নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ব্লগিং জগতে প্রথম ঢুকলাম...

জীবনের পথে চলা নবীন এক পথিক...

রাফীদ চৌধুরী

জীবনকে সাজাতে চাই সুন্দর বাগিচায়... তাই করি যা মনে চায়... live it love it ENJOY it!!

রাফীদ চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

কসমিক সিম্ফোনি... (সায়েন্স-ফিকশান) পর্ব-৯

১৮ ই জুন, ২০১৬ রাত ১১:৫৭



কমম লিঙ্কটার দিকে বোবা দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে জেনা। হঠাৎ করে সেটা পুরোপুরি নিষ্ক্রিয় হয়ে আছে। হলোগ্রাফিক স্ক্রীনে পাগলের মত ফ্রিকোয়েন্সি চেক করে দেখতে থাকল। কেউ একই ফ্রিকোয়েন্সিতে সিগনাল জ্যাম করে রেখেছে…

আশ্চর্য কমম লিঙ্কটার ফ্রিকোয়েন্সি কি ছিল তা তো বাইরের কারো জানার কথা নয়!

ট্রিনিটি! উচ্চস্বরে চিৎকার করে উঠল জেনা। মাথার ভেতর কিছু দপদপ করে জ্বলছে তার। লিওর সাথে যোগাযোগ স্থাপন করো! জলদি!

কিন্তু ট্রিনিটির কাছ থেকে কোন জবাব আসল না। সবকিছুর কন্ট্রোল ফ্রিজড হয়ে গেছে চোখের পলকে।

নরম্যান্ডির ককপিট থেকে দৌড়ে কমুনিকেশন রুমে ঢুকলো সে। তার চুল মুখের উপর লেপ্টে আছে খেয়ালও করলো না। ট্রিনিটির সিস্টেম রিব্যুট করার চেষ্টা করলো সে আবারো। কিন্তু ডেড সাইলেন্ট হয়ে রইলো ওমেগা মডেলের সবচেয়ে আধুনিক এই কম্পিউটারটা।

কি করবে চিন্তা করতে থাকলো জেনা। লিও যে মিশনটা দিয়ে গেছে সেটাও এখন আর সম্ভব নয়। ম্যানুয়ালি হাইপার ডাইভ দেয়ার মত সময় আর লোকবল তার নেই। ট্রিনিটির সাথে পুরো নরম্যান্ডিও ফ্রিজ হয়ে গেছে। কোন কন্ট্রোলই আর কাজ করছে না।

হঠাৎ মাথার ওপর এলার্ম বেজে উঠল। লাল আলো জ্বলছে আর নিভছে। একটা হলোগ্রাফিক স্ক্রীনে কতগুলো লিখা ফুটে উঠল…

লিও বলছি… তুমি এখনি সোলারেক্সে চলে আসো। ট্রিনিটিকে অনলাইন করার চেষ্টা এখান থেকে করছি… তোমার সাহায্য লাগবে…

কিছু চিন্তাভাবনা না করেই স্কাউটশীপ ১ এ চড়ে বসলো জেনা। কোর্স সেট করলো সোলারেক্সের দিকে। কয়েক মুহুর্ত পরে দেখা গেল নীল রঙের আভা তৈরি করে নরম্যান্ডি থেকে বের হয়ে এসেছে আরেকটি এসেন্ডিং শীপ…

***

জোরে জোরে দরজায় বারি দিল জিম। একটুও নড়ল না ভারি দরজাটা। হাপাচ্ছে জিম, দরদর করে ঘাম বেয়ে পরছে তার কপাল দিয়ে। কিরু২! দরজা খোল! কেন এমন করছো? কন্ট্রোল ইউনিটে লিও ইরা আমাদের জন্যে অপেক্ষা করছে… আমাদের পাওয়ার সেখানে কনভার্ট করতে হবে!

শীতল হাসল কিরু২। তার চোখের সেন্সরগুলোর লাল আলো বিদ্রুপ করছে যেন জিমকে। না আমাদের আর কনভার্ট করতে হবে না।

তুমি তুমি… কিছু বুঝতে পারল না জিম। তুমি কেন এমন করলে?

কাম অন! দরজার মাঝে একটা গ্লাস উইন্ডো লাগানো আছে, তার অপর পাশ থেকে কিরু২ এর ব্যাঙ্গাত্বক চেহাড়া দেখতে পেল। তুমি জানো কেন।

হঠাৎ তার সামনে সবকিছুর জট খুলে গেল। দরজাতে পিঠ ঠেকিয়ে বসে পরল জিম। দু’হাতে মাথা ঢাকল। ট্রিনিটি পাওয়ার পাচ্ছিলো না এই অংশে… কিভাবে কিরু২ নাম্বার প্যাডে পাওয়ার নিয়ে আসল? চোখের সামনে ভেসে উঠল জিমের, কিরু২ ধাতব দরজাটার সামনে এসে দাড়ালো… লাল নাম্বার প্লেট তার সামনে উজ্জ্বল ভাবে জ্বলতে থাকল, সে পাসওয়ার্ড দিতে খুলে গেল দরজাটা…

কন্ট্রোল ইউনিটের পাওয়ার কর্ডগুলো কেটে পরে আছে… আগে কখনো এসে তারগুলো কেটে গেছে সে? কিভাবে আসতে পারে?

হঠাৎ তার মনে পরে গেল স্কাউটশীপ’১ টা মেইন্টেইনেন্সের জন্যে তারা ব্যবহার করতে পারে নি… কিরু২ বলেছিল সেটা মেইন্টেইনেন্সের জন্যে আছে! আর প্রত্যেকবার ব্যবহার করার পর স্কাউটশীপগুলোর রুটিন পরীক্ষা করে থাকে নরম্যান্ডি…

কেন? হিসহিস করে উঠল জিম? কি ক্ষতি করেছিলাম আমরা? কি লাভ হবে তোমার কিরু? রোবট কখনো মানুষের ক্ষতি করতে পারে না… হাপাচ্ছে সে। বিজ্ঞান একাডেমির কাছ থেকে পালিয়ে বাচতে পারবে না…

অট্টহাসিতে ফেটে পরল কিরু২। আমি মানুষের আদেশ পালন করতেই এখানে এসেছি। আর তোমার বিজ্ঞান একাডেমি জানেই না যে তোমরা এখানে! দেখো কি অসহায় তোমরা! এক রোবটের কাছে হেরে গেলে…

লিও… ইরা, তারা তোমাকে ছাড়বে না…

তারাও তোমার মতই ভাগ্যকে বরণ করে নেবে। ভেবো না। উপরের দিকে তাকালো কিরু২। আমার তাহলে যেতে হয় এবার। তারা প্রায় চলে এসেছে, আবার উপরের দিকে তাকালো কিরু২। আমি ভেবেছিলাম তারা ইরাকে চায় কিন্তু দেখা যাচ্ছে তোমাকেই তাদের বেশি পছন্দ! বিদায় জিম!

কিরু২ অন্ধকারের মাঝে হারিয়ে গেল।

ফোস ফোস করছে জিম। তারা কারা? ইরাকে কেন চায়… আবার ফিরে যাবো পৃথিবীতে… কিরু২ এর বলা কথা মনে পরে গেল তার। দশম প্রজাতির রোবট বিজ্ঞান একাডেমি স্পেস এক্সপ্লোরেশন মিশনগুলোতে সাধারণত পাঠায় না। আগেই বোঝা উচিৎ ছিল তার।

হঠাৎ উপর থেকে হালকা গুঞ্জন শোনা গেল… ধীরে ধীরে বাড়তে লাগল গুঞ্জনটা। কানের দুপাশে ধরে মেঝেতে বসে পরল জিম। কিন্তু অসহ্য ফিসফাসটা ক্রমেই বেড়ে চলল। মাথা গুলিয়ে যাচ্ছে জিমের। সামনে হাত বাড়িয়ে আলো ফেলল সে। ধীরে ধীরে সাদা ধোয়ার কুন্ডলী বেয়ে উঠতে থাকল তার সামনে। চোখে ঝাপসা দেখতে লাগল সে। সাদা ধোয়ার কুন্ডলী আলোকিত হয়ে উঠছে… উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হচ্ছে…
প্রচন্ড সাদা আলোতে চোখ খুলে রাখতে পারল না জিম। এক পাশে কাত হয়ে পরে গেল সে। দেখতে পেল উজ্জ্বল সাদা আলোর বিচ্চ্যুরণ তার দিকে এগিয়ে আসছে আস্তে আস্তে…

***

কিছুক্ষনের মাঝে কন্ট্রোল রুমের আলোও ধপ করে নিভে গেল। তাড়াতাড়ি হাত থেকে আলো জ্বালালো লিও। ইরার হাত ধরে টানলো।

ট্রিনিটি ফল করেছে… চিৎকার করল সে। ট্রিনিটি আর লাইটগুলো কন্ট্রোল করতে পারছে না! জিম কোনদিকে আছে বলো! এখুনি তাকে নিয়ে আমরা মিশন এবোর্ট করে নরম্যান্ডিতে ফিরে যাবো…

লিওর কথা কিছু শুনতে পেল বলে মনে হলোনা ইরা। তার গগলসে লাল বীপ বীপ ভরে উঠছে, ভাইরাসের ডেটা লাল মার্কারে চিহ্নিত করছে প্রোবগুলো তার সব ডেটা ইরার গগলসে পাঠাচ্ছে…

লিও! ওদিকে অনেক অনেক ভাইরাস… জেগে উঠেছে। কোকিয়ে উঠল ইরা। হঠাৎ করে… আমি আর পারছি না…

দুহাত কানের উপর চেপে মাটিতে বসে পড়ল সে। ক্রমাগত গুঞ্জনটা তার মগজের ভেতরটা নাড়িয়ে দিচ্ছে। ব্যাথায় ককিয়ে উঠল সে। চেতনা লোপ পাচ্ছে তার… চোখের সামনে উজ্জ্বল লাল পয়েন্টগুলো ঘোলা হতে শুরু করছে… নিঃশ্বাস নিতে পারছে না সে।

হঠাৎ লিওর শক্তিশালি হাত তার হেড-মাস্কটা খুলে ফেলল। একটানে তার গগলস আর কমম লিঙ্কটা খুলে একপাশে ছুড়ে ফেলে দিল লিও। তার হাত ধরে উঠে বসতে সাহায্য করলো সে।

লিও! একেবারে ভেঙ্গে পরল ইরা। তার কাধে মাথা রেখে কাপছে সে। মেরে ফেলবে… ফিসফিস করে উঠল সে… ওহ শব্দগুলো মাথায় গেথে যাচ্ছে…

ইরার মুখটা তার দিকে তুলে ধরল লিও! আমার দিকে তাকাও! আমাকে ফলো করো! হালকা স্বরে বলল সে। আমার ভয়েসকে ফলো করো। তুমি পারবে… তুমি জানো না তুমি কতটা শক্তিশালি…

ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে এলো ইরা। উঠে দাড়িয়েছে, কিন্তু এখনো হালকা কাপছে। আমি এখন জানি ভাইরাসটা কি! লিও আমাদের এক্ষুণি পালাতে হবে। তার হাত ধরলো ইরা, চোখে আকুতি। ভয়ঙ্কর বিপদের মাঝে আছি আমরা…

এমন সময় কন্ট্রোল রুমের দরজাটা খুলে গেল। হন্তদন্ত হয়ে জেনা সেখানে প্রবেশ করলো। ইরার অবস্থা দেখে থমকে দাড়ালো। কি হয়েছে এখানে?

আগের পর্ব

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.