নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রাজু সিদ্দিকের মননভুবন

আমার অনুমতি ব্যতীত কেহ আমার গল্প বা গল্পের অংশ এবং নাটক বা নাটকের দৃশ্য বা সংলাপ বা সংলাপের অংশ কোখায়ও ছাপাতে বা ব্যবহার করতে পারবেন না। -- রাজু সিদ্দিক

রাজু সিদ্দিক

আমার অনুমতি ব্যতীত কেহ আমার গল্প বা গল্পের অংশ এবং নাটক বা নাটকের দৃশ্য বা সংলাপ বা সংলাপের অংশ কোখায়ও ছাপাতে বা ব্যবহার করতে পারবেন না। -- রাজু সিদ্দিক .

রাজু সিদ্দিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

ফুটবল গন্ডলোগ ৫

১২ ই জুলাই, ২০১৪ দুপুর ২:৩৩

৭, ১-য়ে ব্রাজিল ভ্যাটকাইয়া গেছে। আর্জেন্টিনার সাপোর্টার রহমান সাহেবের বান ভালই কাজ করেছে। এ আনন্দে রহমান সাহেবের তাধিন্‌ধিন্ করে নাচার কথা, কিন্তু উনি নাচতে পারছেন না। ওনার ধারণা ছিল তাঁর দল আর্জেটিনার সাথে যুদ্ধ হবে ব্রাজিলের। রাজার সাথে নাজা, মাঝখান থেকে এই চাপাভাঙা হিরুঞ্চিগুলা কই থিকা আইল ? ( জার্মানের সাপোর্টাররা ক্ষমা করবেন ) এইটা কোন কাম হইল, ছয় মিনিটের ঝড়ে এতবড় একটা দেশ তছনছ হইয়া গেল ? হলুদ জামা পইরা পইরা ব্রাজিলের সবগুলার জন্ডিস হইছে, নাইলে দম গেল কই ? জায়গায় দাঁড়ায় দাঁড়ায় ফুটবল খেলা এই প্রত্থম দেখলাম, প্রত্থম।

আর চাপাভাঙা হিরুঞ্চিগুলা কেমনে দৌড় পাড়ল, মিনিটে মিনিটে বল ব্রাজিলের জালে ঢুকাইল ? যেন গোলের ব্যাড়া উঠছে। আরে ৭ গোলে জিতলেও ফাইনালে যাবি, দুই গোলে জিতলেও যাবি। কী দরকার এতগুলান গোলা দেওনের ? মানির মান বইলাতো একটা কথা আছে, না কি ?

ফুটবলের রাজারে ভিখারি বানাইয়া দিলি ? ফিফার একটা নিয়ম কানুন থাকা দরকার, দুই গোলের বেশি ব্যবধানে কেউ জিতবার পারব না। আরে বেকুব, যারা বিশ্বকাপ খেলতে আসে তারা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ দল বইলাই আসে। তাগোরে তুই পাড়ার টিম পাইছস, যে ৭টা ৮টা গোল দিবি ?

রহমান সাহেব সেহেরি খেতে বসে এ সব ভাবছেন, ভাবতে ভাবতে ওনার মেজাজ তিরিক্ষি হয়ে যায়। পাতের ভাত খেয়ে আর খেতে ইচ্ছে করে না।

তাঁর ছেলে পাপ্পু সেহেরি না খেয়েই বাসা থেকে বেরিয়ে যায়। এত রাতে সে কোথায় গেল, অন্যদিন হলে উনি এটা নিয়ে হৈচৈ করতেন। আজ কিছুই করলেন না। আধ খওয়া পেল্টে হাত ধুয়ে উঠে পড়েন। তারপর বসবার ঘরে কিছুক্ষণ পায়চারী করে ছাদে যান।

অন্যদিকে ব্রাজিলের সার্পোটার খান সাহেব অর্ধেক খেলা দেখেই ওঠে পড়েন, বেগম সাহেবকে সেহেরির খাবার দিতে বলেন। টেবিলে খাবার দিতে দিতে উনি হাঁটুতে আঙুলের তাল তোলে মাথা ঝাঁকাতে থাকেন, যেন কাওয়ালি শুনছেন।

ওনার মেয়ে আমানি চোখ ভরা জল নিয়ে বাবার দিকে তাকিয়ে হঠাৎ ওড়নায় মুখ চেপে দৌড়ে রুমে গিয়ে জামার উপরে পরা ব্রাজিলের জার্সিটা খুলে ছুড়ে ফেলে বালিশে মুখ গুঁজে কাঁদতে থাকে।

খান সাহেবের বেগম স্বামীর দিকে তাকিয়ে টেবিলে খাবার সাজান। ওনার মনটাও খারাপ, তবে যতনা মন খারাপ তার চেয়ে বেশি শঙ্কিত, খান সাহেবের আচরণ ভাল ঠেকছে না।

এমন সময় ডোরবেল বাজে। খান সাহেব দরজা খোলেন। পাপ্পু সালাম দেয়। খান সাহেব অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করেন,‘আপনি ?’

‘আঙ্কেল আমি পাপ্পু, আমানি কোথায় ?’

‘ও তুমি, আমানি তার রুমে যাও যাও,’ বলে খান সাহেব সেহেরি খেতে বসেন। তিনি আজ অন্য দিনের চেয়ে বেশি খান, পেট পুরে খান।

পাপ্পু আমানির দরজায় টোকা দিয়ে ডাকে,‘আমানি, আমানি।’

অমনি দরজা খুলে আমানি ফেটে পড়ে,‘তুই আর কোন দিন, কোন দিন আবি না, আমাকে ফোনও দিবি না, তুই দিবি না, তোর বাপ দিব না, তোর চৌদ্দগুষ্ঠি ফোন দিবি না,’ বলে পাপ্পুর মুখের উপর দরজা লাগিয়ে দেয়। পাপ্পু কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে ফিরে আসে।

যাবার সময় খান সাহেব খেতে ডাকেন,‘পাপ্পু আমাদের সাথে খাও।’

‘না আঙ্কেল বাসায় গিয়ে খাব,’ বলে পাপ্পু বেরিয়ে যায়।

খান সাহেব সেহেরি খেয়ে বিছানায় গিয়ে টান টান হয়ে শুয়ে পড়েন এবং পাঁচ মিনিটের মধ্যে নাক ডাকতে শুরু করেন। সকাল আটটায় ঘুম ভাঙে। ভেঙে পত্রিকায় একবার চোখ বুলিয়ে উনি ছাদে যান। ছাদে গিয়ে বাঁশ নামিয়ে ব্রাজিলের পতাকাটা খোলেন। তারপর ফিরে আসার জন্য ঘুরেন। আর ঠিক তাঁর চোখে পড়ে পাশের বাসায় রহমান সাহেবের ছাদে আর্জেন্টিনার পতাকাটা নেই। ( যেটা ভোর রাতেই রহমান সাহেব খুলে রেখেছেন। ) খান সাহেব বুঝতে পারেন, রহমান সাহেব ইচ্ছে করে আর্জেন্টিনার পতাকা নামিয়েছেন, যাতে তাঁর চোখে না পড়ে। রহমান সাহেবের এই মহানুভবতায় খান সাহেবের হৃদয় সিক্ত হয়ে আসে। শত্রু যখন মিত্র হয়, অস্ত্র সব অশ্রু হয়। খান সাহেবের দুচোখ ভরে পানি আসে, তাঁর খুব কান্না পায়। উনি ব্রাজিলের পতাকাটা ধরে হাউমাউ করে কেঁদে ওঠেন, ব্রাজিল কেন এত গোল খেলো ?

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৫:৪১

পাজল্‌ড ডক বলেছেন: এইটা বেস্ট:D বিশেষ করে ব্রাজিল গালিগালাজ অংশ টুকু =p~

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.