নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রাজু সিদ্দিকের মননভুবন

আমার অনুমতি ব্যতীত কেহ আমার গল্প বা গল্পের অংশ এবং নাটক বা নাটকের দৃশ্য বা সংলাপ বা সংলাপের অংশ কোখায়ও ছাপাতে বা ব্যবহার করতে পারবেন না। -- রাজু সিদ্দিক

রাজু সিদ্দিক

আমার অনুমতি ব্যতীত কেহ আমার গল্প বা গল্পের অংশ এবং নাটক বা নাটকের দৃশ্য বা সংলাপ বা সংলাপের অংশ কোখায়ও ছাপাতে বা ব্যবহার করতে পারবেন না। -- রাজু সিদ্দিক .

রাজু সিদ্দিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

ফুটবল গন্ডলোগ ৩ ( রম্য )

১৯ শে জুন, ২০১৪ বিকাল ৩:৪৮

ব্রাজিল মেক্সিকোর সাথে ড্র করেছে। রহমান সাহেবের আনন্দিত হবার কথা কিন্তু উনি হতে পারছেন না। কারণ ওনার শ্যালিকা তার বদ স্বামী ও সাত বছরের বিচ্ছু পূত্র নিয়ে বেড়াতে এসেছে। শ্যালিকাকে উনি দেখতে পারেন না। ( শ্যালিকা ওনার স্ত্রীর চেয়ে সুন্দর, তাই ! ) শ্যালিকার সাথে ওর বদ স্বামীকেও দেখতে পারেন না। ( এই শালারবেটা ওনার সুন্দরী শ্যালিকাকে বিয়ে করেছে, তাই ! ) কিন্তু এই দেখতে না পারার বিষয়টা তিনি ওনার স্ত্রীর জন্য কখনোই প্রকাশ করতে পারেন না। বরাবরই দাঁত চেপে সহ্য করেছেন। কিন্তু এখনতো আর পারা যাচ্ছে না। শ্যালিকার ফুল ফ্যামিলী যে ব্রজিলের সমর্থক ? তাঁর বাসায় ব্রাজিলের শ্লোগান উঠছে ! তিনি কল্পনাও করতে পারে না। কিন্তু তাই হচ্ছে, শ্যালিকার সাত বছরের বিচ্ছুটা সারাদিন ব্রাজিল ব্রাজিল করে চেচাচ্ছে। আর উনি কিছুই করতে পারছেন না। পাছে মধ্য রাত অবধি যদি ছাদে বসে থাকতে হয় ? তাই পারছেন না । কিছু করতে না পারার বেদনায় উনি নীল হয়ে আছেন। আবার এদিকে পাপ্পুর বিষয়টাও ঠিক ধরতে পারছেন না। বদমাশটা কেমন যেন ব্রাজিলের প্রতি হেলে পড়েছে ! এটা কি খালা খালুর প্রভাব না অন্য কিছু তাও ধরা যাচ্ছে না। এমন সময় তিনি খবর পান জিলমঞ্জিলে সালু কাপড় পরা এক ফকির এসেছে।

মেক্সিকো ব্রাজিলকে জিততে দেয় নি। মেক্সিকোর এতবড় বেআদবী জিলমঞ্জিলের খান সাহেব কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না । এতটুকু একটা দেশ ব্রাজিলের মত দেশটাকে গোল দিতে দিল না ? আরে, আমাজান নদী দিয়ে প্রবাহিত এক দিনের পানি তোদের দিকে ছেড়ে দিলে দেশশুদ্ধ সবাই গিয়ে যে সাগরে পড়বি সে হুশ আছে ? বেআদবের গেদা !

এমন সময় ডোরবেল বাজে। খান সাহেব দরজা খুলে দেখেন লাল কাপড় পরনে, মাথায় লাল পাগড়ী, চোখে সুরমা দেয়া একজন গোবেচারা ফকির দাঁড়িয়ে আছে। তিনি ধমকে ওঠেন,‘কী চাই ?’

‘মোড়ের মুদী দোকানদার আপনার কাছে পাঠিয়েছে জনাব,’ ফকির মিনমিন করে।

‘মুদী দোকানদার ! কেন ?’

‘কেন ? তাতো আপনি বলবেন জনাব। আমি শুধু বলতে পারি, আমি কী করি ?’

ফকিরের জিলেপি প্যাঁচের কথায় খান সাহেব ধন্ধে পড়ে যান, তিনি মাথা চুলকে বলেন,‘আপনি কী করেন ?’

‘বান, বান মারি জনাব,’ খান সাহেব হাঁ হয়ে ভাবেন বান মারার সাথে ওনার কী সম্পর্ক ? ‘জনাব, ব্রাজিল যে জিততে পারল না, বানটা মারছে কে ? এই আমি।’ ফকির নিজের বুকে আঙুল রেখে বলে।

সাথে সাথে খান সাহেবের চোখ বড় হয়ে যায়, তিনি ফকিরের জামা খাঁমচে ধরেন,‘সালারবেটা, বলিস কীরে তুই ?’

‘জনাব, জনাব এর উল্টা পিঠও আছে,’ ফকির সন্ত্রস্ত কণ্ঠে বলে।

‘উল্টা পিঠ ?’

‘আর্জেটিনার গু হারা,’ মুহূর্তে খান সাহেব থমকে যান,‘জনাব এবার কি বলবেন মুদী দোকানদার আপনার কাছে আমাকে কেন পাঠিয়েছে ?’

খান সাহেবের মাথায় বিজলী চমকায়, তিনি হেসে বলেন,‘বলব, বলব, অবশ্যই বলব।’ তারপর ফকিরের জামা ছেড়ে ভাঁজ ঠিক করে, জামার ধুলা ঝেড়ে বলেন,‘আসুন, আসুন, ভেতরে আসুন ।’ ফকিরকে স্বসম্মানে ভেতরে নিয়ে বসান।

ঘরে ঢোকেই ফকির কাজে লেগে পরে, প্রঠমেই সে ঘর অন্ধকার করে ধূপ জ্বলায়, তারপর ফ্লোরে রঙ্গিন চকে ঘর কেটে কাটাকুটি করে আর্জেটিনার পরাজয় সুনিশ্চিত করে খান সাহেবের কাছ থেকে সতের’শ সতের টাকা হাদিয়া নিয়ে বেরিয়ে আসে।

সবই ভাল ছিল কিন্তু টাকা দেবার সময় খান সাহেবের কেমন যেন খটকা লাগে, ফকিরকে তার চেনা চেনা লাগে। আগে কোথায় যেন দেখেছেন ? আচ্ছা কোন টিভি চ্যানেলে দেখি নি তো ? তিনি ভাবেন। কী জানি ? উনি মনে করতে পারেন না।

জিলমঞ্জিল থেকে বেরোবার সাথে সাথে রহমান সাহেব ফকিরকে ধরে টিনাভিলার চিলেকোঠায় নিয়ে বলেন,‘ড্র না ব্রাজিলের পরাজয় চাই।’

‘বিষয়টা কঠিন,’ ফকির মাথা চুলকায়।

‘কত কঠিন ?’

‘ডাবল কঠিন, ওনার বান আগে কাটতে হইব, তারপর নতুন বান মারতে হইব, ডাবল খাটনি।’

‘খাটনি কত সেইটা বল ।’

‘সাতাশ’শ সাতাশ টাকা।’

‘সই,’ কাজ শুরু করো। ফকির এখানেও ধূপ জ্বলিয়ে ফ্লোরে রঙ্গিন চক দিয়ে ঘর কেটে কাটাকুটি করে ব্রাজিলের পরাজয় সুনিশ্চিত করে সাতাশ’শ সাতাশ টাকা হাদিয়া নিয়ে চলে যায়।

ঠিক তখন জিলমঞ্জিলের খান সাহেবের মনে পড়ে, আরে মোড়েতো কোন মুদীর দোকান নেই, ফকিরা পেল কোথায় ? আর অমনি তিনি ফকিরকেও চিনে ফেলেন, এ বেটা না অবৈধ পিরানহা রাখার অপরাধে তাকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশ সেজে এসেছিল ! তখন গ্রেপ্তার এড়াবার জন্য তাকে দশ হাজার টাকার দিয়েছিলেন ! তিনি থমকে বসে মাথার চুল ছিঁড়তে থাকেন।

অন্যদিকে টিনাভিলার রহমান সাহেব তখন ব্রাজিলের ভবিষ্যৎ পরাজয়ের অগ্রীম আনন্দে বিভোর হয়ে ইজি চেয়ারে বসে দোলা খেতে থাকেন। এমন সময় ওনার শালির সাত বছরের ছেলে ঘরময় ঘুরে ঘুরে ব্রাজিল ব্রাজিল করে গলা ফাটাচ্ছে। ওনার ইচ্ছা করছে শালির পুৎকে তোলে এক আছাড় মারতে। অনেক কষ্টে ইচ্ছাটা দমন করে ধমকে ওঠেন,‘এাই, এই ব্রাজিল কী ? এ্যা ব্রাজিল কী ?’

‘শালির পুৎ লাফাতে লাফাতে বলে,‘ব্রাজিল খেলে।’

‘কিসের ব্রাজিল খেলে ? খেলেতো সাকিব, সাকিব। সাকিব খেলে।’

সাকিবের কথায় শালির পুৎ একটু ভেবে বলে,‘ব্রাজিলও খেলে।’

‘কী ?’

‘ক্রিকেট !’ শালির পুতের তাৎক্ষণিজ উত্তর।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে জুন, ২০১৪ বিকাল ৪:৪৬

আমি দিহান বলেছেন: পুরোটা পড়ি নাই ভাইয়া।

২০ শে জুন, ২০১৪ দুপুর ১২:১৮

রাজু সিদ্দিক বলেছেন: যতটুকু পড়েছেন তাতেই চলবে, ধন্যবাদ । বাকিটা পরে পড়লেও চলবে।

২| ১৯ শে জুন, ২০১৪ বিকাল ৪:৫১

বোকা সিয়াম বলেছেন: দারুন লিখেছেন বস।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
শালির পুতের কথাতে মনটা ভরে গেছে।

২০ শে জুন, ২০১৪ দুপুর ১২:২০

রাজু সিদ্দিক বলেছেন: শালির পুতের জন্য দোয়া করবেন, ধন্যবাদ ।

৩| ২০ শে জুন, ২০১৪ ভোর ৫:১৫

এস এস মারজান বলেছেন: অনেক ভালো লাগলো । শুভেচ্ছা নিবেন ।

২০ শে জুন, ২০১৪ দুপুর ১২:২১

রাজু সিদ্দিক বলেছেন: ধন্যবাদ, ভাল থাকবেন ।

৪| ২০ শে জুন, ২০১৪ দুপুর ১২:০১

Unmad বলেছেন: অসাধারন

২০ শে জুন, ২০১৪ দুপুর ১২:২২

রাজু সিদ্দিক বলেছেন: ধন্যবাদ, ভাল থাকবেন ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.