নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মাতৃভূমিকে সাজাই সার্বজনীন মানবাধিকার রক্ষার যুক্তিনির্ভর মঞ্চ করে।

রাহমান বিপ্লব.

মাতৃভূমিকে সাজাই সার্বজনীন মানবাধিকার রক্ষার যুক্তিনির্ভর মঞ্চ করে।

রাহমান বিপ্লব. › বিস্তারিত পোস্টঃ

আরাকান আর্মি, মগ, মারমা, রাখাইন? ইতিহাস বড় নিষ্ঠুর!!

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:০৬



চাকমাদের মতই রাখাইন বা মগরাও আরেকটা বিশাল থ্রেট হয়ে উঠছে।
মারমারাও মগ বা রাখাইনদেরই একটা সম্প্রদায়।
আরাকান এলাকা তাদের ভূমি এবং আরাকান আর্মি/আরাকান লিবারেশন আর্মি, এসব হল তাদের স্বশস্ত্র বাহিনী।
একসময়ের মগ ভূমি দস্যুরাই আজকের রাখাইন বা মগ!
বর্তমানে বাংলাদেশের বরিশালের কিছু এলাকা এবং বিশেষত কক্সবাজারে এরা বাস করে।
এই মগেরাই আরাকানিজ মুসলিম সম্প্রদায় তথা রোহিংগাদের সাথে বার্মায় অমানবিক নিপীড়ন চালিয়েছে!
মগেদের অপপ্রচার হল- আরাকানি মুসলিমরা (রোহিংজ্ঞারা) বাঙালী। এ দাবী করে রোহিংগাদের তারা রোহিংগাদের এলাকা থেকে উচ্ছেদের নামে বিশ্ব কাঁপানো নির্যাতন চালিয়েছে!




ইতিহাস কি বলে?-
১৬২০ সালে ঢাকায় ব্যাপক হামলা করেছিলো মগেরা। সেসময় বাংলার সুবাদার ইব্রাহীম খান তাদের প্রতিহত করেছিলেন।
১৬২৫ সালে মগদের রাজা আরাকান রাজ শ্রী সুধর্ম মোঘল রাজধানী ঢাকায় আক্রমন করে। তার সাথে পরাজিত হয়ে সুবাদার আমজাদ খান পালিয়ে যায়। তিন দিন ঢাকায় অবস্থান করে মগেরা ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে আরাকানে ফিরে যায়।
ঢাকার মগবাজার নামটি মগদের আগ্রাষণের একটি জ্বলন্ত স্বাক্ষী!
ইংরেজরা চলে যাবার সময়, আরাকান রাজ্য বা মগরাজ্যকে বার্মার সাথে একীভূত করে দিয়ে যায়।
বর্তমান ইন্ডিয়ায় যেমন, অতীতের অনেক স্বাধীন রাজ্যের ভূমি রয়েছে, ঠিক বর্তমান বার্মাতেও অতীতের অনেক স্বাধীন রাজ্যের ভূমি রয়েছে।
'মগের মুল্লুক' শব্দটা মগদের অভাবনীয় অত্যাচারের স্বাক্ষী হয়ে, বাঙলা ভাষায় আজও যেকোন ভয়াবহ অরাজকতার নির্দেশক শব্দ হয়ে, বেঁচে আছে!
প্রায় আড়াইশত বৎসর বাংলায় মগদের অত্যাচার স্থায়ী হয়েছিল!
মুর্শিদকুলি খান সুবাদার হয়ে মগদের বিরুদ্ধে শক্তিশালী অভিযান চালালে অত্যাচার কিছুটা স্তিমিত হয়।
পলাশীর যুদ্ধের পরেও কলকাতাবাসী মগদের অত্যাচারের আতংকে দিন কাটাতেন।
মগরা যেসব এলাকায় হামলা চালাত সেসব এলাকার সাধারন ঘটনা গুলো ছিলো- ব্যাপক মাত্রার ধর্ষণ, যুবকদের বন্দী করে ধরে নিয়ে যাওয়া, ধ্বংসযজ্ঞের লীলাক্ষেত্র, হরিলুট ইত্যাদি!
মগরা গোলাম হিসেবে যেসব যুবকদের ধরে নিয়ে যেত তাদের পা ও হাতের তালু ছিদ্র করে বেঁতে ঢুকিয়ে বাঁধা হত!
এভাবে গাদা করে সেইসব হতভাগ্য বাঙালী যুবকদের নৌকার পাটাতনের নিচে ফেলে রাখা হত। ফলে তারা কোনমতেই পালিয়ে যেতে পারত না।
মুরগিকে যেভাবে চাল ছিটিয়ে খেতে দেয়া হয় ঠিক সেভাবেই বন্দী যুবকদেরকে খাদ্য হিসেবে তাদের দিকে চাল নিক্ষেপ করা হত।




মগ জলদস্যুরা পর্তূগীজ জলদস্যু (ফিরিঙ্গি) দের সাথে হাত মিলিয়ে বাংলার উপকুলীয় এলাকাকে বিশাল একটা সময় ব্যাপী জাহান্নাম বানিয়ে ফেলেছিল! তাদের অত্যাচার, ধর্ষণ, অন্যায়ের অতিসহ্যে ঐসব এলাকা মানব শূন্য হয়ে পড়ে।এসব এলাকায় জঙ্গলে ভরে গিয়েছিলো, সন্ধ্যায় সেসব অঞ্চলের নদীর দুই ধারে সন্ধ্যাবাতি জ্বালাবার কোন লোক বিদ্যমান ছিলোনা।
প্রভাবশালী মগ নেতা মংগত রায় ১৬৬০ সালে ঢাকার আব্দুল্লাহ পূরে মোগল বাহিনীর সাথে যুদ্ধে মারা যায়।

'পূর্ববঙ্গ গীতিকায়' মগদের নৃশংস বিভীষিকার বর্ণনা সমূহ এসেছে।

এতসব বিভীষিকাময় বর্ণনার পরেও ইতিহাসে মগদের অতুলনীয় অত্যাচারের যত সামান্য ঘটনাই এসেছে বলে ইতিহাস বিশ্লেষকগণ উল্লেখ করেন। মগ জাতীর ভয়াবহ নির্যাতন চর্চার কিছুটা রোহিংগা নির্যাতন থেকে উপলব্ধি করা যায়।

পার্বত্য চট্টগ্রাম সহ বাংলাদেশের উপজাতিদের আগমন ইতিহাস গুলো নানান কায়দায় গোপন করে তাদেরকে মিথ্যা আদিবাসী বানিয়ে মূলত, দূর্ধর্ষ অত্যাচারী গোষ্ঠীগুলোর দ্বারা বাঙালীদের ওপর আরেকটি যুদ্ধ চাপানোর মাধ্যমে দখলীয় এলাকার পথ সুগম করে দিচ্ছে এদেশের কিছু দালাল সম্প্রদায়!



পূনশ্চঃ
আরাকান আর্মির শীর্ষ নেতা রান নিন সয়ে। বিজিবির ওপর আক্রমন করার পর এ নেতার ফেসবুক একাউন্ট পর্যবেক্ষন করে, আধুনিক সমরাস্ত্রের স্বয়ংসম্পন্ন আরাকান আর্মিদের অস্তিত্ব জানার সাথে সাথে পার্বত্য উপজাতি সন্ত্রাসীদের সাথে এদের যোগাযোগের বিষয়টি সামনে চলে আসে। সম্প্রতি আরাকান আর্মি কর্তৃক বাংলাদেশের সাথে যুদ্ধ এবং পার্বত্য চট্টগ্রামকে 'বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কবরে' পরিনত করবার হুমকি দেয়া হয়!

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৩৮

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: পার্বত্য চট্টগ্রাম সহ বাংলাদেশের উপজাতিদের আগমন ইতিহাস গুলো নানান কায়দায় গোপন করে তাদেরকে মিথ্যা আদিবাসী বানিয়ে মূলত, দূর্ধর্ষ অত্যাচারী গোষ্ঠীগুলোর দ্বারা বাঙালীদের ওপর আরেকটি যুদ্ধ চাপানোর মাধ্যমে দখলীয় এলাকার পথ সুগম করে দিচ্ছে এদেশের কিছু দালাল সম্প্রদায়!


তবে তারা স্বপ্নে বাস করছে!
এখন আর ১৬২০ সাল নয়! লুকোচুরি.. মূখোশ পড়ে কিছূদিন চালাতে পারবে- প্রকাশ্যে ঘোষনা দিয়ে যুদ্ধ করতে আসুক- ইনশাল্লাহ ৯ দিনেই তাদের শখ মিটে যাবে!

বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।
সকল ষড়যন্ত্রকারী নিপাত যাক।

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:১৯

রাহমান বিপ্লব. বলেছেন: সমস্যা হল এসব বিচ্ছিন্নতাবাদীরা সরাসরি না এসে বিভিন্ন ভাবে পেছন থেকে কাজ করছে।

১- বাংলাদেশে এদেরকে 'আদিবাসী' স্বীকৃতি দিতে কিছু বুদ্ধিবেস্যাদের ব্যবহার করা হয়।
২- আদিবাসী স্বীকৃতিপ্রাপ্ত যেকোন জনগোষ্ঠীর স্বাধীনতা পাবার অধিকার জাতিসংঘ স্বীকৃত। ফলে পূর্ব তিমুর বিনা রক্ত পাতে জাতিসংঘ ও ন্যাটো দেশগুলোর সাহায্যে ইন্দোনেশিয়া থেকে মুক্ত হয়ে গেছে।
৩- স্বশস্ত্র উপজাতি দল গুলোর দ্বারা স্থানীয় বাঙালীদের ওপর ব্যাপক ভিত্তিক নির্যাতন। যেন তারা ওখান থেকে চলে আসতে বাধ্য হয়।
৪- পার্বত্য চট্টগ্রামের বাঙালী নির্যাতন সংশ্লিষ্ট খবর গুলোকে ব্যাকপ ভাবে ইগনোর করার মিডিয়া প্রবনতা!

এসব হল জুম্মাল্যান্ড নামক আরেকটি বিচ্ছিন্ন দেশের ক্ষেত্রে প্রস্তুতির কিছু দিক।

২| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৪১

এস. এম. হাবিবুল্লাহ বলেছেন: ভাই আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ, এ তথ্যবহুল লেখার জন্য। এ ইতিহাস সম্পর্কে এদেশের কত পার্সেন লোক অবগত আছে আমার জানা নেই। আমার মনে হয় তা ৫%ও হবে না। বিশেষ করে বর্তমান তরুণ সম্প্রদায়, নতুন প্রজন্ম এ সম্পর্কে কিছুই জানে না। এধরনের লেখা যত বেশী বেশী করে গণমাধ্যম তথা সামাজিক সকল যোগাযোগ মাধ্যমে আসবে- তত বেশি নতুন প্রজন্ম জানবে, তত বেশি সচেতন হবে। এরম তথ্যবহুল ইতিহাস আরও যদি আপনার সংগ্রহে থাকে, কিস্তি হিসেবে প্রকাশ করতে থাকুন। আবারও আপনাকে ধন্যবাদ।

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:২২

রাহমান বিপ্লব. বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে। ইতিহাসের সাথে সাথে বর্তমান ষড়যন্ত্র সম্পর্কেও এদেশের মানুষ সচেতন নয়। এজন্যই আত্মঘাতী 'আদিবাসী' শব্দকে জনপ্রিয় করতে পেরেছে তারা।

জাতীসংঘের 'আদিবাসী' বিষয়ক ধারা অনুযায়ী, যেকোন দেশের আদিবাসীরা তাদের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ব্যাপার গুলোতে পরিপূর্ণ 'স্বাধীনতা' ভোগ করার অধিকারী।

আদিবাসীদের অধিকারের উপর জাতিসঙ্ঘের ঘোষণাপত্র : ধারা ৩ -- আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার অংশে বলা হয়েছে-

"United Nations Declaration on the Rights of Indigenous Peoples: Article 3 -- Right to Self-determination

Article 3 -- Right to Self-determinationIndigenous peoples have the right of self determination. By virtue of that right they freely determine their political status and freely pursue their economic, social and cultural development."

ধারা ৩ -- আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকারআদিবাসীদের আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার আছে। এই অধিকারের বলে তারা স্বাধীনভাবে তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে (অর্থাৎ তারা কি কোন দেশের মধ্যে থাকবে, না সেই দেশ থেকে আলাদা হয়ে স্বাধীন দেশ গঠন করবে -- সেটা তাদের রাজনৈতিক ইচ্ছার উপর নির্ভর করবে, যেমন উপজাতিরা কি বাংলাদেশের মধ্যে থাকবে, না বাংলাদেশ থেকে আলাদা হয়ে পার্বত্য এলাকাকে নিয়ে কিংবা পরবর্তীতে সমগ্র বাংলাদেশের সমতলীয় উপজাতি এলাকা যুক্ত করে স্বাধীন জুম্মল্যান্ড গঠন করবে -- তা একান্তই উপজাতিদের রাজনৈতিক ইচ্ছার উপর নির্ভর করবে) এবং স্বাধীনভাবে তাদের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন অনুসরণ করবে।

-এই ধারার আলোকেই বিনা রক্তপাতে পশ্চিমা দেশগুলো ও জাতীসংঘের প্রত্যক্ষ সহায়তায় সম্প্রতী সময়ে স্বাধীনতা লাভ করেছে পূর্বতীমুর। যা অখন্ড ইন্দোনেশিয়ার অঞ্চল ছিলো। 'আদিবাসী' শব্দ চর্চার বিষয়ে বাংলাদেশের মানুষের অজ্ঞতাকে পুঁজি করেই এক শ্রেনীর মানুষ পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদীদের দক্ষীণ এশীয় এজেন্ট হিসেবে এদেশে সক্রিয় বলে ব্যাপক সন্দেহ রয়েছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.