নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ভারতের বিপক্ষে অসাধারণ এক জয়ের পর এদেশের মানুষের দেশপ্রেম দেখে আমি অভিভূত!
আশ্চর্যের বিষয় হলো, এই দেশপ্রেমে বীর খেলোযাড়দের প্রশংসার পাশাপশি ভারতের খেলোয়ারদের তুলোধুনো চলছে। যে যার মতো, যা ইচ্ছে ভাষা ব্যবহার করছি! এই ‘উচ্ছাসের ধরন’ এবং ‘ভাষার ব্যবহার’ দেখে আমার কাছে মনে হচ্ছে, এই জয়টা আমাদের প্রাপ্য ছিলনা। হুট করে পেয়ে গেছি!!! আসলেই কী তাই?
১৯৯৭ সালে আইসিসি ট্রফি জয়ের পর, গত ১৮ বছরে বাংলাদেশের ক্রিকেট অনেক দূর এগিয়েছে। কিন্তু তার চেয়ে অনেক বেশি এগোনোর কথা ছিল। ৯৭ সালের পর, ক্রিকেটে যে হারে বিনিয়োগ হয়েছে, আর কোনো খেলায় তার ধারে-কাছেও হয়নি; বরং ক্রিকেটকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে ফুটবলসহ আমাদের অন্যান্য সব খেলাকে প্রায় পঙ্গু করে দিয়েছি! অতএব, এত এত বিনিয়োগের পর এই প্রাপ্তি কী আমাদের প্রাপ্য নয়?
ভারত-বাংলাদেশ খেলায় ‘অভিজ্ঞ’ ধোনি আমাদের ‘নবীন’ মোস্তাফিজকে ইচ্ছে করে গুতো মেরেছেন এবং খেলার পর তা স্বীকারও করেছেন। মোস্তাফিজও তার দায় স্বীকার করেছে এবং এর মধ্যে ম্যাচ রেফারি তার মীমাংসাও করেছেন। কিন্তু এ বিষয়ে আমাদের ‘বিচিত্র’ দেশপ্রেম অব্যাহত আছে। ‘....শুধু ধোনি না, পারলে পুরা ভারত টিমের সবার শিরচ্ছেদ করি আমরা। অথচ নিজের দেশে না করে আমাদের সুন্দরবন ধ্বংস করে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র করার জন্য ভারতের বিরুদ্ধে কথা বললে 'আনু মুহাম্মদ দালাল', 'তুই শালা বাম'- এসব গালি তাকে শুনতে হয়।’ ক’জন সে নিয়ে কথা বলি আমরা? কজন সেই খবর পত্রিকায় পড়ি? মোস্তাফিজকে গুতো মেরে ধোনি অন্যায় করেছে, আর ভারত রামপালে বিদ্যুত কেন্দ্র বসিয়ে আমাদের সুন্দরবনকে ধ্বংসের পায়তারা করছে, সেটা অন্যায় না??
আমার প্রিয় ছোটভাই অনুপম লিখেছে, ‘সারা জীবন ক্রিকেটারদের টাইগার বলে নিজেকেও টাইগারের সাথে তুলনা করবেন, আর সত্যিকারের টাইগার পাইলে চামড়া দিয়ে ডুগডুগি বানানোর স্বপ্ন দেখবেন, এই হলো আমাদের দেশপ্রেম’! মনে পড়লো এক সহকর্মীর গল্প! লঞ্চের চাদে বসে সুন্দরবনের পাশ ঘেঁষে যাচ্ছে আর অপরূপ রূপ দেখছে। হঠাৎ হরিণের দল দেখে বলে ওঠলো, ইশশশ, যদি একটা বন্দুক থাকতো!! এই হলো সৌন্দর্য প্রেমিক!
ক’দিন আগে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে ভয়াবহ সব ছবি পোস্ট করা শুরু হলো! এমন সব ছবি, তাকানোও অসম্ভব! আমার প্রচন্ড আতংক হচ্ছিল যে, এর পেছনে কোনো উদ্দেশ্য আছে! বারবার রামুর ঘটনা মনে পড়ছিল আমার! আমরা গণহত্যাকারীর বিরুদ্ধে একটা মিছিল বের করার সাহস রাখিনা, সংকটের উদ্যোগ নিতে দেখিনা; অথচ ফটোশপের ছবি ছড়িয়ে দিয়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে দিতে খুব পারদর্শী!
এদেশের মানুষের মনে পাকিস্তানের প্রতি এক ভয়াবহ ঘৃণা জমা আছে। অনেক দিন আগে সেই একই রকমের ঘৃণা ভারতের প্রতিও তৈরির চেষ্টা হয়েছিল। বলা হয়েছিলো, একটা রাজনৈতিক দল জিতলে ভারত-বাংলাদেশ এক হয়ে যাবে। সেই চেষ্টা অনেকাংশে সফলও হয়েছে। একটা প্রজন্মের বুকে সেই ঘৃণার বীজ বপণ করা হয়েছে। পাকিস্তানের প্রতি আমাদের ঘৃণা কমেনি। এই প্রজন্ম নতুন করে ঘৃণা করতে শিখেছে। কারো কারো পোস্ট দেখলে আমার মনে হয়, একই ধরনের ঘৃণা ভারতের বিরুদ্বেও নতুন করে তৈরির চেষ্টা চলছে! অথচ এরা সীমান্ত হত্যা নিয়ে কথা বলেনা, বাণিজ্যের ভারসাম্য নিয়েও কথা বলেনা!
ক্রিকেট আমাদের আবেগ! আর ’৭১ আমাদের অস্তিত্ব! এই দুইকে ককটেল বানানো যাবেনা! ক্রিকেটকে মাঠে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। দেশপ্রেম থাকলে সেটা সব জায়গায় সমানভাবে দেখানো জরুরি! মাশরাফির দেশপ্রেম সর্বজনবিদিত! সব দলের বিপক্ষে ওর জেতার চেষ্টা একইরকম! অথচ আমরা সুবিধামতো সেটাকে প্রকাশ করছি! যার বিরুদ্ধে যেমন দরকার!
দেশ কোনো রক্ষিতা নয়! কখনো ভালোবাসলাম আবার কখনো ছুড়ে ফেলে দিলাম!!!
২| ১৯ শে জুন, ২০১৫ রাত ১১:০১
ঢাকাবাসী বলেছেন: আপনার সাথে একমত।
১৯ শে জুন, ২০১৫ রাত ১১:০৭
রাজু নূরুল বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই!
১৯ শে জুন, ২০১৫ রাত ১১:০৮
রাজু নূরুল বলেছেন: ঠিকই বলেছেন। সহমত আপনার সাথে!
৩| ২০ শে জুন, ২০১৫ দুপুর ২:৪০
নীল আকাশ ২০১৪ বলেছেন: যারা খারাপ, তাদেরকে ঘৃণা করার মধ্যে কোন অন্যায় নেই। ভারত যতটা খারাপ, আওয়ামী লীগ তার চেয়ে কয়েকগুণ খারাপ। আওয়ামী লীগের নেতা থেকে শুরু করে অখ্যাত সমর্থক পর্যন্ত সবার প্রতি রইল আমার থু থু ফেলানো ঘৃণা।
৪| ২১ শে জুন, ২০১৫ বিকাল ৩:৩৮
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: হুজুগ আর শোঅফ দুটো ভয়াবহ ব্যাধি।
লেখা ভালো লেগেছে +++
ভালো থাকবেন।
২২ শে জুন, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৪৮
রাজু নূরুল বলেছেন: Thanks so much! You too
©somewhere in net ltd.
১| ১৯ শে জুন, ২০১৫ রাত ১০:৫১
শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন: পোস্টে ভালোলাগা। আমরা ঘৃনা করাটাকে দেশপ্রেমের অংশ মনে করছি। কিন্তু আমরা ভুলে যাই, আমরা জন্মগতভাবে বাঙ্গালী, নিজের ইচ্ছায় বাঙ্গালী হিসেবে জন্ম নেইনি। সবই খোদার কিংবা প্রকৃতির ইচ্ছা। ভালো খারাপ সব জাতির মধ্যেই আছে। আমাদের মধ্যেও আছে। তবে সবার উপর মানুষ সত্য, তাহার উপর নাই। একটা শিশুকে কিভাবে শিক্ষা দেয়া হচ্ছে, কোন পরিবেশে মানুষ করা হচ্ছে এগুলোর উপরেও তার ভালো খারাপ মানুষ হয়ে ওঠা নির্ভর করে।
আমরা খেলাটাকে খেলা হিসেবে নিলেই ভালো, যুদ্ধ হিসেবে নয়। হিংসা আর ঘৃনার বানীগুলোও কেবল অক্ষর হয়েই থাকুক, বাস্তব জীবনে এগুলো চলে না আসলেই ভালো।