুবিল্লাহ)*২৬। এ কিতাবে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, মূল কোরআনে কারীম যা নিয়ে হযরত জীবরাঈল(আঃ) রাসূলে কারীম(সাঃ)এর নিকট অবতীর্ণ হয়েছিলেন তার মধ্যে ১৭০০০(সতেরো হাজার) আয়াত ছিল। কিন্তু, বর্তমানে মুসলমানদের নিকট যে কোরআন শরীফ বিদ্যমান আছে , সে কোরআনের মধ্যে হযরত আয়শা(রাঃ) এর গণনানুযায়ী মাত্র ৬৬৬৬ (ছয় হাজার ছয়শত ছেষট্টি)টি আয়াত রয়েছে*২৭।
শিয়ারা ইসলামের কলেমায় সন্তুষ্ট নয় বরং তারা কালেমার সহিত ‘আলী ওয়ালিউল্লাহ্ অছি রাসূলুল্লাহ ( আলী(রাঃ) রাসূল(সাঃ)এর একমাত্র ওয়ারিশ ও তাঁর সরাসরি খলিফা )’ প্রভৃতি বাক্য যোগ করে*২৮।
শিয়ারা কারবালার ঘটনার পর থেকে মুহররম মাসের প্রথম দশ দিন শোকদিবস পালন করে*২৯।
শিয়াদের উপদল – দরুজী, হুমাইরী, গোরাবী মতাদর্শীরা প্রচার করে যে, পবিত্র কোরানের একটি উল্লেখযগ্য অংশ হযরত ফাতেমা(রাঃ) এবং হযরত আলী(রাঃ) এর উপর নাযিল হয়েছিল- সেই অংশটুকুই হচ্ছে আসল কোরআন*৩০।
শিয়ায়ে ইসনা আশারিয়্যার মতাদর্শীদের আকিদা-বিশ্বাস হলো- তারা হযরত আলী(রাঃ)কে খোদা বলে দাবী করে। সে জন্য তারা ‘ইয়া আলী মদদ’ বলে তাঁকে সম্বোধন করে এবং বলে যে – আল্লাহ তাআলা হযরত জীবরাঈল(আঃ)কে পাঠিয়েছিলেন হযরত আলী(রাঃ)কে নবী বানাতে। কিন্তু, জীবরাঈল(আঃ) ভুল করে মুহাম্মদ(সাঃ)কে নুবুওয়াত দিয়ে দেন*৩১।

এদের আরো আকিদাগুলো হলো-

দু’একজন ছাড়া সব সাহাবীরাই কাফির (নাউযুবিল্লাহ)*৩২।
হযরত আবু বক্কর(রাঃ) ও হযরত উমর(রাঃ) কাফির (নাউযুবিল্লাহ)*৩৩।
হযরত আবু বক্কর(রাঃ) ও হযরত উমর(রাঃ)কোরানের মুখালেফাত, বিরোধীতাকারী (নাউযুবিল্লাহ)*৩৪।
শিয়াদের ইমামদের উপর ঈমান আনা নবীদের উপর ঈমান আনার সমান*৩৫।
শিয়াদের ইমামদের হাতে জান্নাত-জাহান্নাম, তাদের ইমামরা যাকে ইচ্ছা জান্নাত ও জাহান্নামে পাঠাতে পারবে*৩৬।
মুতা (কিছুক্ষণের জন্য) বিবাহ করা অনেক সওয়াবের কাজ, এটা কোন জেনা নয়*৩৭।
হযরত আয়শা(রাঃ) জেনাকারিনী (নাউযুবিল্লাহ)*৩৮।
বর্তমান কোরআন আসল কোরআন নয়, আসল কোরআন ৪০ পারা এবং ৬০ হাত লম্বা*৩৯।
হযরত উমর(রাঃ) রাসূল(সাঃ)এর ঘরে আগুন লাগিয়েছেন (নাউযুবিল্লাহ)*৪০।
শিয়াদের প্রসিদ্ধ আলেম ও লেখক ‘বাকর মজলিসি’ তাঁর স্বীয় গ্রন্থ ‘হায়াতুল ক্বুলুব’এর মধ্যে উম্মুল মু’মেনীন হযরত আয়শা(রাঃ) ও হযরত হাফসা(রাঃ)কে বারবার মুনাফিক বলে আখ্যায়িত করেছেন। এমনকি তিনি একথাও লখেছেন যে, হযরত আয়শা(রাঃ) ও হযরত হাফসা(রাঃ) রাসূল(সাঃ)কে বিষপান করিয়ে শহীদ করে দিয়েছেন (নাউযুবিল্লাহ)*৪১।
শিয়াদের প্রামাণ্য গ্রন্থ ’উসূলে কাফী’ তে কোরআনের আয়াত - ‘ওয়ালাকিন্নাল্লাহা হাব্বাবা ইলাইকুমুল ঈ’মানা ওয়াযাইয়্যানাহু ফি ক্বুলুবিকুম ওয়াকাররাহা ইলাইকুমুল কুফরা ওয়ালফুসুকা ওয়াল ইসইয়ান’- এর ব্যাখা প্রসঙ্গে লেখা হয়েছে যে, আয়াতটির মধ্যে ‘ঈমান’ দ্বারা হযরত আলী(রাঃ)কে ও ‘কুফর’ দ্বারা ইসলামের প্রথম খলিফা হযরত আবু বক্কর(রাঃ)কে এবং ‘ফুসক’ দ্বারা দ্বিতীয় খলিফা হযরত উমর(রাঃ)কে বুঝানো হয়েছে*৪২।
ইসনা আশারিয়্যার বিংশ খ্রীষ্টাব্দের ইমাম খোমেনী তাঁর লিখিত ফার্সীগ্রন্থ ‘কাশফুল আসরার’ এর ধারাবাহিক আলোচনার মধ্যে প্রথম শিরোনাম স্থাপন করেন- ‘মুখালাফাতে আবু বক্কর বা নচ্ছে কোরআন’(কোরআনের সাথে আবু বক্করের বিরোধতা)। আর দ্বিতীয় শিরোনামে লিখেন - ‘মুখালাফাতে উমর বা কোরআনে খোদা (আল্লাহর কোরআনের সাথে উমরের বিরোধীতা)*৪৩।

শিয়াদের ব্যাপারে মুসলমানদের মতামত

যাঁরা হযরত আবু বক্কর(রাঃ) ও হযরত উমর(রাঃ)এর চেয়ে হযরত আলী(রাঃ)কে উচ্চ মর্যাদাশীল রূপে বিশ্বাস করে, তাদেরকে কাফির বলা যাবেনা, তবে এ কারনে তারা ভুলের মধ্যে আছে*৪৪।
যারা মনে করে কোরআন শরীফ হুবহু নেই, কিছু বেশ কম হয়েছে এবং যারা মনে করে আল্লাহর আত্মা হযরত আলী(রাঃ)এর মধ্যে প্রবেশ করেছে- তাদেরকে মুসলমান বলা যাবেনা*৪৫।
শিয়াদের ‘আকিদায়ে ইমামাত’ হযরত(সাঃ) এর খতমে নুবুওয়াতের বিরুদ্ধে এক প্রকাশ্য বিদ্রোহ এবং ইসলামের শাশ্বত বিধানের বিকৃতি সাধনে এক জগণ্য ষড়যন্ত্র। শিয়াদের এ ‘আকিদায়ে ইমামাত’ হলো ইসলামের সর্বস্বীকৃত ‘আকিদায়ে খতমে নুবুওয়াত’এর বিলুপ্তি সাধন করতঃ মিথ্যা নুবুওয়াতের চোরাপথ খোলার এক মন্ত্র রচনা। শিয়াদের ‘আকিদায়ে ইমামাত’ আদতেই দূর্বল ভিত্তির উপর প্রতিষ্টিত। যে কারনে বেশীদিন এর ভার রক্ষা করা যায়নি। ফলে তাদের ইমামগণের সিলসিলা ১২ নম্বরে সমাপ্ত করে শেষ ইমামকে এক অজানা গর্তে গায়েব করে দেয় ২৬০ হিজরীতে। তারপর সাড়ে ১১শত বছর গত হলেও এ পর্যন্ত কেহ জানেনা তাদের ১২তম ইমাম কোথায় কি অবস্থায় আছেন*৪৬।
যেহেতু তিন খলিফা [হযরত আবু বক্কর(রাঃ) ও হযরত উমর(রাঃ) এবং হযরত উসমান(রাঃ)] এর আমলে হযরত আলী(রাঃ) স্বয়ং আপন হাতে মুসলমানদের বাইয়্যাত গ্রহণের আহ্বান জানাননি, সেহেতু হযরত আলী(রাঃ)এর প্রতিও শিয়ারা ক্ষীপ্ত*৪৭।
কোরআনের আয়াত – ‘আমিই এই কোরআনকে নাযিল করেছি এবং আমিই এর হিফাজতকারী’- আল্লাহর এ দৃঢ় বক্তব্যকে চ্যালেঞ্জ ও মিথ্যা সাব্যস্থকারী হলো শিয়াদের কোরআন বিকৃতির আকিদা*৪৮।
কোরআনের আসল কপি ১২তম ইমামের সহিত অজানা গর্তে লুকিয়ে আছে, শিয়াদের এ আকিদা তাদের দু’চারজন আলেম ব্যতিত বাকি সকলরই স্বীকৃত*৪৯।
ইসলামের প্রথম কালেমা ও কোরআনের প্রতি যেখানে আস্থা নেই , সেখানে তাদের মধ্যে ইসলামের কিছুই বাকি থাকতে পারেনা*৫০।
যে সকল শিয়া নিম্নলিখিত আকিদায় বিশ্বাসী , তারা কাফের। আর যারা তাদের অনুসরণ করবে তারাও কাফের। কাফের সাব্যস্থকারী আকিদাগুলো হল –
কোরআন পরিবর্তনের আকিদা।
আল্লাহর উপর মিথ্যাচারর অপবাদ আরোপ।
আম্বিয়ায়ে কিরামের প্রতি ‘তাকিয়া’ বা মুনাফেকির অপবাদ।
হযরত আবু বক্কর(রাঃ), হযরত উমর(রাঃ) এবং হযরত উসমান(রাঃ) এর উপর কুফর ও মুনাফেকির অপবাদ আরোপ এবং তাঁদের সাহাবিত্ব ও খেলাফত অস্বীকার।
শিয়াদের ইমামদেরকে নিষ্পাপ ও আলেমুল গায়েব রূপে বিশ্বাস পোষণ।
খতমে নুবুওয়াত আকিদার অস্বীকার ইত্যাদি।শিয়া সম্প্রদায়ের ইসনা আশারিয়্যা দলের লোকেরা উল্লেখিত আকিদাগুলো পোষণ করে বিধায় তারাও কাফের*৫১।
শিয়ারা কারবালার বাইরে সিজদা করার জন্য কারবালার বিশেষ স্থানের মাটি সংগ্রহ করে এবং সেই মাটি দ্বারা ছোট ছোট চাকতি তৈরী করে চাকতীতে কপাল ঠেকিয়ে সিজদা করে। এমনকি পবিত্র মক্কার বাইতুল্লাহ শরীফ এবং মদীনার মসজিদে নববীতে নামাজ পড়ার সময়ও তারা সেই চাকতি ব্যবহার করে। অথচ এটা হাদীস শরীফের সুস্পষ্ট ঘোষণার বিপরীতে একটা বাড়াবাড়ি। কেননা, রাসূল(সাঃ) স্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা করেছেন যে, আল্লাহ পাক সমগ্র ভূ-ভাগই আমার জন্য মসজিদ বা সেজদার স্থান সাব্যস্থ করেছেন*৫২।
আবু হনিফা নামে হযরত আলী(রাঃ)এর কোন সন্তান ছিলনা। হযরত ফাতেমা(রাঃ)র ইন্তেকালের পর হানাফিয়্যা গোত্রের খাওলা বিনতে জাফর ইবনে কাইস নামীয় এক মহিলাকে হযরত আলী(রাঃ) বিয়ে করেছিলেন। এই মহিলার গর্ভে তাঁর যে পুত্র সন্তানের জন্ম হয়েছিল তাঁর নাম ছিল মুহাম্মদ। বনি হানাফিয়্যার উক্ত মহিলাকে বিবি হানাফিয়্যা নামে ডাকা হতো বলেই তাঁর গর্ভজাত সন্তানকে মুহাম্মদ ইবনুল হানাফিয়্যা ডাকা হতো। কারবালার ঘটনার পর তিনি বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন। এমনি এক যুদ্ধে তিনি নিখোঁজ হয়ে যান। শিয়া মতালম্বীরা তাঁর নিখোঁজ হবার ঘটনাটি নিয়ে নানা গল্পের সৃষ্টি করে। অথচ, ইসলামের ইতিহাসের নির্ভরযোগ্য সুত্রগুলিতে এ ধরণের কোন তথ্যের উল্লেখ নাই*৫৩।

সবশেষে বলতে হয়, শিয়ারা একটা বিভ্রান্ত ফেরকা। এদের অধিকাংশই কাফের। প্রাথমিক অবস্থায় রাজনৈতিক বিতর্কের কারণে বৃহত্তর মুসলীম উম্মাহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লেও পরবর্তীতে আকিদা – বিশ্বাসের ক্ষেত্রেও বড় ধরণের বিভ্রান্তিতে জড়িয়ে তারা মিল্লাতে ইসলামিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে*৫৪।

শিয়াদের মতাদর্শ সম্পর্কে পূর্ণ রূপে জ্ঞান অর্জনের লক্ষ্যে প্রয়োজন হবে আরও অধিক অধায়নের*৫৫।

===================================

তথ্যসুতের বিবরণ

মাসিক মদীনা, জুলাই-২০০৩ সংখ্যা, পৃষ্ঠা-৪৭ , সুত্র নং- ৪,৭,১৫,১৮,১৯,৫৪
মাসিক মদীনা, অক্টোবর-২০০৩ সংখ্যা,পৃষ্ঠা-৪৬ , সুত্র নং- ১,১১,১৪,১৫,১৬,৩০
মাসিক মদীনা, নভেম্বর-২০০৩ সংখ্যা, পৃষ্ঠা-৫৭ , সুত্র নং- ২,৩,২১,৫২,
মাসিক মদীনা, জুলাই-২০০৫ সংখ্যা, পৃষ্ঠা-০৯ , সুত্র নং- ৯,১২,
মাসিক মদীনা, সেপ্টেম্বর-২০০২ সংখ্যা, পৃষ্ঠা-৫৯ , সুত্র নং-২০,৫৩
দাওয়াতুল হক, মে-২০০২ সংখ্যা, পৃষ্ঠা-৫৫ ,সুত্র নং- ৪৪,৪৫
দাওয়াতুল হক, অক্টোবর/নভেম্বর-২০০৩ সংখ্যা,পৃষ্ঠা-৩৯,৪০, সুত্র নং- ৬,৮,২৫,২৮,৪৬,৪৭,৪৮,৪৯,৫০
দাওয়াতুল হক, নভেম্বর-২০০৩ সংখ্যা,পৃষ্ঠা-৩৯ , সুত্র নং- ২২,২৩,২৪
দাওয়াতুল হক, মার্চ-২০০৪ সংখ্যা,পৃষ্ঠা-১৫ , সুত্র নং-১৩,২৯
দাওয়াতুল হক, ফেব্রোয়ারী-২০০৫ সংখ্যা, পৃষ্ঠা-১২,৪০, সুত্র নং-৫,১০,১৬,১৭,২৬,২৭,৩১,৩২,৩৩,৩৪,৩৫,৩৬,৩৭,৩৮,৩৯,৪০,৪১,৪২,৪৩,
দাওয়াতুল হক, মার্চ-২০০৫ সংখ্যা,পৃষ্ঠা- ৩৯ সুত্র নং- ৫১
ফাসলুন খিত্তাবপৃষ্ঠা-৭০ , সুত্র নং-২৬,
কাশফুল আসরারপৃষ্ঠা-১৭,১১৭,১৪৪,১৫০,১৭৬,৯৫০ সুত্র নং-৩৩,৩৪,৩৫,৩৭,৩৯,৪৩,
হায়াতুল ক্বুলুব পৃষ্ঠা-৮৭০ সুত্র নং-৪১
উসূলে কাফীপৃষ্ঠা-২৬৯ সুত্র নং-৪২
আহসানুল ফতোয়াপৃষ্ঠা-৭৫ সুত্র নং-৪৪,৪৫
ফতোয়ায়ে আলমগিরীয়্যা দ্বিতীয় খন্ডপৃষ্ঠা-২৬৩,২৬৪সুত্র নং-৫১
সুত্র – ৫৫ এর জন্য দেখুন
সুরা বাকারা , আয়াত-২
সুরা হিজর, আয়াত-৯
সুরা মু’মিনুন , আয়াত-৭
মাসিক মুঈনুল ইসলাম,জুন-২০০২ইং সংখ্যা, পৃষ্টা-৪০
মাসিক মুঈনুল ইসলাম,এপ্রিল-২০০৫ইং সংখ্যা, পৃষ্টা-৩১
ফতোয়ায়ে শামী ৩য় খন্ড, ২৯৪ পৃষ্ঠা
আল মাওছুয়াতুল ফিকহিয়্যাহ- ৩৫/১৪
বাদায়ী- ৭/১০২,১০৩ঝ) হাশিয়াতুস সিহাব – ৩/৩৭২,৩৭৩,৩৮৩,৩৮৪ঞ) মিশকাত শরীফ – ১/১১
গুণিয়াতুত্তালেবীন (আবদুল কাদের জিলানী রহঃ)
তোহফায়ে ইসনা আশারিয়্যা (শাহ আবদুল আজীজ মুহাদ্দেস দেহলভী রহঃ)
আমি ‘শিয়া মতবাদ’ সম্পর্কে ছিলাম সম্পূর্ণ অজ্ঞ। অর্থাৎ শিয়া নামে মুসলমানদের একটা বিতর্কিত দল আছে বিশ্বব্যাপী তা আমি জানতাম না। খবরের কাগজে দেখতাম ঢাকার বংশাল হোসেনী দালান থেকে মহররম পালনের উদ্দেশ্যে মুসলমানদের তাজিয়া মিছিল বের হচ্ছে । কিন্তু এইসব মুসলমানের আভ্যান্তরীন বিষয়ে ছিলাম সম্পূর্ণ অজ্ঞ। মনে পড়ে গেল সেই চিরন্তন কথাটি – “যে ভ্রমণ করেনি তার কিছুই জানা হলোনা”। সত্যিই তাই অনুভব করেছিলাম যেদিন বিদেশে এসে এইসব মুসলমানদের আভ্যান্তরীন বিষয়ে জানতে পারলাম। ১৬ই ডিসেম্বর ২০০০ ইং তারিখে দেশ ত্যাগ করে যখন সৌদি আরবের মদিনায় এসে কর্মস্থলে পৌঁছলাম,তখন জ্ঞান রাজ্যের দ্বার যেন মুক্ত হয়ে গেল। জানতে পারলাম এই শিয়া নামের বিতর্কিত মুসলীমের এ দলটি সম্পর্কে। বুঝতে পারলাম আমি যে স্পন্সরের হয়ে এখানে কাজ করতে এসেছি , সেই স্পন্সরই এ বিতর্কিত মুসলীমদের একজন।২০০০ সালে যখন কর্মে যোগ দিলাম মুক্ত হতে থাকল এ দলের আভ্যন্তরিন দিক সমুহ। আমার স্পন্সরের ইসলামী আকিদা অনুসরণ আমাকে অবাক করলো, ভাবিয়ে তুলল আমায়। এ কোন ধরণের মুসলীম ? মনের অজান্তেই বের হয়ে এল এ প্রশ্ন! যাদের নামাজ পড়তে দেখি দুই ওয়াক্ত , তাও লুকিয়ে আন্ডারগ্রাউন্ডে গিয়ে। তারা মুসলমানদের মসজিদে নামাজ না পড়ে মাটির নীচে লুকিয়ে নামাজ পড়ে। আরও কত কিছু দেখলাম যা সবই এই প্রবন্ধেই উল্লেখ রয়েছে । এসব দেখে আমি আমার ভিসা যার কছ থেকে কিনেছি তাকে জিজ্ঞেস করলাম – এগুলো কোন ধরণের মুসলীম । সে বললো এগুলো শিয়া মুসলীম ।এদের ইসলামী আকিদা আমাদের মত নয়। সেদিনই প্রথম জানলাম এ শিয়া মুসলীম সম্পর্কে। তারপর তাদের সম্পর্কে বিস্তারত জানার কৌতুহল জেগে উঠল মনে। সেই সুত্রেই দেশ থেকে ডাকযোগে ইসলামী ম্যাগাজিনগুলোর গ্রাহক হতে থাকি। সংগ্রহ করতে থাকি এ বিষয়ক বিভিন্ন বই–কিতাব। জানা হলো অনেক কিছু। আর এ সকল তথ্য দিয়েই এ প্রবন্ধের আয়োজন।

‘শিয়া মতবাদ’ কি ?

সাহাবায়ে কেরামের কাল থেকেই মুসলীম উম্মাহর মধ্যে ‘শিয়া’নামক একটা দল সৃষ্টি হয়ে মুসলীম উম্মাহর ঐক্য ও সংহতির ক্ষেত্রে মারাত্মক সমস্যার সৃষ্টি করে রেখেছে*১।

মৌলিকভাবে শিয়া একটি বিভ্রান্ত দলের নাম। এদের মধ্যে অনেক দল-উপদল রয়েছে*২।

প্রথমদিকে এ ফেরকাটি সৃষ্টির পেছনের কারণ রাজনৈতিক হলেও পরবর্তীতে ইসলামের মৌলিক আকিদা বিশ্বাসের ঠিক বিপরীত ধ্যান-ধারণা দ্বারা প্রচারিত হয়েছে*৩।

তৃতীয় খলিফা হযরত উসমান(রাঃ)এর শাসনামলে আবদুল্লাহ ইবনে সাবা নামক ইয়েমেনের এক ইহুদী পণ্ডীত মুসলমানদের ছদ্মবেশে মদিনায় এসে মুসলমানদের মধ্যে দলাদলীর সৃষ্টি করে। কারবালার মর্মান্তিক ঘটনার পর আবদুল্লাহ ইবনে সাবার দলটিই ‘শিয়া আন্দোলনকে’ একটি ধর্মীয় ফেরকায় রূপান্তর করে*৪।

‘শিয়া মতবাদ’ হলো মূলতঃ ইহুদী মতবাদের দ্বিতীয় সংস্করন*৫।

ইসলামের প্রতি এক বিদ্বেষী মতবাদের নামই হলো ‘শিয়া মতবাদ’। শিয়া আকিদা যদি সত্যি হয় তবে ইসলাম হবে মিথ্যা। আর ইসলাম যদি সত্যি হয় তবে শিয়া মতাদর্শের বাতুলতা সম্পর্কে সন্দেহ থাকার অবকাশ নেই*৬।

‘শিয়া মতবাদ’ উৎপত্তির মূলে

শিয়ানে আলী বা আলী (রাঃ)এর প্রতি নিবেদিত প্রাণদের দলটি ছিল শুরুতে একটি রাজনৈতিক মতভেদ মাত্র। হযরত রাসূলে কারীম (সাঃ)এর ওফাতের পর মুসলমানদের খলিফা কে হবেন , তা নিয়ে সৃষ্ট মতভেদ থেকে ক্ষুদ্র একটি দল হযরত আলী (রাঃ)কে খেলাফতের বৈধ উত্তরাধীকারী এবং তাঁর পূরববর্তী তিন খলিফাকে অন্যায়ভাবে ক্ষমতা দখল করেছিলেন বলে মনে করতো। এ ভিন্নমতটিই রাজনৈতিক মতপার্থক্যের সীমা অতিক্রম করে ধর্মীয় আঁকার ধারণ করে*৭।

‘শিয়া মতবাদ’ হযরত(সাঃ)এর ওফাত দিবস থেকেই নবীর সহিত উম্মতের সম্পর্কচ্ছেদ ঘটাতে এবং দ্বীনের মূলোৎপাঠনে স্বচেষ্ঠ। ফলে ইসলামের মোকাবেলায় ইহুদী কর্তৃক শিয়া ধর্মের উৎপত্তি ঘটে*৮।

ইসলামের তৃতীয় খলিফা হযরত উসমান(রাঃ)এর হত্যার ষড়যন্ত্র ছিল ইহুদী ষড়যন্ত্র। এরপর হযরত আলী(রাঃ)এর ওফাত। এরপর শিয়া ধর্মের উৎপত্তি। ইহুদী পণ্ডীত আবদুল্লাহ ইবনে সাবা আল ইহুদীর চিন্তা-চেতনার আলোকেই এই ‘শিয়া মতবাদ’এর উৎপত্তি*৯।

ইসলামের চিরশত্রু এ ফিৎনা সৃষ্টিকারী ইহুদীদের মূলনায়ক মুনাফিক আবদুল্লাহ ইবনে সাবা আল ইহুদী এবং তার মদদপুষ্টরা ইসলামের প্রবাহমান স্রোতধারাকে স্তব্ধ করার লক্ষ্যে এবং মুসলীম ঐক্যে ফাটল ধরিয়ে দেয়ার নিমিত্তে হযরত আলী(রাঃ)এর প্রেমে মুগ্ধ হবার রূপ দিয়ে শিয়া ফেরকার ভিত্তি স্থাপিত হয়*১০।

‘শিয়া মতবাদ’এর ভিত্তি রচনাকারী মূল নায়কের পরিচয়

‘শিয়া মতবাদ’এর মূল উদগাতা ছিল ইহুদী তাত্বিক আবদুল্লাহ ইবনে সাবা আল ইহুদী। ইয়েমেনের অধিবাসী এ ধূর্ত লোকটি তৃতীয় খলিফা হযরত উসমান(রাঃ)এর শাসনামলে মদীনায় আগমন করে নিজেকে একজন নিষ্টাবান মুসলমান রূপে প্রকাশ করে খলিফার নৈকট্য প্রাপ্তদের মধ্যে স্থান করে নিতে স্বচেষ্ঠ হয়। কিন্তু, উসমান(রাঃ) তার গতিবিধি দেখে সন্দিহান হয়ে তাকে দূরে সরিয়ে দেন। এ ব্যক্তিই পরে এমন একটি বক্তব্য দাঁড় করায় যে , হযরত নবী করীম(সাঃ)এর পর তাঁর বৈধ উত্তরাধীকারী ছিলেন হযরত আলী(রাঃ)। কিন্তু, চক্রান্ত করে তাঁকে সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এ ব্যক্তি হযরত উসমান(রাঃ)এর বিরুদ্ধেও নানা ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করতে থাকে*১১।

ফলশ্রতিতে হযরত উসমান(রাঃ) দুষ্কৃতকারীর হাতে শাহাদত বরণ করেন। আর এ আবদুল্লাহ ইবনে সাবা আল ইহুদীই প্রথম ব্যক্তি যে প্রচার করেছিল যে , হযরত আলী(রাঃ) মৃত্যুবরণ করেননি, তিনি আবার ফিরে আসবেন। শুধু ক’দিনের জন্য একটি পর্বতের অপর প্রান্তে লুকানো অবস্থায় থাকবেন। তার এ চিন্তা-চেতনায় নির্ভর করে মুসলমানদের মধ্যে ভাঙ্গন সৃষ্টির স্থায়ী রূপ দেয়া হলো তাও ইহুদীদের হাতে*১২।

‘শিয়া মতবাদ’এর জন্মদিন ঐতিহাসিক হিট্টির মতে – ১০ই মুহররম ‘শিয়া মতবাদ’এর জন্ম হয়*১৩।

বহুধাবিভক্ত ‘শিয়া মতবাদ’এ বিশ্বাসীরা

ইহুদী তাত্বিক আবদুল্লাহ ইবনে সাবা আল ইহুদীর চিন্তা-চেতার ধারায় শেষ পর্যন্ত শিয়ারা একটা বিরাট দলে পরিণত হয়ে যায়। কালে কালে তারা ইসলামী আকিদা বিশ্বাসের সমান্তরাল নতুন আকিদা-বিশ্বাস , এবাদত পদ্ধতি এবং চিন্তা চেতনার সৃষ্টি করে*১৪।

বিচিত্র বিশ্বাসের অনুসারী হয়ে তারা পরবর্তীতে বহুধাবিভক্ত হয়ে বিভিন্ন উপদলে অস্থিত্ব লাভ করে। এমনকি ৭০(সত্তর) এরও অধিক উপদলে বিভক্ত হয়ে যায়। এসব কোন কোন উপদলের বিশ্বাস এতই জগণ্য যে, তাদেরকে কোন মাপেই মুসলীম উম্মাহর অংশ রূপে গণ্য করার উপায় নেই*১৫।

শিয়াদের বহুধাবিভক্ত উপদলের মধ্যে সবচেয়ে প্রভাবশালী যে দল , সেটি হলো – ‘শিয়ায়ে ইমামিয়া বা শিয়ায়ে ইসনা আশারিয়া’। বর্তমানে এ দলটিই ‘শিয়া’ নামে পরিচিত। অন্যান্য উপদলগুলোর মধ্যে – দরুজী, হুমাইরী , গোরাবী দলগুলো অন্যতম*১৬।

‘শিয়ায়ে ইমামিয়া বা শিয়ায়ে ইসনা আশারিয়া’এর বিংশ খ্রীষ্টাব্দের ইমাম

বিগত বিংশ খ্রীষ্টাব্দে ‘শিয়ায়ে ইমামিয়া বা শিয়ায়ে ইসনা আশারিয়া’র পথ প্রদর্শক ও মহান নেতা ছিল ইরানী বিপ্লবের আহ্বায়ক আয়াতুল্লাহ রুহুল্লা খোমেনী*১৭।

শিয়াদের আকিদা-বিশ্বাস

শিয়াদের মূল দল তথা ইহুদী পণ্ডীত আবদুল্লাহ ইবনে সাবার মতাদর্শীরা দাবী করে যে, খলিফা হবার অধিকারী ছিলেন হযরত আলী(রাঃ)। এটা তাঁর রাজনৈতিক অধিকার নয় , ধর্মীয় অধিকার। সাহাবায়ে কেরামের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ট অংশ হযরত আলী(রাঃ)কে খলিফা রূপে মনোনীত না করে ধর্মচ্যুত হয়েছিলেন*১৮।
শিয়াদের আরেক দল আরও একটু অগ্রসর হয়ে হযরত আলী(রাঃ) সম্পর্কে এরূপ ধারণা প্রচার করতে থাকে যে , প্রকৃত প্রস্তাবে হযরত আলী(রাঃ)ই নবী ছিলেন। ফিরিস্তা জীবরাঈল(আঃ) ভুলক্রমে ওহী হযরত মুহাম্মদ(সাঃ) র নিকট নাযিল করে ফেলেছিলেন*১৯।
শিয়াদের আরেক দলের বিশ্বাস যে, কারবালার ঘটনার পর বিদ্রোহ ঘোষনাকারী নিখোঁজ হওয়া মুহাম্মদ ইবনুল হানাফিয়্যাকে ইরাকের একটি পাহাড়ী অঞ্চলে সুরক্ষিত করে রাখা হয়েছে। কেয়ামতের আগে দাজ্জালের মোকাবেলা করার উদ্দেশ্যে প্রতিশ্রুত ইমাম মাহদীর সহযোগী রূপে তাঁর আবির্ভাব হবে*২০।
শিয়াদের উপদল সমুহের একটি বিরাট অংশের ধারণা – ইবলিশ শয়তান পৃথিবীর প্রতি ইঞ্চি জমিনে সিজদা করে সমগ্র ভূ-ভাগই নাপাক করে ফেলেছে। একমাত্র কারবালার ঐ অংশটুকুই এ অভিশাপ থেকে মুক্ত আছে, যে অংশে হযরত ইমাম হোসাইন(রাঃ) এবং আহলে বাঈতের সদস্যগণ তাবু স্থাপন করেছিলেন*২১।
শিয়াদের ‘আকিদায়ে ইমামত’ হলো- ইসলামী আকিদা মতে একজন স্বতন্ত্র শরীয়াতধারী নবীর যে অর্থ , অবস্থান ও মর্যাদা; তাদের নিষ্পাপ ইমামেরও ঠিক একই অর্থ, মর্যাদা ও মহত্ত্ব*২২।
শিয়াদের মতে, নবী করীম(সাঃ)এর ওফাতের পর সমগ্র সাহাবায়ে কেরামদের মধ্যে যাঁরা হযরত আবু বক্কর সিদ্দীক(রাঃ)কে খলিফা পদে স্বীকৃতি দিয়ে তাঁর হাতে বাইয়াত নিয়েছিলেন , তাঁরা সকলেই কাফেরে পরিণত(নাউযুবিল্লাহ)। কেননা, তাঁরা নিষ্পাপ ইমাম হযরত আলী(রাঃ)এর হাতে বাইয়াত হন নাই। এটাই হলো শিয়াদের সাহাবায়ে কিরামের প্রতি বিদ্বেষ*২৩।
শিয়াদের মতে, কিয়ামত পর্যন্তের জন্য নবী করীম(সাঃ) মানুষের হিদায়াতের উদ্দেশ্যে প্ররীত হয়েছিলেন- এটা সত্য নয়। নবী করীম(সাঃ)এর ওফাতের পর একদিনের জন্যও ইসলাম টিকে থাকেনি। কারণ, দীর্ঘ ২৩(তেইশ) বছরে ইসলামের যে সেনাদল তিনি নিজের ও উম্মতের মধ্যে সেতুবন্ধন রূপে তৈরী করেছিলেন, সে সেনাদলের গোটা জামাতই নবী করীম(সাঃ)এর ওফাতের পর ধর্মান্তরিত হয়ে গেছে (নাউযুবিল্লাহ)। শিয়াদের সাহাবায়ে কিরামের প্রতি বিদ্বেষের এটা আর একটা নমুনা*২৪।
শিয়াদের মতে, কোরআন মজিদ অবিকৃত থাকেনি। বর্তমান আকারে যে কোরআন মজিদ মুসলমানদের হাতে আছে , তা নির্ভেজাল কোরান নয় বরং তা হযরত উসমান(রাঃ) কর্তৃক সংকলিত কোরআন*২৫।
শিয়াদের প্রসিদ্ধ আলেম ও মুহাদ্দিস ‘নূরী তাবরছি’ কোরআনে কারীমের মধ্যে পরিবর্তন পরিবর্ধনের প্রমাণের লক্ষ্যে একটি বৃহৎ গ্রন্থ রচনা করেছেন। যার নাম ‘ফছলুল খিত্বাব ফি এছবাতি তাহরীফে কিতাবে রাব্বিল আরবাব’। এ গ্রন্থে লেখা হয়েছে যে, পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও রূপান্তরের ক্ষেত্রে কোরআনে কারীম তাওরাত ও যবুর , ইঞ্জিলের মতই (নাউযুবিল্লাহ)*২৬। এ কিতাবে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, মূল কোরআনে কারীম যা নিয়ে হযরত জীবরাঈল(আঃ) রাসূলে কারীম(সাঃ)এর নিকট অবতীর্ণ হয়েছিলেন তার মধ্যে ১৭০০০(সতেরো হাজার) আয়াত ছিল। কিন্তু, বর্তমানে মুসলমানদের নিকট যে কোরআন শরীফ বিদ্যমান আছে , সে কোরআনের মধ্যে হযরত আয়শা(রাঃ) এর গণনানুযায়ী মাত্র ৬৬৬৬ (ছয় হাজার ছয়শত ছেষট্টি)টি আয়াত রয়েছে*২৭।
শিয়ারা ইসলামের কলেমায় সন্তুষ্ট নয় বরং তারা কালেমার সহিত ‘আলী ওয়ালিউল্লাহ্ অছি রাসূলুল্লাহ ( আলী(রাঃ) রাসূল(সাঃ)এর একমাত্র ওয়ারিশ ও তাঁর সরাসরি খলিফা )’ প্রভৃতি বাক্য যোগ করে*২৮।
শিয়ারা কারবালার ঘটনার পর থেকে মুহররম মাসের প্রথম দশ দিন শোকদিবস পালন করে*২৯।
শিয়াদের উপদল – দরুজী, হুমাইরী, গোরাবী মতাদর্শীরা প্রচার করে যে, পবিত্র কোরানের একটি উল্লেখযগ্য অংশ হযরত ফাতেমা(রাঃ) এবং হযরত আলী(রাঃ) এর উপর নাযিল হয়েছিল- সেই অংশটুকুই হচ্ছে আসল কোরআন*৩০।
শিয়ায়ে ইসনা আশারিয়্যার মতাদর্শীদের আকিদা-বিশ্বাস হলো- তারা হযরত আলী(রাঃ)কে খোদা বলে দাবী করে। সে জন্য তারা ‘ইয়া আলী মদদ’ বলে তাঁকে সম্বোধন করে এবং বলে যে – আল্লাহ তাআলা হযরত জীবরাঈল(আঃ)কে পাঠিয়েছিলেন হযরত আলী(রাঃ)কে নবী বা

২৩ শে জুন, ২০১৪ রাত ১২:৩৫

গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: সাহাবায়ে কিরামের মধ্যে যারা আলী রা.'র অনুসারী ছিলেন তাঁদের শিয়া বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে সেই সাহাবা এবং সেই তাবিয়িগণ সঠিক ছিলেন। তাঁরা আলী রা.'র পক্ষে যুদ্ধ করেছেন, শহীদ হয়েছেন, সেই যুদ্ধের নেতৃত্ব আলী রা. দিয়েছেন, তাই ওইসব সাহাবা রা. গণকে বর্তমানের 'শিয়া' বলা হলে তা হবে চরম ভুল কেননা তার মাধ্যমে স্বয়ং আলী রা. কে ভ্রান্ত বলা হয় এবং এর ফলে ইসলামে না থাকাই ভাল।

'শিয়ানে আলী রা.' বা আলী রা.'র অনুসারী শব্দটি অত্যন্ত ভাল।
এটা কোন 'রাজনৈতিক' বিষয় নয়, কারণ, ইসলাম কোন রাজনৈতিক বিষয় নয়, বরং ইসলাম একটা পূর্ণ ধর্ম, যার মধ্যে কোন কোন মৌলিক ঘটনাকে সামান্য 'রাজনৈতিক' বলা কুফরি পন্থার নামান্তর।

শিয়া মতবাদের উপর ইহুদি প্রভাব থাকতেই পারে। ইসলামের অনেক মতভেদের পিছনেই ইহুদি প্রভাব রয়েছে, যেমন, কাদিয়ানি মতবাদ, সৌদি আরবের আবদুল ওয়াহহাব ইবনে নজদীর মতবাদ ইত্যাদি। সাইয়্যিদি উসমান রা.'র হত্যার পিছনে ইহুদি হাত থাকা খুবই স্বাভাবিক। ইহুদিদের মধ্যে কিছু মানুষ যারা দুর্ভাগ্যজনকভাবে জাতিকে পরিচালিত করেন, তাঁরা শুরু থেকেই ইসলামে মতভেদ তৈরির কাজে ব্যস্ত ছিলেন।

শিয়া কালিমা পাঠকারী অর্থাৎ যারা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ এই কালিমায় বিশ্বাস রাখে, তাদের মধ্যেই অনেক ফির্কার এক ফির্কা মাত্র। আলাদা কোন ধর্ম নয়। রাসূল দ.'র উম্মতের মধ্যেই যারা বাড়াবাড়ি করার কারণে পথভ্রষ্ট হয়, তেমনি এক মত বড়জোর।

ইতিহাসবিদ প্রফেসর হিট্টি ছিলেন বেশ ইসলাম বিদ্বেষী। তিনি ১০ মুহররম শিয়া মতবাদের উৎস বলে যা বোঝাতে চাইলেন, তা হল, যারাই ইমাম হুসাইন রা.'র শাহাদাতে শোকগ্রস্ত হয়েছে, তারাই শিয়া- এই কথাটা চরম বিকৃতি।

ইসলাম রাজনৈতিক নয়, বরং সম্পূর্ণ আধ্যাত্মিক একটা ধর্ম। তাই, ইসলামের খিলাফাতের অধিকারও আধ্যাত্মিক। তাই মাওলা আলী রা. ছাড়াও অন্য খলিফাদের আমরা বলতে শুনি, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল দ. আমাকে দ্বিনের জন্য নির্বাচিত করাতেই আপনাদের জাতির ও রাষ্ট্রের দায়িত্ব আমার উপর বর্তাচ্ছে।

ইয়া আলী মাদাদ! বললে যদি শিরক হয়, তাহলে বাচ্চা যে বলে, আব্বু, বাঁচাও, ওটাও শিরক হবে।

যাক, এই লেখায় অনেক কিছুই আরো বিস্তারিতভাবে আছে, যা থেকে তথ্য নিয়ে মূল লেখাকে আরো স্পষ্ট করা যায়। কিন্তু প্রচুর ভুলও আছে, যেমন ইমামাত বা খিলাফাতের ধারাবাহিকতা।

একটা সহজ কথা, জগতের সবাই তো পাপী না, জগতের সবাই পাপী হলে আল্লাহর সেই কথা, ফিরিশতারা, আমি যা জানি, তোমরা তা জানো না- এই কথাই তো ভুল হয়ে যায়।

আরেকটা সহজ কথা, আলিমুল গাইব শুধু আল্লাহ। আর তিনি যাকে যতটুকু ইচ্ছা ততটুকু অদৃশ্যের জ্ঞান দান করেন। আল্লাহ গাইবের জ্ঞান দান করতেই পারেন। এবং আল্লাহর বান্দাদেরকে তা দান করেই থাকেন। তা ইলহাম রূপে হোক বা যে রূপেই হোক।

তাই মহান আহলে বাইতের সদস্যদের অদৃশ্যের অনেক জ্ঞান জানা থাকা বা মাসুম/নিষ্পাপ হওয়া কোন বিচিত্র বিষয় নয়।


মুহাম্মাদ ইবনে হানাফিয়্যাহ নামটা মায়ের গোত্রের কারণে রাখা হয়নি, বরং আলী রা. রাসূল দ.'র নাম ও কুনিয়াত উভয় থেকে নাম রাখার অনুমতি চেয়েছিলেন, যেখানে রাসূল দ.'র নাম হল মুহাম্মাদ এবং রাসূল দ.'র কুনিয়াত বা উপনাম বা টাইটেল বা বংশীয় অন্যতম নাম হচ্ছে হানিফ/হানাফিয়্যাহ। মুহাম্মাদ ইবনে হানাফিয়্যাহ বলতে যে সত্যপন্থীদের পুত্র মুহাম্মাদ রাখা হয়েছে, তা আবু দাউদ শরীফে আমি পড়েছি।

মুহাম্মাদ ইবনে হানাফিয়্যাহ রাদ্বিআল্লাহু আনহুকে এই প্রবন্ধে বারবার 'বিদ্রোহী' বলা হচ্ছে। অথচ তিনি কাফির অভিশপ্ত মাল'উন নরপিশাচ নরকের কীট এজিদের বিরুদ্ধে নেমেছিলেন।

এজিদের বিরোধীতাকারীদের যে 'বিদ্রোহী' বলবে, তার ঈমানের বিষয়ে আর কোন সন্দেহ নেই এবং তা তীর যেমন করে ছুটে গিয়ে লক্ষ্যকে বিদ্ধ করে, আর তা ফিরিয়ে আনা যায় না, তেমন করে ঈমান হারা হয়ে তাদের ক্বদর বা ভাগ্যকে অপরিবর্তনীয়ভাবে বিদ্ধ করেছে (লাইনটা সহীহ হাদিস থেকে নিলাম)।

৩| ২২ শে জুন, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০০

মামুন রশিদ বলেছেন: শিয়া-সুন্নী মতভেদের বেসিক থিংগস এবং তুলনামুলক ধর্মতত্বের মত কঠিন ব্যাপারকে মোটামুটি সহজবোধ্য রুপে প্রকাশ করেছেন ।

২৩ শে জুন, ২০১৪ রাত ১২:৩৮

গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: ভাই এক সহব্লগার বলেছিলেন, তাই চট করে লেখা। আশা করি অনেক অনেক ভাল আছেন।

৪| ২২ শে জুন, ২০১৪ রাত ৯:০৯

মুহাম্মাদ মাহফুজুর রহমান শরীফ বলেছেন:

@ ফািহম িসিিদ্দকী :


আপনার দীর্ঘ কমেন্ট আমি অনেক্ষণ ধরে পড়লাম, এবং এটা আমার ভীষণ পছন্দ হয়েছে।

তাই, এই কমেন্ট-কে আপনার রেফারেন্স সহ কপি-পেস্ট করে যে কোন যায়গায় শেয়ার করার ইচ্ছা দমন করতে পারলাম না।

সেই জন্যই আমি ইসলামের স্বার্থে আপনার আগাম অনুমতি নিয়ে এবং আপনারই রেফারেন্স সহ বেশ কয়েক এক জায়গায় কপি-পেস্ট করতে যাচ্ছি।

উক্ত লেখক "আমার ব্লগ"-এ এটা পোস্ট করেছেন, সেখানেও করতে চাই।

আমি আপনার কাছে গভীর ভাবে আশা করবো যে, আপনি এতে ভিন্ন মত পোষণ করবেন না।


আপনি অনেক ভালো থাকুন।

৫| ২২ শে জুন, ২০১৪ রাত ১০:১৯

সাদরিল বলেছেন: শিয়া সুন্নির পার্থক্য কিছু জানলেও মূল বিষয়গুলো জানতাম না। পোস্ট ফেভারিটে।

২৩ শে জুন, ২০১৪ রাত ১২:৩৮

গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। আসলে দ্রুত সরলভাবে বলতে চাচ্ছিলাম।

৬| ২২ শে জুন, ২০১৪ রাত ১০:২০

মুহামমদল হািবব বলেছেন: লিসানি ভাই ধন্যবাদ, চমৎকার আলোচনার জন্য। অনেক দিন পর লিখলেন নাকি আমিই মিস করেছি আপনার লেখা?
ভালো থাকুন।

ফাহিম ভাই আপনাকেও ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।

২৩ শে জুন, ২০১৪ রাত ১২:৩৯

গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: ভাই আজকাল প্রায় লিখি না। হঠাত লেখা বড় হয়ে গেল, স্ট্যাটাস না করে পোস্ট করে দিলাম। তবে আবার ফিরে আসতে হবেই। উপায় নেই। ভাল থাকুন অনেক অনেক।

৭| ২৩ শে জুন, ২০১৪ রাত ১২:৪৩

ফারগুসন বলেছেন: ধন্যবাদ @ লিসানি & ফাহিম ।

লিসানি , আপনি বলেসেন,শিয়াদের আরেক বিশ্বাস, বারো ইমাম নবীগণের থেকেও শ্রেষ্ঠতর। এই কথা সাধারণ হিসাবে সত্যি, কারণ রাসূল দ. বারবার বলেছেন, তাঁর উম্মাহর মধ্যে নবীগণ থেকেও উচ্চতর মর্যাদার ব্যক্তিরা আসবেন, কিন্তু তাঁরা অবশ্যই নবী নন।
লিসানি বলবেন, এই কথার দলিল কি???

২৩ শে জুন, ২০১৪ সকাল ৯:৪৩

গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: আশা করি একটা এবং তার আলোচনাই যথেষ্ট-

"The scholars of my ummat are like the prophets of Bani Israel"

in some reports it is mentioned "Better than the prophets of Bani Israel"

it is mentioned in the book Fayd al-Qadir Sharh Jami al-Saghir by al-Munawi


1. Those who have called it as ‘mawdu’ have not explained its reason for being ‘mawdu’.

2. The hadith has been quoted by Imam Razi (Rh) in his tafsir under Sura Yunus, ayah 57 (10:57), which means Imam Razi did not consider this hadith to be ‘mawdu’.

Click This Link No=57&tDisplay=yes&UserProfile=0&LanguageId=1

3. Imam Shadhili (Rh) had a dream in which he saw prophet (sal allahu alayhi wa sallam) along with other prophets [alayhimus salam]. Sayyedina Musa (alayhis salam) said to the the the Prophet, Imam al anbiya, the leader of the mankid and the Jinn (sal allahu alayhi wa sallam): “You have said that the scholars of my ummah are like the prophets of Bani Israel”, so (please) showe me one such scholar.The prophet (sal allahu alayhi wa sallam) pointed towards Imam Ghazali (Rh) and said “he”.

This has been narrated by Imam al-Khafaji (Rh) in his book Naeem al-Riyadh.

From this incidence it is seen that when Musa (alayhis salam) quoted the narration, the prophet (sal allahu alayhi wa sallam) did not object. Hence it cannot be called ‘mawdu”

৮| ২৩ শে জুন, ২০১৪ রাত ১২:৫৫

কামরুল ইসলাম রুবেল বলেছেন: আমরা ইসলাম ধর্মাবলম্বী হিসেবে সুন্নী লিখি বা জানি। আইএসআইএল কোন ধরনের সুন্নী জানতে চাই। বা সুন্নীদের মধ্যেওকি নানা মতভেদ আছে?

নামাজ পড়ি রোজা রাখি, বড়জোড় তাবলীগ জামাত, ইজতেমায় যাই, সব পীরকে ভন্ড বলেই জানি, এরচে বেশী জানিনা। তবে জানতে চাই।

২৩ শে জুন, ২০১৪ সকাল ৯:৩৩

গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: ভাই কেমন আছেন?

আসলে গড়পড়তা সুন্নি বলতে যাদের বোঝানো হয় তাদের মধ্যে মূলত এরা আছেন-

১. মাজহাবপন্থী সকলে। হানাফী, শাফিয়ি, হাম্বলি, মালিকি সহ অনেক মাজহাবের সকলেই সুন্নি।
২. গত তিনশ বছর ধরে লা-মাজহাবি বা গাইর মুকাল্লিদ কিছু মতবাদ প্রতিষ্ঠা পেয়েছে, সেই মতবাদ তথা সালাফি/ওয়াহাবি ইত্যাদিকে।

আই এস আই এল হল তেমনি একটা সালাফি চরমপন্থী মতবাদ। ঠিক বোকো হারাম, আল কায়েদা ইত্যাদির প্রতিরূপ। এরা যুদ্ধবাদী এবং চরম উগ্রপন্থী। নি:সন্দেহে শান্তির ধর্ম ইসলাম থেকে অনেকখানি সরে গেছে।

৯| ২৩ শে জুন, ২০১৪ রাত ১২:৫৫

ফারগুসন বলেছেন: লিসানি বলবেন, "আলী রা. ও আহলে বাইতে রাসূল দ. গণকে জীবিত এবং সাহায্য প্রদানে সক্ষম মনে করেন, যা সম্পূর্ণ সঠিক।"--এটা কোথায় পেলেন?

২৩ শে জুন, ২০১৪ সকাল ১০:০১

গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: একটা সহজ সমস্যার কথা আমি বারবারই বলি। আমি কোন ক্যালকুলেটর না ভাই, যে পৃষ্ঠা নাম্বার, আয়াত নাম্বার, চ্যাপ্টার নাম্বার, বইয়ের নাম, লেখকের নাম মনে রাখব। আর লিখি খুবই আলতোভাবে, বইপত্র খুলে লেখা আমার জিন্দেগীতেও পোষাবে না।

আমি যত দ্রুত লিখি, তত দ্রুত কখনোই বইপত্র খুলে লেখা সম্ভব নয়। এবং চাইলেও এরচে স্লো লেখা আমার জন্য চরম কষ্টকর।

এটা কোথায় পেলেন?

এটা ভাই ইসলাম ধর্মে পেয়েছি। না পড়ে অথবা গ্রহণযোগ্য কোন স্কলার/আলিমের কাছে না শুনে কখনোই কোন কিছু বলি না।


Only Allah is your Vali and His Apostle and those who believe, those who keep up prayers and pay the poor-rate while they bow.

This clearly shows that Allah is the helper [wali] of the believers and the Prophet is a helper and those who believe are helpers and 'pay the poor-rate while they bow' refers first of all to Hazrat Ali.

Tirmidhi Sharif too: Ali is the wali of all Muslims after me...

২৩ শে জুন, ২০১৪ সকাল ১০:০৫

গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: আল্লাহর পথে প্রাণ উৎসর্গকারীদের মৃত বলো না, বরং তারা জীবিত, তোমরা তা বুঝতে পারো না এবং তাঁরা রিযক প্রাপ্ত হন।

আলী রা., তাঁর অনেক অনেক সন্তান সকলেই শাহাদাত বরণ করেছেন। আহলে বাইতে রাসূল দ.'র সদস্য বেশিরভাগই শহীদ। তাঁরা অমর, তাঁদের অমর মনে না করা কুফরি, সরাসরি আল্লাহর কথার খিলাফ।

যে এমন জীবিত যে, তার কাছে রিজকও যায়, তার রিজক থেকে ভাগ চাওয়া কোন্ ক্ষেত্রে দোষের বিষয়?

আপনার পিতার কাছে বেতন/লাভের টাকা পৌছাতো বলেই আপনি তার কাছে চাইতেন। এতে আপনার শিরক না হলে, ভুল না হলে মুসলিমদেরও তাদের কাছে চাওয়াতে ভুল হয় না, যারা মৃত নন এবং রিজক পান।

আসলে এইসব নিয়ে অনেক রেফারেন্স, অনেক কথাবার্তা আছে, যা আলাপ করতে তখনি ভাল লাগে, যখন অ্যাপ্রোচটা বিনীত থাকে। ধন্যবাদ।

১০| ২৩ শে জুন, ২০১৪ রাত ১:০১

আহসানের ব্লগ বলেছেন: বিশাল পোস্ট ।
কিছু জানলাম ।

২৩ শে জুন, ২০১৪ সকাল ৯:৩৮

গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: পোস্ট তো ছোট, গড় বৃহৎ আকৃতিরও নয়! ধন্যবাদ।

১১| ২৩ শে জুন, ২০১৪ ভোর ৫:৩৫

যুবায়ের বলেছেন: ধন্যবাদ লিসানী ভাই চমৎকার পোষ্টের জন্য।

আমি পুরোপুরি হতাস!

তবে যা বুঝলাম খমতার জন্যই শিয়া সুন্নীর বিভাজন।
একদল ইসলামের নামে খমতা দখল করতে চায়।
বাকীরা বাদ মতবাদকে পুজি করে।

২৩ শে জুন, ২০১৪ সকাল ৯:৩৭

গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: ক্ষমতার জন্য তো অবশ্যই বিভাজন, সেইসাথে মতবাদের জন্যও বিভাজন ভাই। কোনটা কোন অংশ থেকে কম নয়।

আন্তরিক কৃতজ্ঞতা রইল, ভাল থাকুন যুবায়ের ভাই।

১২| ২৩ শে জুন, ২০১৪ রাত ৮:১০

পাজল্‌ড ডক বলেছেন: অল্প অল্প বুঝ্‌ছি।

০১ লা জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৪:৪০

গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: থ্যাঙ্কু ভাই। :) আশা করি অনেক ভাল আছেন।

১৩| ০২ রা জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৪:১৮

রাজিব বলেছেন: আমাদের মুসলমানদের সবচেয়ে বড় দুর্ভাগ্য হল শিয়া ও সুন্নিদের মধ্যে যেসব দিকে মিল রয়েছে সেগুলোর চর্চা না করে যে সব দিকে অমিল রয়েছে সেগুলো আরও কিভাবে বাড়ানো যায় সে চেষ্টা করি। আপনি যতটা সম্ভব নিরপেক্ষ ভাবে লেখার চেষ্টা করেছেন এজন্য আপনাকে ধন্যবাদ। অনেককেই দেখি শিয়ারা কেন অবশ্যই কাফের এটি প্রতিষ্ঠা করার জন্য সত্য মিথ্যা যা খুশি লেখে। আবার অনেক শিয়াও প্রমান করতে চান যে সুন্নিরা কাফের। অথচ এক আল্লাহ, এক কোরআন ও এক নবী- কত কিছুর মধ্যেই তো মিল থাকার কথা।

২৩ শে জুলাই, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:১১

গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: আমাদের মুসলমানদের সবচেয়ে বড় দুর্ভাগ্য হল শিয়া ও সুন্নিদের মধ্যে যেসব দিকে মিল রয়েছে সেগুলোর চর্চা না করে যে সব দিকে অমিল রয়েছে সেগুলো আরও কিভাবে বাড়ানো যায় সে চেষ্টা করি।

এটা সত্যি, সত্য মিথ্যা যা খুশি লেখে। কিছুদিন আগে দেখলাম নিউজ, শিয়ারা নতুন ক্বাবা প্রতিষ্ঠা করেছে। ইচ্ছা হল জুতাই। মানুষকে কত অপবাদ দেয়া যেতে পারে!

ঠিক তাই, শিয়া সুন্নি সবাই এক আল্লাহ, এক কোরআন, এক নবী এবং এক আহলে বাইতেই বিশ্বাস রাখেন... এমনকি শিয়া সুন্নি কারো শরিয়াহ্ তেই সুন্নাহর বাইরে কিছু নেই, অর্থাত আমরা বলতে পারি, একই শরিয়াহ্। মিলের কোন অভাব নেই।

এত সুন্দর মন্তব্যের জন্য কৃতজ্ঞতা রইল ভাই।

১৪| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১২:১১

আজমান আন্দালিব বলেছেন: সংরক্ষণে

২২ শে আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১১:৫৭

গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: কৃতজ্ঞতা, ভাই। :)

১৫| ১৮ ই জুন, ২০১৫ দুপুর ১২:৫২

শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন: ++++

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.