নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কথা হয়ে যায়..

নূরুল আলম রাজু, উন্নয়নকর্মী! একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কর্মরত।

রাজু নূরুল

রাজু নূরুল › বিস্তারিত পোস্টঃ

সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দ: পুরুষ শাসিত সমাজের নব্য উদাহরণ

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১:৪৪


প্রসঙ্গ: আসন্ন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ বৈষম্যের তীব্র উদাহরণ স্থাপন করা হয়েছে। এই বরাদ্দের বিষয়টিতে উঠে এসেছে যে, বালাদেশের নির্বাচন কমিশন শুধুমাত্র গঠনগত দিকে থেকেই পুরুষবান্ধব নয়; বরং দৃষ্টিভঙ্গিগত দিক থেকেও পুরুষতান্ত্রিক। আসন্ন নির্বাচনে নারীদেরকে এমন প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে যার সবই গৃহস্থালি অথবা রান্নার সাথে সম্পর্কিত। অপরদিকে পুরুষ প্রার্থীরা বরাদ্দ পাওয়া সব প্রতীকই বাহ্যিক জগত এবং আপাত শৌর্য্যের প্রতীক। এই নিয়ে নারী প্রার্থীরা তাদের তীব্র ক্ষোভ এবং অসন্তোষের কথা জানিয়েছেন, কেউ বরাদ্দকৃত প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতেও অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।

ঘটনার শুরু এবং যেভাবে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়: গত ১৭ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে যোগ্য প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ করেছেন। সেখানে এমন সব প্রতীক নারী প্রার্থীদের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে যা কেবল চারদেয়ালের ভেতরে সীমাবদ্ধ, যার অধিকাংশই আবার রান্নাঘরের সাথে সম্পর্কিত! আমাদের নির্বাচন কমিশন এদেশের চিন্তার বিষয়ে বহু বছর পুরনো ধ্যান-ধারণাকে নতুন করে সামনে নিয়ে এসেছেন। তারা ভুলে গেছেন যে, এদেশের নারীরা অনেক দূর এগিয়ে গেছে। তারা এখন আর ঘরের চার দেয়ালে অথবা রান্না ঘরে সীমাবদ্ধ নয়। বরং নারীর বিচরণ-ক্ষেত্র সর্বত্র!

প্রতীক কীভাবে বরাদ্দ হয়, প্রথমে সেদিকে দৃষ্টি দেয়া যেতে পারে। সাধারণত: কমিশন বেশ কিছু সম্ভাব্য প্রতীকের নাম প্রস্তাব করে এবং প্রার্থীরা সেখান থেকে বেছে নেয়ার সুযোগ পান। এক্ষেত্রে দুজন প্রার্থী যদি একই প্রতীক পছন্দ করেন, সেক্ষেত্রে লটারির মাধ্যমে বরাদ্দ দেয়া হয়। প্রস্তাবনার বাইরে প্রতীক পছন্দের কোনো সুযোগ নেই।

নারী ও পুরুষের প্রতীক: বিভিন্ন প্রার্থীদেরকে বরাদ্দ দেয়া প্রতীকগুলো খোঁজখবর করে দেখা যাচ্ছে, নারীদের জন্য প্রস্তাবিত প্রতীকগুলোর মধ্যে রেয়েছে কেটলি, গ্লাস, পানপাতা, বৈয়াম, মোড়া, টিস্যু বক্স, মূলা, শিল পাটা, ঝুনঝুুনি, দোলনা, প্রেসার কুকার, ভ্যানিটি ব্যাগ, বাঁশি, ফ্রাই প্যানের মতো সামগ্রী। যার প্রায় সবই দৈনন্দিন গৃহকাজে ব্যবহুত সামগ্রী, অথবা রান্নার সাথে সম্পর্কিত। অন্যদিকে পুরুষ প্রার্থীদের বরাদ্দ দেয়া প্রতীকগুলো সম্পূর্ণই ব্যতিক্রম! হাতি, ঘোড়া, চিতাবাঘ, ঘড়ি, ক্রিকেট ব্যাট, টেলিস্কোপ, ল্যাপটপ, ডিস এন্টেনা, জাহাজ, রেডিও, ইত্যাদি প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যেগুলোকে আপাত: শৌর্য, বীরের চিহ্ন হিসেবে আমরা জেনে এসেছি।

প্রতীক দেখে যায় চেনা: বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে প্রার্থীর পরিচয়ের সাথে তার প্রতীক মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। নির্বাচন শেষ হলে সেই ব্যক্তি নিজের প্রার্থীর পরিচয়ে পরিচিত হতে শুরু করেন। লোকজন বলে ওই যে ঘড়ি হাশেম, চেয়ার কাশেম যাইতেছে। যে নারী মূলা প্রতীক পেয়েছেন অথবা বাঁশি, তাকে লোকজন কীভাবে সম্বোধন করবে? অথবা যার প্রতীক ভ্যানিটি ব্যাগ? এটি কী নিতান্তই বিব্রতকর নয় সেই নারীর জন্য? কারোরই নিশ্চয়ই ইচ্ছে হবেনা, নিজের নাম বদলে ঝুনঝুনি আপা রাখতে!

ক্ষোভ: এই বৈষম্যমূলক আচরণ নিয়ে এরই মধ্যে নানা দিক থেকে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে। বিবিসি রিপোর্ট করেছে। মহিলা পরিষদ সংবাদ সম্মেলন করেছে। প্রার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। অনেক প্রতিবেদনও ছাপা হয়েছে পত্রিকায়। টেলিভিশনগুলো এ নিয়ে প্রতিবেদন করেছে। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে আলোচনা হচ্ছে।

ধোয়া তুলসি পাতা কমিশন: অামাদের কমিশন এ বিষয়ে নিজেদেরকে ধোয়া তুলসি পাতা দাবি করেছে। তারা বলেছে, ‘এমন প্রতীক দেয়ার পেছনে নারীকে ছোট করে দেখার বিষয় ছিল না। তবে অভিযোগ এলে পরবর্তীতে আমরা এ ধরনের প্রতীক দেব না।’ এইসব প্রতীক বরাদ্দ বন্ধ করার জন্য অভিযোগ কেন আসতে হবে, সেটিই বোধগম্য নয়। তারা কী বুঝতে অক্ষম যে, এখানে স্পষ্টতই বৈষম্যের দিকটি প্রকাশিত?

নির্বাচনী প্রতীক: আমাদের ইতিহাস: নির্বাচনী প্রতীক বরাদ্দের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ইতিহাস উজ্জল। আমরা প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতীক দেখলেই বুঝবো সেখানে কীভাবে আমাদের জাতীয় চেতনার, ঐতিহ্যের, আমাদের শ্বাসমূলের স্পর্শ রয়েছে। নৌকা, ধানের শীষ অথবা লাঙ্গল, কাস্তে - এর সবই আমাদের জীবনের অঙ্গ, জাতীয় প্রতীক। মনে আছে আমাদের এলাকায় একটা সংস্কৃতিই চালু হয়ে গিয়েছিল যে, চেয়ার মার্কার প্রার্থীই চেয়ারম্যান হবেন।

আমাদের নির্বাচন কমিশন ওখান থেকে যদি কিছু শেখেন!

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২৬

ভাইলোক বলেছেন: ছাগল টাইপের কথা ।

১৮ ই এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ১১:০৬

রাজু নূরুল বলেছেন: কেন আপনার তা মনে হলো ভাইলোক???

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.