নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কথা হয়ে যায়..

নূরুল আলম রাজু, উন্নয়নকর্মী! একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কর্মরত।

রাজু নূরুল

রাজু নূরুল › বিস্তারিত পোস্টঃ

তোমরা যারা ‘জিপিএ ফাইভ’ পাওনাই!

৩১ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১:৫৭

ফলাফল ঘোষণার পর দেখা গেল আমি মোট ৫ বিষয়ে লেটার পেয়ে এসএসসি পাশ করেছি। তার মধ্যে আবার অংকে ৯৫! ‘এইটা কীভাবে সম্ভব?’ - শুধু এই ক্ষোভে আমার বেশ ক’জন ছোটবেলার বন্ধু আমার সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিলো। কী যে অপরাধবোধ লাগছিলো নিজের কাছে? পাঁচ বিষয়ে লেটারের দরকারটা কী ছিলো? তার চেয়ে বন্ধুইতো ভাল! নয়?

তারপর এইচএসসি’তে ফলাফলের পতন হলো। প্রথম বিভাগে পাশ করলেও যেহেতু মাত্র দুইটাতে লেটার পেলাম, অতএব সবাই বিরাট মন খারাপ করলো। পরিবারের সবাই এই সিদ্ধান্তে উপণীত হল যে, ‘আমি শেষ’! তারপর ‘পয়েন্ট তিনে’র ব্যবধানে যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কমার্স ফ্যাকাল্টিতে চান্স পেলামনা, ততক্ষণে আমি বুঝলাম যে, আমার পায়ের নিচের সব মাটি মোটামুটি নাড়াচাড়া করতেছে, এবং আমি অবশ্যই শেষ….!

এই খারাপ রেজাল্টটা অব্যাহত রাখলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম সেমেস্টারে দুই বিষয়ে ‘এফ গ্রেড’ পেয়ে দ্বিতীয় সেমেস্টারে ওঠলাম। তবে শেষমেষ এই রেজাল্টের প্রভূত উন্নতি হয়েছে এবং অনার্সের শেষে দেখা গেল সিজিপিএ ৩ এর বেশ ওপরে। মাস্টার্সে আরো ভালো রেজাল্ট! কেমনে কী হলো, সেই প্রসঙ্গে না যাই! ভেবে দেখলাম, বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি যে কাজটা কদাচিৎ করেছি সেটা হলো ‘পড়ালেখা’!

কর্মজীবনে এসে দেখলাম, পড়ালেখাটা আরেকটু করলে খারাপ হতোনা! তবে না করেও যে খুব খারাপ করেছি তাও ঠিকনা। এই যেমন অনেক অনেক জায়গায় আমি অনেক ‘প্রথম হওয়াদের’ থেকে সুনির্দিষ্ট পয়েন্টে এগিয়ে আছি। এরা কম বুঝে, ভালভাবে ডিল করতে জানেনা, ইত্যাদি। এবং এই সিদ্ধান্তে উপণীত হতে খুব বেশি সময় লাগলোনা যে, প্রথম/দ্বিতীয় হওয়াই জীবনের একমাত্র লক্ষ্য হওয়া উচিত নয়, এর মধ্যে জীবনের একমাত্র সফলতাও লুকিয়ে নেই; বরং সামাজিকীকরণ (তখন ফেসবুক ছিলনা), সংগঠনের সাথে যুক্ত হওয়া, ডিবেট, রাজনীতি, ‘আউট বই’ পড়া, পত্রিকার প্রথম লাইন থেকে শেষ লাইন খুটিয়ে খুটিয়ে শেষ করা, দুনিয়ার সব ম্যাগাজিনের খবরাখবর, লিটল ম্যাগ করা, আঁকাআঁকি, আড্ডাবাজিও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়! আর কোন একটা কাজকে প্রচন্ড ভালবাসলে সফলতা অবধারিত।

গতকাল এসএসসি’র রেজাল্ট বেরিয়েছে। আমি দিব্যমনে পিঠের ওপরে পড়া কিল-ঘুষির আওয়াজ শুনতে পাচ্ছি। ‘মা মা আমি জিপিএ ‘ফাইভ’ পাইছি’ - কেন বলতে পারলোনা, এই হল কিল-ঘুষির কারণ! তাদের জন্য আমার শুভকামনা। আমি তাদেরকে নিশ্চিত করতে চাই যে, ওরা যারা জিপিএ ফাইভ পায়নাই, ব্যাকবেঞ্চার, জীবনের বিরাট সফলতা ওদের জন্য অপেক্ষা করছে।

তাদের অনুপ্রেরণার জন্য সারা পৃথিবীজুড়ে নানা জ্ঞানীগুনী আর সফলরা তো অপেক্ষা করেই আছে! রবীন্দ্রনাথের কীর্তি আমাদের জানা, নজরুলের কথা বলে মন খারাপ করে দিতে চাইনা। স্টিভ জবস বলে গেছে, ‘আাজই যদি তোমার জীবনের শেষ দিন হয়, তাহলে তোমার জীবনে যা যা করার কথা ছিল, তা কী এই একদিনের মধ্যে শেষ করতে পারবে’?? কেমনে সম্ভব?

যারা প্রথম হয়, তাদের জীবনের লক্ষ্য স্থির হয়ে যায়। এরা শিক্ষক হতে চায়। এক ব্যাচ থেকে শিক্ষকতো একজন হতে পারবে? তো উপায়? অতএব নিজেদের মধ্যে কাদা ছোড়াছুড়ি। আর যারা পেছনের সারির, এদের জন্য সারা পুথিবীর দুয়ার খোলা!

তো ব্যাকবেঞ্চারের দল? ওয়েলকাম ওন বোর্ড!!!

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +৮/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে মে, ২০১৫ দুপুর ২:৫৮

আনিসুল ইসলাম বলেছেন: তো ব্যাকবেঞ্চারের দল? ওয়েলকাম ওন বোর্ড!!! [/sb


অসাধারণ লিখেছেন ।

২| ৩১ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৪:৩৯

অব জার ভার বলেছেন: হা হা! আমি একজন ব্যাকবেঞ্চার। ভালো লাগলো আপনার কথা শুনে/পড়ে

৩| ৩১ শে মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩১

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

হাজার লাখো ছাত্র-ছাত্রী পরীক্ষাতে পাস,
জিপিএর ছড়া ছড়ি ব্যাপক উল্লাস।
হাজার স্কুল পাশ করেছে নিয়ে শত ভাগ,
প্রশ্নবিদ্ধ জিপিএতে বাড়ছে শুধু রাগ।

আগে ছিলো বিভাগ শ্রেনী এখন তা জিপিএ,
সোনা রূপা মিলে মিশে এক হয়েছে গিয়ে।
তাইতো এখন সোনা রূপা রাংতা দিয়ে মোড়া,
বাজারেতে বিকাচ্ছে তা গাধার দামে ঘোড়া।

এমনি করে দিনে দিনে কমছে শিক্ষার মান,
জিপিএতে মুখে হাসি ভিতরটা ম্লান।
আগের মতো কেউ হাসেনা পরীক্ষা পাশ করে,
উচ্চ শিক্ষার আকাংখাটা তাই যাচ্ছে মরে।

উপায় আছে শিক্ষার্থীদের রাখতে ধরে পাঠে,
অসাধুদের ধরতে হবে নামতে হবে মাঠে।
আগের রাতে প্রশ্ন পত্র হয় না যেনো ফাঁস,
ব্যর্থ হলে ছাত্র-ছাত্রী দেশের সর্বনাস।

সময় আছে আগে ভাবো করনীয় কী,
তানা হলে ছাইয়ের মাঝে পড়ে যাবে ঘী।
গাধা দিয়ে হয়না কভু ঘোড়ার কর্ম করা,
সার শূণ্য জিপিএ তো জীয়ন্তে যে মরা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.