নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রাজু সিদ্দিকের মননভুবন

আমার অনুমতি ব্যতীত কেহ আমার গল্প বা গল্পের অংশ এবং নাটক বা নাটকের দৃশ্য বা সংলাপ বা সংলাপের অংশ কোখায়ও ছাপাতে বা ব্যবহার করতে পারবেন না। -- রাজু সিদ্দিক

রাজু সিদ্দিক

আমার অনুমতি ব্যতীত কেহ আমার গল্প বা গল্পের অংশ এবং নাটক বা নাটকের দৃশ্য বা সংলাপ বা সংলাপের অংশ কোখায়ও ছাপাতে বা ব্যবহার করতে পারবেন না। -- রাজু সিদ্দিক .

রাজু সিদ্দিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

আনন্দযাত্রা ( রম্য ) ১২

১৬ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ১:৪৫

ইঁদুর - জগতের এক মাত্র প্রাণী যে মানুষের পাঁচটা মৌলিক অধিকারের উপরই আঘাত হানে। বসতভিটা নোংরা করে, বইখাতা কাপড় কেটে বাচ্চা ফোটায়, ফসল নষ্ট করে আর প্লেগ ছড়ায়। ইঁদুরে কাটা ‘যোগনিদ্রা’ বইটা হাতে সাগর এসবই ভাবছিল, মানুষের উচিত সর্ব শক্তি নিয়ে ইঁদুরের উপর ঝাপিয়ে পড়া। শুধু ঝাপিয়ে পড়া না তার ইচ্ছে করছে ইঁদুরগুলোকে কচুকাটা করতে। যোগনিদ্রার বইটা গত বছর ইন্ডিয়া থেকে এনেছিল। পুনমুদ্রণ না হলে আরেকটা কপি পাওয়া যাবে কি না কে জানে ? সে বিরক্তি মুখে বইটা নিয়ে ঝিলের কাছে যায়,‘দেখ কী-কী-কী করেছে ? আ-আ-আমার যোগীনিদ্রার ব-ব-বইটা দেখ !

ঝিল বইটা দেখে হায় হুতাশ করে,‘আয় হায় ! এ অবস্থা কে করল ?’

‘ইঁদুর।’

‘বেশ করেছে,’ বলে ঝিল ফ্রিজ থেকে তারকারি বের করে।

‘চুপ থাক ! বেশ করেছে ?’ ঝিলের মুহূর্তে পক্ষ পরিবর্তনে সাগর রেগে যায়, সে তলতাকে খোঁজে,‘ত-ত-তলতা কোথায় ? ত-ত-তলতা ?’

‘তলতা নাই।’

‘নাই মা-মা-মানে ?’

‘আব্বু-আম্মুকে আনতে দাদুর সাথে বাস স্টেশন গেছে।’

‘তাঁরা না আসবে না বলল ?’

‘ওনাদের বলার আগেই চলে গেছে।’

বলার আগেই চলে গেছে ? বোকা না কি ? আর আনতে বা-বা-বাস স্টেশন যে-যে-যেতে হবে কেন ? বাসওয়া-য়া-য়ালার হাতে কিছু গু-গু-গুজে দিলেইতো বা-বা-বাসায় পৌঁছে দিত।’

‘ভাইয়া যাওতো আমার অনেক কাজ, রান্নাবান্না করতে হবে,’ ঝিল রান্নাঘরে যায়।

‘রান্নাবান্না ? ই-ই-ইন্দুরে পুরা মানবগু-গু-গুষ্ঠি খেয়ে ফেলছে তার হুঁস নাই, রান্নাবান্না ?’ সাগর বকতে বকতে ওর ঘরে ফিরে যায়, আর কী কী বই কেটেছে দেখা দরকার।

কণা ও নয়নকে নিয়ে দাদু আর তলতা বাসায় আসেন। দাদু ডোরবেল বাজাতে গিয়ে দেখেন দরজা খোলা,‘দেখো উজবুকগুলার কারবার দেখো ! সদর দরজা খুলে রেখেছে !’ দাদু ঘরে ঢোকে নয়ন ও কণাকে প্রবেশ করতে বলে,‘আসো, উজবুক পরিবারে আসো। তলতা যা ঝিলকে ডাক, কই আসো।’ তলতা ভেতরে যায়। কণা ও নয়ন ইতস্তত করে, পরষ্পরের দিকে তাকায়। ‘কোন ভয় নাই এ উজবুক কামড়ায় না, আসো, নিশ্চিন্তে আসো।’ নয়ন প্রথমে ঢোকে, পেছন পেছন কণা।

খাবার ঘরে এসে তলতা ঢক ঢক করে পানি খায়। সাগর চার,পাঁচটা উঁদুরে কাটা বই নিয়ে হন্তদন্ত হয়ে আসে। ‘ত-ত-তলতা ইঁদুরের ক-ক-কলটা দেখতো কো-কো-কোথায় ? তা-তা-তাড়াতাড়ি নিয়ে আয়, আ-আ-আমার যোগীর ব-ব-ব-বই সব ইঁদুরে কেটে ফে-ফে-ফেলছে।

‘কন কী মামা ?’

সাগর ইঁদুরে কাটা বই তলতার সামনে মেলে ধরে,‘এই দেখ, এটা যোগনিদ্রার বই, এটাও।’

‘সর্বনাশ ! দাড়ান কল আনতাছি,’ দু পা বেড়ে তলতা থমকে দাঁড়ায়, ‘মামা, কল আনার কী দরকার, বইগুলাতে বিষ মাইখা দেই ? ইন্দুরে বই কাটব আর মরব, কাটব আর মরব।’

‘ভাল বুদ্ধি দিয়েছিসতো !’ পরমুহূর্তে সাগর ধমকে ওঠে,‘এই যা ! বইয়ে বিষ মাখাবে ? আমি বই হাত দিয়ে ধরব না ? মুর্খ ! যা কল আন।’

‘জি আনতাছি।’

‘তাড়াতাড়ি,’ সাগর আবার হন্তদন্ত হয়ে ওর ঘরে ফিরে যায়।

তলতা রান্না ঘরে এলে ঝিল জিজ্ঞেস করে,‘ কিরে এতো দেরি করলি কেন ?’

‘আমারে না, বড় আব্বারে জিগান গিয়া,’ তলতা তাকে ইঁদুরের কল খোঁজতে খোঁজতে বলে।

‘কেন দাদুকে জিজ্ঞেস করব কেন ? কী হয়েছে বল।’

‘কী আর হইব, হেতে যারে পাইছে তারে লইছে, যারে পাইছে তারেই লইছে।’

‘লইছে ! কোথায় ?’

‘কই ? যান ড্রইং রুমে দেহেন গিয়া, একটা বেডা আর একটা বেডি, কালকে আমরার লগে বাড়ি যাইব, তাও আবার ফ্রি, ফ্রি যাইব।

‘কি বলিস !’ হঠাৎ ঝিল তলতার মুখে মারের দাগটা দেখে,‘তোর মুখে কিসের দাগ ?’

‘খালা এইখানে না ইন্দুরের কলটা আছিস, কই ?’ যেন ঝিলের কথা শুনতেই পায় নি। ‘সাগর মামার সব বই ইন্দুরে কাইট্টা সাফা।’ ঝিল ভ্রূ কুঁচকে বেরিয়ে যায়।

( চলবে )

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.