নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কথা হয়ে যায়..

নূরুল আলম রাজু, উন্নয়নকর্মী! একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কর্মরত।

রাজু নূরুল

রাজু নূরুল › বিস্তারিত পোস্টঃ

আহারে, এতো কষ্ট করে তোমার বাপে পড়ালেখাটা করাইলো, একটা প্রাইমারি স্কুলেও চাকরি জোগাইতে পারলানা?

৩০ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ৮:২৫


মাঝেমধ্যে বিরাট হতাশ লাগে।

কালই সুমাইয়া শিমু’র বিয়ে নিয়ে লিখেছিলাম। বিয়ের খবর ছাপিয়ে একটাই খবর, বরের গায়ের রঙ কালো! এই নিয়ে গত দুইদিন প্রবল হইচই গেলো। ভাবছিলাম কয়দিন আর লিখবোনা! অথচ আজই মনের মধ্যে অসংখ্য বিষয় এসে জমা হয়ে গেছে।

এক বড় ভাই লিখেছিলেন, আপনি যদি আপনার সন্তানের মনের মধ্যে কোনরকমে একবার ‘জাফর ইকবাল’ ঢুকিয়ে দিতে পারেন, তাহলে সেই সন্তানের ভবিষ্যত নিয়ে আর ভাবতে হবেনা। সেই প্রিয় জাফর ইকবাল স্যার, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সিঁড়িতে বসে একা একা বৃষ্টিতে ভিজছেন আর কাঁদছেন। বলেছেন, তিনি পারলে গলায় দড়ি দিতেন। ছাত্রলীগ শিক্ষকদেরকে পিটিয়েছে, সঙ্গে ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান। এই লজ্জা ;কী ড. জাফর ইকবালের একার?

বাংলাদেশের অর্থনীতি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ওপর দাঁড়িয়ে গেছে। যারা সারা দিন মাথার ঘাম পায়ে ঠেলে কাজ করছে। অর্থনীতির চাকা ঘুরছে। দেশের সম্মান তুলে ধরছে সবার ওপরে। আশি লাখ গার্মেন্টস শ্রমিক দেশের চেহারাটা পাল্টে দিয়েছে। আমরা যারা এনজিওতে কাজ করি, আমাদের সন্তুষ্টির জায়গা হলো, আমরা দেশের পিছিয়ে পড়া, অধিকারবঞ্চিত মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টা করি। এ্যাডভোকেসি টাইপের কাজের মাধ্যমে অনবরত সরকার বাহাদুরকে চাপে রাখার চেষ্টা চালাই। ঠিক কাজটা মনে করিয়ে দেই অনবরত! অথচ এদেশে না বেসরকারি-না এনজিও, কারোরই কাজের কোনো স্বীকৃতি নাই! মেয়েদের পছন্দের ৩৩ রকমের বরের তালিকায় এনজিও কর্মী বা গবেষকরা নাই!

গতকাল বিসিএস পরীক্ষার রেজাল্ট বেরিয়েছে। ফেসবুকজুড়ে হা-হুতাশ, অভিনন্দন, শুভেচ্ছা, কার হলো, কার হলোনা। কার কোথায় হলো, ইত্যাদি। বিসিএস মানে সরকারি চাকুরি! অথচ এই সরকারকে নিয়েই আমাদের যত অভিযোগ! সরকারি বাস ভালোনা, বাসাও ভালোনা! রেশনের চালে পোকা, সরকারি স্কুলে দুর্নীতি, হাসপাতালে গন্ধ, ঔষধ নাই। অফিসাররা কাজ করেনা। ফাঁকি দেয় অথবা ঘুমায়!....তাহলে এই দাঁড়ালো সরকারের সব খারাপ। শুধু বিসিএসটা ছাড়া! ব্যাপারটা এমন যে, বিসিএসটা জিতলে তুমিই শ্রেষ্ঠ সন্তান!
একজন স্ট্যাটাস দিয়েছে! ‘জীবন আজ পরিপূর্ণ হলো। ভালো বর পেয়েছি, ফুটফুটে সন্তান পেয়েছি। এবার বিসিএস পেলাম। আর কিছু চাইনা!’ - এই স্ট্যাটাসের জবাব কী? সেইতো প্রাগৈতিহাসিক ভাবনা। এই প্রজন্মওতো এগোয়নি। অথচ এরা সব বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছে।

বছর বিশেক আগের এক বড় ভাইয়ের গল্প। ঈদে বেড়াতে গেছেন। ভালো চাকরি করেন। লাখ খানেক টাকা মাসে বেতন! প্রবীণ প্রতিবেশি জিজ্ঞেস করলো, ‘কী করো বাবা?’ - ভাই জবাব দিলেন, একটা এনজিওতে কাজ করি চাচা। প্রতিবেশীর হুতাশ, আহারে, এতো কষ্ট করে তোমার বাপে পড়ালেখাটা করাইলো, একটা প্রাইমারি স্কুলেও চাকরি জোগাইতে পারলানা?

সেই মনোভাবের কোনো পরিবর্তন হয়নাই।
সেই বিশ বছর আগে যেমন ছিলাম।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.