নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নৈতিকতার দিক থেকে আমি নিঃস্ব। লেখাপড়ায় চরিত্রের সংস্কার বদলায় না। ভেতরের অন্ধকার ঘোচে না। নাচ মহলে হাজার বাতির রোশনাই, খাসমহলে অন্ধকার।

আহমেদ রাতুল

আমি খুব সাধারন একজন মানুষ। আমার কোন ইতিহাস নেই, আর ভূগোল দেখতেই পারছেন।

আহমেদ রাতুল › বিস্তারিত পোস্টঃ

হ য ব র ল

০৮ ই মে, ২০১৮ রাত ১২:২৩


তাকে দেখে আমি ভাবি সব থেকে সুন্দর দৃশ্যটি বুঝি এই ।
তাকে ছুঁয়ে আমি বলি,
সে আমার ভীষণ রকম সুখ।
তার জন্ম শুধু আমার জন্যে থাকুক।
তার মৃত্যু শুধু আমার জন্যে থাকুক ।
তার জন্যে আমার অপেক্ষা ছিল,অশ্রু ছিল।
অজস্র
চিঠিতে তাকে আমি ভালবাসি লিখেছিলাম।
আমি চাই একটা চাঁদ উঠুক
তার কথা শুধু আমার জন্যে থাকুক,
তার ব্যথা শুধু আমার জন্যে থাকুক।
এমন তো নয় মেয়ে বলে কেউ চাঁদ ভাববে না ।
এমন তো নয় মেয়ে বলে কারো রূপ খুজতে নেই ।

মুখ ভার করে আমার দিকে তাকিয়ে ছিলো বৃষ্টি। যাক এতক্ষনে তার একটা নাম দেওয়া গেল। বৃষ্টি ভেজা এই রাতে, স্বপ্ন দেখি....

আমাকে চমকে দিয়ে হঠাৎ আমাকে জড়িয়ে ধরে বলেই
ফেললো , “আমি তোমাকে ভালোবাসি”
চারিদিকে তাকিয়ে দেখলাম কেউ দেখছে নাকি।
কোনভাবে বৃষ্টির বাহুবন্ধন ছারিয়ে দৌড়ে পাশের
ঘরে চলে গেলাম। আমার প্রানভয়ে উসাইন বোলটের দৌড় দেখে আম্মুর প্রবেশ আর আমাকে জিজ্ঞাসা !!! “আম্মু
বৃষ্টি বলে ও নাকি আমাকে ভালোবাসে।
আমাকে ছারা নাকি বাঁচবে না। আমার এখন
কি হবে আম্মু … !!! ও কত পঁচা মেয়ে।” আমি হাউ মাউ
করে কেঁদেই ফেললাম। আমার কান্না না থামিয়ে আম্মু
নামের মহিহসি নারী তখন তার শাড়ীর আঁচল দিয়ে মুখ ঢেকে চাপা হাসি দিয়ে ঘর থেকে চলে গেলেন। আম্মুর
সেই চাপা হাসির কারন তখন বুঝতে না পারলেও আজ
ঠিকই বুঝি। বড় হইসি না … !!!
সেই বয়সে আমি সুকুমার রায় কিংবা তিন
গোয়েন্দা পড়ে বিশাল জ্ঞানী আর বৃষ্টি সারাদিন
বাংলা আর হিন্দি সিনেমা দেখে ভীষন রোমান্টিক
মেয়ে। আমাকে দেখলেই গান শুরু করতো, ” তুম পাস আয়ে,
ইউ মুজকো রায়ে…” বৃষ্টির আচার আচরন তেমন পছন্দ
না করলেও বৃষ্টিকে ছাড়া আমার কোন উপায় ছিল না। চার দেয়ালের বন্দী জীবনে বৃষ্টিই ছিল আমার খেলার
সাথী অথবা বলা যেতে পারে সব থেকে ভালো বন্ধু।
আমি যখন ওকে হারকিউলিসের অভিযানের গল্প আর
সিন্দাবাদের “ইয়া আল্লাহ আমায় সাহায্য করো” এই
টাইপের গল্প শোনাতে চাইতাম ও
উল্টা আমাকে হিন্দী মুভির রিভিউ শুনিয়ে দিতো। খুব ভালো নাচতে পারতো, হাত পা কোমড় দুলিয়ে নেচেও
দেখাতো। মাঝে মাঝে গলার
ওড়না ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে কি এক রকমের নাচ দিত যা সেই
বয়সে আমার জ্ঞানের বাইরে ছিল। দু একবার সর্প
নাগিনের নাচ দেখার সৌভাগ্যও আমার হয়েছিল বলা-
বাহুল্য।
এভাবেই দেখতে দেখতে বেশ কিছু বছর কেটে যায়।
আমি তখন তখন ভবিষ্যত গড়ায় ব্যাস্ত। নিক্তি আর
ক্যালভিন স্কেলের সুক্ষ রিড খাতায়
টুকে স্যারকে দেখিয়ে মার্ক বাড়ানো ছারা তখন আর
কোন লক্ষ্য স্থির করতে পারছিলাম না। হঠাৎ করেই
একদিন আমার জন্মদিনে বৃষ্টির দেয়া গিফট দেখে ওর কথা মনে পরে গেলো। কিছুদিন থেকে যে ও
আমাকে জ্বালাতন করছে না সেটা আমি বুঝতেই পারিনি।
কেন যেন ওকে দেখতে খুব ইচ্ছে হলো সেদিন। আর সেদিন
বিকেলেই আমার জীবনের সব থেকে বড় হৃদকম্প হয়েছিল,
রিকটার স্কেলে পরিমাপ করলে যার মাত্রা নয়
ছারিয়ে যাবে।
সেদিন বিকেলে ছাদে বসে আমি ভাবছিলাম বৃষ্টির
আবার অসুখ করলো নাকি। হঠাৎ করেই দেখি কোন
একটা মেয়ে একটু দূরে দাঁড়িয়ে আমি যেদিকটায়
তাকিয়ে ছিলাম সেদিকে তাকিয়ে আছে। পড়নে লাল
পারের শাড়ি, (যেটা প্রথমবার
কিনতে গিয়ে দোকানে না পেয়ে আমাক্র ওপর রাগ ঝেড়েছিল ) ঠোঁটে হালকা লাল লিপস্টিক, চোখে বেশ
করে কাজল দেয়া, চুল
ছেরে দেয়াতে মেয়েটাকে অন্যরকম সুন্দর লাগছিলো।
ভালো করে লক্ষ্য করে দেখলাম এইটা বৃষ্টি। আমি পুরাই
আহাম্মক হয়ে গেলাম। এই কয়দিনে বৃষ্টি কত বড়
হয়ে গেছে,আবার তার উপরে পুরাই অপ্সরী ছারিয়ে গেছে।
আমি কাছে যেয়ে আস্তে করে বললাম, “বৃষ্টি, তোকে আজ
দেখতে খুব সুন্দর লাগছেরে, মনে হচ্ছে আধোনীল আর
আধো গোধূলীর আকাশ থেকে কোন
রাজকন্যা নেমে এসেছে” ; লজ্জায় টমেটোর মত মুখ
করে দৌড়ে পালিয়ে যায় বৃষ্টি। এরপর আমার ধারে কাছেও ভিরতো না বৃষ্টি। কোন কারনে ভুল
করে যদি আমি ওর সামনে পরে যেতাম লজ্জায় মাথা নীচু
করে রাখতো। আমি এক সময় অনুভব করলাম এই মেয়েটার
সাথে আমার হৃদয়ের কোন সম্পর্ক আছে।
আমি ঘুমাতে গেলে ঘুমাতে পারি না, রাস্তায় হাটার
সময় বিরবির করে কি যেন বলতে থাকি, বাসা থেকে বের হওয়ার সময় বৃষ্টিদের বাসায়
উঁকিঝুকি মারি ওকে একটু দেখার আশায়। বুঝলাম
আমি ইন্তেকাল ফর্মুলার লাস্ট স্টপে দাঁড়াইয়া আছি।
এরই মধ্যে আমি বিলেতে পড়াশুনার জন্য চান্স
পেয়ে যাই। কিছুটা খুশির মধ্যেও বেশি কস্ট হচ্ছিল
বৃষ্টিকে দেখতে পারব না ভেবে। ইচ্ছে ছিলো যাওয়ার
আগে বৃষ্টিকে ভালোবাসার কথা বলবো, কিন্তু আমার
হৃদয়ের অপারেটিং সিস্টেম থেকে বলতে লাগলো,
“আপনার বুকে যথেষ্ঠ পরিমান সাহস জমা নেই, অনুগ্রহ পূর্বক রিচার্জ করে আবার আসুন, ধন্যবাদ।” যাবার আগ
পর্যন্ত টুকটাক কথা হতো আমাদের মাঝে কিন্তু সাহস
করে ভালোবাসি শব্দটা বলতে পারতাম না।
বুঝতে পারলাম আমি সাহসের ফার্স্ট লেভেল পার
করতে পারিনি এখনও। আমি তখন
বুঝতে পারি যারা সত্যিকারের ভালোবাসে , ভালোবাসার মানুষের কাছে প্রথমবার এই
শব্দটি বলা কতবড় দুষ্কর কাজ। কনকনে শীতের মাঝেও
ওকে দেখলে আমি ঘামিয়ে যেতাম। এভাবেই
লুকোচুরিতে চলতে থাকে দুটি মনের নিরন্তর
ভালো লাগার খেলা। কিন্তু হঠাৎ করেই সব কিছু কেমন
যেন এলোমেলো হয়ে গেলো।
দেশ ছাড়ার জন্য সব প্রস্তুতি শেষের পথে। আর মাত্র
দুইদিন পরে আমি বনবাসি হতে যাচ্ছি ভাবতেই কেমন
যেন শিহরন জাগে গায়ে। এরই মধ্যে আমার
মোবাইলে একটা মেসেজ আসে। মেসেজে লিখা ছিলো,
“কাল আমার বিয়ের কথাবার্তা পাকা করবে।
যদি ভালোবাসো ফিরে এসো; বৃষ্টি।” আমি স্তদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম। পাশে থেকে এক বন্ধু
ঝুকে পরে দিয়ে জিজ্ঞাসা করলো,” কিরে খিজ
খাইলি কেন? কি হইছে?” আমি অস্ফুস্ট স্বরে শুধু
বললাম ,”বৃষ্টির বিয়ে।” আমি কিছুতেই
বৃষ্টিকে হারাতে চাই না। ছোট বেলার ছোট ছোট সব
স্মৃতি মনে পরে যাচ্ছিল। কেউ যদি আমাকে রচনা লিখতে বলে চাইল্ডহুড
মেমরী নিয়ে তাহলে সাত পৃষ্টা জুড়েই থাকবে বৃষ্টির
কথা। সেই বৃষ্টিকে আমি হারাতে বসেছি !
সন্ধ্যায় ঠিক আগে আগে দৌড়ে আমাদের বাসায়
না যেয়ে সোজা বৃষ্টিদের বাসায় ঢুকলাম।
বাসা ভর্তি মেহমান। কিছু অচেনা লোক। আমি তখন
হিতাহিত জ্ঞানশূন্য। হাপাতে হাপাতে মুরব্বিদের
সামনে যেয়ে পাগলপ্রায় হয়ে সিনেমার
স্টাইলে বলে ফেললাম, “এই বিয়ে হতে পারে না। I Love Her From Childhood !!!”
পাশে তাকিয়ে দেখি আমার বাবাও বসে আছে।
মুরুব্বিরা সব একে অপরের দিকে তাকাতে শুরু করেছে।
আমি পাগলের মত কিসব বলে ফেলেছি। আজ
এখানে নির্ঘাত কোন লঙ্কাকান্ড না হয়ে যায় না।
কিন্তু হঠাৎ করেই ঘরে হাসির রোল পরে গেলো। কেউ হাসি থামাতে পারছে না। আমি ভাবলাম বনবাসি হবার
শোকে মাথার নাট-বল্টু মনে হয় ২-৩ টা লুজ হয়ে গেছে।
পরে যেয়ে জানতে পারলাম সেদিন বৃষ্টির সাথে আমারই
বিয়ের কথা হচ্ছিল।
পাশের ঘরের জানালায় বৃষ্টি তাকিয়ে ছিল।
পা টিপে পেছন থেকে যেয়ে ওর কাঁধে হাত রাখলাম।
বৃষ্টি মৃদু কেঁপে উঠলো। আজ ওকে অপ্সরীর মত দেখাচ্ছে।
ওর গাল টিপে দিয়ে বললাম,
“এখনো দুষ্টুমী কমেনি তোমার ???” লজ্জা রাঙা মুখ
ঢাকতে আমার বাহুডোরে এসে ধরা দিলো আমার স্বপ্নের অপ্সরী। দুহাতে জরিয়ে নিলাম সারা জীবনের জন্য।
আজও দুষ্টুমী কমেনি ওর বরং ভালোবাসা বেড়েছে … !!!
অন্ধকারে ছিলাম, অনেক ভালো ছিলাম।
কখনো ভাবিনি যে তুমি আমার জীবনে একটা অস্তহীন মোমের
প্রদীপ দিয়ে আমার জীবনকে আলোকিত করবে।
তোমার এই আলোতে আমি ভুলেই গিয়াছিলাম যে আমি অন্ধকারের
একজন একা মানুষ।
তুমি কেনই বা আমাকে ভালবাসলে আর কেনই
আমাকে ভালোবাসার মাঝে রেখে আমাকে কষ্টের
সাগরে একা ফেলে চলে গেলে।
আমাকে ভালোবাসা শিখিয়ে আলোকিত পৃথিবী থেকে অন্ধকারের
পৃথিবীতে একা ফেলে যেতে তোমার একটু’ও কষ্ট হলো না।
এটাই
কি ছিল তোমার ভালোবাসা।
জানি হয়তো তুমি আমাকে কোন দিন ভালবাসো নি।
তুমি শুধু
আমার কষ্ট দেখতে চেয়েছ।
আমার কষ্ট
দেখে যদি তুমি খুশি হওও তাহলে তোমার প্রতি আমার কোন
অভিযোগ, অভিশাপ নাই।
কারণ যারা সত্যিকারের ভালবাসতে জানে তারা কখনো অভিশাপ অভিযোগ দিতে জানে না।
আমি এখনো তোমার অপেক্ষায় প্রতিটি প্রহর কাটাই।’এই বুঝি তুমি এলে, আবার আমার জীবনকে আলোকিত করলে।
শেষ কথা:-
আমাকে একা রেখে কষ্টের সাগরে,
কেমন সুখে আছো তুমি কে ই বা জানে
কষ্টে রেখে যদি তুমি পাঅ খুঁজে সুখ
তাহলে আমার মনে থাকবে না কোনো দুঃখ।
এই তো সেদিন জানতে চাইলে তুমি
ভালোবাসা কেমন ?
আমি দেখিয়ে দিলাম বিশাল আকাশের বুকে
অবিরাম ছুটে চলা মেঘের দল ।
তুমি বুঝে নিলে ভালোবাসা হৃদয় থেকে হৃদয় ছুটে বেড়ায় ।
জানতে চাইলে তুমি
স্বপ্ন কেমন ?
আমি মেঘ থেকে ঝরে যাওয়া কয়েক ফোঁটা বৃষ্টি
দেখিয়ে দিলাম ।
তুমি ঠিক বুঝে নিলে স্বপ্ন ঝরে যায় মাঝে মাঝে ।
জানতে চাইলে তুমি
বেদনা কেনো জমে থাকে হৃদয়ে
জানতে চাইলে বেদনার আপন প্রকাশ কি ?
আমি চোখের কোণে নোনা জলের ঢেউ দেখালাম ।
তুমি বুঝে নিলে অশ্রু তীব্র বেদনার অর্জন ।
জানতে চাইলে তুমি
কষ্ট কেমন ?
আমি ঠোঁটের কোণে এক চিলতে হাসি নিয়ে
বুক চিরে দেখিয়ে দিলাম ।
তুমি বুঝে নিলে ভালোবাসার কষ্ট ঐ বুকেই লুকিয়ে থাকে ।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই মে, ২০১৮ সকাল ৯:৫৯

রাজীব নুর বলেছেন: বড্ড অগোছালো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.