নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছোটবেলাটা গ্রামের বাড়িতে কেটেছে! নিখাদ গ্রাম।
যেখানে সূর্য উঠে পূব আলো করে। চিকচিক করে ভোরের আলো টিনের বেড়ার ফাঁক গলে ঢুকে পড়তো ঘরে। শীতের সকালে রোদ পোহাতাম দীঘির পাড়ে বসে, সারা দীঘিজুড়ে কচুরিপানার সাদা-খয়েরির সমাহার। আমরা রোদ পোহাতাম অজগরের ফনাকে সঙ্গী করে...!
বৈশাখের প্রথম দিনের আগে আম খাওয়া বারণ। যে তার আগে আম খাবে, তার সারা মুখ ঘা হয়ে যাবে আমের কষে! এরই মধ্যে ঝড় উঠতো, এখানে - সেখানে পড়ে থাকতো সদ্য মুকুল ঝরা আম। আমরা ভয়ে সেঁটে থাকতাম। মুখের দুপাশে ঘা নিয়ে কে ঘোরে বেড়াতে ভালবাসে? বৈশাখের প্রথম দিনে খুব ভোরে, আমরা দলবেঁধে নামতাম পুকুরে। শুরু হতো প্রতিযোগিতা। রুদ্ধশ্বাস খেলা। আমগাছে উঠে মুখে একটা আম কামড়ে নিয়ে পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে মাটিতে পুঁতে রাখতে হবে। পুরোটাই এক নি:শ্বাসে। কোনো ফাঁকিবাজি করা যাবেনা, নি:শ্বাস ফেলা যাবেনা। পুঁতে রাখা আমটা যদি ভেসে উঠে, তবে আবার চেষ্টা করা যাবে। না পারলে, তার অাম খাওয়া বারণ!!!
সফল হয়ে ফিরতাম যখন- দেখতাম চাল-মুড়ি, সিমের বিচি অারো কত রকমের ভাজা-পোড়া নিয়ে মা প্রস্তুত। বছরের প্রথম দিনে এইসব ভাজাপোড়া খেলে সারা বছর আর কোন ঘা-ফোাঁড়া-বিচির ভয় নাই...হায় বৈশাখ!!
এখন বৈশাখ মানে, ১ জোড়া ইলিশ ৪৮,০০০ টাকায় বিক্রি, চারিদিকে ইলিশ বাণিজ্য! লাল-পাড় সাদা শাড়ির রাজনীতি। লাল রঙের পাঞ্জাবির সরগরম বাজার। গরম গরম ভাতে পানি ঢেলে পান্তা ভাতের মহোৎসব। সঙে পোড়া মরিচ, পেঁয়াজ কাটা। এখন বৈশাখ হলো হোটেল রিজেন্সিতে ১ জন খেলে আরেকজনের ‘ফ্রি অফার’।
কবে থেকে, কীভাবে আমাদের সব উৎসবগুলো শেষ হয়ে গেল। বাণিজ্য দখল নিলো গোটা সংস্কৃতির!
উৎসবের রঙটাই গেলো বদলে?
১৪ ই এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১:০৮
রাজু নূরুল বলেছেন: তা শেখাচ্ছে বটে! উৎসবের বাজারজাতকরণ! যেখানে উৎসব মানে মুনাফা, একাকীত্ব আর লোক দেখানো চমক।
©somewhere in net ltd.
১| ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ১১:০৮
টি এম মাজাহর বলেছেন: দারুন লেখা। কে যেন বলেছিলো যে, মাল্টিন্যাশনাল কোম্পনীগুলোর তোড়জোড় দেখলে মনে হয়, ওদের আগে আমরা উতসব করতে জানতাম না। ওরাই আমাদের উৎসব করা শেখাচ্ছে।