নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রাতুল ভাই

সব কিছু নিয়েই ভাবি সবকিছু নিয়েই লিখি৷

রাতুল ভাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুগ্ধতার নাম ছুঁয়ে দিলে মন

১৮ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১১:০৭

ফরেন লোকেশনে হিরো-হিরোইনকে দিয়ে কুচকাওয়াজ করানো হয়নি,ছিলনা কোন আগডুম বাগডুম লিরিক্স সহ হাই বিটের গান, ছিলনা কোন কৃত্তিম সংলাপ কিংবা নায়িকার পা দেখানোর প্রবনতা........

তবুও এক অনন্য সিনেমাটিক আবহাওয়া বিরাজ করছিল ছবির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত,একেবারে অন্যরকম ও মনোমুগ্ধকর৷ যারা সিনেমা বলতে শুধুই উপরের বিষয় গুলোকে ভাবে তাদের মুখে চপটাঘাত ছিল "ছুঁয়ে দিলে মন"



কাহিনী একেবারে সাধারন৷ সেইই পুরানো গল্প৷ কিন্তু হলে বসে বার বারই মনে হচ্ছিল নতুন কিছু দেখছি অসাধারন কিছু দেখছি৷ আসলে ছুঁয়ে দিলে মন এমন একটি ছবি যেটি আপনাকে আড়াই ঘন্টা হলে বসিয়ে রাখবে৷ এই আড়াই ঘন্টায় আপনি কখনও দম ফাঁটিয়ে হাসবেন, আবার কখনও তালিয়া বাজাবেন সজোরে, কখনও সিঁটি দেওয়ার চেষ্টা করবেন, আবার কখনও অতিউৎফুল্ল হয়ে বাচ্চাদের মতো হৈ হৈ করে চিৎকার করবেন৷ মোটকথা আপনি উপভোগ করবেন ছবির প্রতিটা বাঁক,প্রতিটা মুুহুর্ত৷



ছবির শুরুতে আবির-নীলার সেই কিশোর প্রেম,গিটার বাজানো তারপর আবিরেও ভুল করে হৃদয়পুরে ফিরে আসা,নীলার সাথে দেখা হওয়া,কথপোকথন, নীলার আবিরকে চেনা,ভালবাসা দাও ভালবাসা নাও সহ পুরো-ব্যপারটাই আপনার হৃদয়ে বড় একটা

মোচড় দিয়ে যাবে৷ মূলত ছবির শুরুর ঐ ঘটানাগুলো ছিল ছবির সবচেয়ে উপোভোগ্য দিক৷ আপনি যেমন স্বভাব কিংবা বয়সেরই হউন না কেন ছবির ঐ সময় গুলো আপনাকে মুগ্ধ করবেই, আপনি মুগ্ধ হতে বাধ্য৷ তারপর কাহিনী যতই সামনে এগোতে থাকবে আপনার মুগ্ধতার পারাদ ততই ওঠানামা করতে থাকবে ক্রমাগত৷



আজকাল বাংলাদেশি সিনেমার মান একটু একটু করে বাড়লেও সিনেমায় অভিনয় শিল্পীদের অভিনয়ের মান ক্রমাগত নিম্নমুখী

হচ্ছে৷ আজকাল বেঁশির ভাগ ছবিতেই দুই একজন ছাড়া বাকিরা সবাই কাঁচা অভিনয় এবং ওভার এ্যাকটিং করে৷ এক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম ছুঁয়ে দিলে মন৷ ছবির প্রত্যেক অভিনেতা অভিনেত্রী নিজ নিজ চরিত্রে পার্ফেক্ট অভিনয় করেছে৷

ছবির৷ মমর অভিনয় মন ছুয়ে গেছে৷ শুভও আগের তুলনায় অনেক ভালো করেছে৷ তবে ছবিতে যাকে দেখে দর্শক সবচেয়ে বেশি মজা পেয়েছে তিনি হলেন দুলা ভাইয়ের চরিত্রে মিশা সওদাগর৷ তিনি যখনই পর্দায় আসছিলেন তখনই কারনে-অকারনে করতালি আর সিঁটিতে বদলে যাচ্ছিল হলের পরিবেশ৷ মিশা ছাড়াও শুভর বন্ধুর চরিত্রে আনন্দ খালেদ অনন্দ দিয়েছে দর্শককে৷ তাছাড়া আবীরের ছেলে বেলার চরিত্রে অভিনয় করা ছেলেটাও ভাল ছিল৷ ঢালিউডে শিশু অভিনেত্রী হিসেবে দীঘি ও পূজা জনপ্রিয়তা পেলেও এক্ষেত্রে কোন ছেলেকে দেখেনি অনেক বছর৷ এ ছেলেকে কাজে লাগাতে পারলে ঢালিউড অনেক বছর পর একটি কিশোর অভিনেতা পাবে৷



ছবির গান গুলোও অসাধারন ছিল৷ নিসন্দেহে এটাই ছিল গত কয়েক বছরের মধ্যে সেরা মিউজিক এ্যালবাম৷ হাবীবের ভালবাসা দাও শিরোনামের গানটি আমার মনে গেথে গিয়েছিল৷ হল থেকে আসার কয়েকঘন্টা পরেও গানটি গুন গুন করে গাইছিলাম৷ ঐ গানটি ছাড়া ছবির টাইটেল ট্রাক, ছুয়ে দিলাম,শূন্য থেকে সহ প্রত্যেকটি গান যে কারো ভালো লাগবে৷



এছাড়াও ছবির লোকেশন, গানের লিরিক্স মন ছুয়ে গেছে৷ ছবিতে ক্যামেরার কাজ,পোশাক পরিচ্ছেদ ছিল প্রশংসনীয়৷ মোটকথা পরিচালক শিহাব শাহীন বেশ যত্ন নিয়েই ছবিটি বানিয়েছেন৷



ছবিতে সাধারন দর্শকদের চোখে পড়ার মতো কোন সীমাবদ্ধতা কিংবা ভূল ছিল না৷ তবে ভূল যদি ধরতেই হয় তবে ছবির ক্লাইমেক্সটার কথা উল্লেখ করা যায়৷ ছবির ক্লাইমেক্সটা অনেকেরই মনমতো হয়নি৷ সবাই হয়ত একটু ব্যাত্যিক্রমি ক্লাইমেক্স আশা করেছিলেন৷ তবে এ ধরনের গল্পে এর ব্যাতিক্রমী ক্লাইমেক্স আগে কখনও দেখা যায়নি, হয়ত এর ব্যাতিক্রম ক্লাইমেক্স দেওয়াও সম্ভবও নয়৷



ছবিটি আমি গত শুক্রবার কুমিল্লার মধুমতি হলে দেখেছি৷

বাংলাদেশের খেলা থাকার পরেও ঐ দিন হল হাউস ফুল ছিল৷ হলে শিক্ষিত শ্রেনীর দর্শকদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো৷

তবে বরাবরের মতো শ্রমজীবি দর্শকরাই ছিল সংখ্যাগরিষ্ট৷ হলের প্রত্যেকেই ছবিটিকে বেশ ভালভাবে গ্রহন করেছে৷ ছবিটি শিক্ষিত দর্শকদের যেমন মুগ্ধ করেছে৷ ঠিক তেমনি সাপ্তাহে ছয় দিন পরিশ্রম করে শুক্রবারে একটু বিনোদনের জন্য হলে আসা শ্রমজীবি মানুষগুলোকেও আনন্দ দিয়েছে৷ তাইতো ছবির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দর্শকরা হেসেছে,হাততালি-সিটি দিয়েছে৷



ঢালিউডের বর্তমান প্রক্ষাপট, যেখানে দর্শররা দুই ভাগে বিভক্ত........... সেখানে ছুঁয়ে দিলে মনের মতো ছবি অনেকটা ক্ষরার মধ্যে স্বস্তির বৃষ্টির মতো৷ ভালো ছবি যে সব ধরনের দর্শক সমানভাবে গ্রহনকরে তারই জ্বলন্ত উদাহরন এই ছবি৷ বর্তমান ঢালিউডের প্রেক্ষাপটে আমরা ফারুকীর মতো ডিরেক্টর চাই না যার হাই ক্লাস ছবি হল মালিকেরা হলে তুলতেই ভয় পায়! চাই না তথাকথিত বানিজ্যিক ছবির পরিচালকদের যাদের ছবির নাম শুনলেই অনেকের বমি আসে...... আমরা চাই শীহাব শাহীনদের মতো পরিচালকে যার ছবি সব ধরনের দর্শককে সমান ভাবে মুগ্ধ করে৷



যারা এখনো ছবিটি দেখেননি তাদেরকে বলব যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দেখে ফেলুল ছবিটা৷ আমি মুগ্ধ হয়েছি৷ এবার আপনাদের মুগ্ধ হওয়ার পালা৷

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১২:০২

ঘুম হ্যাপি বলেছেন: মুগ্ধ :) :) :) :) :) :) :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.