নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একান্ত ব্যক্তিগত কারণে ব্লগে আর পোস্ট দেওয়া হবে না। আপাতত শুধু ব্লগ পড়বো। বিশেষ করে পুরানো পোস্টগুলো। কোন পোস্টে মন্তব্য করবো না বলে ঠিক করেছি। আমি সামহোয়্যারইন ব্লগে আছি এবং থাকবো। ভালো আছি। ভালো থাকুন সকলে।

ইসিয়াক

সবার উপর মানুষ সত্য তাহার উপর নাই।

ইসিয়াক › বিস্তারিত পোস্টঃ

চলমান জীবনের খন্ডিত চালচিত্র -১

২৮ শে মে, ২০২২ সকাল ১১:৩৫

১) সময় সুযোগ হলে আমি মাঝে মাঝে মানুষ দেখতে বের হই।চলতি পথের লোকজনের আচার আচরণ কথা বার্তা অঙ্গ ভঙ্গি পোশাক পরিচ্ছদ এসবই আমার দেখার বিষয়। বেশির ভাগ সময়ই আমার লেখা গল্পের শুরুটা হয় রাস্তায় দেখা কোন ঘটনা থেকে তারপর গল্পটি ডালপালা বিস্তার লাভ করে নিজের নানা অতীত অভিজ্ঞতার সংমিশ্রণে।
পথ চলতে চলতে ক্লান্ত হলে কাছাকাছি পার্কে বসে একটু বিশ্রাম নেই ।সেখানেও মানুষ দেখি। জীবিকার তাগিদে বিচিত্র পেশার লোকজনের কাজ দেখি।আমি বরাবরই খেয়াল করে দেখেছি পার্কের ঘটনাগুলো বেশ বৈচিত্র্যময় হয়।
আজও বসে ছিলাম তেমনি এক পার্কে ।অনেক দিন এদিকটায় আসা হয় নি। একটা ফাঁকা বেঞ্চ দেখে বসলাম। জায়গাটা বেশ ছায়া সুশীতল ।অদূরে একজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বয়স্ক লোক একতারা বাজিয়ে গান গাইছে।গান শেষে অনেকে টাকা পয়সা ছুড়ে দিলো।লোকটার গানের গলা বেশ চমৎকার। অনেকটা আবদুল আলীমের মত।প্রতিভা থাকলেই হয় না সুযোগও পাওয়া লাগে।সুযোগের অভাবে লোকটি আজ পথে পথে গান গাইছে।তার সঙ্গের কিশোর ছেলেটা টাকাগুলো কুড়িয়ে নিয়ে এক জায়গায় রাখছে কিছু টাকা সে নিজের পকেটে রাখছে।ভাব দেখে মনে হলো সে এই টাকাটা লোকটিকে দিবে না। আচ্ছা ও কি স্কুলে যায়? জানা দরকার এটাও এক ধরনের ভিক্ষা বৃত্তি।এই বয়সে সে ভুল পথে চলছে ।উঠবো বলে ভাবছি এমন সময় আমার কাছাকাছি একজোড়া তরুণ তরুণী এসে বসলো। তারা সমবয়সী এবং কলেজ পড়ুয়া। মেয়েটির পরণে ইউনিফর্ম দেখে কনফার্ম হলাম। বসতে বসতে মেয়েটি ছেলেটিকে বলল,
- এ্যাই তুমি মাস্ক পড়ে আছো কেন? মাস্ক খোল এখন তো করোনা ভাইরাস নেই।তোমার গরম লাগছে না?
মাস্কটি স্বাভাবিক মাস্কের চেয়ে বড়।
- না এখন খোলা যাবে রাজু আঙ্কেল প্রায় এই পথ দিয়ে যায় আমাকে দেখলে মাকে বলে দেবে। না যদি জানে আমি মেয়েদের সাথে কথা বলি তাও আবার পার্কে বসে তাহলে আমার খবর আছে। ছেলেটি মাস্ক দিয়ে নিজেকে আড়াল করতে চাইছে। বিচিত্র জীবন! আমি মুচকি হেসে সরে দাড়ালাম।এবার আমার যাওয়া উচিত।....
(২) ফুল স্পীডে অটোরিকশা চলছে।ফাঁকা পেলে অটোরিকশাগুলো উড়োজাহাজ হয়ে যায়।এই দ্রুত চলমান অটোরিকশা প্রায় দূর্ঘটনার কবলে পড়ে কখনও এর চালক আবার কখনও এর যাত্রীরা আহত হয়। অনেক সময় রিকশার বেরিয়ে থাকা হুক বা নাট বল্টুর বাড়তি অংশে পথচারীও আহত হয়।সত্যি বলতে কি এ ধরনের ঘটনার ভুক্তভোগী আমি নিজেও। যা হোক যে জন্য এই লেখা। দ্রুতবেগে আমাদের খালধার রোড় বেয়ে অটোরিকশা ছুটে চলেছে।ফাঁকা রাস্তায় অস্বাভাবিক গতি দেখে কিনা জানি না একবার চোখ তুলে চাইলাম।রিকশাটা অনতিবিলম্বে আমাকে ছাড়িয়ে গেল হঠাৎ অদ্ভুত শব্দ ও কান্নার আওয়াজে আমি আবার পিছনে ফিরে দেখি অটোরিকশাটি দূর্ঘটনায় পতিত হয়েছে। কাছে গিয়ে দেখে যা বুঝলাম উক্ত রিকশার এক যাত্রীর বোরখা রিকশার চাকায় বিশ্রীভাবে আটকে গেছে। শুধু বোরখা নয় মেয়েটির একটা পা ও চাকার মধ্যে বেকায়দায় ঢুকে গেছে এবং তারই পরিপেক্ষিতে রিকশা থেমে গিয়ে বিভৎস অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে । সাথে সাথে লোকজন চলে এলো,তড়িৎ গতিতে পাশের বাসার এক মহিলা দৌড়ে একটা মাছ কাটা বটি নিয়ে এলো বোরখা কেটে মেয়েটিকে উদ্ধার করবে বলে।মেয়েটির মা অসহায় দৃষ্টি নিয়ে দেখতে লাগলো,কিছুই করার নেই যেন, কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থা । ঘটনার আকষ্মিকতা তিনি হতভম্ব ।অনেকক্ষণের চেষ্টায় মেয়েটিকে বের করে আনা গেল।আসলে তার একটি পা বেকায়দা আটকে ছিল। ভেঙে যাবার ভয়ে সেভাবে টানাটানি করাও যাচ্ছিল না।মেয়েটি আর্তচিৎকারে এলাকার বাতাস ভারি হয়ে উঠছিল।অনেক কষ্টে মেয়েটির পা বের করে আনার পর দেখা গেল একটা পায়ের বেশ কিছু অংশ ভীষণ রকম থেতলে গেছে।রিকশা বা অটোরিকশায় ওঠার সময় মেয়েদের শাড়ি বোরখা ওড়না ঠিক ঠাক গুছিয়ে বসা উচিত না হলে এমন বিপদ অহরহ ঘটবে।
(৩) বাজারে প্রচুর রাজশাহীর লিচু উঠেছে একশ লিচু ২৮০ টাকা। খেতেও বেশ সুস্বাদু।
আঁটির আমও পাওয়া যাচ্ছে খুব।এখনও তেমন একটা কলমের গাছের আম ওঠেনি। আম আমার সবচেয়ে প্রিয় ফল তবে অবশ্যই মিষ্টি হতে হবে।আমি আম দিয়ে দুধ দিয়ে ভাত খাই,যতদিন আম পাওয়া যায়। আম দুধ দিয়ে ভাত খেলে আমার ভীষণ ভালো ঘুম হয়,মনে শান্তি শান্তি লাগে। তালের শাস,কালো জাম জামরুল ও উঠেছে প্রচুর।ক্ষুদে জাম আর তালের শাস আমার পছন্দ নয় বলে কিনি নি।জ্যৈষ্ঠ মাসে নানা ফল পাকে বলেই সম্ভবত এই মাসকে মধু মাস হলা হয়।
(৪)
নামাজে যাবার পথে দেখলাম গলির মধ্যে এক রিকশাওয়ালা দাড়িয়ে আছে আমাকে দেখে সাহায্য চাইলো। আমি বললাম আপনি রিকশা চালাচ্ছেন তো কিছু আয় হয় নি? ভিক্ষা করছেন কেন?
সে আমাকে তার পা ও হাত দেখালো। তখনও ক্ষত স্থান থেকে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে।
সবটা শুনে যা বুঝলাম রিকশা থামিয়ে প্রস্ব্রাব ফিরতে গিয়েছিল রাস্তার অপর পার্শ্বে।কাজ শেষে রাস্তা পার হবার সময় দুরন্ত গতির এক মোটর সাইকেল আরোহী তাকে মেরে দিয়ে চলে গেছে।
আহা বেচারা টাকা নেই বলে চিকিৎসাও নিতে পারে নি সম্ভবত ।বোকাসোকা লোকটা ঘাবড়ে গেছে। মালিকের জমা দিতে হবে চারশো টাকা। গ্রাম থেকে এসেছে বুঝতে পারছে না কোথায় কি করতে হবে।এই পা নিয়ে তার রিকশা চালানোও সম্ভব নয় এখন।.....
© রফিকুল ইসলাম ইসিয়াক।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে মে, ২০২২ সকাল ১১:৫৪

শায়মা বলেছেন: মাস্ক পরলেও আমি এখন মানুষ ধরতে পারি।
সবাই পারবে নিশ্চয়। কারণ মানুষ অভ্যাসের দাস!! :)

যাইহোক এই সব বোরখা ওড়না পেঁচিয়ে রিক্সা এক্সিডেন্ট আমি অনেক শুনি দেখি। কেনো যে মানুষ ভুলে যায়!!! X((

নিজের চারপাশই যদি খেয়াল না থাকে তাইলে চলবে কেমনে??

বেক্কল হলে চলবে এত?

২৯ শে মে, ২০২২ দুপুর ১:২০

ইসিয়াক বলেছেন: অনেকেই বেহুঁশের মত চলাফেরা করে। কেমন যেন ড্যামকেয়ার ভাব। সাবধানের মাইর নাই এই বাগধারাটা শোনে নাই মনে হয়। শেষ পর্যন্ত ধরা খায়।

২| ২৮ শে মে, ২০২২ বিকাল ৪:৪৬

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: বাবু সোনা ব্লগে লেখার জন্য রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে ক্লান্ত হয়ে বাসায় ফিরে রাজশাহীর দামি লিচু না কিনে মিষ্টি আম দুধ কলা খেয়ে ঘুম দিয়ে নামাজ পড়তে যাওয়ার পথে বেচারা রিক্সাওয়ালার সঙ্গে দেখা।

২৯ শে মে, ২০২২ দুপুর ১:২১

ইসিয়াক বলেছেন: পাঠ তো ভালো ই মুখস্থ হয়েছে। এবার পরীক্ষার জন্য তৈরী হন। B-)

৩| ২৮ শে মে, ২০২২ বিকাল ৫:৩৬

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: লেখকদের পর্যবেক্ষণ শক্তি বেশী থাকতে হয়। এই শক্তি বৃদ্ধির জন্য এই ধরণের ঘরাঘুরি বেশ উপযোগী। আপনার আকাঙ্খা একজন ভালো গল্প লেখক হওয়া। তাই ঘোরাঘুরি চালিয়ে যান। তবে রাস্তার ম্যানহোলের দিকে খেয়াল রাখবেন এবং মেয়েদের দিকে দৃষ্টি একটু কম দেয়ার চেষ্টা করবেন। সব কিছুর নিবিড় পর্যবেক্ষণ ভালো না।

২৯ শে মে, ২০২২ দুপুর ১:৫০

ইসিয়াক বলেছেন: যশোরের ম্যানহোলগুলো মোটামোটি ঢাকাই থাকে। গত মেয়র এ ব্যপারে যথেষ্ট সচেতন ছিলেন। আর সুন্দরী মেয়েদের আমি দেখি প্রাণ ভরে দেখি।তবে অবশ্যই খারাপ দৃষ্টিতে নয়।

৪| ২৮ শে মে, ২০২২ বিকাল ৫:৪৪

ছাকিব নাজমুছ বলেছেন: আমারও প্রিয় ফল আম ।
আপনার পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা সত্যি ভালো ।
শুভকামনা রইল ।

২৯ শে মে, ২০২২ দুপুর ১:৫১

ইসিয়াক বলেছেন: ছাকিব নাজমুছ আপনাকে আমার ব্লগে স্বাগতম।
প্রশংসায় অনুপ্রেরণা পেলাম।
শুভকামনা সতত।
ভালো থাকুন।

৫| ২৮ শে মে, ২০২২ রাত ৯:০৬

সোনাগাজী বলেছেন:



আপনার গল্পের অনেক উন্নতি হয়েছে, রাজধানীর রাজপথে হাঁটার সময় হয়েছ।

২৯ শে মে, ২০২২ দুপুর ১:৫৩

ইসিয়াক বলেছেন: ধন্যবাদ।
রাজধানীর রাজপথে একসময় অবশ্যই হাঁটবো। তখন নিশ্চয় ভালো কিছু পোস্ট দিতে পারবো।

৬| ২৮ শে মে, ২০২২ রাত ১১:১১

শেরজা তপন বলেছেন: কশটে মেশানো ভাল লাগা- তবে তালের শাঁস আমার বেশ প্রিয় ফল। ওদিকে লিচু আর আমের তুলনা নেই

২৯ শে মে, ২০২২ দুপুর ১:৫৯

ইসিয়াক বলেছেন: একবার গ্রামে গিয়ে প্রচুর তালের শাস খেয়েছিলাম। প্রচুর বলতে প্রচুর।ফলাফল সারারাত পেট ব্যাথা।সেই প্রথম সেই শেষ। তালের শাস দেখলে এখনও সেই কথা মনে হয়।
# অনেক দিন পর আপনার মন্তব্য পেয়ে ভালো লাগলো প্রিয় ব্লগার।
শুভকামনা রইল।

৭| ২৯ শে মে, ২০২২ সকাল ১০:১২

আহমেদ জী এস বলেছেন: ইসিয়াক,




চলমান জীবনের এইসব চালচিত্র খন্ডিত হলেও যেন কিছু না বলা গল্প বলে যায়!

২৯ শে মে, ২০২২ দুপুর ২:০৭

ইসিয়াক বলেছেন: গল্প তো আমাদের জীবনেরই চালচিত্র। চোখ মেলে দেখে কানে শুনে সেটা লেখার মাধ্যমে উপস্থাপন করতে আমার ভীষণ ভালো লাগে।
শুভকামনা রইল প্রিয় ব্লগার।
ভালো থাকুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.