নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রাজু সিদ্দিকের মননভুবন

আমার অনুমতি ব্যতীত কেহ আমার গল্প বা গল্পের অংশ এবং নাটক বা নাটকের দৃশ্য বা সংলাপ বা সংলাপের অংশ কোখায়ও ছাপাতে বা ব্যবহার করতে পারবেন না। -- রাজু সিদ্দিক

রাজু সিদ্দিক

আমার অনুমতি ব্যতীত কেহ আমার গল্প বা গল্পের অংশ এবং নাটক বা নাটকের দৃশ্য বা সংলাপ বা সংলাপের অংশ কোখায়ও ছাপাতে বা ব্যবহার করতে পারবেন না। -- রাজু সিদ্দিক .

রাজু সিদ্দিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

আনন্দযাত্রা ( রম্য ) ৯

২৮ শে মে, ২০১৪ রাত ১০:২৪

সবুজ গাছে সবুজ পাতা সবুজ তার ফুল, বলতো নবীন ভাই বোনেরা কথাটি কি ভুল ? ছোটবেলা মার মুখে শোনা ধাঁধা এখনো দাদুর মনে আছে। মাদাগাস্কারার বাসিন্দা এখন পুরাপুরি সবুজ বাঙ্গালী ললনা হয়ে গেছে। পরদিন সকালে ছাদের পুঁইশাকের পরিচর্যা করতে করতে দাদু এসবই ভাবছেন। এমন সময় ঝিল এসে বলে,‘দাদু বাস স্টেশন যাবে না ?’

‘এখন কী ? তারা রওয়ানা দিক আগে।’

‘আব্বুরাতো নাইট বাসে রওয়ানা হয়েছেন, দশটা এগারোটায় এসে পৌঁছাবেন।’

‘নাইট বাসে রওয়ানা দিয়েছে তুই জানলি কিভাবে ?’

‘বারে রাতে আম্মু ফোন দিল।’

‘রাতে কেন আমাকে বললি না ?’

‘মনে ছিল না,’ ঝিল মাথা চুলকায়,‘সরি।’

দাদু রেগে যান, তিনি ছাদের কলে হাত ধুতে ধুতে বলেন,‘সরি বলিস কেন ? উজবুকের বোনতো উজবুকই হয়।’

‘দাদু !’ ঝিল কপট রাগ করে।

‘চুপ থাক ! তলতা কই ? ডাক তাকে,’ বলে দাদু দ্রুক নামতে থাকে। ক’ধাপ নেমে হঠাৎ দাঁড়ান,‘আর শোন, উজবুকটা আমার ঘরে আছে, তাকে বের জরে দিস।’

‘ভাইয়া রাতেই বেরিয়ে গেছে।’

‘কী ! কিভাবে ? আমিতো বাহির থেকে লক করে রেখেছিলাম !’

ঝিল ঠোঁট উল্টায়,‘কি জানি,সকালে দেখলাম রান্নাঘরে চা বানাচ্ছে।’

‘এই উজবুকের জন্য একদিন বাসার সবার কোমরে রশি পড়বে, সবার। তোর বাপ-মা আসলেই আমি বাড়ি চলে যাব, এই বয়সে জেলের রুটি আমার পেটে সইবে না।’

‘ভাত ? ভাত সইবে ?’

‘চুপ থাক !’ দাদু ধমকে সিঁড়ি ভাঙেন। ঝিল ঠোঁট টিপে দাদুর পেছন পেছন নামে।

আজ সন্ধ্যার আগে নয়নের কোন কাজ নেই, সন্ধ্যায় বাড়ির বাস ধরবে। ছোটবোনের জামাও কেনা হয়েগেছে। সে ঠিক করেছিল আজ ব্রেকফাস্ট মিসিং ঘুম দিবে। রাতের খাবার খেয়ে ঘুম উঠবে দুপুরের খাবারের সময়, সকালের নাস্তা বাদ। কিন্তু সকালের নাস্তার আগেই তার ঘুম ভাঙে, ভাঙে তারেক মামার রিংয়ে। গত মাসে তারেক মামার এক বন্ধুর অফিসে সে তার সিভি জমা দিয়ে ছিল। কাল সকাল নয়টায় তারা ইন্টারভিউর জন্য ডেকেছে। পছন্দ হলে ঈদের পরে জয়েনিং। এ খবরে তার মন ভাল হবার কথা কিন্তু হয়েছে খারাপ। ইন্টারভিউ দিতে হলে আজ বাড়ি যওয়া বাতিল করতে হবে। যাওয়া বাতিল করলে বাসের আর টিকেট পাওয়া যাবে না, তখন ? তার মেজাজ চরম খারাপ হয়ে যায়। সে উঠে বিছানায় বসে মনে মনে তারেক মামাকে বকতে থাকে, সাথে তারেক মামার বন্ধুকেও, সেই সাথে দেশের সব চাকরিদাতাকে বকতে থাকে। ঈদের দুইদিন আগে তোর অফিসে লোক নিতে হবে কেন ? সারা বছর কী করবি ? ঘোড়ার ঘাস কাটবি ? তারপরই সে ঈদে বাড়িফেরা মানুষদের নিয়ে পড়ে, প্রতি ঈদে তোদের বাড়ি যেতে হবে কেন ? প্রতি ঈদে ঢাকা শহর খালি করে বাড়ি যাস বলেইতো টিকেটের ক্রাইসিস হয় । সরকারের উচিৎ ঈদে কারা কারা বাড়ি যাবে তা নিয়ন্ত্রণ করা, রেশনিং করা। এ বছর যে বাড়ি যাবে, পরবর্তী তিন বছর সে আর যেতে পারবে না। আবার এবার যে বাপের বাড়ি যাবে পরের বার তাকে শ্বশুর বাড়ি যেতে হবে। কেউ এর অন্যথা করলে তার ঈদ বোনাস বাতিল। ফাইজলামী ! প্রতি ঈদে বাড়ি যেতেই হবে, মাইড়াকাইটা হলেও যেতে হব ! গ্রামের বাড়ি থেকে ঢাকার বাস স্টেশন পর্যন্ত জ্যাম লাগিয়ে রাখে ? ফাজিলের ঘরে ফাজিল ! এরকম আবোলতাবোল বকতে বকতে সে প্যান্টসার্ট পরে মাথায় একটা ক্যাপ লাগিয়ে মেস থেকে বের হয়।

বাস কাউন্টারে যাত্রীদের বসার চেয়ারে দাদু ও তলতা বসে আছে। এমন সময় নয়ন এসে কাউন্টারে কথা বলে মন খারপ করে দাঁড়িয়ে থাকে। বাস আসছে কিনা দেখার জন্য তলতা উঠে বাইরে যায়। নয়ন হতাশ মুখে এসে দাদুর পাশে বসে। দাদু নয়নের মুখের দিকে তাকিয়ে জানতে চান,‘ঘটনা কী ?’

নয়ন একাটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে,‘আজ সন্ধ্যার বাসে বাড়ি যাবার কথা, অগ্রীম টিকেটও কেটেছি কিন্তু কাল আমার একটা ইন্টারভিউ আছে, আমি আজকের টিকেটটা পাল্টিয়ে কাল যেতে চাচ্ছি কিন্তু কাউন্টার থেকে বলছে ঈদের আগে কোন টিকেটই নেই, কী বিপদে পড়লাম ?’

দাদু মাথা ঝাঁকান, ‘হু, বিপদেরই কথা।’

ঠিক তথন বাস কাউন্টার থেকে অল্প দূরে একটা ছিনন্তাই হয়। কণা রিক্সায় করে বাসস্টেশন আসছিল, বারটায় তার বাস। হঠাৎ রিক্সার পেছন উঠে কালুগুন্ডা তার পার্সটা থাবা দিয়ে দৌড়ে পালায়। ‘এই, এই আমার পার্স পার্স। এই রিক্সা থামাও, আমার পার্স ছিনন্তাই করে নিয়ে যাচ্ছে, এই রিক্সা।’ ড্রাইভার রিক্সা থামায়। ‘ভাই আমার পার্সটা নিয়ে গেছে, একটু দেখ না, ঐ দিকে গেছে, ঐ দিকে।’

‘আমি যামু না, আপনে যান।’

‘আমি ?’

‘আপনের মাল চুরি হইছে আপনে যান, আমি ক্যান যামু ?’

‘গেলে সমস্যা কী ? আমি তোমার পেসেঞ্জার, তোমার পেসেঞ্জারের পার্স ছিনন্তাই হয়েছে, তুমি যাবে নাতো কে যাবে ?’

‘হ, আমি যাই, আর এদিকে আমার রিক্সাটা চুরি হোক আর কি !’

‘মা-মা-মানে ?’

‘মানে মানে কইরেন না, আপনে আর ঐ চোর যে যুক্তি কইরা আসেন নাই ক্যামনে কমু ? হে আপনের ব্যাগ চুরি কইরা দৌড় লাগাইব, আপনে চিল্লাইবেন, আমি যামু আর আপনে এদিকে আমার রিক্সা লইয়া ভাগবেন !’

( চলবে )

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে মে, ২০১৪ সকাল ৯:০৬

আজীব ০০৭ বলেছেন: আপনে আর ঐ চোর যে যুক্তি কইরা আসেন নাই ক্যামনে কমু ? হে আপনের ব্যাগ চুরি কইরা দৌড় লাগাইব, আপনে চিল্লাইবেন, আমি যামু আর আপনে এদিকে আমার রিক্সা লইয়া ভাগবেন !’

২| ৩০ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৪:৫৬

রাজু সিদ্দিক বলেছেন: ধন্যবাদ, ভাল থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.