নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রাতুল ভাই

সব কিছু নিয়েই ভাবি সবকিছু নিয়েই লিখি৷

রাতুল ভাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুভি রিভিউ: ছেলেটি আবোল তাবোল মেয়েটি পাগল পাগল

২৩ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৮:৩৯

অবশেষে দেখে ফেললাম সাইফ চন্দন পরিচালিত বহুল প্রতিক্ষিত 'ছেলেটি আবোল তাবোল মেয়েটি পাগল পাগল' সিনেমাটি৷ খুব বেশি কিছু প্রত্যাশা করে হলে যাইনি৷ প্রত্যাশা ছিল শুধু একটি মানসম্মত গল্পের, একটু আধুনিক নির্মানের, দর্শককে হলে বসিয়ে রাখার মতো বিনোদনের৷ ছবিতে এসব প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটেছে কি? চলুন খুজে দেখি৷
.
বখাটে ছেলে শাহেদ আইরিনকে ভালবাসে৷ আইরিন সে ভালোবাসা প্রত্যাখ্যান করলে, শাহেদ আইরিনকে জোর করে বিয়ে করতে চায়৷ ফলে আইরিন মাকে নিয়ে ঢাকায় মামার বসায় পালিয়ে আসে এবং সেখানে একটি ভার্সিটিতে ভর্তি হয়৷ সেই ভার্সিটিতে পড়ে বাউন্ডুলে টাইপ ছেলে আরজু৷ মেয়ে পটানো তার বাঁ হাতের খেল৷ একসময় সে আইরিনকে তার প্রেমের ফাঁদে ফেলে এবং একসময় আইরিনের সাথে সত্যিকারের প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে যায়৷ ঘটনাক্রমে শাহেদ ঢাকায় এসো আইরিনের খোঁজ পেয়ে যায় অপরদিকে আইরিনের মামার কাছে আইরিনের জন্য ভালো সমন্ধ আসে, আইরিন সে সমন্ধ প্রত্যাখ্যান করে আরজুর কথা জানালে, আইরিনের মামা আরজুকে তার সাথে দেখা করতে বলে, কিন্তু কোন কিছুর দায়িত্ব নিতে ভয় পাওয়া খামখেয়ালে আরজু মামার সাথে দেখা করা থেকে বিরত থাকে৷ এসব নিয়ে এগিয়ে যায় ছবির কাহিনী৷
.
সত্যি বলতে গেলে গল্পটা খারাপ না৷ মৌলিক, তবে কনসেপ্টটা বেশ কমন৷ তবে বাংলাদেশী সিনেমার গতানুগতিক ধারার বাইরের এবং যুগপোযোগী৷ সবচেয়ে বড় কথা গল্পটা বর্তমান তরুন প্রজন্মের আবেগকে ধারন করতে পেরেছে৷ কিন্তু নির্মাতারা পর্দায় এ গল্পের স্বার্থক রূপায়ন করতে পেরেছে কি? সেটা একটু পরে বলছি৷ তার আগে ছবির গান নিয়ে একটু বলি৷
.
ছবির সবচেয়ে শক্তিশালী দিক হলো এটির গান৷ প্রত্যেকটি গান যেমন শ্রুতিমধুর ঠিক তেমনি চিত্রায়নের ক্ষেত্রেও অসাধারন৷ সেই চিরচেনা লোকেশন হাতিরঝিল, আহসান মঞ্জিল, বান্দরবন, কক্সবাজার ইত্যাদি৷ কিন্তু চিত্রায়নের কারনে মনে হচ্ছিল নতুন কিছু দেখছি...!!! গান গুলোর করিওগ্রাফি ছিল প্রশংসনীয়৷ জানি না করিওগ্রাফার বাংলাদেশী কিনা..... যদি উনি বাংলাদেশী হয়ে থাকেন তাহলে তিনি এদেশের চলচ্চিত্রের জন্য একজন অমূল্য রতন৷ গান গুলোর মধ্যে আমার কাছে সবচেয়ে ভালো লেগেছ থেরাপি এবং আড়ালে গান দুটো৷ থেরাপি গানে আরজু ও তার সঙ্গের মেয়েটি(নাম জানি না) অসাধারন নেচেছে৷ এছাড়া ছবির আইটেম গানটিও প্রশংসার দাবিদার৷ সেট, চিত্রায়ন সব মিলিয়ে গানটিতে নতুন কিছু করার চেষ্টা করা হয়েছে৷
.
ছবির লোকেশন গুলো ছিল বেশ ভালো! অন্তত এফডিসির একঘেয়ে লোকেশনের তুলনায় অনেক ভালো............
ছবির সিনেমাটোগ্রাফিও ছিল প্রশংসনীয়৷ বিশেষ করে শেষের দিকের কিছু দৃশ্যে ক্যামেরার কাজ, কালার, এডিটিং ইত্যাদি ছিল বিশ্বমানের৷
এছাড়া আবহ সঙ্গীতের ব্যবহার ছিল মোটামুটি চলনসই৷
.
এবার আসি অভিনয় প্রসঙ্গে.....
ছবিতে কেউই বাজে অভিনয় করেনি৷ আবার কেউই অভিনয় করে ফাঁটিয়ে দেয়নি৷ একমাত্র শাহেদ ছাড়া বাকি সবার অভিনয়ে একটু আধটু ফাক-ফোকর ছিল৷
আইরিনের অভিনয় ছিল আগের চেয়ে ভালো৷ আইরিনকে বেশ গ্ল্যামারাসও লেগেছে৷ এছাড়া অইরিনের কষ্টিউম ছিল দেখার মতো৷
আরজু অনেক শীর্ষ নায়কদের চেয়ে ভালো কাজ করেছে৷ বিশেষ করে ক্লাইমেক্সের রিবাট বড় ডায়লগটা যেভাবে মারলেন সেটা ভাল্লাগছে৷ উনি আরো আনেক বেশি সুযোগ দাবী করে৷ পরিচালক ও প্রযোজকদের উচিত ওনার প্রতিভাকে কাজে লাগানো৷
এছাড়া শুরুর দিকের আরজুর তিন সাইড নায়িকা বেশ ভালো অভিনয় করেছে৷ প্রত্যেককেই বেশ গ্ল্যামারাস লেগেছে৷
মিশার কয়েক সেকেন্ডের গুরুত্বহীন ক্যারেকটারটা না রাখলেই চলতো৷
এছাড়া বাকিদের মধ্যে বাংলালিংকের বিজ্ঞাপনে অভিনয় করে জনপ্রিয় হওয়া ঐ ভদ্র লোকের কথা (নামটা মনে নেই) আলাদা করে উল্লেখ করা যায়৷
.
ছবির সবচেয়ে দুর্বল দিক ছিল ছবির সংলাপ! শুধু বাজে সংলাপের কারনে অনেকের কাছেই ছবিটা ভালো লাগবে না৷ পুরো ছবিতে এমন অনেক সংলাপ ছিল, যেগুলো কেন বলানো হলো, সেটায় কি বোঝানো হলো তা বুঝতে পারিনি৷
.
আগেই বলেছি গল্পটা ভালোই ছিল কিন্তু চিত্রনাট্যকার চিত্রনাট্যে সেটিকে ঠিক ভাবে দানাবাধাতে পারেনি৷ অনেকটাই গোজামিল দিয়ে কাহিনী এগিয়ে গিয়েছে৷ প্রায়ই কাহিনীকে কেমন যেন খাপছাড়া মনে হচ্ছিল৷ অনেক ব্যাপারই ঠিক ভাবে ফুটিয়ে তোলতে পারেননি নির্মাতারা৷ যেমন শেষের দিকে আরজুর উপলব্ধির ব্যাপারগুলো আরও ভালো ভাবে ফুটিয়ে তোলা যেত৷
এছাড়া ছবিতে ছোট খাটো অনেক ভুল ছিল যেগুলোর বর্ননা দিয়ে লেখা দীর্ঘায়িত করার প্রয়োজনীয়তা বোধ করছি না৷
.
যদিও ছবিতে কমেডি ছিল, রোমান্স ছিল৷ তবুও কেন যেন তৃপ্তি পেলাম না৷ পরিপূর্ন বিনোদন পেলাম না৷
সব মিলিয়ে 'ছেলেটি আবোল তাবোল মেয়েটি পাগোল পাগোল' সিনেমাটি নিয়ে আমি অনেকটাই হতাশ৷
,
এটা সত্য নির্মাতারা ভালো কিছু করার চেষ্টা করেছেন৷ তবে এ চেষ্টায় তারা অনেকটাই ব্যার্থ৷ আশার কথা হলো চেষ্টাটাই আসল৷ নির্মাতারা এবার সফল হয়নি এর মানে এই নয় যে পরেরবার ব্যার্থ হবেন৷ পরিচালক সাইফ চন্দনের জন্য শুভকামনা৷ তার পরবর্তী সিনেমা 'টার্গেট' এর অপেক্ষায় রইলাম৷ আশা করি এই সিনেমার ভুল গুলোর পুনরাবৃত্তি ঐ সিনেমায় ঘটবে না৷

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৮:৫৭

হাসান মাহবুব বলেছেন: ভালো রিভিউ।

২| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৯:২৫

আলভী রহমান শোভন বলেছেন: রিভিউটা ভাল লেগেছে। আপনি বাংলাদেশের বাণিজ্যিক ধারার ছবি দেখেন, আপনাকে তাই সাধুবাদ জানাই।

৩| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৯:৪৪

নাবিক সিনবাদ বলেছেন: মুভিটা দেখার ইচ্ছা আছে, রিভিউয়ের জন্য ধন্যবাদ।

৪| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ২:২০

কিরমানী লিটন বলেছেন: চমৎকার রিভিউয়ের জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে ...

সতত শুভকামনা ...

৫| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ২:৪৯

মেঘনা পাড়ের ছেলে বলেছেন: এককথায় চমৎকার রিভিউ B-)

৬| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১০:৩৩

ক্যান্সারযোদ্ধা বলেছেন: চখাম রিভিউ। দন্যভাত।

৭| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১২:১২

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: পারলে দেখবো

৮| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১:২৪

নাইট রাইটার বলেছেন: রিভিউয়ের জন্য ধন্যবাদ

৯| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১০:৫০

আহমাদ জাদীদ বলেছেন: গুড রিভিউ!

১০| ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ২:৩০

রিয়াদ আল সাহাফ বলেছেন: চমৎকার রিভিউ। কিন্তু মুভির পোস্টার তা দেখেই, মন উঠে গেছে। পোস্টারটা জঘন্য ছিল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.