নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিজেকে একা রাখতেই বেশি পছন্দ করি, তারপরও মাঝে মাঝে এক অদৃশ্য অস্তিতকে উপলদ্ধি করি।

বিজ্ঞান আমাদের দিয়েছে বেগ, হারিয়েছি আবেগ।

বিবর্ন সভ্যতা

বিজ্ঞান আমাদের দিয়েছে বেগ, কেড়ে নিয়েছে আবেগ, আমরা প্রতিনিয়ত প্রবেশ করছি এক বিবর্ন সভ্যতায় ।

বিবর্ন সভ্যতা › বিস্তারিত পোস্টঃ

সেই বিখ্যাত ডায়ালগ “এক দেশে এক রাজা ছিল”

৩১ শে আগস্ট, ২০১৫ সকাল ১০:০১

ছোটবেলায় আমরা যারা ছোট শহরে/গ্রামে বড় হয়েছি তারা কমবেশি নানা, দাদাদের কাছে রাতে ঘুমানোর সময় রূপকথার গল্প শুনেই শৈশব কাটিয়েছি। তারা নিশ্চয় জানেন যে, ঐসব অধিকাংশ গল্পের শুরুটা হত “এক দেশে এক রাজা ছিল” দিয়ে।সেই বিখ্যাত ডায়ালগ “এক দেশে এক রাজা ছিল” শুনামাত্রই সব কোলাহল বন্ধ করে পিনপতন নিরবতায় গল্প শুনার জন্য সবাই প্রস্তুত হয়ে যেতাম। সেই গল্প শুনার সাথে সাথে চোখের সামনে ভেসে উঠত গল্পের রাজা, প্রজা, দৈত্য দানবদের চেহারা। ভৌতিক গল্পে তো ভয়ে একজন আরেকজনকে জড়িয়ে ধরতাম, এমনকি হিসু করার জন্য বাইরে গেলেও মনে হত এই বুঝি পিছন থেকে কেউ হামলা করতে প্রস্তুত হয়ে আছে। গা শির শির করত, অন্ধকারে ঝোপঝারে আবিস্কার করতাম বিভিন্ন আকৃতির ভেীতিক চরিত্র। হিসু করা শেষ করে উসাইন বোল্টের স্পিডে এক দৌড়ে চলে আসতাম ঘরের ভিতর। ভাগিস্য আজকের বাচ্চাদের সেসব শুনতে হয় না !! চলুন গল্প ছেড়ে এবার খেলার মাঠ থেকে ঘুরে আসি-
কানামাছি, বৌ ছি, গোল্লাছুট, দাড়িয়াবান্ধা ইত্যাদি অনেক খেলা ছিল তখন বিনোদনের, শারিরিক চর্চার একটি অবিচ্ছেদ্দ অংশ। সব খেলার নিয়মগুলো হয়ত এখন আর পুরোপুরি মনে না থাকলেও খেলার সাথে জড়িত স্মৃতিগুলো এখনো আবেগতাড়িত করে কোন নিয়ম ছাড়াই। ফুটবলে তো ফিফার কোন নিয়মকেই তোয়াক্কা করতাম না, নিজেদের মত করে ”জোর যার মুল্লুক তার” নীতিই ছিল একমাত্র সংবিধান। একবার তো আমার পায়ের সাথে লেগে (আমার পা বিড়ালের হাড্ডি নামে খ্যাত ছিল কিনা) এক ছেলের এক সপ্তাহ বিনা নোটিশে ছুটি কাটাতে হয়েছিল। আফসোস সেই সোনালী বিকেলগুলো এখন কাটে কীপ্যাডে আঙ্গুলের কারুকাজের দক্ষতার প্রমান করতে করতে। খেলা শেষে সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরা তারপর ধূলা মাখা দেহখানি নিয়ে মায়ের বকুনির না খেলে মনে হত কি যেন একটা মিস্ হয়ে গেল। ভাগিস্য এখনকার বাচ্চাদের খেলা মনিটরেই সীমাবদ্ধ থাকে ফলে তারা বিনা নোটিশে ছুটি কাটানো এবং মায়ের বকুনি দুইটাতেই ঝুকিমুক্ত থাকতে পারে! অনেক তো খেলা হল, এবার একটু পড়ালেখা করা যাক-
সন্ধ্যার পর পর পড়তে বসা ছিল তখনকার সময়ের জন্য বাধ্যতামূলক আইন । যা সংবিধানে না থাকলেও সকলের জন্যই সমভাবে প্রযোজ্য ছিল। মফিজের ম্যাজিক টুথ পাউডার ছিল না সত্যি তারপরও “জোড়ছে বল” নীতি ঠিকই প্রয়োগ করা হত মা বাবার পক্ষ থেকে। তাদের দাবি ছিল, যে যত জোড়ে জোড়ে পড়বে তার পড়া তত মনে থাকবে (এই সুত্র এখনকার যুগে চলে কিনা জানি না)। সব ভাই বোন এক টেবিলে যখন জোড়ছে পড় নীতি প্রয়োগে ব্যস্ত তখন সকলের সম্মিলিত শব্দে বোধহয় আশেপাশের জ্বীন ভূতেরাও হতবাক হয়ে যেত। সকল শক্তি শেষে স্পীকারের ভালউম আস্তে আস্তে কমে এলে খাওয়া-দাওয়ার ডাকের অপেক্ষায় র্তীথের কাকের মত বসে থাকা ছিল রুটিন ওয়ার্ক। সকালে ঘুম থেকে উঠে দল বেধে মক্তবে গিয়ে হুজুরের কারুকাজ করা বেতের দিকে তাকালেই গলা শুকিয়ে যেত। কোন দিন যদি বেতের বাড়ির স্বাদ নিতে হত তখন রবীন্দ্রনাথের ইচ্ছা পূরন গল্পের মত ভাবতাম আমি যদি হুজুরের জায়গাতে থাকতাম তবে তাকেও (আশা করি বাকিটা আপনারা বুঝে নিবেন)

গল্পগুলো করার ইচ্ছা হয়েছিল একটা বিশেষ কারনে। আমার চার বছর বয়ষের ভাতিজি এন্ড্রয়েট সেটের প্রায় সব ফাংশনেই যথেষ্ট দক্ষ। বইয়ের অনেক পড়াও মুখস্ত। কিন্তু সে হয়তবা কোন দিনই জানতে পারবে না এই দেশে কার্টুন ছাড়াও একটা সময় বাচ্চারা মাঠে ধূলিমাখা গায়ে কতশত গ্রামিন খেলা করত। পুকুরে দলবেধে সাতার কাটা, প্রতিবেশীদের বাড়ির আম পেয়ারা চুরি করা, মিছে মিছে চোর-পুলিশ খেলা এসব এখন অনেকটা রূপকথার মত শুনায়।
আমরা হয়তবা জীবনের শেষ প্রান্তে দাড়িয়ে একটা সময় অতীতের স্মৃতি রোমন্ধনের জন্য অনেক উপাদান পাব। কিন্তু র্বতমান প্রজন্ম তাদের জিবনের ফাইনাল স্টেজে দাড়িয়ে যখন পিছনে ফিরে তাকাবে তখন রোবটিক কিছু জিবনপ্রনালী ছাড়া হয়তবা কিছুই অবশিষ্ট পাবে না।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে আগস্ট, ২০১৫ সকাল ১১:৩২

আল ইমরান বলেছেন: আধুনিক যুগের পোলাপান আমাদের সেই আবেগ বুঝবে না এটাই স্বাভাবিক। আপনার লেখা পড়ে নস্টালজিক হয়ে গেলাম।

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:০৩

বিবর্ন সভ্যতা বলেছেন: সেটাই ভাই, এখন সবাই ডিজিটাল হয়ে গেছে। কারো মনেই সেই ঐতিহ্য বাঙ্গালিত্ব আর অবশিষ্ট নেই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.