নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চেতনায় বদর-ওহোদ-কারবালা ।

রাসেল সরকার

প্রিয়নবীর প্রেমহীন আত্মামৃত, সর্ব মিথ্যার অন্ধকারে নিমজ্জিত ।

রাসেল সরকার › বিস্তারিত পোস্টঃ

ওয়াহাবী আন্দোলনের ধারাবাহিক ইতিহাস (সংক্ষিপ্ত )

২৮ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১১:৪৮


ওয়াহাবী’ আরবি শব্দ । এর সঠিক উচ্চারণ-ওয়াহহাবী । ‘ওয়াহাবী’ শব্দের শাব্দিক অর্থ কোন ওয়াহাব নাম ধারীর সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তি । ব্যবহারিক অর্থে আল-আরবের নজদ(বর্তমান রিয়াদ) প্রদেশের মোহাম্মদ ইবন আবদুল ওয়াহহাবের অনুসারীকে ওয়াহাবী বলে । উর্দু ভাষার শ্রেষ্ট ডিকশেনারী “ফিরুজুল লুগাতকাবীর” এর ১০২০ পৃষ্ঠায় ‘ওয়াহাবী’ শব্দের অর্থে লেখা আছে, “শেখ মোহাম্মদ ইবন আবদুল ওয়াহাবের দলের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে ওয়াহাবী বলা হয়”। প্রফেসর এ,এম, ফয়েজ আহমদ চৌধুরী সাহেবের বাংলা ও উর্দু আভিধানের ৩০০ পৃষ্ঠায় লেখা আছে, “মোহাম্মদ ইবন আবদুল ওয়াহহাব নজদীর
অনুসারী দলকে ওয়াহাবী বলা হয়”। বাংলা ভাষায়
ওয়াহাবী শব্দ ও ‘ওহাবি’ বানানে স্বীকৃত । তাই,
বাংলা একাডেমী ব্যবহারিক বাংলা আভিধান ১৭৮ পৃষ্ঠায় ‘ওহাবি’ অর্থে লেখা আছে, “ধর্ম-সংস্কারক নজদবাসী মোহাম্মদ ইবন আবদুল
ওয়াহহাবের অনুসারী বা শিষ্য”।
জন্মঃ শায়খ মোহাম্মদ আবদুল ওহাব নজদী ১৭০৩ খৃস্টাব্দ, ১১১৫ হিজরীতে আল-আরবের নজদের (বর্তমান রিয়াদ) ওয়াইনা গ্রামে জন্ম গ্রহণ করে এবং ১২৮৮ হিজরীতে মৃত্যুবরণ করে
(ওনওয়ারুল মাজদ ফিতারী তারিখে নজদ ১ম খন্ড ৬ষ্ট পৃষ্ঠা রিয়াদে ছাপা)।
*মোহাম্মদ বিন আবদুল ওহাব নজদীর ধর্মীয় সংস্কারের নামে রাজনৈতিক ততপরতার অকৃত্রিম ইতিহাস* । মুক্তি সংগ্রাম ঢাকা- বাংলা একাডেমী
৩১/০১/৮৬ইং ১৭ই মাঘ ১৩৯২ বাং দৈনিক ইত্তেফাক প্রকাশিত ।
ডকটর এ, আর মল্লিক “ব্রিটিশ নীতি” গ্রন্থে মন্তব্য করেছেন যে, ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে কয়েক দশক দরে যে ওহাবী আন্দোলন ভারত উপমহাদেশের বংগীয় এলাকা থেকে শুরু করে সুদুর উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের সমস্ত এলাকা
ছড়িয়ে পড়ে এখনই আলোচনার সুবিধার্থে সেই
ওহাবী আন্দোলনের গোড়ার কথা বলতে হয় ।
ওহাবী আন্দোলনের প্রবর্তক ছিল মোহাম্মদ বিন আবদুল ওহাব । তার জন্মতারিখ সম্বন্ধে মতভেদ রয়েছে । তিনি ইসলাম সম্পর্কে ব্যাপকভাবে অধ্যয়নের পর বিভিন্ন এলাকা পরিভ্রমণ কালে ইসলামের মনগড়া ব্যাখ্যাদান করেন এবং তীব্র
ভাষায় শাসক কর্তৃপক্ষের সমালোচনায় মুখর হন । এ সময় আল-আরবের অধিকাংশ এলাকাই তুরস্কের সুলতানের অধীনে ছিল । তাই স্বাভাবিক ভাবেই মোহাম্মদ বিন আবদুল ওহাবের এই সব বক্তব্য তুর্কী সুলতানের জন্য খুবই বিরক্তির কারন হয়ে দাঁড়ায় এবং অচিরেই তাকে অবাঞ্ছিত ব্যক্তি হিসেবে ঘোষণা করা হয় । শুধু তাই নয়, তুর্কী শাসক কর্তৃপক্ষ মোহাম্মদ বিন আবদুল ওহাব নজদীকে সরকার বিরোধী অবস্থানের অভিযোগে সিরিয়ার দামেস্ক শহর থেকে বহিস্কার করে দেন ।
সাহিত্যিক “ওলীউল্লাহর” মতে তিনি এই স্থান সেই
স্থান পরিভ্রমণে বহুদিন অতিবাহিত করে অবশেষে
দেরইয়ার সরদার মোহাম্মদ বিন সৌদের আশ্রয় গ্রহণ করেন । তারই সাহায্যে তিনি বেদুঈনদের সমন্বয়ে একটি সশস্ত্র বাহিনী গঠন করে প্রথম
সুযোগে তুরস্ক সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা
করেন । এইরূপে অতি অল্প কালের মধ্যে মরু অঞ্চলে বিশেষ করে নজদ প্রদেশে আবদুল ওহাব নজদীর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয় । মোহাম্মদ বিন
সৌদের সহিত তার এক ভগনিকে বিবাহ দিয়ে
মোহাম্মদ বিন আবদুল ওহাব সমগ্র নজদের শাসন ক্ষমতা তার হাতে অর্পণ করে শুধু ধর্মীয় ব্যাপারে নিজে সকল কর্তা হয়ে রইলেন ।(মুক্তি সংগ্রাম
বাংলা একাডেমী ঢাকা ১৯৭৮)
বাগদাদের তুর্কী শাসনকর্তা নজদের মোহাম্মদ বিন আবদুল ওহাবকে দমন করার লক্ষে ১৭৫৮
খ্রিষ্টাব্দে বিরাট সেনাবাহিনীর দল প্রেরণ করেন । কিন্তু যুদ্ধে তুর্কীবাহিনী পরাজিত হলে মোহাম্মদ বিন আবদুল ওহাব একটি নিয়মিত সৈন্যবাহিনী
গঠন করেন । ১৭৯১ সালে ওহাবীরা পবিত্র
মক্কা শরীফ আক্রমণ করে । কিন্তু সম্পূর্ণ সফল হতে পারে নি । ১৭৯৭ সালে তারা বাগদাদ
আক্রমণ করে ইরাকের একটি এলাকা নজদের অন্তর্ভুক্ত করে নেয় । প্রসংগতঃ উল্লেখ্য তুর্কী
সুলতান এই ওহাবীদের কর্মকান্ডে এতোদূর
বিরাগভাজন হয়েছিলেন যে, এদের হজ্জ পালনে
নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন । এখানে আরো
একটি ব্যাপার বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে, মোহাম্মদ বিন আবদুল ওহাবের অনুসারীরা সব সময়েই ইসলামের নামে নিজেদরকে মুবাল্লেগ মুজাহিদ হিসেবে পরিচয় দিতেন । অন্যদিকে
গোপনে গোপনে নিজেদের ভ্রান্ত মাযহাব প্রচারে রত থাকতেন । ১৮০১ সালে আবার প্রায় লক্ষাধিক ওহাবী মুজাহিদ পবিত্র মক্কা শরীফ আক্রমণ করে। কয়েক মাস ব্যাপী এই যুদ্ধে মক্কা শরীফ ওহাবীদের দখলে আসে এবং সে সময়ে তুর্কী শাসনের বিলুপ্তি ঘটে । ১৮০৩ সাল নাগাদ ওহাবীরা পবিত্র মদীনা শরীফের উপর আক্রমণ পরিচালিত করে উহার উপর কর্তৃত্ব বিস্তার করে ।
সাহাবা, আওলিয়া ও ওলামা কেরামদের মাজার শরীফ ও সৌধ ভেঙ্গে দেয় । এমনকি প্রিয় নবীর রওজা পাকের একাংশও তাদের হাত হতে
রক্ষা পায়নি । এদিকে পবিত্র মক্কা ও মদীনা শরীফ দুটি হস্তচ্যুত হওয়ায় তুর্কী খলিফা খুবই রাগান্বিত
ছিলেন । এছাড়া ওহাবীরা প্রিয় নবীর রওজা শরীফের অংশবিশেষ ভেঙ্গে দিয়েছে, এ কথাটা এবং অন্যান্য কয়েকটি অভিযোগ তুর্কীরা সমগ্র বিশ্বে বিশেষতঃ মুসলিম দেশগুলোতে রটিয়ে দিল । যার ফলে ১৮০৩ থেকে ১৮০৬ খৃষ্টাব্দের ভিতরে বহিরাগত হজ্জযাত্রীদের সংখ্যা খুব
কমে গিয়েছিল । এই রকম এক পরিস্থিতিতে
মিশরের শাসনকর্তা (খেদিব) মোহাম্মদ আলী পাশা
তুরস্কের সুলতানের সাহায্যে এগিয়ে আসেন । ওহাবীদের সম্মিলিত বাহিনীর বিরুদ্ধে ইস্তাম্বুলের নিকটবর্তী এলাকায় সংঘটিত লড়াইয়ে ওহাবীগণ চরমভাবে পরাজিত হয় । ১৮১২ খৃষ্টাব্দে মিশরীয়
বাহিনীর সেনাপতি “স্কটিশ টমাস কীর্থ” এক বিরাট
বাহিনী নিয়ে মদীনা শরীফ দখল করে । ১৮১৩ খৃষ্টাব্দে সেনাপতি কীর্থ মক্কা শরীফও অধিকার করে নেয় । পরবর্তী পাঁচ বছরের মধ্য ওহাবীদের সামরিক শক্তি একেবারেই শূন্যের কোটায় এসে যায় । অতঃপর বাদবাকী ওহাবীরা ইসলামী মোবাল্লেগ নাম ধারণ করে ধীরে ধীরে গোপনে গোপনে ওহাবী মাযহাব পালন করতে থাকে । যা বিশেষ ভাবে প্রাধান্য পায় ভারতের দেওবন্দ নামক স্থানে ।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১:০৮

খেলাঘর বলেছেন:

ইসলাম নিজের ধ্বংস নিজ আনার জন্য সুন্নী, শিয়া, ওয়াহবী, কুর্দে ভাগ করেছে নিজকে; এখন সে যুদ্ধ চলছে।

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ ভোর ৪:৩৩

রাসেল সরকার বলেছেন: যাদের আত্ম-সত্ত্বায় কাফের এজিদ, কাফের নয় এবং যারা বস্তুবাদের দালালী করে তারা সত্যকে যেমন উপলব্দি করতে পারেনা তেমনি মিথ্যাকেও উপলব্দি করতে পারেনা ।

২| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১:১০

খেলাঘর বলেছেন:

টাইটা দজিলা রাখবেন, ছোট মগজে রক্ত না যেতে পারলে ভাবনাশক্তি কমে যাবে।

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ ভোর ৪:৩৪

রাসেল সরকার বলেছেন: সা তাফতারেকো উম্মাতি আলা ছালাছে ওয়া সাবয়িনা মিল্লাতান, কুলুহুম ফিন্নার ইল্লা মিল্লাতান ওয়াহেদাতান :
অর্থাৎ মহান প্রিয়নবী বলেন, আমার উম্মতগণ (৭৩) তেহাত্তর ফেরকায় বিভক্ত হয়ে পড়বে । সকল ফেরকাই দোযখে যাবে, তবে তন্মধ্য হতে একটি সংঘবদ্ধ ফেরকা বা দল শুধু বেহেশতে যাবে ।
জিজ্ঞাসা করা হল, ইয়া রাসূল্লাহ নাজাত প্রাপ্ত দল কোনটি ? উত্তরে মহান প্রিয়নবী বললেন, আমি এবং আমার সাহাবারা যে পথে ও মতে আছে, যারা ঐ পথ ও মতে থাকবে, তারাই একমাত্র নাজাত প্রাপ্ত দল । ইবনে তাইমিয়া লিখেছেন, নাজাত প্রাপ্ত দলটির নাম আহলে ছুন্নাত ওয়াল জামায়াত বা সংক্ষেপে ছুন্নী দল ।
এই হাদিছ শরীফটি যারা অস্বীকার করে, আমি কেন - কোন ঈমানদারই তাদেরকে মুসলিম হিসেবে গণ্য করতে পারেনা / করবেনা । অতএব কোন বিষয়ে মন্তব্য করতে হলে ঐ বিষয়ের উপর সর্ব প্রথম চর্চা করা উচিত ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.