নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কথা হয়ে যায়..

নূরুল আলম রাজু, উন্নয়নকর্মী! একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কর্মরত।

রাজু নূরুল

রাজু নূরুল › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমাদের বিবেক-বিবেচনা বলে আর কিচ্ছু অবশিষ্ট নাই….

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:১৫

ইংরেজি দৈনিক ‘ডেইলি স্টার’ এ প্রকাশিত একটি ছবি আমাদের চিন্তা, বিবেককে ব্যাপক প্রশ্নের সম্মুখীন করেছে। সামাজিক মাধ্যমগুলোতে ছবিটি ছড়িয়ে পড়েছে এবং সব মহল থেকে উদ্বেগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ন্যুনতম বিবেক-বিবেচনাবোধ যাদের আছে, তাদের সবাইকেই, ছবিটা হতভম্ব করে দিয়েছে। ছিছি করছে সবাই। ক’দিন আগে এরকম আরেকটা ছবি দেখা গেছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে দগ্ধ হয়ে যাওয়া মানুষজনকে নিয়ে ডকুমেন্টরি বানানো হচ্ছে এবং তাম শ্যুটিং চলছে! বার্ন ইউনিট লোকে লোকরণ্য!



ডেইলি স্টার’র ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে, পেট্রোল বোমায় হাত-মুখ-মাথা পুড়ে যাওয়া একজন মানুষ ছবি তোলার জন্য ‘পোজ’ দিয়ে আছেন। তাকে নানা ভঙ্গিমায় ছবি তুলতে বাধ্য করা হচ্ছে। সামনে তাক করা ক্যামেরা! বিবিসি’র রিপোর্ট থেকে জানা গেছে, এই মহান সাংবাদিকের নাম নাম সাইফুল হক অমি। আলোকচিত্রী অবশ্য, আহত ব্যক্তিটিকে ছবির জন্য পোজ দেয়াতে বাধ্য করবার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, কয়েকদিন ধরেই বার্ন ইউনিটে তিনি অবস্থান করছেন এবং রাজনৈতিক সহিংসতা নিয়ে প্রামান্যচিত্রের ছবি তুলছেন। তার কাছে সমস্ত প্রক্রিয়াটি শৈল্পিক মনে হয়েছে। আরো শৈল্পিক এবং শোকাবহ করে তুলবার জন্য তিনি ব্যাকগ্রাউন্ডে কালো কাপড়ও জুড়ে দিয়েছেন। (দেখুন বিবিসি’র প্রতিবেদন: Click This Link)



দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি, চিন্তার দৈন্যতা আর লুপ্ত হতে বসা মানবতাবোধরই প্রতীক যেন এই ছবি! কীভাবে, কতিপয় শ্রেণী দগ্ধ হওয়া মানুষকে নিয়ে ব্যবসা করছে, তারও কিছু রূপ এই ছবি থেকে পাওয়া যায়। এই ছবি প্রকাশ হচ্ছে, একদলকে ঘৃণা করার উপকরণ তৈরি করছে আরেকদল! কুশীলব সেই একই। সাধারণ মানুষ। পুড়ে ছাই হয়ে যাবার পরও যার নিস্তার নাই! সে এখন ডকুমেন্টরির নায়ক। ক’দিন পরেই আমরা সরকারি গণমাধ্যমে দেখবো, ২০১৪-২০১৯! সহিংসতার ৫ বছর। কেউ আবার বলবে লুটপাটের ৫ বছর!



একজন আমার ফেসবুক স্ট্যাটাসে কমেন্ট করেছেন, ‘আমাদের প্রফেশনাল দৃষ্টিভঙ্গিটাই এরকমভাবে গড়ে ওঠেছে। নিশ্চয় কোনো না কোনো মিডিয়ার সম্পাদক তার কর্মীকে নিয়োগ করেছে নিরবিচ্ছিন্ন ছবি তুলবার জন্য।’ এইটার জন্য সে বেতন পায়। সন্দেহ নাই তাদের প্রয়োজনটাও ব্যবসায়িক।



দরিদ্র-অধিকারবঞ্চিত-প্রান্তিক মানুষকে নিয়ে রাজনীতি করা, লুটপাট করা আমাদের মজ্জাগত স্বভাব হয়ে দাঁড়িয়েছে। আরেক বড়ভাই কমেন্টে লিখেছেন, ‘সাংবাদিকরা যা করেছে, সেটা অনেকদিন ধরেই দাতা সংস্থা, এনজিওরা করছে। রূপটা ভিন্ন, ঘটনাতো একই। আসলেই তাই। দুর্যোগ আসে, ত্রাণ নিয়ে যাই। সঙ্গে থাকে দামি ক্যামেরা আর কমিউনিকেশন স্পেশালিস্ট। যার মূল কাজ-ভাল ভাল ছবি তোলা, তারপর রিপোর্ট লেখা এবং সেখানে পেস্ট করা। ছবিতে দেখা যায়, দামি জামা-কাপড়, জামার উপর লোগো লাগানো ইউনিফর্ম পড়া এনজিও কর্মী, উদোম শরীরের, হাড় জিরজিরে ক্ষতিগ্রাস্ত বেরিফিশিয়ারি’র হাতে ‘প্যাকেট’ তুলে দিচ্ছে। ছবির ক্যাপশানটা হতে পারে এরকম: ‘লিখো রেখো একফোঁটা দিলেম শিশির!’



সরকার বলেছে, কেউ অপ্রয়োজনে বার্ণ ইউনিটে ঢুকতে পারবেনা। এমনকি মন্ত্রীদেরকেও অযথা ভিড় না করবার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। ঘটনা কিন্ত ওরকম না। ঠিকই দলে দলে লোক বার্ণ ইউনিটে গিয়ে ভিড় করছে। পার্থক্য শুধু এই, একদল বার্ণ করেছে রাস্তায়, আরেকদল বিছানায়! দুজায়গায়ই এরা দর্শনীয় বস্তু!



প্রবাদে আছে, টাকা হারাইলে টাকা পাওয়া যায়। স্বাস্থ্য তারাইলেও কিছুটা কষ্ট করলে ফেরৎ পাওয়া যায়। কিন্তু চরিত্র হারাইলে আর পাওয়া যায়না। আমাদের হারানো চরিত্রটা ফিরে পাওয়ার উপায় তাহলে কী?

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:২৪

সুরথ সরকার অর্ঘ্য বলেছেন: ভাল লেখা।

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:৫৪

রাজু নূরুল বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ! সুরথ

২| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৪

সোহানী বলেছেন: লিখাটা দু;বার এসেছে...

চমৎকার লিখেছেন। আসলেই আমরা চরিত্রের দৈন্যতায় ভুগছি। কোথায় পৈাছেছি আমরা ওই এক ছবিই বলে দেয়........

লিখায় ভালোলাগা সহ +++++++

৩| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৮:১৭

রাজু নূরুল বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ! সোহানী এবং সুরথ.।

৪| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:৪৩

আম জনতা০৭ বলেছেন: রাজু ভাই ভালো লাগলো লেখাটা, এই অধমের একখানা পোসট আছে। সুজোগ পেলে চোখ বুলিয়ে নিও।-- ফারুক ৩৩ বেচ

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:৫৫

রাজু নূরুল বলেছেন: ধন্যবাদ ফারুক!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.