নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রাতুল ভাই

সব কিছু নিয়েই ভাবি সবকিছু নিয়েই লিখি৷

রাতুল ভাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

জুনায়েদ\'দের জন্ম কেন? কিভাবে?

১৬ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ৩:০০

এটা কোন হুজুগে পোস্ট নয়....
__
রবিবার মধ্য রাতের কথা। ফেসবুকিং ছেড়ে ঘুমাবার প্রস্তুতি নিচ্ছি। হঠাৎ ভাবলাম নিউজ ফিডে একটু ঢু মেরে আসি। বেশ কিছুদিন হলো ফেসবুকের জনপ্রিয় একটা গ্রুপে জয়েন করেছি। ঐ গ্রুপে প্রতি মিনিটে মিনিটে পোস্ট হয়। কাজেই নিউজফিডে ফ্রেন্ডদের পোস্টের তুলনায় ঐ গ্রুপের পোস্টই বেশী আসে। নিউজ ফিডে ঢুকেই ঐ গ্রুপের অনেককে দেখলাম জুনায়েদ নামে কেউ একজনকে গালাগাল দিচ্ছে। ঘটনা কি! কে এই জুনায়েদ? ব্যাপারটা ভালো ভাবে বুঝতে গ্রুপে প্রবেশ করলাম। গ্রুপে বেশ কিছু পোস্টে ঘোরাঘুরির পর বুঝলাম জুনায়েদ নামের কোন এক বখাটে নুরুল্লাহ নামক কোন এক নীরিহ বালককে মর্মান্তিক ভাবে প্রহার করেছে এবং সেই পিটানোর ভিডিও ফেসবুকে আপলোড করেছে। আর সেই ভিডিওর কারনেই এতো হৈ-হুল্লোড়। ইদানিং তীব্র অর্থমন্দায় ভুগছি তাই ঐদিন মোবাইলে মেগাবাইট ছিল না, তাই ভিডিওটা দেখা হলো না। শুধু ফ্রি ডট ফেসবুকের মাধ্যমে সেদিন প্রতিবাদী মানবদরদী বাঙ্গলি ফেসবুকারদের তামশা উপভোগ করলাম বেশ কিছুক্ষন। পরদিন বিকালে ফেসবুকে ঢুকে দেখলাম সেই জুনায়েদের টপিক সেই গ্রুপ ছাড়িয়ে ফেসবুকের বড় বড় পেজ থেকে শুরু করে আমার ফ্রেন্ড লিস্টের অধিকাংশ ফ্রেন্ড্রের প্রোফাইল পর্যন্ত ছড়িয়ে গিয়েছে। কিন্তু অর্থমন্দার কারনে সেদিনও ভিডিওটা দেখা হলো। অবশেষে একটু আগে যখন ফেসবুকের হুজুগে স্টেটাস দ্বাতারা জুনায়েদ টপিকে ক্লান্ত হয়ে নতুন কোন টপিক খুজে নিয়েছে ঠিক তখন ভিডিওটা দেখার সুযোগ হলো।
___
ভিডিও দেখার পর আমার অনুভূতি....
জীবনে যদি কখনো বাংলা সিনেমা বানাই আমি এই জুনায়েদরে অন্তত ভিলেনের সংলাপ গুলা লেখার দায়িত্ব দিতে চাই। এই পোলায় জোস ডায়লগ বলে।
সিরিয়াস কথায় আসি......
ভিডিওটা দেখলেই বোঝা যায়। এই পোলা মাদকাসক্ত এবং আধ-পাগল। এমনকি মাইর খাওয়া নুরুল্লাও ধোয়া তুলসি পাতা না। ঐ পোলাও মাদকাসক্ত। বাপের দূর্ণীতির টাকায় ইংলিশ মিডিয়ামে পড়া এসব পোলাপাইনের কাজই হচ্ছে দিনরাত ইয়াবা খাওয়া আর অসামাজিক কাজকর্ম করে বেড়ানো।
ভিডিওতে ঐ পোলা মানে জুনায়েদ (ফেসবুক আইডি অনুযায়ী সুনায়েদ :v ) যেই পরিমান ভাব নিছে। সেটা দেখে যেই কারোরই এই পোলারে পিটাইতে মন চাবে এটাই স্বাভাবিক। এমনকি আমি নিজেও সুযোগ পাইলে এই পোলারে মাঝ রাস্তায় শোয়াইয়া দু চারটা লাথি উস্টা মারতাম।
কাজেই জুনায়েদরে নিয়া লাফালাফি, ইভেন্ট খোলা আমার কাছে কিছুটা স্বাভাবিকই মনে হইছে।
কিন্তু প্রশ্ন হলো.........
একটা জুনায়েদরে পিটাইলে কি সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে?
না, কিছুতেই না।
এইরকম জুনায়েদ বাংলাদেশে হাজার হাজার আছে। ঢাকার কথা বাদই দিলাম। আমদের কুমিল্লার অলিতেই গলিতে খোজ করলেও এরকম জুনায়েদ ডজন ডজন পাওয়া যাবে। কাজেই একটা জুনায়েদরে পুলিশে দিলে কিংবা পিটাইলে সমস্যার সমাধান হবে না।
__
অনেক বড় ভূমিকা করে ফেললাম কাজের কথায় আসি।
বাঙ্গালির প্রধান সমস্যা হলো, তারা সমস্যার গভীরে না ডুব দিয়ে কিনারায় বসে হায়-হুতাশ করে। জুনায়েদ টপিকের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটলো। একজন ফেসবুকার-কেও দেখনালাম না জুনায়েদদের জন্ম কেন? কিভাবে? সেটা নিয়ে ভাবতে ও স্টেটাস দিতে।
আমার মতে জুনায়েদদের উৎপত্তি হয়,
উপযুক্ত পারিবারিক পরিবেশের অভাবে এবং সুস্থ বিনোদনের অভাবে।
___
আমি নিশ্চিত ২০ বছর আগে আমাদের বাপ চাচাদের আমলে জুনায়েদদের অস্তিত্ব ছিল না। জুনায়েদরা এই আধুনিক সমাজের সৃষ্টি।
সময়ের সাথে আমাদের বাবারা হয়ে গেছে কর্মমুখী আর আমদের মায়েদের কেউ কর্ম আর বাকিরা হয়ে গিয়েছে সিরিয়াল মুখী। ফলে জুনায়েদের মতো ছেলেরা পিচ্চিকাল থেকেই পারিবারিক স্নেহের অভাবে আস্তে আস্তে এরকম নির্মম দয়া মায়াহীন স্বভাব ধারন করেছে।
তাই পারিবারিক সচেতনতা বৃদ্ধি। করতে হবে, দরকার হলে সরকারকে এই ব্যাপারে সচেতনামূক প্রচারনা চালাতে হবে।(জন্মনিয়ন্ত্রণ ও এইডস এর ক্ষেত্রে যেমনটা করা হয়)
__
জুনায়েদের কথা বার্তা, হাত পা ছোড়া, চুলের স্টাইল, মারার স্টাইল এসবে আরেকটা ব্যাপার বার বার বেরিয়ে আসছিল।
আর সেটা হলো সিনেমা। বিশেষ করে বলিউডি সিনেমা। এরকম এডিটিউড শুধু মাত্র সিনেমার নায়ক কিংবা ভিলেনের ক্ষেত্রেই দেখা যায়।
তাই জুনায়েদের এমন আচরনের পিছনে যে বলিউডি সিনেমার পরোক্ষ প্রভাব রয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
তাছাড়া জুনায়েদের মতো ছেলেদেরকে মাদকাসক্ত হতেও প্রভাবিত করছে বলিউডি সিনেমা।
___
জুনায়েদ, নুরুল্লাহ ছাড়াও মানুষের মুখে মুখে আরেকটা নাম উচ্চারিত হচ্ছে আর সেটা হলো সাদিয়া। গত ২ দিনে শুধু জুনায়েদের মাইরের ভিডিও ভাইরাল হয়নি। এই সাদিয়ার নুড ভিডিও আর পিকও ভাইরাল হয়েছে। আর মজার ব্যাপার হলো এসব পিক ভিডিও জুনায়েদ ছাড়েনি, সাদিয়ার অন্যকোন হাই(বয়ফ্রেন্ড) ছেড়েছে।
বর্তমান ইয়ং জেনারেশনের পোলাপাইন প্রেম ভালোবাসা ব্যাপারটাকে এক ধরনের তামশায় রুপান্তরিত করেছে। উপন্যাসের মতো প্রেম ভালোবাসার অস্তিত্ব বর্তমান তরুন প্রজন্মের মাঝে নেই। তাদের মধ্যে প্রেম ভালবাসার নামে যেটা অবশিষ্ট আছে সেটা মূলত প্লাস্টিক ভালোলাগা কিংবা বিয়ের আগেই জৈবিক চাহিদা পূরনের উছিলা টাইপ কিছু।
ফ্লাডিং, টাইম পাস লাভ, রুম ডেট, সেক্স চ্যাট এসব বর্তমান ইয়ং পোলাপাইনের কাছে অতি পরিচিত শব্দ। এক সাথে কয়েক পোলা মাইয়ার সাথে প্রেমের অভিনয় করা, রুম ডেট করা, প্রতি মাসে gf-bf চেঞ্জ করা এসব অনেকের কাছে পানতা ভাত টাইপ ব্যাপার। দেশের অন্য জায়গার কথা বাদই দিলাম এই ছোট্ট জীবনে কুমিল্লার মতো ক্ষুদ্র শহরের মতো ছোট্ট জায়গায় আমি এরকম অনেক অনাচারের সাক্ষী হয়েছি।
সন্দেহ নেই তরুন প্রজন্মের মাঝে এরকম ট্রেন্ড সৃষ্টি হওয়া পিছনে ১০০ভাগ বিদেশি মিডিয়ার হাত রয়েছে।
যদিও অনেক দেরি হয়ে গেছে। তবুও এখনো সময় আছে তরুন প্রজন্ম সম্পূর্ণ ভাবে পঁচে যাওয়ার আগেই বিদেশি মিডিয়ার লাগাম টেনে ধরতে হবে।
এমনকি দেশি মিডিয়াকেও মনিটরিং এর মধ্যে রাখতে হবে।
__
এছাড়া মাদক দ্রব্য(বিশেষত ইয়াবা) সমাজে এতোটাই সহজলভ্য হয়েছে যে বলার মতো না। কুমিল্লার মতো শহরে আমার সহপাঠীদের ২০% জীবনে একবার হলেও ইয়াবা সেবন করেছে!
এক্ষেত্রে সরকারের উদাসীনতা যেমন দায়ী। ঠিক তেমনি সমাজের মানুষ গুলোর প্রতিবাদী মনোভাবের অভাব সমান ভাবে দায়ী। বিশেষ করে শহরের মধ্যবিত্ত সমাজের বাপ চাচা টাইপ বুজুর্গ ব্যাক্তিরা একটু বেশিই আত্নকেন্দ্রিক। নিজের গা বাঁচানোর জন্য এরা চোখের সামনে শত পাপচার হয়ে গেলেও কোন প্রতিবাদ না করে উল্টো না দেখার ভান করবে। অথচ আমরা সবাই চোখ কান খোলা রেখে সোচ্চার হলে সোচ্চার হলে মাদক ব্যবসায়ীরা মাদক বিক্রির জায়গাই খুজে পেতো না।
অতএব সরকার ও আইনশ্ঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর কার্যকর পদক্ষেপ যেমন দরকার, সামাজিক সচেতনতাও ঠিক একই ভাবে দরকার।
__
লিখবো না লিখবো না করে একটু বেশিই লিখে ফেললাম। যারা কষ্ট করে এতদূর পর্যন্ত পড়েছেন তাদেরকে ধন্যবাদ। সেই সাথে আরেকটা কথা জুনায়েদ, তাসকিন সানির বোলিং এ্যকশন এর মতো তুচ্ছ টপিক নিয়ে আপনারা যতটা সোচ্চার হয়েছেন। ততোটা সোচ্চার যদি বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮০০ কোটি টাকা চুরি নিয়ে হতেন। তাহলে সরকার হয়ত দেশের মানুষের রক্ত পানি করে অর্জিত ঐ ৮০০ কোটি টাকা ফিরিয়ে আনতে বাধ্য হতো।
__
:) যাওয়ার আগে.........
#গুটিবাজ = মাইন্ড গেমার
শব্দটা ভাল্লাগছে।
আপনারা ভিডিওটা যেমনে ভাইরাল করছেন। কয়েকদিন পরে হয়ত মানুষের মুখে মুখে শব্দটা প্রচলিত হবে। তখন বাংলা একডেমী তাদের অভিধানে গুটিবাজ শব্দটা যোগ করতে বাধ্য হবে :v

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ৩:১৬

নুর আমিন লেবু বলেছেন: ভাই, জোনায়েদের ভিডিও লিংকটা দিন। আমি এখনও দেখি নাই।

২| ১৬ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ৩:৩৪

রাতুল ভাই বলেছেন: Click This Link

৩| ১৬ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ৯:০৮

বঙ্গমিত্র সিএইচটি বলেছেন: যারা জুনায়েদ তৈরি করে তাদের শনাত্ব করতে হবে। অবশ্য ঘাটলে নেতাই পাওয়া যাবে তবুও।

১৬ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ১০:০৪

রাতুল ভাই বলেছেন: হে। নেতাদের প্রভাব আছে। আমাদের কুমিল্লাতেও নেতাদের ছত্র-ছায়ায় অনেক জুনায়েদ লালিত পালিত হচ্ছে। কিন্তু এই জুনায়েদ তৈরির পিছনে নেতাদের হাত কতটা আছে ভাবা দরকার। ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল গুলোতে নিশ্চয়ই রাজনীতি চলে না। এই জুনায়েদের জুনায়েদ হওয়ার পিছনে দায়ী পারিবারিক অবহেলা। আর অবশ্যই বিদেশি মিডিয়ার অসুস্থ বিনোদনের প্রভাব।

৪| ১৬ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ৯:৫৬

বিজন রয় বলেছেন: বিশ্রী জুনায়েদ।

৫| ১৬ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ৮:২৪

শায়মা বলেছেন: ভাইয়া
আমি সাধারণত ভিডিও লিঙ্কগুলি ক্লিক করি না। কিন্তু কি ভেবে যেন এই লিঙ্কে ক্লিক করেছিলাম। এবং আমি এই ভিডিওটি দেখার পর কিছু্ক্ষন স্তম্ভিত ছিলাম। জানিনা নুরুল্লাহ, জুনায়েদ কে কতটুকু দোষ করেছে বা পিছের ঘটনা কি। পিছের ঘটনা যাইহোক এই রকম বাস্তব জীবনকে সিনেমা ভাবা এই জুনায়েদকে কি শিক্ষা দিলে সে সারাজীবনের জন্য এই সিনেমা গিরি ভুলে যাবে তা জানা নেই আমার।

তবে এর সাথে পুরো সমাজ ব্যাবস্থাই জড়িত। এই ছেলের ফ্যামিলি কি করে ? তারা কি জানেনা ছেলের এই হাল? কি করতে ছেলেকে পয়সা দিয়ে পড়াচ্ছে? তার থেকে পাগলা গারদ পুরে দিলেই মনে হয় তার মস্তিস্ক বিকৃতি কিছুটা কমতো।

ভিডিওটা দেখলেই বোঝা যায়। এই পোলা মাদকাসক্ত এবং আধ-পাগল। এমনকি মাইর খাওয়া নুরুল্লাও ধোয়া তুলসি পাতা না। ঐ পোলাও মাদকাসক্ত। বাপের দূর্ণীতির টাকায় ইংলিশ মিডিয়ামে পড়া এসব পোলাপাইনের কাজই হচ্ছে দিনরাত ইয়াবা খাওয়া আর অসামাজিক কাজকর্ম করে বেড়ানো।

যদিও অনুমান করে কিছু বলা ঠিক না তবে আমারও ঠিক এমনটাই মনে হয়েছে।

যাইহোক সমাজের সকল জুনায়েদ ধ্বংস হোক। :(

১৭ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:৩৬

রাতুল ভাই বলেছেন: সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। আপনার মতো আমিও চাই সমাজের সকল জুনায়েদ ধ্বংশ হোক।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.