নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রাজু সিদ্দিকের মননভুবন

আমার অনুমতি ব্যতীত কেহ আমার গল্প বা গল্পের অংশ এবং নাটক বা নাটকের দৃশ্য বা সংলাপ বা সংলাপের অংশ কোখায়ও ছাপাতে বা ব্যবহার করতে পারবেন না। -- রাজু সিদ্দিক

রাজু সিদ্দিক

আমার অনুমতি ব্যতীত কেহ আমার গল্প বা গল্পের অংশ এবং নাটক বা নাটকের দৃশ্য বা সংলাপ বা সংলাপের অংশ কোখায়ও ছাপাতে বা ব্যবহার করতে পারবেন না। -- রাজু সিদ্দিক .

রাজু সিদ্দিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

খেলারামের চার খেলা - ১০ ( রম্য )

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:০০

চরম ভাবাপন্ন মেজাজ নিয়ে বেরিয়ে আসি বাসা থেকে। বেরিয়ে যা দেখি তা আমার দেখার কথা না, দেখতে বাধ্য হচ্ছি কেননা আমার মাথা ডানে ফিক্সড হয়ে আছে। দেখি আমাদের বাসার ডান দিকের দুই বিল্ডিং পরের বিল্ডিংয়ের চার তালার নতুন চ্যাংড়া ভাড়াটিয়া বারান্দায় দাঁড়িয়ে ব্রাশ দিয়ে দাঁত মাজচ্ছে। আমার কাছে মনে হয়, লোক দেখিয়ে দাঁত মাজার মাঝে এক ধরনের নিজেকে জাহির করার মনোভাব কাজ করে। শ্রেণীত্তোরণ জাহির মনোভাব। কয়লা ভাঙা দিয়ে দাঁত মাজার লোকেরা যখন পেষ্ট-ব্রাশ দিয়ে দাঁত মাজে, তখন লোক দেখিয়ে মাজে।

কিন্তু ঐ চ্যাংড়া বেটা কেন লোক দেখিয়ে মাজবে ? এই বেটা তো সম্ভবত জন্মের পর থেকেই পেষ্ট-ব্রাশ দিয়ে মাজচ্ছে ! তাহলে এই বেটা কেন মাজবে ? কেন ? এটা দেখার সাথে সাথে আমার চরম ভাবাপন্ন মেজাজ সপ্তমে চড়ে যায়। ইচ্ছে করছে গিয়ে বেটার পিঠে কয় ঘা বিরাশিসিক্কা বসিয়ে আসি।

আমার আবার ইচ্ছে পোষণ করার সাথে সাথে তা কিভাবে যেন কর্ম হয়ে যায়। তাই মুহূর্তের মাঝে নিজেকে আবিষ্কার করি চার তালা বিল্ডিংয়ের নীচে। বিল্ডিংয়ের নীচে আমি দাঁড়িয়ে আছি ব্রুস লির মত এক পাশে কাঁত হয়ে মারমুখি ভঙ্গিতে। (আসলে ঘাড় ত্যাড়ার জন্যে অন্যকোন ভঙ্গিতে দাঁড়ানোই যাচ্ছিল না) তারপর ব্রুস লির মত চার আঙুল এক করে নেড়ে নেড়ে বলি,‘এই যে, এই, ঘরে বাথরূম নাই ?’ চ্যাংড়া বেটা প্রথমে বুঝতে পারে না, অবাক চোখে তাকিয়ে থাকে,‘হ্যাঁ আপনাকেই বলছি, বারান্দায় দাঁড়িয়ে দাঁত মাজা কী ? হ্যাঁ, কী ? সবাইকে দেখান আপনার ব্রাশ আছে ?’

‘তাতে আপনার সমস্যা কী ?’ চ্যাংড়াটা বিদ্রুপ করে।

‘আমার সমস্যা ! আরে বেয়াদব বেটা বলে কী !’ আমি বিস্মিত হই।

‘আমার মুখের পেষ্ট কি আপনার গায়ে পড়ছে ?’ চ্যাংড়াটা বিদ্রুপের সাথে এবার তাচ্ছিল্যও করে।

‘না পড়লে কী আমি ঘর থেকে বার হইছিরে ফাজিল ! নাইমা আয়। আয় তুই, চড়ায়ে তোর দাঁত যদি সব না ফালাইছি। কি হইল নাম। নাম, জন্মের মত তোর দাঁত মাজা স্টপ করে দেই, ফুল স্টপ।’

এরই মাঝে আমার পাশে ভিড় জমে যায়। ভিড় থেকে পাড়ার লন্ড্রির ছেলেটা বলে,‘ভাই শালারে কলার ধইরা নামাইয়া আনি ? বড় রাস্তায় শালায় দাঁতের দোকান দিছে। দাঁত ব্যথার জন্যে হেদিন গেছি, শালারশালা আমার ব্যথার দাঁত রাইখা ভালা দাঁত ফালাইয়া দিছে, এই দেখেন, দেখেন,’ লন্ড্রির ছেলে হাঁ করে দেখায়,‘মাইনষের ভালা দাঁত ফালাইয়া হে জমছে দাঁত মাজতাছে, আবার দেহেন কেলাইতাছে ! আনি ? আনি নামাইয়া ? শালার দাঁত সব ফালাইয়া দেন, আনি ?’

লন্ড্রি ছেলের কথায় আমার সপ্তমে চড়া রাগ আরো চড়তে চায় কিন্তু আর চড়তে না পেরে ফুটন্ত পানির মত ছিটকে ছিটকে পড়ে, রক্ত টগবগিয়ে উঠে। ‘যা, নামায়ে আন, আন শালারে,’ বলে অতিরিক্ত উত্তেজনায় লন্ড্রির ছেলের পিঠেই বসাই এক বিরাশিসিক্কা।

বিরাশিসিক্কা খেয়ে লন্ড্রির ছেলে পিঠ বাঁকা করে অবিশ্বাস্য চোখে আমার দিকে তাকিয়ে ঘটনাটা বুঝতে চেষ্টা করে। ( অসমাপ্ত )

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.