নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি। কেউ না। তবে মাঝে মাঝে আমার দুষ্ট মনটা কানে কানে এসে বলে, তুমি মহাকালের উচ্ছল সমুদ্রে ভেসে বেড়ানো এক কচুরিপনা । কালের ঊর্মিমালার সাথে সাথে নাচা ছাড়া তোমার আর কোন কাজই নেই.....
১
অনেক আগের গল্প,
আছে মনে অল্প।
মেধাটা বড্ড পাজি,
স্মৃতিরা দেয় ফাকিঁ।
এক যে ছিল রাজা,
মানতোনা কোন মানা।
মনটা ছিল খাটিঁ
দিতোনা কাজে ফাকিঁ।
প্রচুর প্রজার মাঝে,
সে একটি ময়না পালে।
ময়নাটি খুব ভালো।
শুধু রংটা তার কালো।
রাজার সাথে অবসরে,
করতো গল্প মনভরে।
২
কাজের ঘোরে,
মনের কোণে,
ভাসলো মন খারাপের ভেলা।
ইচ্ছে হলো,
একটু করে,
দেখে আসতে মেলা।
জিজ্ঞাসিল সে,
জনে জনে,
কাহার তরে আনবে কী সে?
শেষের দিকে,
বলল ময়নাটিরে,
তোর জন্যে আনবো কীরে?
পুচ্ছটি তুলে,
গানের সুরে,
বলিল সে হেসে।
চাইনা আমি,
কোন কিছুই দামী,
ইচ্ছে শুধু যাব ভেসে।
সোনার খাচাঁয়,
বসে থাকায়,
পড়ছে যাদের মনে।
ছোট্ট বেলার,
সাথী খেলার,
ঘুরছে বহূ দূরে।
বাইরে গিয়ে,
তাদের কাছে,
মোর সালামটা দিও পৌঁছে।
দেখবো আমি,
যতœ করে,
অপরূপ সুন্দর তোর বৌরে।
৩
ব্যস্ত মেলায় নেমে রাজা,
কিনল তাহার লাগে যা যা।
মন ভরিয়ে দেখল ঘুরে,
হাসির রেখা ফুটল মুখে।
মন নাচিল প্রচন্ড সুখে,
ছুটলো রাজা ময়নার খোঁজে।
বিষন্নতা পুনঃ বাধিঁল বাসা,
কারো সাথে তার হলোনা দেখা।
অবশেষে আ¤্রকুঞ্জের মধ্যে গিয়ে,
হাকঁ ছাড়িলেন তিনি নিজে।
হে ময়নারা, শুনে যাও এসে,
তোদের এক বন্ধু আছে মোর ঘরে।
শুনে সে সুমধুর বাণী,
একঝাক ময়না আসিল নামি।
আনন্দে হতবাক রাজা হেসে বলে,
তোদের কাছে সালাম পৌছাতে কহে।
শুনে সে মজার খবর,
ময়নাগুলো তুলল পটল।
রাজার মনে দুঃখ দিল উকি,
ভাবল ময়নারে এখন কী বলি?
৪
বিষাদ ভরা মনটা নিয়ে,
রাজা আসলো ঘরে ফিরে।
সবার তরে দিলো বিলে,
আনলো সে যা যা কিনে।
ঘরের কোণে বসে থাকে,
আসতে চায়না ময়নার কাছে।
উৎসুক নেত্রে ময়না চাহে,
এখানে ওখানে রাজাকে খুজেঁ।
মেলেনা কোথাও রাজার দেখা।
কী হলো তাহার দেখে মেলা,
ময়না সাহেব বলল এক জনে,
রাজা যেন তার সাথে দেখা করে।
৫
কী করিবে ভেবে না পায়,
দিবে কী ময়নার ডাকে সায়?
দুঃখটাকে বন্দী করে,
আসলো রাজা ফন্দী এঁটে।
সাথীদের মরার কথা,
বলবেনা সে ময়নার কাছে।
হৃদয়ের গহীন কোণে,
ঘন কালো মেঘেরা ভাসে।
কেমন আছো বন্ধু প্রিয়?
জিজ্ঞাসিল মহান ভূ-পতি
ভালইতো আছি আমি,
ঠিকতো তোমার দেশের সবি?
সব আছে ঠিকঠাক,
তাই এসেছি তোমার নীড়ে।
আ¤্রকাননের ময়নাদের,
পৌছিঁয়েছি তোমার সালামটিরে।
উৎসাহের আভাস কন্ঠে মেখে,
বলিল পক্ষী সুর ধরে,
কী বলেছে তারা সবাই?
কেমন আছে আরা বনে বনে?
লুকাতে চেয়েও পারিলোনা রাজা,
লুকাতে তাহার বিষাদ ভার।
বুঝিল তাই ময়না পাখি,
ঘটেছে ভয়ানক কোন ব্যাপার।
৬
ময়না পাখির জোরা জোরিতে,
বলিলো রাজা অবশেষে।
কী ঘটেছে আম বাগানে?
শুনে সে বিষাদের খবর,
ব্যর্থ পাখি ধরিতেনারে সবর।
রাজার ময়নাও তুলিলো পটল;
ভূপালের কাটা গায়ে নুনের ছিটা,
ছিটালো তাহার আদরের দ্বিগ।
প্রিয় খেচরের মহাপ্রয়ানে,
নৃপতির মহা আনন্দে ধরিল চিড়।
বিষাদ সিন্ধুতে নাহিয়া রাজা,
বলিলেন তারে আসো ফেলে;
দখিনের নর্দমার বুকে,
যাতে বুকটি জুড়ায় প্রতিদিন তারে দেখে।
৭
আদিষ্টজন খগেরে নিয়ে নর্দমার কাছে,
গেল মহান ভূপালের আদেশ পালনে।
অনিচ্ছা সত্ত্বেও সে ছুড়িল তারে,
নর্দমার গভীর কূপের মাঝে।
ভাঙ্গা হৃদে ফিরছে প্রজা আনমনে,
বারবার দেখছে পিছে কিসের পিছুটানে?
মাঝপথে এসে ফিরিয়া দেখিল সে,
উড়াল দিলো রাজার ........উল্লাসে।
অবাক হয়ে ভাবিল সে জন,
বানাল কেন শকুন্ত রাজারে এমন বোকা?
উর্দ্ধশ্বাসে ছুঠিল সে রাজার কাছে,
বলিলো খুলে, পাখিটি তারে দিয়েছে ধোকাঁ!
মন ভাঙ্গা ভূপতির চোখ উঠিল কপালে,
ব্যাথার অথৈ সাগরে সাতরালো ভূপালে
জানালার ধার থেকে মৃদু কন্ঠ
আসিল ভেসে, শুন হে প্রিয় গোপাল
মোর মিত্ররা পাঠিয়েছিল পয়গাম।
কালোনিদ্রার ভনিতা করো হে সখা,
কাটাতে পারিবে প্রিয়জনের সাথে তুমি।
ঘোর অরন্যের বাঁকে বাঁকে সদা।
মুক্ত বিহঙ্গের লাগেনা ভালো,
সুর্বণ পিঞ্জরে আবদ্ধ থাকিতে।
মুক্তির পয়গাম পায় যদি সে,
দূর অন্তরীক্ষে চায় যে ভাগিতে।
©somewhere in net ltd.